ধর্ম-অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে রোজা by মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান
সমাজে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে রোজার ভূমিকা অপরিসীম। বিপদ-আপদ, দুঃখ-কষ্ট ও ক্ষুধা-তৃষ্ণায় পতিত না হলে ক্ষুৎপিপাসার মর্মজ্বালা ও যন্ত্রণা উপলব্ধি করা যায় না। সমাজের বিত্তশালী ও ধনী লোকেরা ক্ষুধা-তৃষ্ণার জ্বালা তেমন অনুভব করতে পারেন না বিধায় অসহায় গরিব-দুঃখীদের দুঃখ-দুর্দশা বুঝতে চেষ্টা করেন না।
কিন্তু ধনী লোকেরা যখন রমজান মাসে রোজা রাখেন, তখন তাঁরা স্বভাবতই সমাজের গরিব-দুঃখীদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হন এবং তাদের আর্থিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে চরম ক্ষুধা, অভাব ও দারিদ্র্য বিমোচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসেন।
রমজান মাসে রোজাদার বিত্তবান লোকেরা বেশি বেশি দান-খয়রাত, সাদকা, জাকাত ও রোজার ফিতরা দ্বারা গরিব-দুঃখী ও অভাবী নিঃসম্বল ব্যক্তিদের যাঁর যাঁর সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য-সহযোগিতা করেন। মাহে রমজানে ধনী ব্যক্তিরা উপলব্ধি করেন যে, তাঁদের অর্থসম্পদে গরিব-দুঃখীদের নির্দিষ্ট অংশ বা প্রাপ্য আছে। কেননা, জনজীবনে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ এবং সম্পদের ভারসাম্য স্থাপন সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তাদের (ধনীদের) সম্পদে অবশ্যই গরিব ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।’ (সূরা আল-যারিআত, আয়াত-১৯)
মাহে রমজানে গরিব-দুঃখীদের প্রতি সম্পদশালীদের প্রচণ্ড সহানুভূতি জাগে এবং ব্যাপকভাবে দানের হাত সম্প্রসারিত হয়। এমনিভাবে রোজাদার ধনী ব্যক্তি রমজান মাসে জাকাত প্রদান এবং মুক্তহস্তে দান-খয়রাত ও সাদকা আদায় করে সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য আনতে পারেন। ফলে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য অনেকটা দূরীভূত হয়।
রমজান মাসে ব্যবসা-বাণিজ্যে এক বিস্ময়কর উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা যায়। মাহে রমজান শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই রোজাদারদের চাহিদামোতাবেক বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন এবং পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে আমদানি শুরু হয়ে যায়। মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতরকে উপলক্ষ করে বেচাকেনার জন্য পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে সব ধরনের ভোগ্যপণ্য ও দ্রব্যসামগ্রীর নতুন নতুন ডিজাইন উদ্ভাবনে অঘোষিত প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। ব্যবসায়ীরা অন্যান্য সময়ের চেয়ে প্রবল আগ্রহ ও উৎসাহ-উদ্দীপনাসহকারে এগুলো সাধারণ মানুষের নাগালে পৌঁছে দেন। ফলে তাঁরাও প্রচুর লাভবান হন।
মাহে রমজান আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি ও কৃচ্ছ্র বা সিয়াম সাধনের মাস। কোনোভাবেই ভোগ বা মুনাফা অর্জনের মাস নয়। অথচ মাহে রমজানকে কেউ কেউ ব্যবসার মাস বলে গণ্য করেন। হালাল পন্থায় ঈমান ও ইহসানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করা ইবাদতের শামিল। হালাল উপায়ে আয়-উপার্জনের সঠিক পন্থা হলো পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে অর্থনৈতিক লেনদেন বা ব্যবসা-বাণিজ্য করা। কিন্তু বাতিল পন্থায় আয়-উপার্জন করা হারাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না। তবে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করা যেতে পারে।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত- ২৯)
অথচ সমাজে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী রমজান মাসের আগমনে রোজাদারদের কেনাকাটার চাহিদা লক্ষ করে বাজারে খাদ্য ও পণ্যদ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দেন। অধিক হারে মুনাফালাভের জন্য তাঁরা রোজাদারদের আর্থিক কষ্ট দেন। এটা ঘোরতর অন্যায়, মুসলমানের জন্য হারাম তথা শরিয়তগর্হিত। এটা মাহে রমজানের পবিত্রতা, কৃচ্ছ্রসাধনা ও অর্থনৈতিক শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কিছু মুসলিম দেশে পণ্যসামগ্রীতে ভর্তুকি দিয়ে মাহে রমজানে তা হ্রাসকৃত মূল্যে বিক্রি করা হয় এবং সেখানকার নীতিবান ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য থাকে সঠিক মূল্যে রোজাদারের হাতে নির্ভেজাল পণ্যটি সরবরাহ করা, কিন্তু আমাদের দেশের নগরগুলোয় এর উল্টোটি করা হয়। এই মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘পাপী ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দুষ্প্রাপ্যতার সময় গুদামজাত করে না।’ (মুসলিম)
অন্যদিকে মাহে রমজানের শুরুতেই বাজারে জিনিসপত্রের চাহিদা স্ব্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় সারা দেশে ভেজাল পণ্যের অবাধ বাণিজ্য চলে। কতিপয় সুচতুর ব্যবসায়ী এ সময় আসল পণ্যের সঙ্গে ভেজাল মেশানো ছাড়াও অনেক সময় ভেজাল পণ্যকে আসল পণ্য বলে চালিয়ে দেন। এতে প্রতারিত হন ক্রেতাসাধারণ। ভেজাল ব্যবসায়ীরা ইসলামি আদর্শের গণ্ডিবহির্ভূত। নবী করিম (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘যে প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম)
যখন রমজান মাস শুরু হয়, তখনই মুনাফাখোর ও মজুদদার অশুভ চক্রটি তৎপর হয়ে পড়ে। এতে জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এসব দুষ্টচক্রের ফাঁদে পড়ে রোজাদার মানুষকে চরম আর্থিক দুর্ভোগ পোহাত্রেহয়। তাই মাহে রমজানের সংযম পণ্যমূল্যে প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে অধিক মুনাফা অর্জনের নোংরা মানসিকতা পরিহার করে রোজাদারদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী সমাজের দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা উচিত। সেই সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং সরকার কিছু পণ্যসামগ্রীতে ভর্তুকি ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী মনিটরিং-ব্যবস্থা প্রবর্তন করলে রোজাদারদের দুর্দশা ও কষ্ট লাঘব হতে পারে।
বর্তমান সমাজব্যবস্থায় ধনী-দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য আকাশ-পাতাল। মাহে রমজানে এ অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি সাধিত হয়। অত্যধিক সওয়াব প্রাপ্তির আশায় রমজান মাসে ধনী ব্যবসায়ী ঈমানদার ব্যক্তি এমনকি অতিশয় কৃপণ লোকের মধ্যেও কিছু দান-খয়রাত ও সাদকার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এতে মাহে রমজান উপলক্ষে গরিব-দুঃখীদের মধ্যে অর্থসমাগম বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থাকে ঠিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য বলা যায় না, কিন্তু অবস্থা আগের চেয়ে একটু উন্নত হয়। ধনী-দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য কিছুটা হলেও দূরীভূত হয়। আসুন, আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির মাহে রমজানে বাহুল্য খরচে লিপ্ত না হয়ে সংযমী হই এবং সীমিত আয়ের দরিদ্র মানুষের প্রতি আর্থিকভাবে সহমর্মিতা প্রকাশ করি।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
ফৎ.munimkhan@yahoo.com
রমজান মাসে রোজাদার বিত্তবান লোকেরা বেশি বেশি দান-খয়রাত, সাদকা, জাকাত ও রোজার ফিতরা দ্বারা গরিব-দুঃখী ও অভাবী নিঃসম্বল ব্যক্তিদের যাঁর যাঁর সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য-সহযোগিতা করেন। মাহে রমজানে ধনী ব্যক্তিরা উপলব্ধি করেন যে, তাঁদের অর্থসম্পদে গরিব-দুঃখীদের নির্দিষ্ট অংশ বা প্রাপ্য আছে। কেননা, জনজীবনে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ এবং সম্পদের ভারসাম্য স্থাপন সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তাদের (ধনীদের) সম্পদে অবশ্যই গরিব ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।’ (সূরা আল-যারিআত, আয়াত-১৯)
মাহে রমজানে গরিব-দুঃখীদের প্রতি সম্পদশালীদের প্রচণ্ড সহানুভূতি জাগে এবং ব্যাপকভাবে দানের হাত সম্প্রসারিত হয়। এমনিভাবে রোজাদার ধনী ব্যক্তি রমজান মাসে জাকাত প্রদান এবং মুক্তহস্তে দান-খয়রাত ও সাদকা আদায় করে সমাজে অর্থনৈতিক ভারসাম্য আনতে পারেন। ফলে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য অনেকটা দূরীভূত হয়।
রমজান মাসে ব্যবসা-বাণিজ্যে এক বিস্ময়কর উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা যায়। মাহে রমজান শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই রোজাদারদের চাহিদামোতাবেক বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন এবং পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে আমদানি শুরু হয়ে যায়। মাহে রমজান ও ঈদুল ফিতরকে উপলক্ষ করে বেচাকেনার জন্য পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে সব ধরনের ভোগ্যপণ্য ও দ্রব্যসামগ্রীর নতুন নতুন ডিজাইন উদ্ভাবনে অঘোষিত প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। ব্যবসায়ীরা অন্যান্য সময়ের চেয়ে প্রবল আগ্রহ ও উৎসাহ-উদ্দীপনাসহকারে এগুলো সাধারণ মানুষের নাগালে পৌঁছে দেন। ফলে তাঁরাও প্রচুর লাভবান হন।
