আর বাড়তে দেওয়ার সুযোগ নেই-কালোটাকার পাহাড়
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেশে অপ্রকাশ্য অর্থ বা কালোটাকার যে আকার পাওয়া গেছে, তা প্রায় অবিশ্বাস্য। সাধারণভাবে প্রচলিত একটি ধারণা এই যে এ দেশে কালোটাকার পরিমাণ বেশি। কিন্তু তা যে মোট দেশজ উৎপাদনের ৮১ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, এটা পরিষ্কার হলো সমীক্ষার তথ্য প্রকাশের পর।
এই হিসাব সরকারের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য এবং সমাজের অগ্রগতির জন্য মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়, বরং তার বিপরীত।
‘বাংলাদেশের অপ্রকাশ্য অর্থনীতির আকার: একটি অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ’ শিরোনামের সমীক্ষাটির তথ্যের তাৎপর্য বহুমুখী ও গভীর। ১৯৭৩ সালে দেশে কালোটাকার সর্বনিম্ন হার ছিল জিডিপির ৬ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ২ শতাংশ। তার পর থেকে এই হার ক্রমাগত বেড়েছে এবং বর্তমানে তা অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে পৌঁছেছে সর্বনিম্ন ৪৬ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত। অপ্রকাশ্য অর্থ বা কালোটাকা মানে বেআইনি টাকা। যে সমাজে বেআইনি টাকার পরিমাণ এমন উচ্চ মাত্রায় বেড়ে যায়, সেখানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুতর নীতিহীনতার চর্চা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সামাজিক দিক থেকে এর নেতিবাচক প্রভাব হয় অত্যন্ত গভীর। ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, কালোটাকা বেড়ে যাওয়ার ফলে অল্পসংখ্যক মানুষের হাতে ঘনীভূত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ, বাড়ছে জীবনযাত্রার মানে বৈষম্য।
অপ্রকাশ্য অর্থের এই সুবিশাল আকারের একটি ইঙ্গিত হচ্ছে আমাদের কর আদায়ব্যবস্থার বিরাট দুর্বলতা, আরেকটি পরিষ্কার ইঙ্গিত হলো কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা অত্যন্ত প্রকট। আনুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিধিবিধান এড়িয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার প্রবণতার মূলে থাকে কর ফাঁকি দেওয়া। এই প্রবণতা লাঘবের সোজা রাস্তা বাতলে দিয়েছেন সাবেক অর্থসচিব আকবর আলি খান: কালোটাকা, অর্থাৎ বেআইনি টাকা তৈরির পথ বন্ধ করতে হবে আইন প্রয়োগ করে।
কর আদায়ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করা একান্তই প্রয়োজন। সে জন্য এটিকে পদ্ধতিগত দিক থেকে আরও সহজ করার দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। জনগণ যেন কর দিতে গিয়ে ঝামেলায় না পড়ে, যেন নাগরিক কর্তব্যবোধ ও জনস্বার্থের বোধ থেকে নিয়মিত কর পরিশোধে উৎসাহিত হয়, সে লক্ষ্যে কর প্রদানব্যবস্থার সংস্কার করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে কর আদায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একাংশের অনিয়ম-দুর্নীতি কঠোর হাতে দমনের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রতিবছরই কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়, কিন্তু তার সুফল পাওয়া যায় না। বরং এই চর্চার কারণে বিত্তশালীদের বড় অংশই প্রতিবছর বিশেষ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে। সেদিক থেকে বলা যায়, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ কর ফাঁকিবাজ বিত্তশালীদের জন্য এক বিশেষ সুযোগ। এটা নৈতিক দিক থেকে মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়। স্থায়ীভাবে এটা পরিহার করা উচিত।
অপ্রকাশ্য অর্থ বা কালোটাকার আকার বিপজ্জনক মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর সম্ভাব্য সামাজিক পরিণতি অত্যন্ত সমস্যাপূর্ণ হতে বাধ্য। এখনই রাশ টানা দরকার: কালোটাকা আর বাড়তে দেওয়ার সুযোগ নেই।
‘বাংলাদেশের অপ্রকাশ্য অর্থনীতির আকার: একটি অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ’ শিরোনামের সমীক্ষাটির তথ্যের তাৎপর্য বহুমুখী ও গভীর। ১৯৭৩ সালে দেশে কালোটাকার সর্বনিম্ন হার ছিল জিডিপির ৬ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ২ শতাংশ। তার পর থেকে এই হার ক্রমাগত বেড়েছে এবং বর্তমানে তা অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে পৌঁছেছে সর্বনিম্ন ৪৬ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত। অপ্রকাশ্য অর্থ বা কালোটাকা মানে বেআইনি টাকা। যে সমাজে বেআইনি টাকার পরিমাণ এমন উচ্চ মাত্রায় বেড়ে যায়, সেখানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুতর নীতিহীনতার চর্চা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সামাজিক দিক থেকে এর নেতিবাচক প্রভাব হয় অত্যন্ত গভীর। ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, কালোটাকা বেড়ে যাওয়ার ফলে অল্পসংখ্যক মানুষের হাতে ঘনীভূত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ, বাড়ছে জীবনযাত্রার মানে বৈষম্য।
অপ্রকাশ্য অর্থের এই সুবিশাল আকারের একটি ইঙ্গিত হচ্ছে আমাদের কর আদায়ব্যবস্থার বিরাট দুর্বলতা, আরেকটি পরিষ্কার ইঙ্গিত হলো কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা অত্যন্ত প্রকট। আনুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিধিবিধান এড়িয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার প্রবণতার মূলে থাকে কর ফাঁকি দেওয়া। এই প্রবণতা লাঘবের সোজা রাস্তা বাতলে দিয়েছেন সাবেক অর্থসচিব আকবর আলি খান: কালোটাকা, অর্থাৎ বেআইনি টাকা তৈরির পথ বন্ধ করতে হবে আইন প্রয়োগ করে।
কর আদায়ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করা একান্তই প্রয়োজন। সে জন্য এটিকে পদ্ধতিগত দিক থেকে আরও সহজ করার দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। জনগণ যেন কর দিতে গিয়ে ঝামেলায় না পড়ে, যেন নাগরিক কর্তব্যবোধ ও জনস্বার্থের বোধ থেকে নিয়মিত কর পরিশোধে উৎসাহিত হয়, সে লক্ষ্যে কর প্রদানব্যবস্থার সংস্কার করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে কর আদায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একাংশের অনিয়ম-দুর্নীতি কঠোর হাতে দমনের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রতিবছরই কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়, কিন্তু তার সুফল পাওয়া যায় না। বরং এই চর্চার কারণে বিত্তশালীদের বড় অংশই প্রতিবছর বিশেষ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে। সেদিক থেকে বলা যায়, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ কর ফাঁকিবাজ বিত্তশালীদের জন্য এক বিশেষ সুযোগ। এটা নৈতিক দিক থেকে মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়। স্থায়ীভাবে এটা পরিহার করা উচিত।
অপ্রকাশ্য অর্থ বা কালোটাকার আকার বিপজ্জনক মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর সম্ভাব্য সামাজিক পরিণতি অত্যন্ত সমস্যাপূর্ণ হতে বাধ্য। এখনই রাশ টানা দরকার: কালোটাকা আর বাড়তে দেওয়ার সুযোগ নেই।
No comments