শ্রদ্ধাঞ্জলি-প্রগতির আন্দোলনে নিবেদিত এক মানুষ
মাহবুব উল আলম চৌধুরীর জন্মবার্ষিকী ছিল ৭ নভেম্বর। তাঁকে ঘনিষ্ঠভাবে জানা-চেনার সুযোগ হয়নি। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিত্ব, কবিত্ব-মাহাত্ম্যের কথা নানা সূত্রে জেনে বুঝেছি, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগের স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক সংগ্রামী কিশোর মাহবুব উল আলম চৌধুরী নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অসাম্প্রদায়িক আন্দোলনে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুক্ত হয়েছিলেন।
বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত থেকে কবি, নাট্যকার, সাংবাদিক হিসেবে সমাজপ্রগতির আন্দোলনে আজীবন নিবেদিত ছিলেন। তাঁর জীবনসাধনায় দেশ ও রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি, স্বাধিকার ও মুক্তিযুদ্ধ— ওতপ্রোতভাবে ভূমিকা রেখেছে।
মাহবুব উল আলমকে জানার প্রথম সুযোগ হয়েছিল তাঁর স্ত্রী জওশন আরা রহমানের সৌজন্যে। বাংলাদেশের নারী-শিশু উন্নয়ন গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক জওশন আরা রহমান বলেছেন মাহবুব উল আলম চৌধুরীর বহু কর্মকাণ্ড বিষয়ে, ব্যক্তিজীবনে স্বামীর অবদান ও ভূমিকার কথা বলেছেন এবং দাম্পত্য জীবনের কথা বলেছেন—তাঁর নিজের স্মৃতিকথা: একটি অজানা মেয়ে বইয়ে। তাঁর সেই বই এবং মাহবুব উল আলম চৌধুরীর অসমাপ্ত স্মৃতিকথা স্মৃতির সন্ধানে বই থেকে জেনেছি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর শৈশব, কৈশোর, যৌবন এবং যৌবনোত্তর ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত যাপিত বর্ণাঢ্য জীবনকথা।
মাহবুব উল আলম চৌধুরী (১৯২৭-২০০৭) চার বছর বয়সে মাতৃহারা ও ১২ বছর বয়সে পিতৃহারা হয়েছেন। বাবা দূর দেশে, বার্মার রেঙ্গুনে পেশাগত কাজে থাকতেন। শৈশব থেকে কাটিয়েছেন কখনো নানাবাড়িতে, কখনো মেজো মামা-মামির কাছে, অনেক সময় জ্যাঠাইমার কাছে।
আশ্রিত হিসেবে পেয়েছেন অনাদর, আবার আত্মীয় হিসেবে, শিশু হিসেবে পেয়েছেন জ্যাঠাইমা, মামা-মামির আদর। কিন্তু তবু শিশুমনে কঠোর পীড়নের মতো বিঁধে ছিল অনাদর, অবহেলা। এর ফলে মাহবুব উল আলম শিশুকালে হীনম্মন্যতার শিকার হয়েছেন, নিরাপত্তাহীনতায় ক্লিষ্ট হয়েছেন, বিষাদ ও বিষণ্নতায় ভুগেছেন। জীবনসঙ্গিনী জওশন আরা রহমান তাঁর পাশে অবিচল বন্ধুর মতো থেকেছেন, তাঁকে সাহায্য করেছেন বিষণ্নতা-বিষাদ কাটিয়ে জীবনের বাস্তব অবস্থার মুখোমুখি হতে। স্নেহ ভালোবাসার একান্ত কাঙাল মাহবুব উল আলম জওশন আরার ভালোবাসা পেয়ে ধন্য হয়েছেন।
বাল্যকাল থেকে বিষণ্ন, বিপন্ন মানসিকতায় আচ্ছন্ন থেকেও মাহবুব উল আলম চৌধুরী সার্থক একজন কবি ও সংগঠক, সংস্কৃতিসেবী হয়ে উঠেছিলেন জীবনব্যাপী সাধনায়। ১৯৪২ সালে ১৫ বছর বয়সে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র কংগ্রেসে যোগদান এবং ব্রিটিশবিরোধী ভারত ছাড় আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৪৫ সালে ১৮ বছর বয়সে কংগ্রেসের রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে যুক্ত হন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে। ছাত্র ফেডারেশনের কর্মী ছিলেন তখন। সে সময় চট্টগ্রাম প্রগতি লেখক ও শিল্পী সংঘের সহকারী সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে সময় একাধিক কর্মকাণ্ডে তিনি সম্পৃক্ত হয়ে রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজ করেছেন। চট্টগ্রামের কাহারপাড়া গ্রামে ব্রিটিশ কর্তৃক নারী ধর্ষণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ব্রিটিশবিরোধী যে আন্দোলন হয়েছিল (১৯৪৫), তাতে তিনি প্রত্যক্ষ অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৪৬ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের বীর বিপ্লবীরা কারামুক্ত হলে তাঁদের নিয়ে গঠিত দাঙ্গাবিরোধী শান্তি কমিটির কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন তিনি।
তাঁর লেখা বিপ্লব পুস্তিকা ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করেছিল ১৯৪৬ সালে। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৯ বছর। সে বছর চট্টগ্রামে প্রথম নজরুলজয়ন্তী উদ্যাপনের জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজলের নেতৃত্বে তিনি কাজ করেছেন কমিটির সম্পাদক হিসেবে। ১৯৪৭ সালে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় সীমান্ত পত্রিকা। ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামে হালদা নদীর কাছে কৃষক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। নাটক করা, নাট্যসংগঠন গড়ে তোলার কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন ১৯৪৮ সাল থেকে। ১৯৪৯ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিশ্বশান্তি সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিন দিনের জন্য বন্দিত্ব বরণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
পাকিস্তানের মূলনীতি কমিটির রিপোর্ট-বিরোধী কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। চট্টগ্রাম জেলা রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন ১৯৫২ সালে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন তিনি। সে সময় ভাষাশহীদদের স্মরণে কবিতা রচনা করেন ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি’ শিরোনামে। পাকিস্তান সরকার কবিতাটি বাজেয়াপ্ত করেছিল এবং কবির নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
রাজনৈতিক গণতন্ত্রী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (১৯৫৩), যুক্তফ্রন্টকে জয়যুক্ত করার জন্য চট্টগ্রামে গঠিত কর্মী-শিবিরের আহ্বায়ক (১৯৫৪) ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে আত্মগোপন (১৯৫৪-১৯৫৫), চট্টগ্রাম যুবলীগের সভাপতি (১৯৫৫), ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন জারির সময় আত্মগোপন, চট্টগ্রামে দাঙ্গাবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনে যুক্ত হন (১৯৬৪), ১৯৬৫ সালে রাজনৈতিক কারণে পুনরায় আত্মগোপন, ১৯৬৫-৬৬ সালে কমিউনিস্ট পার্টির চীন-মস্কো বিরোধের কারণে রাজনীতি থেকে সরে যান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামে থেকে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের কাজ করেছেন। চট্টগ্রামে স্বাধীনতা পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন ১৯৭২-১৯৮২ সাল পর্যন্ত। ১৯৯০-এর দশকে ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ছিলেন প্রায় আট বছর। সংবর্ধনা ও পদকে ভূষিত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন। বাংলা একাডেমীর ফেলোশিপ (১৯৮৬), মুক্তিযুদ্ধ জাতীয় পুরস্কার (২০০৫), ভাষা আন্দোলন জাতীয় পুরস্কার (২০০৬) ইত্যাদি বহু পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৬টি।
নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে বাল্যকালে বিমর্ষতার বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই করে তিনি জীবনের শীর্ষে দাঁড়িয়ে আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে গেছেন এই শিক্ষা যে, অচলায়তন ভেঙে সমাজ-দেশ এগিয়ে যাবে সবার দৃঢ়চেতা অংশগ্রহণের মাধ্যমে। মাহবুব উল আলম চৌধুরীর অসামান্য জীবনের ও কর্মকাণ্ডের প্রতি জানাচ্ছি শ্রদ্ধা।
সংক্ষেপিত
মালেকা বেগম: প্রাবন্ধিক, গবেষক
মাহবুব উল আলমকে জানার প্রথম সুযোগ হয়েছিল তাঁর স্ত্রী জওশন আরা রহমানের সৌজন্যে। বাংলাদেশের নারী-শিশু উন্নয়ন গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক জওশন আরা রহমান বলেছেন মাহবুব উল আলম চৌধুরীর বহু কর্মকাণ্ড বিষয়ে, ব্যক্তিজীবনে স্বামীর অবদান ও ভূমিকার কথা বলেছেন এবং দাম্পত্য জীবনের কথা বলেছেন—তাঁর নিজের স্মৃতিকথা: একটি অজানা মেয়ে বইয়ে। তাঁর সেই বই এবং মাহবুব উল আলম চৌধুরীর অসমাপ্ত স্মৃতিকথা স্মৃতির সন্ধানে বই থেকে জেনেছি মাহবুব উল আলম চৌধুরীর শৈশব, কৈশোর, যৌবন এবং যৌবনোত্তর ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত যাপিত বর্ণাঢ্য জীবনকথা।
মাহবুব উল আলম চৌধুরী (১৯২৭-২০০৭) চার বছর বয়সে মাতৃহারা ও ১২ বছর বয়সে পিতৃহারা হয়েছেন। বাবা দূর দেশে, বার্মার রেঙ্গুনে পেশাগত কাজে থাকতেন। শৈশব থেকে কাটিয়েছেন কখনো নানাবাড়িতে, কখনো মেজো মামা-মামির কাছে, অনেক সময় জ্যাঠাইমার কাছে।
আশ্রিত হিসেবে পেয়েছেন অনাদর, আবার আত্মীয় হিসেবে, শিশু হিসেবে পেয়েছেন জ্যাঠাইমা, মামা-মামির আদর। কিন্তু তবু শিশুমনে কঠোর পীড়নের মতো বিঁধে ছিল অনাদর, অবহেলা। এর ফলে মাহবুব উল আলম শিশুকালে হীনম্মন্যতার শিকার হয়েছেন, নিরাপত্তাহীনতায় ক্লিষ্ট হয়েছেন, বিষাদ ও বিষণ্নতায় ভুগেছেন। জীবনসঙ্গিনী জওশন আরা রহমান তাঁর পাশে অবিচল বন্ধুর মতো থেকেছেন, তাঁকে সাহায্য করেছেন বিষণ্নতা-বিষাদ কাটিয়ে জীবনের বাস্তব অবস্থার মুখোমুখি হতে। স্নেহ ভালোবাসার একান্ত কাঙাল মাহবুব উল আলম জওশন আরার ভালোবাসা পেয়ে ধন্য হয়েছেন।
বাল্যকাল থেকে বিষণ্ন, বিপন্ন মানসিকতায় আচ্ছন্ন থেকেও মাহবুব উল আলম চৌধুরী সার্থক একজন কবি ও সংগঠক, সংস্কৃতিসেবী হয়ে উঠেছিলেন জীবনব্যাপী সাধনায়। ১৯৪২ সালে ১৫ বছর বয়সে চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র কংগ্রেসে যোগদান এবং ব্রিটিশবিরোধী ভারত ছাড় আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯৪৫ সালে ১৮ বছর বয়সে কংগ্রেসের রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে যুক্ত হন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে। ছাত্র ফেডারেশনের কর্মী ছিলেন তখন। সে সময় চট্টগ্রাম প্রগতি লেখক ও শিল্পী সংঘের সহকারী সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে সময় একাধিক কর্মকাণ্ডে তিনি সম্পৃক্ত হয়ে রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজ করেছেন। চট্টগ্রামের কাহারপাড়া গ্রামে ব্রিটিশ কর্তৃক নারী ধর্ষণের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ব্রিটিশবিরোধী যে আন্দোলন হয়েছিল (১৯৪৫), তাতে তিনি প্রত্যক্ষ অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৪৬ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের বীর বিপ্লবীরা কারামুক্ত হলে তাঁদের নিয়ে গঠিত দাঙ্গাবিরোধী শান্তি কমিটির কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন তিনি।
তাঁর লেখা বিপ্লব পুস্তিকা ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করেছিল ১৯৪৬ সালে। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৯ বছর। সে বছর চট্টগ্রামে প্রথম নজরুলজয়ন্তী উদ্যাপনের জন্য গঠিত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবুল ফজলের নেতৃত্বে তিনি কাজ করেছেন কমিটির সম্পাদক হিসেবে। ১৯৪৭ সালে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় সীমান্ত পত্রিকা। ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামে হালদা নদীর কাছে কৃষক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। নাটক করা, নাট্যসংগঠন গড়ে তোলার কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন ১৯৪৮ সাল থেকে। ১৯৪৯ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিশ্বশান্তি সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিন দিনের জন্য বন্দিত্ব বরণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
পাকিস্তানের মূলনীতি কমিটির রিপোর্ট-বিরোধী কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। চট্টগ্রাম জেলা রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন ১৯৫২ সালে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন তিনি। সে সময় ভাষাশহীদদের স্মরণে কবিতা রচনা করেন ‘কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি’ শিরোনামে। পাকিস্তান সরকার কবিতাটি বাজেয়াপ্ত করেছিল এবং কবির নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
রাজনৈতিক গণতন্ত্রী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (১৯৫৩), যুক্তফ্রন্টকে জয়যুক্ত করার জন্য চট্টগ্রামে গঠিত কর্মী-শিবিরের আহ্বায়ক (১৯৫৪) ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে আত্মগোপন (১৯৫৪-১৯৫৫), চট্টগ্রাম যুবলীগের সভাপতি (১৯৫৫), ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন জারির সময় আত্মগোপন, চট্টগ্রামে দাঙ্গাবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনে যুক্ত হন (১৯৬৪), ১৯৬৫ সালে রাজনৈতিক কারণে পুনরায় আত্মগোপন, ১৯৬৫-৬৬ সালে কমিউনিস্ট পার্টির চীন-মস্কো বিরোধের কারণে রাজনীতি থেকে সরে যান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামে থেকে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের কাজ করেছেন। চট্টগ্রামে স্বাধীনতা পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ছিলেন ১৯৭২-১৯৮২ সাল পর্যন্ত। ১৯৯০-এর দশকে ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ছিলেন প্রায় আট বছর। সংবর্ধনা ও পদকে ভূষিত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন। বাংলা একাডেমীর ফেলোশিপ (১৯৮৬), মুক্তিযুদ্ধ জাতীয় পুরস্কার (২০০৫), ভাষা আন্দোলন জাতীয় পুরস্কার (২০০৬) ইত্যাদি বহু পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৬টি।
নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে বাল্যকালে বিমর্ষতার বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই করে তিনি জীবনের শীর্ষে দাঁড়িয়ে আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে গেছেন এই শিক্ষা যে, অচলায়তন ভেঙে সমাজ-দেশ এগিয়ে যাবে সবার দৃঢ়চেতা অংশগ্রহণের মাধ্যমে। মাহবুব উল আলম চৌধুরীর অসামান্য জীবনের ও কর্মকাণ্ডের প্রতি জানাচ্ছি শ্রদ্ধা।
সংক্ষেপিত
মালেকা বেগম: প্রাবন্ধিক, গবেষক
No comments