সরকারি শিথিলতাই প্রতারণার হাতিয়ার-প্রতারকদের হাতে জনশক্তি রপ্তানি
বেশির ভাগ রিক্রুটিং এজেন্সি যে গরিব মারার কারখানায় পরিণত হয়েছে, এ বিষয়ে আর সন্দেহের সুযোগ নেই। সম্প্রতি জাপানে শ্রমিক পাঠানোর নামে শত শত গরিব ভাগ্যান্বেষী মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির নাম এসেছে, এমনকি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বায়রার সভাপতির এজেন্সিও নেমেছে পালের গোদার ভূমিকায়।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং অ্যান্ড কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (জিটকো) নামে অজস্র মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা নেওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে গতকাল শনিবারের প্রথম আলোয়। জাপান সরকারের অধীনে দক্ষ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কর্মীদের প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়ার কথা। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো কিছুই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তা ছাড়া যে কেউ চাইলেই এই সুযোগ পাবেন না। টাকা দিয়ে বা রিক্রুটিং এজেন্সির যোগাযোগে সুবিধা করার কোনো সুযোগও এখানে নেই। সব জেনেশুনে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো এই প্রতারণা করে যাচ্ছে। এতে একদিকে যেমন অজস্র সাধারণ মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে জাপান সরকারের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও খারাপ হচ্ছে। সম্প্রতি এক ভুয়া রবীন্দ্রগবেষকের অভিনব প্রতারণার কারণে জাপানে বাংলাদেশের ভাবমূূর্তি দারুণভাবে নষ্ট হয়।
গরিব দেশে গরিবদের প্রতারণা করে টাকা করা যে কত সহজ, তা প্রমাণ করে চলেছে জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। একদল প্রবাসে কাজ করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সামান্য সম্বল বেচে আদম ব্যাপারিদের দ্বারস্থ হন, তাঁদের এই টাকায় প্রতারক এজেন্সি ও তাদের দালালেরা দিনে দিনে ধনী হয়ে ওঠে। এসব ঘটনায় যথারীতি সরকারের জনশক্তি রপ্তানি তদারকি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারেরা ‘প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে হম্বিতম্বি করেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। লাভের ভাগ সবাই নেবেন, কিন্তু প্রতারকদের দায় কেউ নেবেন না, তা হয় না। আর যেখানে খোদ বায়রার সভাপতির নাম এসেছে, সেখানে প্রতিকার তো দূরের কথা, ঠগ বাছতেই গা উজাড় হওয়ার জোগাড়।
রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সর্বদাই দালালদের দোহাই দিয়ে পার পেতে চায় এবং সরকারও পার পেতে দেয়। সম্প্রতি নতুন অভিবাসন আইনের খসড়া প্রণীত হয়েছে। আইনে দালালদের নিবন্ধন নম্বর ও পরিচয়পত্র দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে। তা করা গেলে কে কোন এজেন্সির দালাল, কত নম্বরের দালালের কাছে টাকা দেওয়া হয়েছে, তা চিহ্নিত করা সহজ হবে। সরকার চাইলে পারে, কিন্তু অন্য সব ক্ষেত্রের মতো এ ক্ষেত্রেও সরকারের উদাসীনতার খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। মন্ত্রণালয়সহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এ ক্ষেত্রে সক্রিয় রয়েছে। কারা কীভাবে প্রতারণা করে, তা তাঁদের জানার কথা। বিভিন্ন সময় প্রতারণার সঙ্গে জড়িত একাধিক প্রতিষ্ঠানের নামও প্রকাশিত হয়েছে। এদের ধরে বিচারের মুখোমুখি করা কি কঠিন কিছু? রিক্রুটিং এজেন্সির দৌরাত্ম্য এবং সরকারের দায়হীনতা দুটোই অপরাধ। এসব অপরাধের প্রতিকার হোক।
গরিব দেশে গরিবদের প্রতারণা করে টাকা করা যে কত সহজ, তা প্রমাণ করে চলেছে জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। একদল প্রবাসে কাজ করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সামান্য সম্বল বেচে আদম ব্যাপারিদের দ্বারস্থ হন, তাঁদের এই টাকায় প্রতারক এজেন্সি ও তাদের দালালেরা দিনে দিনে ধনী হয়ে ওঠে। এসব ঘটনায় যথারীতি সরকারের জনশক্তি রপ্তানি তদারকি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারেরা ‘প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে হম্বিতম্বি করেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। লাভের ভাগ সবাই নেবেন, কিন্তু প্রতারকদের দায় কেউ নেবেন না, তা হয় না। আর যেখানে খোদ বায়রার সভাপতির নাম এসেছে, সেখানে প্রতিকার তো দূরের কথা, ঠগ বাছতেই গা উজাড় হওয়ার জোগাড়।
রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো সর্বদাই দালালদের দোহাই দিয়ে পার পেতে চায় এবং সরকারও পার পেতে দেয়। সম্প্রতি নতুন অভিবাসন আইনের খসড়া প্রণীত হয়েছে। আইনে দালালদের নিবন্ধন নম্বর ও পরিচয়পত্র দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে। তা করা গেলে কে কোন এজেন্সির দালাল, কত নম্বরের দালালের কাছে টাকা দেওয়া হয়েছে, তা চিহ্নিত করা সহজ হবে। সরকার চাইলে পারে, কিন্তু অন্য সব ক্ষেত্রের মতো এ ক্ষেত্রেও সরকারের উদাসীনতার খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। মন্ত্রণালয়সহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এ ক্ষেত্রে সক্রিয় রয়েছে। কারা কীভাবে প্রতারণা করে, তা তাঁদের জানার কথা। বিভিন্ন সময় প্রতারণার সঙ্গে জড়িত একাধিক প্রতিষ্ঠানের নামও প্রকাশিত হয়েছে। এদের ধরে বিচারের মুখোমুখি করা কি কঠিন কিছু? রিক্রুটিং এজেন্সির দৌরাত্ম্য এবং সরকারের দায়হীনতা দুটোই অপরাধ। এসব অপরাধের প্রতিকার হোক।
No comments