মাহে রমজান আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি ও কৃচ্ছ্র বা সিয়াম সাধনের মাস। কোনোভাবেই ভোগ বা মুনাফা অর্জনের মাস নয়। অথচ মাহে রমজানকে কেউ কেউ ব্যবসার মাস বলে গণ্য করেন। হালাল পন্থায় ঈমান ও ইহসানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করা ইবাদতের শামিল। হালাল উপায়ে আয়-উপার্জনের সঠিক পন্থা হলো পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে অর্থনৈতিক লেনদেন বা ব্যবসা-বাণিজ্য করা। কিন্তু বাতিল পন্থায় আয়-উপার্জন করা হারাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না। তবে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করা যেতে পারে।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত- ২৯)
অথচ সমাজে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী রমজান মাসের আগমনে রোজাদারদের কেনাকাটার চাহিদা লক্ষ করে বাজারে খাদ্য ও পণ্যদ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দেন। অধিক হারে মুনাফালাভের জন্য তাঁরা রোজাদারদের আর্থিক কষ্ট দেন। এটা ঘোরতর অন্যায়, মুসলমানের জন্য হারাম তথা শরিয়তগর্হিত। এটা মাহে রমজানের পবিত্রতা, কৃচ্ছ্রসাধনা ও অর্থনৈতিক শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কিছু মুসলিম দেশে পণ্যসামগ্রীতে ভর্তুকি দিয়ে মাহে রমজানে তা হ্রাসকৃত মূল্যে বিক্রি করা হয় এবং সেখানকার নীতিবান ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য থাকে সঠিক মূল্যে রোজাদারের হাতে নির্ভেজাল পণ্যটি সরবরাহ করা, কিন্তু আমাদের দেশের নগরগুলোয় এর উল্টোটি করা হয়। এই মর্মে রাসুলুল্লাহ (সা.) সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘পাপী ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দুষ্প্রাপ্যতার সময় গুদামজাত করে না।’ (মুসলিম)
অন্যদিকে মাহে রমজানের শুরুতেই বাজারে জিনিসপত্রের চাহিদা স্ব্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় সারা দেশে ভেজাল পণ্যের অবাধ বাণিজ্য চলে। কতিপয় সুচতুর ব্যবসায়ী এ সময় আসল পণ্যের সঙ্গে ভেজাল মেশানো ছাড়াও অনেক সময় ভেজাল পণ্যকে আসল পণ্য বলে চালিয়ে দেন। এতে প্রতারিত হন ক্রেতাসাধারণ। ভেজাল ব্যবসায়ীরা ইসলামি আদর্শের গণ্ডিবহির্ভূত। নবী করিম (সা.) ঘোষণা করেছেন, ‘যে প্রতারণা করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’ (মুসলিম)
যখন রমজান মাস শুরু হয়, তখনই মুনাফাখোর ও মজুদদার অশুভ চক্রটি তৎপর হয়ে পড়ে। এতে জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এসব দুষ্টচক্রের ফাঁদে পড়ে রোজাদার মানুষকে চরম আর্থিক দুর্ভোগ পোহাত্রেহয়। তাই মাহে রমজানের সংযম পণ্যমূল্যে প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে অধিক মুনাফা অর্জনের নোংরা মানসিকতা পরিহার করে রোজাদারদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী সমাজের দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা উচিত। সেই সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর পর্যাপ্ত সরবরাহ এবং সরকার কিছু পণ্যসামগ্রীতে ভর্তুকি ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী মনিটরিং-ব্যবস্থা প্রবর্তন করলে রোজাদারদের দুর্দশা ও কষ্ট লাঘব হতে পারে।
বর্তমান সমাজব্যবস্থায় ধনী-দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য আকাশ-পাতাল। মাহে রমজানে এ অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি সাধিত হয়। অত্যধিক সওয়াব প্রাপ্তির আশায় রমজান মাসে ধনী ব্যবসায়ী ঈমানদার ব্যক্তি এমনকি অতিশয় কৃপণ লোকের মধ্যেও কিছু দান-খয়রাত ও সাদকার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এতে মাহে রমজান উপলক্ষে গরিব-দুঃখীদের মধ্যে অর্থসমাগম বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থাকে ঠিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য বলা যায় না, কিন্তু অবস্থা আগের চেয়ে একটু উন্নত হয়। ধনী-দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য কিছুটা হলেও দূরীভূত হয়। আসুন, আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির মাহে রমজানে বাহুল্য খরচে লিপ্ত না হয়ে সংযমী হই এবং সীমিত আয়ের দরিদ্র মানুষের প্রতি আর্থিকভাবে সহমর্মিতা প্রকাশ করি।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
ফৎ.munimkhan@yahoo.com
No comments