রাখাও যায় না, বন্ধ করাও যায় না, তবে...-শিক্ষকদের ‘প্রাইভেট টিউশনি’
এ দেশে এখন নতুন এক প্রবাদ তৈরির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে: শিক্ষকতা করেন যিনি, টিউশনি করেন তিনি। বিশেষ করে, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের বেলায় এটি সত্য। টিউশনি মানে স্কুলের বাইরে বাণিজ্যিকভাবে শিক্ষার্থীদের পড়ানো।
এই পড়ানোর বাজারে যাঁর যত দাম, তিনি তত ‘ভালো’ শিক্ষকের স্বীকৃতি পান। এ ধরনের ‘ভালো’ শিক্ষকই দামি শিক্ষকে পরিণত হন। নিম্ন ও মধ্য আয়ের শিক্ষকদের মধ্যে তাই অধিক হারে টিউশনি করা কৃতিত্বের ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। অথচ ২০০৮ সালেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে টিউশনি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
টিউশনির ব্যাপকতা বাড়লে ক্লাসের পড়ানোর দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়েরই মনোযোগ কমে যায়। টিউশনি না করলে যেমন শিক্ষকের সংসার চলে না, তেমনি সেখানে না পড়লে শিক্ষার্থীদের অনেকেই ভালো ফল করবে না বলে ভয় পায়। সব মিলিয়ে টিউশনি এখন আত্মবিশ্বাসহীন শিক্ষার্থী এবং স্বল্প আয়ের শিক্ষকদের পরম আশ্রয়। প্রায়ই শিক্ষকেরা শ্রেণীকক্ষে পাঠদানে গাফিলতি করেই টিউশনির উপার্জনের পথ করেন। শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ না থাকলে এবং শিক্ষকেরা যথাযথ পাঠদান না করলে ‘প্রাইভেট’ই হয় বিকল্প পাঠ। এবং এই বিকল্প শ্রেণীকক্ষের পাঠদানকে দিনে দিনে নামমাত্র করে তুলছে।
গত শুক্রবারের প্রথম আলোর সংবাদ হচ্ছে, ‘টিউশনি বন্ধের নির্দেশ মানছেন না শিক্ষকেরা।’ তাঁদের দিক থেকে দেখলে প্রাইভেট পড়ানো মোটেই ‘গর্হিত’ কাজ নয়। চিকিৎসকেরা ক্লিনিক ও প্রাইভেট চেম্বারে ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস’ করে লাভবান হচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কনসালট্যান্সি এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্টটাইম শিক্ষকতা করে মোটা অঙ্ক উপার্জন করছেন, আমলারা চাকরির মেয়াদের পরও ‘চুক্তিভিত্তিক’ নিয়োগ পাচ্ছেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাও পিছিয়ে নেই। তাহলে কেবল নিম্ন আয়ের শিক্ষকদের দোষ দেওয়া কেন?
শিক্ষকদের এই যুক্তি অস্বীকার করা কঠিন। কিন্তু শিক্ষার মতো জাতি গঠনের কাজে অবহেলার ক্ষতি সুদূরপ্রসারী। সে কারণেই শিক্ষকদের টিউশনি বন্ধ করতে হলে সবার আগে তাঁদের বেতন-ভাতা সম্মানজনক মানে উন্নীত করতে হবে। প্রয়োজনে একটা নীতিমালার অধীনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরেই পাঠ-সহায়ক বাড়তি ক্লাসের বন্দোবস্ত করে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থী এবং নিম্ন আয়ের শিক্ষকদের ঘাটতি পূরণের বন্দোবস্ত করতে হবে
টিউশনির ব্যাপকতা বাড়লে ক্লাসের পড়ানোর দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়েরই মনোযোগ কমে যায়। টিউশনি না করলে যেমন শিক্ষকের সংসার চলে না, তেমনি সেখানে না পড়লে শিক্ষার্থীদের অনেকেই ভালো ফল করবে না বলে ভয় পায়। সব মিলিয়ে টিউশনি এখন আত্মবিশ্বাসহীন শিক্ষার্থী এবং স্বল্প আয়ের শিক্ষকদের পরম আশ্রয়। প্রায়ই শিক্ষকেরা শ্রেণীকক্ষে পাঠদানে গাফিলতি করেই টিউশনির উপার্জনের পথ করেন। শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ না থাকলে এবং শিক্ষকেরা যথাযথ পাঠদান না করলে ‘প্রাইভেট’ই হয় বিকল্প পাঠ। এবং এই বিকল্প শ্রেণীকক্ষের পাঠদানকে দিনে দিনে নামমাত্র করে তুলছে।
গত শুক্রবারের প্রথম আলোর সংবাদ হচ্ছে, ‘টিউশনি বন্ধের নির্দেশ মানছেন না শিক্ষকেরা।’ তাঁদের দিক থেকে দেখলে প্রাইভেট পড়ানো মোটেই ‘গর্হিত’ কাজ নয়। চিকিৎসকেরা ক্লিনিক ও প্রাইভেট চেম্বারে ‘প্রাইভেট প্র্যাকটিস’ করে লাভবান হচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কনসালট্যান্সি এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্টটাইম শিক্ষকতা করে মোটা অঙ্ক উপার্জন করছেন, আমলারা চাকরির মেয়াদের পরও ‘চুক্তিভিত্তিক’ নিয়োগ পাচ্ছেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাও পিছিয়ে নেই। তাহলে কেবল নিম্ন আয়ের শিক্ষকদের দোষ দেওয়া কেন?
শিক্ষকদের এই যুক্তি অস্বীকার করা কঠিন। কিন্তু শিক্ষার মতো জাতি গঠনের কাজে অবহেলার ক্ষতি সুদূরপ্রসারী। সে কারণেই শিক্ষকদের টিউশনি বন্ধ করতে হলে সবার আগে তাঁদের বেতন-ভাতা সম্মানজনক মানে উন্নীত করতে হবে। প্রয়োজনে একটা নীতিমালার অধীনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরেই পাঠ-সহায়ক বাড়তি ক্লাসের বন্দোবস্ত করে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থী এবং নিম্ন আয়ের শিক্ষকদের ঘাটতি পূরণের বন্দোবস্ত করতে হবে
No comments