পবিত্র কোরআনের আলো-দুশমনদের প্রতি অবিচার না করার কঠোর নির্দেশ
৭। ওয়ায্কুরূ নি'মাতাল্লাহি আ'লাইকুম ওয়ামীছাক্বাহুল্লাযী ওয়া ছাক্বাকুম বিহী ইয্ ক্বুলতুম ছামি'না ওয়া আত্বা'না ওয়াত্তাক্বুল্লাহ; ইন্নাল্লাহা আ'লীমুম্ বিযাতিস্ সুদূর। ৮। ইয়া আইয়্যুহাল্লাযীনা আমানূ কূনূ ক্বাওয়্যামীনা লিল্লাহি শুহাদাআ বিলকি্বছত্ব; ওয়ালা ইয়াজরিমান্নাকুম শানানু ক্বাওমিন আ'লা আল্লা তা'দিলূ; ওয়াত্তাক্বুল্লাহ; ইন্নাল্লাহা খাবীরুম্ বিমা তা'মালূন।
৯। ওয়া আ'দাল্লাহুল্লাযীনা আমানূ ওয়া আ'মিলুস্ সালিহাতি লাহুম্ মাগফিরাতুওঁ ওয়া আজরুন আ'যীম। [সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ৭-৯]
অনুবাদ : ৭. তোমাদের আল্লাহ তায়ালা যে নিয়ামতগুলো দান করেছেন, সেগুলোর কথা স্মরণ করো। আর সেই প্রতিশ্রুতিগুলোর কথাও স্মরণ করো, যেগুলো তিনি তোমাদের কাছ থেকে গ্রহণ করেছিলেন। যখন তোমরা বলেছিলে, হে প্রভু, আমরা তোমার কথা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। তোমরা আল্লাহ তায়ালার প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থেকো, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা তোমাদের অন্তরে যা কিছু আছে সে সম্পর্কে সম্যক অবগত।
৮. হে ইমানদাররা, তোমরা আল্লাহর জন্য সত্য ও ন্যায়ের ওপর অবিচল সাক্ষী হয়ে থেকো। কোনো সম্প্রদায়ের দুশমনি যেন তোমাদের এমনভাবে প্ররোচিত না করে যে এর ফলে তোমরা সত্য ও ন্যায়ের সীমা লঙ্ঘন করো। তোমরা ন্যায়বিচারের ওপর থেকো, কারণ এটি আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠতার সর্বাধিক নিকটবর্তী। তোমরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থাকো, কারণ আল্লাহ তায়ালা তোমাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত রয়েছেন।
৯. যারা ইমান আনে ও সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদের সবাইকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে তাদের জন্য ক্ষমা ও মহা পুরস্কার রয়েছে।
ব্যাখ্যা : ৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে যে নিয়ামতগুলো দান করেছেন, সেগুলো স্মরণ করার উপদেশ দিয়েছেন। মানুষকে আল্লাহ অনেক কিছু দিয়েছেন। এই যে সৃষ্টি জগতের ওপর মানুষের কর্তৃত্ব, এই যে মানুষের জ্ঞানবুদ্ধি, সামর্থ্য_এ সবই মানুষের ওপর আল্লাহর সীমাহীন করুণা। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে এগুলো স্মরণ করতে বলেছেন, তাহলে মানুষের দায়িত্ববোধ বাড়বে। মানুষ অসৎ পথ পরিহার করে সত্যের পথে আসবে। আল্লাহর নিয়ামতগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তিনি মানুষকে এ কথাও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে মানুষ আদিতেই আল্লাহর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আল্লাহর কাছে মানুষ এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে যে হে প্রভু, আমরা তোমার কথা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। বনি ইসরাইলদের কিতাব তাওরাতে এ কথার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, বিশেষ করে বনি ইসরাইলদের এবং সাধারণভাবে সারা দুনিয়ার মানুষকে এই প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ কথাও জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আল্লাহ মানুষের অন্তরের খবর রাখেন।
৮ নম্বর আয়াতে মুমিনদের ন্যায় ও সত্যের ওপর সাক্ষী হয়ে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সেই সঙ্গে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কোনো সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন মুমিনদের সত্য ও ন্যায়ের সীমা লঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে অর্থাৎ দুশমনদের ওপর পুরোপুরি ন্যায়বিচার করতে হবে। দুশমনের ওপর বিজয়ী হয়ে কোনো অত্যাচার বা অবিচার করা চলবে না। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হুঁশিয়ারি। মানুষের একটা প্রবণতা হলো দুশমনের ওপর বিজয়ী হলে অত্যাচার করতে শুরু করে। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে শুরু করে। কিন্তু মুসলমানদের আল্লাহ আগে থেকেই হুঁশিয়ার করে দিচ্ছেন, তারা যেন কখনো প্রতিহিংসার পথে না যায়। বরং তারা যেন দুশমনের ওপর বিজয়ী হলে পরাজিতের প্রতি পুরোপুরি ন্যায়নিষ্ঠ আচরণ করে এবং নিজেরা সত্য ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠ থাকে। এভাবেই মুসলমানদের আল্লাহ তাঁর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থাকতে উপদেশ দিয়েছেন। আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠতা হচ্ছে ইমানের মৌলিক শিক্ষা।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ৭. তোমাদের আল্লাহ তায়ালা যে নিয়ামতগুলো দান করেছেন, সেগুলোর কথা স্মরণ করো। আর সেই প্রতিশ্রুতিগুলোর কথাও স্মরণ করো, যেগুলো তিনি তোমাদের কাছ থেকে গ্রহণ করেছিলেন। যখন তোমরা বলেছিলে, হে প্রভু, আমরা তোমার কথা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। তোমরা আল্লাহ তায়ালার প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থেকো, অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা তোমাদের অন্তরে যা কিছু আছে সে সম্পর্কে সম্যক অবগত।
৮. হে ইমানদাররা, তোমরা আল্লাহর জন্য সত্য ও ন্যায়ের ওপর অবিচল সাক্ষী হয়ে থেকো। কোনো সম্প্রদায়ের দুশমনি যেন তোমাদের এমনভাবে প্ররোচিত না করে যে এর ফলে তোমরা সত্য ও ন্যায়ের সীমা লঙ্ঘন করো। তোমরা ন্যায়বিচারের ওপর থেকো, কারণ এটি আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠতার সর্বাধিক নিকটবর্তী। তোমরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থাকো, কারণ আল্লাহ তায়ালা তোমাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত রয়েছেন।
৯. যারা ইমান আনে ও সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদের সবাইকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে তাদের জন্য ক্ষমা ও মহা পুরস্কার রয়েছে।
ব্যাখ্যা : ৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে যে নিয়ামতগুলো দান করেছেন, সেগুলো স্মরণ করার উপদেশ দিয়েছেন। মানুষকে আল্লাহ অনেক কিছু দিয়েছেন। এই যে সৃষ্টি জগতের ওপর মানুষের কর্তৃত্ব, এই যে মানুষের জ্ঞানবুদ্ধি, সামর্থ্য_এ সবই মানুষের ওপর আল্লাহর সীমাহীন করুণা। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে এগুলো স্মরণ করতে বলেছেন, তাহলে মানুষের দায়িত্ববোধ বাড়বে। মানুষ অসৎ পথ পরিহার করে সত্যের পথে আসবে। আল্লাহর নিয়ামতগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তিনি মানুষকে এ কথাও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে মানুষ আদিতেই আল্লাহর কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আল্লাহর কাছে মানুষ এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে যে হে প্রভু, আমরা তোমার কথা শুনলাম এবং মেনে নিলাম। বনি ইসরাইলদের কিতাব তাওরাতে এ কথার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, বিশেষ করে বনি ইসরাইলদের এবং সাধারণভাবে সারা দুনিয়ার মানুষকে এই প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ কথাও জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আল্লাহ মানুষের অন্তরের খবর রাখেন।
৮ নম্বর আয়াতে মুমিনদের ন্যায় ও সত্যের ওপর সাক্ষী হয়ে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং সেই সঙ্গে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কোনো সম্প্রদায়ের শত্রুতা যেন মুমিনদের সত্য ও ন্যায়ের সীমা লঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে অর্থাৎ দুশমনদের ওপর পুরোপুরি ন্যায়বিচার করতে হবে। দুশমনের ওপর বিজয়ী হয়ে কোনো অত্যাচার বা অবিচার করা চলবে না। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হুঁশিয়ারি। মানুষের একটা প্রবণতা হলো দুশমনের ওপর বিজয়ী হলে অত্যাচার করতে শুরু করে। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে শুরু করে। কিন্তু মুসলমানদের আল্লাহ আগে থেকেই হুঁশিয়ার করে দিচ্ছেন, তারা যেন কখনো প্রতিহিংসার পথে না যায়। বরং তারা যেন দুশমনের ওপর বিজয়ী হলে পরাজিতের প্রতি পুরোপুরি ন্যায়নিষ্ঠ আচরণ করে এবং নিজেরা সত্য ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠ থাকে। এভাবেই মুসলমানদের আল্লাহ তাঁর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ থাকতে উপদেশ দিয়েছেন। আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠতা হচ্ছে ইমানের মৌলিক শিক্ষা।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments