শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে-অভিশপ্ত এসিড-সন্ত্রাস
বাংলাদেশে এসিড-সন্ত্রাসের ভয়াবহতা মধ্যযুগের বর্বরতাকেও হার মানায়। সাধারণত কিশোরী-তরুণীরাই এই সন্ত্রাসের শিকার। সমাজের একশ্রেণীর সমাজবিরোধী পুরুষ এসিড ছুড়ে তরুণীদের মুখ ঝলসে দেন। সাধারণত প্রেম প্রত্যাখ্যান, জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধা, পারিবারিক শত্রুতা, বিয়ের পর যৌতুকের জন্য নির্যাতন বা
জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে নারীদের এসিড ছুড়ে মারা হয়। এর কি কোনো প্রতিকার নেই?
প্রায় প্রতিটি ঘটনায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত খুব কম ক্ষেত্রেই সাজা হয়। গত ১০ বছরে এক হাজার ৭১৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ শতাংশ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। আর ২৮ শতাংশ মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন। অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশ মামলার ফলাফল শূন্য। মাত্র ১৬৭ মামলায় আসামিরা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, কিন্তু একটি রায়ও কার্যকর হয়নি।
এসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা ১০ বছর ধরে কমে আসছে। যেখানে ২০০২ সালে এসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছিল ৩৬৭টি, সেখানে গত বছর ছিল ৮৪টি, আর এ বছর মে মাস পর্যন্ত ২৯টি। এতে বোঝা যায়, এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন, এসিডদগ্ধ নারীদের জন্য প্রথম আলো সহায়ক তহবিল, অন্যান্য উন্নয়ন-সহযোগী সংস্থা ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের তৎপরতা কিছুটা ফলপ্রসূ হচ্ছে। কিন্তু এসিড ছুড়ে মারার একটি ঘটনাও কাম্য নয়। এই জঘন্য অপরাধ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে।
প্রশ্ন হলো, এটা কি সম্ভব? সম্ভব, খুবই সম্ভব। প্রথম কাজ হলো যেখানে, যখনই কেউ এসিড ছুড়ে মারবে, সঙ্গে সঙ্গে সেখানে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসবে। এ ব্যাপারে স্থায়ী আদেশ দেওয়া থাকবে, নতুন করে কোনো আদেশের প্রয়োজন হবে না। প্রধান বিচারপতিকে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা যায়। এসিড-সন্ত্রাসের মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার আওতায়ই বিচার হবে। এর অতিরিক্ত আরও একটি কাজ করতে হবে। ঘটনাস্থলের চারপাশের অন্তত ১০ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে একটানা এক মাস এসিড-সন্ত্রাসবিরোধী প্রচার, সচেতনতা সৃষ্টি, চিহ্নিত অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা, ব্যাপক পোস্টার, প্রচারপত্র বিলি, সমাবেশ-আলোচনা সভা প্রভৃতির আয়োজন করতে হবে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যম ও স্থানীয় সরকার এসব কাজ চালাবে। আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সংক্ষিপ্ত সময়ে বিচার ও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আদালত ফিরে আসবেন না।
আশির দশকে দেশ থেকে গুটিবসন্ত নির্মূল করা হয়েছিল অনেকটা এভাবেই, যদিও সেটা আদালত বসিয়ে করা হয়নি। কৌশলটি ছিল, যেখানেই একজন বসন্ত রোগী পাওয়া গেছে, সঙ্গে সঙ্গে সেখানে চিকিৎসা দল গেছে, তারা চারপাশের কয়েক
বর্গমাইল এলাকার জনসাধারণকে টিকা দিয়ে বসন্ত-প্রতিরোধী করে তুলেছে। ফলে একসময় বাংলাদেশ থেকে বসন্ত নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে।
এসিড-সন্ত্রাসকে বসন্ত রোগের মতো দেখতে হবে এবং সর্বাত্মক অভিযান চালিয়ে তাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে।
প্রায় প্রতিটি ঘটনায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত খুব কম ক্ষেত্রেই সাজা হয়। গত ১০ বছরে এক হাজার ৭১৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯ শতাংশ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। আর ২৮ শতাংশ মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন। অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশ মামলার ফলাফল শূন্য। মাত্র ১৬৭ মামলায় আসামিরা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, কিন্তু একটি রায়ও কার্যকর হয়নি।
এসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা ১০ বছর ধরে কমে আসছে। যেখানে ২০০২ সালে এসিড-সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছিল ৩৬৭টি, সেখানে গত বছর ছিল ৮৪টি, আর এ বছর মে মাস পর্যন্ত ২৯টি। এতে বোঝা যায়, এসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশন, এসিডদগ্ধ নারীদের জন্য প্রথম আলো সহায়ক তহবিল, অন্যান্য উন্নয়ন-সহযোগী সংস্থা ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের তৎপরতা কিছুটা ফলপ্রসূ হচ্ছে। কিন্তু এসিড ছুড়ে মারার একটি ঘটনাও কাম্য নয়। এই জঘন্য অপরাধ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে।
প্রশ্ন হলো, এটা কি সম্ভব? সম্ভব, খুবই সম্ভব। প্রথম কাজ হলো যেখানে, যখনই কেউ এসিড ছুড়ে মারবে, সঙ্গে সঙ্গে সেখানে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসবে। এ ব্যাপারে স্থায়ী আদেশ দেওয়া থাকবে, নতুন করে কোনো আদেশের প্রয়োজন হবে না। প্রধান বিচারপতিকে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা যায়। এসিড-সন্ত্রাসের মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার আওতায়ই বিচার হবে। এর অতিরিক্ত আরও একটি কাজ করতে হবে। ঘটনাস্থলের চারপাশের অন্তত ১০ বর্গমাইল এলাকাজুড়ে একটানা এক মাস এসিড-সন্ত্রাসবিরোধী প্রচার, সচেতনতা সৃষ্টি, চিহ্নিত অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা, ব্যাপক পোস্টার, প্রচারপত্র বিলি, সমাবেশ-আলোচনা সভা প্রভৃতির আয়োজন করতে হবে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যম ও স্থানীয় সরকার এসব কাজ চালাবে। আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সংক্ষিপ্ত সময়ে বিচার ও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আদালত ফিরে আসবেন না।
আশির দশকে দেশ থেকে গুটিবসন্ত নির্মূল করা হয়েছিল অনেকটা এভাবেই, যদিও সেটা আদালত বসিয়ে করা হয়নি। কৌশলটি ছিল, যেখানেই একজন বসন্ত রোগী পাওয়া গেছে, সঙ্গে সঙ্গে সেখানে চিকিৎসা দল গেছে, তারা চারপাশের কয়েক
বর্গমাইল এলাকার জনসাধারণকে টিকা দিয়ে বসন্ত-প্রতিরোধী করে তুলেছে। ফলে একসময় বাংলাদেশ থেকে বসন্ত নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে।
এসিড-সন্ত্রাসকে বসন্ত রোগের মতো দেখতে হবে এবং সর্বাত্মক অভিযান চালিয়ে তাকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে হবে।
No comments