পবিত্র কোরআনের আলো-মুত্তাকিরা ধৈর্যশীল সত্যাশ্রয়ী, আল্লাহর প্রতি অনুগত ও দানশীল
১৫. ক্বুল আউনাবি্বউকুম বিখাইরিম্ মিন যা-লিকুম; লিল্লাযীনাত্তাক্বাও ই'নদা রাবি্বহিম জান্না-তুন তাজরী মিন তাহ্তিহাল আনহা-রু খা-লিদীনা ফীহা- ওয়াআয্ওয়া-জুম্ মুত্বাহ্হারাতুওঁয়া রিদ্বওয়া-নুম্ মিনাল্লাহি; ওয়াল্লাহু বাসীরুম্ বিলই'বাদ।
১৬. আল্লাযীনা ইয়াক্বুলূনা রাব্বা-না- ইন্নানা- আ-মান্না- ফাগ্ফির লানা- যুনূবানা- ওয়াকি্বনা- আ'যা-বান্না-র।
১৭. আস্সা-বিরীনা ওয়াস্সা-দিক্বীনা ওয়ালক্বা-নিতীনা ওয়ালমুনফিক্বীনা ওয়ালমুছতাগ্ফিরীনা বিলআছহা-র। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫-১৭]
অনুবাদ
১৫. (হে নবী) আপনি বলুন, আমি কি তোমাদেরকে এগুলোর চেয়ে উৎকৃষ্ট কোনো কিছুর কথা বলব? যারা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ হয়_এমন সব লোকের জন্য তাদের প্রভুর কাছে রয়েছে জান্নাত, যার পাদদেশ দিয়ে বয়ে গেছে নদী এবং তারা সেখানে অনন্তকাল থাকবে। তাদের জন্য আরো থাকবে পূত-পবিত্র সঙ্গী ও সঙ্গিনীরা; সর্বোপরি থাকবে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহ তায়ালা নিজ বান্দাদের প্রতি দৃষ্টি রাখেন।
১৬. যারা বলে, হে আমাদের প্রভু, আমরা অবশ্যই তোমার ওপর ইমান এনেছি, অতঃপর আমাদের গুনাহখাতা তুমি মাফ করে দাও এবং শেষ বিচারের দিন তুমি আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচিয়ে রাখো।
১৭. এরা হচ্ছে ধৈর্যশীল এবং সত্যাশ্রয়ী, এরা অনুগত এবং দানশীল। এরা হচ্ছে শেষরাতে অথবা ঊষালগ্নের আগে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।
ব্যাখ্যা
আগের আয়াতে ইহজাগতিক সম্পদরাজি ও ভোগবিলাসের অসারতার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এই আয়াতে পারলৌকিক নিয়ামতগুলোর উৎকৃষ্টতার প্রসঙ্গ আলোচিত হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুলকে বলছেন, আপনি লোকদের বলুন, তারা ইহজাগতিক ভোগবিলাস ও সম্পদরাজির চেয়ে উৎকৃষ্ট কোনো কিছুর কথা আপনার কাছ থেকে শুনতে চায় কি না? আগের আয়াতেও উৎকৃষ্ট কিছুর কথা শোনানো হয়েছে, তবে সেটা অতি উঁচু মাত্রার_সেটা হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য ও আত্মার পরম শান্তির বিষয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ আরো বস্তুনিষ্ঠ কিছু শুনতে চায়। তাদের জন্য এখানে আল্লাহ তায়ালা উৎকৃষ্ট নিয়ামতগুলোর বার্তা পাঠিয়েছেন। তাদের পরকালে জান্নাতের খবর দেওয়া হয়েছে, যার পাদদেশ দিয়ে নদী বয়ে গেছে, সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে। সেখানে তাদের জন্য পূত-পবিত্র সঙ্গী ও সঙ্গিনীরা রয়েছে। সর্বোপরি সেখানে থাকবে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহর সন্তুষ্টিই আসলে সব প্রাপ্তির মূল কথা।
এসব আয়াতে যেসব নিয়ামত দান করার কথা বলা হয়েছে, তা দেওয়া হবে মুত্তাকি বা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ মানুষদের। ১৬ ও ১৭ নম্বর আয়াতে মুত্তাকি বা দায়িত্বনিষ্ঠদের কিছু গুণাবলির কথা বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমত মুত্তাকি তারা, যারা সর্বান্তঃকরণে বলে, 'হে আমাদের প্রভু, আমরা তোমার ওপর ইমান এনেছি, অতঃপর আমাদের গুনাহখাতা তুমি মাফ করে দাও, তুমি আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।' এখানে প্রথমেই এসেছে ইমানের কথা, ইমান ছাড়া কোনো কিছুই গ্রহণযোগ্য নয়। ক্ষমার জন্য ইমান শর্ত। সুতরাং আগে ইমান, পরে ক্ষমা। এরপর আসে জাহান্নামের আগুন থেকে রেহাই পাওয়ার প্রশ্ন। এরপর ১৭ নম্বর আয়াতে মুত্তাকি বা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠদের আরো কয়েকটি গুণাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। গুণগুলো স্পষ্ট ভাষায়ই বলা হয়েছে। এরা হবে ধৈর্যশীল, সত্যাশ্রয়ী, আল্লাহর প্রতি অনুগত এবং দানশীল। আর এদের বিশেষ একটি গুণ হলো, এরা শেষ রাতে অথবা ঊষালগ্নের আগে ক্ষমা প্রার্থনাকারী। অর্থাৎ এই সময়ে উঠে ইবাদত করা বেশ কষ্টসাধ্য, অথচ এ কাজটি তারা করে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১৭. আস্সা-বিরীনা ওয়াস্সা-দিক্বীনা ওয়ালক্বা-নিতীনা ওয়ালমুনফিক্বীনা ওয়ালমুছতাগ্ফিরীনা বিলআছহা-র। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫-১৭]
