সরকারদলীয়দের মামলা প্রত্যাহার চলছেই একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও বিবেচনায় রাখা হয়। উভয়পক্ষকে নিয়েই গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। এর ব্যত্যয় ঘটলে একদলীয় শাসনের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা ঠেকানো যায় না। অতীতে এদেশে এমনটাই দেখা গেছে। সেজন্য কঠিন মূল্য দিতে হয়েছে জাতিকে। অনেকে বলে থাকেন আমরা দুর্ভাগা জাতি।
অতীত থেকে শিক্ষা নিতে জানি না। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা প্রাধান্য পাচ্ছে। জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের অনুপস্থিতিই শুধু নয়, সরকারের অন্যান্য কর্মকাণ্ড থেকেও বিরোধী দলকে গোনায় না ধরার ব্যাপারটি পরিষ্কার। বিগত দিনে দায়ের করা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত থেকেও বিষয়টা প্রমাণিত হয়।
বছরের শেষদিনে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কমিটি আরও ৪৮৫টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিলেও সেখানে বিরোধী দলের একটি মামলাও স্থান পায়নি। এ পর্যন্ত গত এক বছরে ১১ দফায় প্রত্যাহারের সুপারিশ করা এ ধরনের ১ হাজার ৮১৭টি মামলার মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা ১৯৫টি মামলাও রয়েছে। প্রত্যাহারের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাবেক মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতা ও এনজিও ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারার, এমনকি খুনের মামলাও স্থান পেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ঠিক কতটা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে, সেটা জানা যায়নি। সরকার ক্ষমতাবলে যে কোনো মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করতে পারলেও বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার চূড়ান্ত ক্ষমতা আদালতের হাতে।
একতরফাভাবে সরকারি দল ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করার সুপারিশ নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলেও সরকারের বোধোদয় হয়েছে বলা যাবে না। এ প্রসঙ্গে প্রত্যাহার সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বরাবর একই কথা শোনান। সর্বশেষ তালিকায় বিরোধীপক্ষের কোনো মামলা না থাকা প্রসঙ্গে তার কথা—রাজনৈতিক হয়রানিমূলক হিসেবে যাদের মামলাই কমিটির বিবেচনায় আসছে, তাদেরটিই প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হচ্ছে। যথার্থই বলেছেন তিনি। এখন পর্যন্ত তাদের দৃষ্টিতে অন্যদের মামলাগুলো বিবেচনার যোগ্য মনে হয়নি। জেলায় জেলায় গঠিত সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলো স্বাভাবিকভাবেই সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাই বিরোধী দলের রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা নজরে না পড়লেও সরকারি দলের অরাজনৈতিক, এমনকি খুনের মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশও আটকে থাকেনি। একটি উদাহরণই যথেষ্ট মনে হয়। ২০০২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুরের পালং থানার একটি ট্রিপল মার্ডার মামলাও প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করেছে কমিটি। গত ৫ অক্টোবর করা রাষ্ট্রপক্ষের সুপারিশ সংবলিত আবেদনটি সংশ্লিষ্ট আদালত প্রত্যাখ্যান করে মামলার কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। গুলি করে তিন খুনের মামলাটির আসামি পালং উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৩০ জন। গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার তিন নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের এ সিদ্ধান্তের কথা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এ ধরনের মামলার সংখ্যা আসলে কত, সেটা অনুমান করা দুঃসাধ্য।
সুশাসন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রভৃতি কথা শুধু বক্তৃতা-বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ থাকলে বাস্তবে উল্টো ফল হতে বাধ্য। গণতান্ত্রিক সমাজে ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে কেউই এমনটা আশা করে না। ইংরেজি নববর্ষে মানুষের মুখে মুখে যে আশাবাদ উচ্চারিত হয়েছে, তার বাস্তবায়নে সরকারকে অবশ্যই বিরোধী দলকে আস্থায় নিতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ সব ক্ষেত্রেই তাদের গ্রহণযোগ্য উপস্থিতি অপরিহার্য। জাতীয় সংসদ কার্যকর করে তুলতে না পারলে একদলীয় শাসনের চিত্র ক্রমেই প্রকট হয়ে দেখা দেবে নতুন বছরে। এমনটা কারও কাম্য নয়, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
বছরের শেষদিনে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কমিটি আরও ৪৮৫টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নিলেও সেখানে বিরোধী দলের একটি মামলাও স্থান পায়নি। এ পর্যন্ত গত এক বছরে ১১ দফায় প্রত্যাহারের সুপারিশ করা এ ধরনের ১ হাজার ৮১৭টি মামলার মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা ১৯৫টি মামলাও রয়েছে। প্রত্যাহারের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাবেক মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক নেতা ও এনজিও ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি ও দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারার, এমনকি খুনের মামলাও স্থান পেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ঠিক কতটা মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে, সেটা জানা যায়নি। সরকার ক্ষমতাবলে যে কোনো মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করতে পারলেও বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার চূড়ান্ত ক্ষমতা আদালতের হাতে।
একতরফাভাবে সরকারি দল ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করার সুপারিশ নিয়ে শুরু থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলেও সরকারের বোধোদয় হয়েছে বলা যাবে না। এ প্রসঙ্গে প্রত্যাহার সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বরাবর একই কথা শোনান। সর্বশেষ তালিকায় বিরোধীপক্ষের কোনো মামলা না থাকা প্রসঙ্গে তার কথা—রাজনৈতিক হয়রানিমূলক হিসেবে যাদের মামলাই কমিটির বিবেচনায় আসছে, তাদেরটিই প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হচ্ছে। যথার্থই বলেছেন তিনি। এখন পর্যন্ত তাদের দৃষ্টিতে অন্যদের মামলাগুলো বিবেচনার যোগ্য মনে হয়নি। জেলায় জেলায় গঠিত সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলো স্বাভাবিকভাবেই সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাই বিরোধী দলের রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা নজরে না পড়লেও সরকারি দলের অরাজনৈতিক, এমনকি খুনের মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশও আটকে থাকেনি। একটি উদাহরণই যথেষ্ট মনে হয়। ২০০২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুরের পালং থানার একটি ট্রিপল মার্ডার মামলাও প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করেছে কমিটি। গত ৫ অক্টোবর করা রাষ্ট্রপক্ষের সুপারিশ সংবলিত আবেদনটি সংশ্লিষ্ট আদালত প্রত্যাখ্যান করে মামলার কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। গুলি করে তিন খুনের মামলাটির আসামি পালং উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৩০ জন। গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার তিন নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের এ সিদ্ধান্তের কথা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এ ধরনের মামলার সংখ্যা আসলে কত, সেটা অনুমান করা দুঃসাধ্য।
সুশাসন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন প্রভৃতি কথা শুধু বক্তৃতা-বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ থাকলে বাস্তবে উল্টো ফল হতে বাধ্য। গণতান্ত্রিক সমাজে ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে কেউই এমনটা আশা করে না। ইংরেজি নববর্ষে মানুষের মুখে মুখে যে আশাবাদ উচ্চারিত হয়েছে, তার বাস্তবায়নে সরকারকে অবশ্যই বিরোধী দলকে আস্থায় নিতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ সব ক্ষেত্রেই তাদের গ্রহণযোগ্য উপস্থিতি অপরিহার্য। জাতীয় সংসদ কার্যকর করে তুলতে না পারলে একদলীয় শাসনের চিত্র ক্রমেই প্রকট হয়ে দেখা দেবে নতুন বছরে। এমনটা কারও কাম্য নয়, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
No comments