বইয়ের মেলা প্রাণের মেলা-মেলা হবে শুধুই প্রকাশকদের by মাসুম আলী
মেলার শেষ পর্যায়ে এসে আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন হলো গতকাল। একাডেমীর পক্ষ থেকে বলা হলো, আগামী বছর মেলা হবে শুধু প্রকাশকদের। বারবার এই একই প্রসঙ্গ এল আলোচনায়। মহাপরিচালক কথা দিলেন, আগামী বছর থেকে আর কোনো সংগঠন নয়, শুধুই প্রকাশকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে অমর একুশে গ্রন্থমেলা।
এই মেলা হবে কেবল বাংলা একাডেমীর সীমানাপ্রাচীরের মধ্যে। ফলে রাস্তায় কোনো স্টল থাকবে না। প্রশ্ন উঠল, তাহলে কি এবারের মেলা সফল নয়? নীতিমালা কি মানা হয়নি?
নীতিমালার যে কী হাল, তার প্রমাণ আছে পথেই। টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত যেসব স্টল, তার বেশির ভাগেই বিক্রি হচ্ছে নোটবই। এখানে ডোরেমন থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর কর্তব্য ও ভারতীয় বইয়ের পাইরেটেড কপি বিক্রি হচ্ছে অবাধে। মাঝে দুই দিন প্রাঙ্গণের স্টলগুলোতে অভিযান চালালেও বাইরে কোনো অভিযান চালানো হয়নি। স্বীকারও করলেন মহাপরিচালক, একাডেমী চত্বরের বাইরে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ রাখাটা কষ্টসাধ্য।
মাত্রই আর তিন দিন বাকি। ভাষা আন্দোলনের মাস বিদায় নিচ্ছে, পর্দা নামছে একুশের গ্রন্থমেলারও। সম্ভবত সে কারণেই শেষ দিনগুলোতে লোকসমাগম বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় একাডেমীর সেমিনারকক্ষে মেলা কমিটির সব সদস্যকে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে একাডেমী কর্তৃপক্ষ।
এ সময় মহাপরিচালক পরিষ্কার জানিয়ে দেন, একাডেমীর প্রাঙ্গণে দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে। বইয়ের মান বিচার করে তবেই প্রকাশনা সংস্থাগুলোকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন: নাট্যব্যক্তিত্ব ও মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য রামেন্দু মজুমদার, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মহিউদ্দিন আহমেদ, কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার মনজরুর রহমান, কমিটির সদস্যসচিব শাহিদা খাতুন, সদস্য এবং জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির নির্বাহী পরিচালক ফরিদ আহমদ, পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আলমগীর সিকদার, শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে মেলা স্থানান্তর করার চিন্তাভাবনা করেছিলাম। কিন্তু দুই জায়গায় মেলা হলে তার সঠিক ব্যবস্থাপনা হবে না বলে শুধু একাডেমীতেই মেলা হবে। আর রাস্তার ওপর স্টল না রাখার ক্ষেত্রে যুক্তি, কোনো সভ্য দেশে এক মাস কোনো রাস্তা বন্ধ থাকে না। কিন্তু এ মেলার জন্য টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ থাকে।’
সংবাদ সম্মেলনে শাহিদা খাতুন সেই পুরোনো কথাই বললেন আবার, ‘এ মেলা শেষে আমরা একটি শক্ত নীতিমালা প্রণয়ন করব। এ নীতিমালা দিয়েই আগামীবার থেকে মেলা পরিচালনা হবে। প্রকাশনা সংস্থাগুলোর সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যা ও মান বিচার করে তাদের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে।’
রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘আমি সাংস্কৃতিক বা অন্য কোনো সংগঠনের স্টল না পাওয়ার পক্ষে। মেলা হোক শুধু প্রকাশকদের নিয়ে।’
মোড়ক উন্মোচন ও লেখকের উপস্থিতি
গতকাল নজরুল মঞ্চে ১২টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে। এর মধ্যে আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তসলিমা নাসরিনের তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের স্টলে গতকাল বিকেলে অবস্থান করছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। লেখকদ্বয় স্টলে অবস্থান করে পাঠকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, অটোগ্রাফ দেন।
নতুন বই
বাংলা একাডেমীর তথ্যকেন্দ্রের হিসাবে, এ দিন ১১৫টি নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: শুদ্ধস্বর থেকে মাহমুদ আল জামানের প্রবন্ধ জসীমউদ্দীন, দিব্যপ্রকাশের মঈনুল আহসান সাবেরের উপন্যাস মাঙ্কি, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশের গালিব আহসান খানের প্রবন্ধ আদর্শ রাষ্ট্রের পরিপ্রেক্ষিত ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ, ঝিঙেফুল থেকে শরীফ খানের সেরা শিশু-কিশোর গল্প, অন্যপ্রকাশ থেকে মুহাম্মদ নূরুল হুদার কাব্য জ্বেলে রাখব আমার কবরে, চারুলিপি থেকে শাহরিয়ার কবিরের প্রবন্ধ গণআদালত ও জাহানারা ইমাম, অন্বেষা এনেছে সুমনকুমার দাশের লোকসংগীতবিষয়ক বাংলাদেশের বাউল ফকির পরিচিতি ও গান, সূচীপত্র থেকে ডা. সজল আশফাকের চিকিৎসাবিষয়ক পেটে খেলে পিঠে সয়, নন্দিতা থেকে জ্যোৎস্না লিপির শিশু-কিশোর গল্প রাখাল ছেলে ও সাত পরী। এ ছাড়া বইমেলায় আগামী এনেছে তসলিমা নাসরিনের শ্রেষ্ঠ কবিতা, নির্বাচিত কলাম, নির্বাসিতা নারীর কবিতা এবং স্কয়ার পাবলিকেশন্স এনেছে সৈয়দ নূরুল ইসলামের উপন্যাস প্রবহমান-৭১।
মূল মঞ্চে ‘চিত্রাঙ্গদা’
বিকেলে মেলার মূল মঞ্চের আলোচনা সভায় ‘বাংলার মনীষা: বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা এ কে নাজমুল করিম’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মাহবুবা নাসরীন। আলোচনা করেন ইমতিয়াজ আহমেদ, বুলবন ওসমান, রেহনুমা আহমেদ ও শিপ্রা সরকার। সভাপতিত্ব করেন বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে আরশিনগর বাউল সংঘ। নৃত্য পরিবেশন করে সুকন্যা নৃত্যাঙ্গন। শেষে গীতিনাট্য চিত্রাঙ্গদা মঞ্চস্থ করে স্বপ্নদল।
নীতিমালার যে কী হাল, তার প্রমাণ আছে পথেই। টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত যেসব স্টল, তার বেশির ভাগেই বিক্রি হচ্ছে নোটবই। এখানে ডোরেমন থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর কর্তব্য ও ভারতীয় বইয়ের পাইরেটেড কপি বিক্রি হচ্ছে অবাধে। মাঝে দুই দিন প্রাঙ্গণের স্টলগুলোতে অভিযান চালালেও বাইরে কোনো অভিযান চালানো হয়নি। স্বীকারও করলেন মহাপরিচালক, একাডেমী চত্বরের বাইরে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ রাখাটা কষ্টসাধ্য।
মাত্রই আর তিন দিন বাকি। ভাষা আন্দোলনের মাস বিদায় নিচ্ছে, পর্দা নামছে একুশের গ্রন্থমেলারও। সম্ভবত সে কারণেই শেষ দিনগুলোতে লোকসমাগম বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় একাডেমীর সেমিনারকক্ষে মেলা কমিটির সব সদস্যকে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে একাডেমী কর্তৃপক্ষ।
