লোকসানে বিপর্যস্ত বিমানকর্তৃপক্ষ কী ভাবছে?
সিনেমা হলগুলোতে মহাসমারোহে চলছে পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা সিনেমা। আর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে মহাসমারোহে চলছে লোকসান। অথচ বিমানকে লোকসানের রানওয়ে থেকে উড়িয়ে লাভের আকাশে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কিছুই ভাবছে না, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।
এ রকম লোকসান চলতে থাকলে কদিন পর এইম ইন লাইফ রচনায় কেউই পাইলট হওয়ার কথা লিখবে না। পাইলট বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের অন্য কিছু হওয়ার কথা পড়তে হবে। যা-ই হোক, পড়াশোনার কথা বাদ দিয়ে এবার পড়ার কথায় আসি। সাধারণত বাংলাদেশের বিমান পড়ে ধানখেতে, কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বিমান এবার পড়েছে কঠিন অবস্থায়। তবে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই বিমানকে লোকসানমুক্ত করা যায়। ট্রেন, লঞ্চ বা বাসের মতো উড়োজাহাজেও স্ট্যান্ডিং টিকিটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে অতিরিক্ত কিছু অর্থের সংস্থান হবে। আর দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা এ দেশের মানুষের কাছে কোনো ঘটনাই না। বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ ভাঙা রাস্তাতে চলার সময় মানুষ বাসেই দাঁড়িয়ে ঘুমায়, আর বিমানে তো কথাই নেই। এ ছাড়া অকেজো বিমানগুলোকে রেস্টুরেন্ট বা ডিজিটাল সিনেমা হল হিসেবে ব্যবহার করা যায়। দেশে প্রেমিক-প্রেমিকাদের নিরিবিলিতে সময় কাটানোর কোনো জায়গা নেই। সুন্দর নদীর ধারে একটা বিমান রেখে দিলে প্রেমিক-প্রেমিকারা নিশ্চিন্তে সময় কাটাতে পারবে। ঢাকার বিভিন্ন রাস্তার ফুটপাতে মানুষ টাকার বিনিময়ে রাত যাপন করে, এ ক্ষেত্রে বিমান ব্যবহার করলে ঘরহীন মানুষ আরও ভালোভাবে রাত কাটাতে পারবে। গর্ব করে বলতে পারবে, ‘আমি বিমানে ঘুমাই।’ তবে লোকসান কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো দেশের বিশেষ কিছু মন্ত্রী-সচিবকে নিয়োগ দেওয়া। এই মন্ত্রী-সচিবদের কাজ হবে বিদেশি যাত্রীদের কাছ থেকে কায়দা করে ১০ শতাংশ কমিশন আদায় করা। এ ক্ষেত্রে কমিশন মাত্র ১০ শতাংশ হলেও এ কাজে মন্ত্রী-সচিবদের সাফল্য আসবে ১০০ ভাগ। বাংলাবাজারের সৃজনশীল গাইড বই বা ফার্মগেটের কোচিং সেন্টারও এত সাফল্য এনে দিতে পারবে বলে মনে হয় না। সবচেয়ে বড় কথা, এতে বিমান লাভবান হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এসব কিছুই ভাবছে না। কর্তৃপক্ষের এই এক সমস্যা। তারা ১০ শতাংশ ঘুষ চায়, কমিশন চায়, বাড়ি-গাড়ি চায় কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে চায় না। তবে আশা করতে কাউকে কমিশন দিতে হয় না। তাই আমাদের আশা, কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
No comments