অনুবাদ
১৫. (হে নবী) আপনি বলুন, আমি কি তোমাদেরকে এগুলোর চেয়ে উৎকৃষ্ট কোনো কিছুর কথা বলব? যারা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ হয়_এমন সব লোকের জন্য তাদের প্রভুর কাছে রয়েছে জান্নাত, যার পাদদেশ দিয়ে বয়ে গেছে নদী এবং তারা সেখানে অনন্তকাল থাকবে। তাদের জন্য আরো থাকবে পূত-পবিত্র সঙ্গী ও সঙ্গিনীরা; সর্বোপরি থাকবে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহ তায়ালা নিজ বান্দাদের প্রতি দৃষ্টি রাখেন।
১৬. যারা বলে, হে আমাদের প্রভু, আমরা অবশ্যই তোমার ওপর ইমান এনেছি, অতঃপর আমাদের গুনাহখাতা তুমি মাফ করে দাও এবং শেষ বিচারের দিন তুমি আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচিয়ে রাখো।
১৭. এরা হচ্ছে ধৈর্যশীল এবং সত্যাশ্রয়ী, এরা অনুগত এবং দানশীল। এরা হচ্ছে শেষরাতে অথবা ঊষালগ্নের আগে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।
ব্যাখ্যা
আগের আয়াতে ইহজাগতিক সম্পদরাজি ও ভোগবিলাসের অসারতার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এই আয়াতে পারলৌকিক নিয়ামতগুলোর উৎকৃষ্টতার প্রসঙ্গ আলোচিত হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুলকে বলছেন, আপনি লোকদের বলুন, তারা ইহজাগতিক ভোগবিলাস ও সম্পদরাজির চেয়ে উৎকৃষ্ট কোনো কিছুর কথা আপনার কাছ থেকে শুনতে চায় কি না? আগের আয়াতেও উৎকৃষ্ট কিছুর কথা শোনানো হয়েছে, তবে সেটা অতি উঁচু মাত্রার_সেটা হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য ও আত্মার পরম শান্তির বিষয়। কিন্তু সাধারণ মানুষ আরো বস্তুনিষ্ঠ কিছু শুনতে চায়। তাদের জন্য এখানে আল্লাহ তায়ালা উৎকৃষ্ট নিয়ামতগুলোর বার্তা পাঠিয়েছেন। তাদের পরকালে জান্নাতের খবর দেওয়া হয়েছে, যার পাদদেশ দিয়ে নদী বয়ে গেছে, সেখানে তারা অনন্তকাল থাকবে। সেখানে তাদের জন্য পূত-পবিত্র সঙ্গী ও সঙ্গিনীরা রয়েছে। সর্বোপরি সেখানে থাকবে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহর সন্তুষ্টিই আসলে সব প্রাপ্তির মূল কথা।
এসব আয়াতে যেসব নিয়ামত দান করার কথা বলা হয়েছে, তা দেওয়া হবে মুত্তাকি বা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ মানুষদের। ১৬ ও ১৭ নম্বর আয়াতে মুত্তাকি বা দায়িত্বনিষ্ঠদের কিছু গুণাবলির কথা বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমত মুত্তাকি তারা, যারা সর্বান্তঃকরণে বলে, 'হে আমাদের প্রভু, আমরা তোমার ওপর ইমান এনেছি, অতঃপর আমাদের গুনাহখাতা তুমি মাফ করে দাও, তুমি আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।' এখানে প্রথমেই এসেছে ইমানের কথা, ইমান ছাড়া কোনো কিছুই গ্রহণযোগ্য নয়। ক্ষমার জন্য ইমান শর্ত। সুতরাং আগে ইমান, পরে ক্ষমা। এরপর আসে জাহান্নামের আগুন থেকে রেহাই পাওয়ার প্রশ্ন। এরপর ১৭ নম্বর আয়াতে মুত্তাকি বা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠদের আরো কয়েকটি গুণাবলি বর্ণনা করা হয়েছে। গুণগুলো স্পষ্ট ভাষায়ই বলা হয়েছে। এরা হবে ধৈর্যশীল, সত্যাশ্রয়ী, আল্লাহর প্রতি অনুগত এবং দানশীল। আর এদের বিশেষ একটি গুণ হলো, এরা শেষ রাতে অথবা ঊষালগ্নের আগে ক্ষমা প্রার্থনাকারী। অর্থাৎ এই সময়ে উঠে ইবাদত করা বেশ কষ্টসাধ্য, অথচ এ কাজটি তারা করে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments