ক্ষমতার দায় by আসিফ আহমেদ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায়, জোটসঙ্গী হিসেবে রয়েছে সোনিয়া গান্ধী পরিচালিত কংগ্রেস দল। আগামীকাল মঙ্গলবার এ রাজ্যে ধর্মঘট আহ্বান করেছে কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়ন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস কড়া হুকুম জারি করেছে_ ধর্মঘটের দিনে অফিসে থাকতেই হবে।
আর এ কারণে সোমবার ছুটির পরেও অফিস ছাড়বেন না সরকারি কর্মীদের একাংশ। ধর্মঘটের দিন 'অনুপস্থিতি' এড়াতেই এমন কষ্ট সহ্য। রাজ্য সরকার বলেছে, ধর্মঘটের দিন অফিসে গরহাজির হলে সার্ভিস রেকর্ডে ছেদ পড়তে পারে। আটকে যেতে পারে পদোন্নতিও।
ধর্মঘট ব্যর্থ করতে মহাকরণ থেকে বল্গক স্তর পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন অফিসে আগের রাতে কর্মীদের রেখে দেওয়ার মূল উদ্যোক্তা তৃণমূলের বিভিন্ন কর্মী সংগঠন। এদিন স্কুল-কলেজ 'সচল' রাখতে শিক্ষকদেরও প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি কোথাও রেখে দেওয়ার উদ্যোগ চলছে। শিক্ষার্থীদেরও রেখে দিলে কিন্তু মন্দ হয় না। তারা হৈচৈ করে কাটিয়ে দেবে একটি রাত। রোববার আনন্দবাজার লিখেছে, নতুন সরকারের আমলে এটাই প্রথম ধর্মঘটের ডাক। প্রায় সাড়ে তিন দশকের বাম জমানায় ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ডাকে এমন ধর্মঘট সরকারি মদদে পুরোপুরি হরতাল বা বন্ধের চেহারা নিত। অফিসে না এলে শাস্তির ভয় ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, রাজ্যকে অচল করে দেওয়ার সংস্কৃতির আর নয়। 'সার্ভিস রুল' অনুযায়ী সরকারি কর্মীদের তাদের অফিস থেকে ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করার কথা বলা হয়েছে। কর্মীদের আশঙ্কা, যানবাহন চলাচল করেনি, এই কারণ দেখিয়ে কেউ অফিসে না এলে তার বিরুদ্ধে ওই বিধি মেনে ব্যবস্থা নিতে পারে সরকার। অতএব, অফিসে না থাকলে ৮ কিলোমিটার হাঁটার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
অতএব, কোনো ঝুঁকি নিতে নারাজ ধর্মঘটের বিরোধীরা। অফিস থেকে কোন কর্মী, কত দূরে বসবাস করেন, তাদের মধ্যে কতজন পুরুষ ও মহিলা, তার হিসাব-নিকাশ চলছে। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের নানা রকম নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অফিসের কাছাকাছি আত্মীয় বা বন্ধুর বাড়িতে থেকে যাওয়া। কলকাতার লোকদের বলা হয়েছে, মেট্রো ধরে অফিসে আসুন। বাকিদের অফিসেই রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।
সরকারি হাসপাতালে আগের দিন রাতেই কর্মীদের থাকা-খাওয়ার আয়োজন চলছে। একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ১৫০ টাকা করে চাঁদা তুলছেন পিকনিক করার জন্য। এমন ব্যবস্থা হচ্ছে আরও অনেক সরকারি অফিসেই। কোথাও রান্না হবে গেস্ট হাউসে। কোথাও হাসপাতালের ক্যান্টিন থেকে খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বিধাননগরে সব ক'টি সরকারি অফিসেই রাতে থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে। সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর সচল রাখতে ব্যাপক সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।
ধর্মঘট আহ্বানকারী কো-অর্ডিনেশন কমিটির দাবি, রাজ্যের মোট ৪ লাখ সরকারি কর্মীর মধ্যে ৯০% রয়েছে তাদের সঙ্গে। তারা বলেন, সার্ভিস রুলে কর্মীদের ধর্মঘট করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তা সংশোধন না করে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না।
আশির দশকে বাংলাদেশের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে হরতালের দিনে অফিসার ও কর্মীদের প্রতি এ ধরনের নোটিশ যেত_ অনুপস্থিত থাকা চলবে না। প্রথম প্রথম অনেকে সরকারি হুমকিকে আমলে নিত। তারা অফিসে মশার কামড় খেয়ে রাত কাটিয়েছে। সরকার থেকে খাওয়ার ব্যবস্থাও হয়েছে। এ সুযোগে অনেকে টু পাইস কামিয়ে নিয়েছে। হরতালের প্রকোপ বাড়তে থাকায় ক্রমে শিথিলতা আসে। এখন আর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা সরকার জারি করে না। হরতাল হয়ে পড়েছে অতিশয় ঢিলেঢালা। অফিসে হাজির না হয়েও কেউ সই করলে বোধকরি সমস্যা হয় না। তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী দলে থাকাকালে হরতাল-ধর্মঘট করেছে। এর বিরুদ্ধে আদালতের রায় থাকার তোয়াক্কাও তারা করতে চায়নি। এখন অবশ্য রয়েছে ক্ষমতার দায়, যা বাংলাদেশসহ সর্বত্রই কমবেশি অভিন্ন। এখন দেখার অপেক্ষা_ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় রাতের পিকনিক কেমন জমে।