এ সময় মহাপরিচালক পরিষ্কার জানিয়ে দেন, একাডেমীর প্রাঙ্গণে দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে। বইয়ের মান বিচার করে তবেই প্রকাশনা সংস্থাগুলোকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন: নাট্যব্যক্তিত্ব ও মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য রামেন্দু মজুমদার, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মহিউদ্দিন আহমেদ, কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার মনজরুর রহমান, কমিটির সদস্যসচিব শাহিদা খাতুন, সদস্য এবং জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির নির্বাহী পরিচালক ফরিদ আহমদ, পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আলমগীর সিকদার, শাহাদাৎ হোসেন প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠে মেলা স্থানান্তর করার চিন্তাভাবনা করেছিলাম। কিন্তু দুই জায়গায় মেলা হলে তার সঠিক ব্যবস্থাপনা হবে না বলে শুধু একাডেমীতেই মেলা হবে। আর রাস্তার ওপর স্টল না রাখার ক্ষেত্রে যুক্তি, কোনো সভ্য দেশে এক মাস কোনো রাস্তা বন্ধ থাকে না। কিন্তু এ মেলার জন্য টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ থাকে।’
সংবাদ সম্মেলনে শাহিদা খাতুন সেই পুরোনো কথাই বললেন আবার, ‘এ মেলা শেষে আমরা একটি শক্ত নীতিমালা প্রণয়ন করব। এ নীতিমালা দিয়েই আগামীবার থেকে মেলা পরিচালনা হবে। প্রকাশনা সংস্থাগুলোর সৃজনশীল বইয়ের সংখ্যা ও মান বিচার করে তাদের স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে।’
রামেন্দু মজুমদার বলেন, ‘আমি সাংস্কৃতিক বা অন্য কোনো সংগঠনের স্টল না পাওয়ার পক্ষে। মেলা হোক শুধু প্রকাশকদের নিয়ে।’
মোড়ক উন্মোচন ও লেখকের উপস্থিতি
গতকাল নজরুল মঞ্চে ১২টি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়েছে। এর মধ্যে আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত তসলিমা নাসরিনের তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের স্টলে গতকাল বিকেলে অবস্থান করছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। লেখকদ্বয় স্টলে অবস্থান করে পাঠকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন, অটোগ্রাফ দেন।
নতুন বই
বাংলা একাডেমীর তথ্যকেন্দ্রের হিসাবে, এ দিন ১১৫টি নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: শুদ্ধস্বর থেকে মাহমুদ আল জামানের প্রবন্ধ জসীমউদ্দীন, দিব্যপ্রকাশের মঈনুল আহসান সাবেরের উপন্যাস মাঙ্কি, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশের গালিব আহসান খানের প্রবন্ধ আদর্শ রাষ্ট্রের পরিপ্রেক্ষিত ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ, ঝিঙেফুল থেকে শরীফ খানের সেরা শিশু-কিশোর গল্প, অন্যপ্রকাশ থেকে মুহাম্মদ নূরুল হুদার কাব্য জ্বেলে রাখব আমার কবরে, চারুলিপি থেকে শাহরিয়ার কবিরের প্রবন্ধ গণআদালত ও জাহানারা ইমাম, অন্বেষা এনেছে সুমনকুমার দাশের লোকসংগীতবিষয়ক বাংলাদেশের বাউল ফকির পরিচিতি ও গান, সূচীপত্র থেকে ডা. সজল আশফাকের চিকিৎসাবিষয়ক পেটে খেলে পিঠে সয়, নন্দিতা থেকে জ্যোৎস্না লিপির শিশু-কিশোর গল্প রাখাল ছেলে ও সাত পরী। এ ছাড়া বইমেলায় আগামী এনেছে তসলিমা নাসরিনের শ্রেষ্ঠ কবিতা, নির্বাচিত কলাম, নির্বাসিতা নারীর কবিতা এবং স্কয়ার পাবলিকেশন্স এনেছে সৈয়দ নূরুল ইসলামের উপন্যাস প্রবহমান-৭১।
মূল মঞ্চে ‘চিত্রাঙ্গদা’
বিকেলে মেলার মূল মঞ্চের আলোচনা সভায় ‘বাংলার মনীষা: বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা এ কে নাজমুল করিম’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মাহবুবা নাসরীন। আলোচনা করেন ইমতিয়াজ আহমেদ, বুলবন ওসমান, রেহনুমা আহমেদ ও শিপ্রা সরকার। সভাপতিত্ব করেন বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে আরশিনগর বাউল সংঘ। নৃত্য পরিবেশন করে সুকন্যা নৃত্যাঙ্গন। শেষে গীতিনাট্য চিত্রাঙ্গদা মঞ্চস্থ করে স্বপ্নদল।
No comments