ধর্মঘট ব্যর্থ করতে মহাকরণ থেকে বল্গক স্তর পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন অফিসে আগের রাতে কর্মীদের রেখে দেওয়ার মূল উদ্যোক্তা তৃণমূলের বিভিন্ন কর্মী সংগঠন। এদিন স্কুল-কলেজ 'সচল' রাখতে শিক্ষকদেরও প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি কোথাও রেখে দেওয়ার উদ্যোগ চলছে। শিক্ষার্থীদেরও রেখে দিলে কিন্তু মন্দ হয় না। তারা হৈচৈ করে কাটিয়ে দেবে একটি রাত। রোববার আনন্দবাজার লিখেছে, নতুন সরকারের আমলে এটাই প্রথম ধর্মঘটের ডাক। প্রায় সাড়ে তিন দশকের বাম জমানায় ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ডাকে এমন ধর্মঘট সরকারি মদদে পুরোপুরি হরতাল বা বন্ধের চেহারা নিত। অফিসে না এলে শাস্তির ভয় ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা, রাজ্যকে অচল করে দেওয়ার সংস্কৃতির আর নয়। 'সার্ভিস রুল' অনুযায়ী সরকারি কর্মীদের তাদের অফিস থেকে ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করার কথা বলা হয়েছে। কর্মীদের আশঙ্কা, যানবাহন চলাচল করেনি, এই কারণ দেখিয়ে কেউ অফিসে না এলে তার বিরুদ্ধে ওই বিধি মেনে ব্যবস্থা নিতে পারে সরকার। অতএব, অফিসে না থাকলে ৮ কিলোমিটার হাঁটার জন্য প্রস্তুত থাকুন।
অতএব, কোনো ঝুঁকি নিতে নারাজ ধর্মঘটের বিরোধীরা। অফিস থেকে কোন কর্মী, কত দূরে বসবাস করেন, তাদের মধ্যে কতজন পুরুষ ও মহিলা, তার হিসাব-নিকাশ চলছে। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের নানা রকম নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অফিসের কাছাকাছি আত্মীয় বা বন্ধুর বাড়িতে থেকে যাওয়া। কলকাতার লোকদের বলা হয়েছে, মেট্রো ধরে অফিসে আসুন। বাকিদের অফিসেই রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে।
সরকারি হাসপাতালে আগের দিন রাতেই কর্মীদের থাকা-খাওয়ার আয়োজন চলছে। একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ১৫০ টাকা করে চাঁদা তুলছেন পিকনিক করার জন্য। এমন ব্যবস্থা হচ্ছে আরও অনেক সরকারি অফিসেই। কোথাও রান্না হবে গেস্ট হাউসে। কোথাও হাসপাতালের ক্যান্টিন থেকে খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বিধাননগরে সব ক'টি সরকারি অফিসেই রাতে থাকার ব্যবস্থা হচ্ছে। সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর সচল রাখতে ব্যাপক সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে।
ধর্মঘট আহ্বানকারী কো-অর্ডিনেশন কমিটির দাবি, রাজ্যের মোট ৪ লাখ সরকারি কর্মীর মধ্যে ৯০% রয়েছে তাদের সঙ্গে। তারা বলেন, সার্ভিস রুলে কর্মীদের ধর্মঘট করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। তা সংশোধন না করে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না।
আশির দশকে বাংলাদেশের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে হরতালের দিনে অফিসার ও কর্মীদের প্রতি এ ধরনের নোটিশ যেত_ অনুপস্থিত থাকা চলবে না। প্রথম প্রথম অনেকে সরকারি হুমকিকে আমলে নিত। তারা অফিসে মশার কামড় খেয়ে রাত কাটিয়েছে। সরকার থেকে খাওয়ার ব্যবস্থাও হয়েছে। এ সুযোগে অনেকে টু পাইস কামিয়ে নিয়েছে। হরতালের প্রকোপ বাড়তে থাকায় ক্রমে শিথিলতা আসে। এখন আর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা সরকার জারি করে না। হরতাল হয়ে পড়েছে অতিশয় ঢিলেঢালা। অফিসে হাজির না হয়েও কেউ সই করলে বোধকরি সমস্যা হয় না। তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী দলে থাকাকালে হরতাল-ধর্মঘট করেছে। এর বিরুদ্ধে আদালতের রায় থাকার তোয়াক্কাও তারা করতে চায়নি। এখন অবশ্য রয়েছে ক্ষমতার দায়, যা বাংলাদেশসহ সর্বত্রই কমবেশি অভিন্ন। এখন দেখার অপেক্ষা_ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় রাতের পিকনিক কেমন জমে।
No comments