গিলানির বিরুদ্ধে ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালত অবমাননার অভিযোগ গঠন

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ১৩ ফেব্রুয়ারি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে আদালতে তলব করেছেন। আদালতের নির্দেশ অনুসারে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চালু করতে অস্বীকৃতি জানানোয় ওই দিন তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ গঠন করা হবে। সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কায় সহায়তা চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লেখা একটি গোপন চিঠি সম্প্রতি ফাঁস হওয়ার ঘটনায় পাকিস্তান সরকার ভীষণ চাপের মধ্যে রয়েছে।


জারদারির একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ওই চিঠি পাঠিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আদালত অবমাননার জন্য গিলানিকে তলব করলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারক নাসির-উল-মুল্ক বলেন, রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ায় আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে না—সরকারের এমন যুক্তি সত্ত্বেও গিলানির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনার যথেষ্ট ভিত্তি রয়েছে।
নাসির-উল-মুল্ক বলেন, ‘প্রাথমিক শুনানি শেষে গিলানির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার বিষয়ে সন্তোষজনক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই অভিযোগ গঠনের জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।’
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি গিলানিকে আদালতে তলব করা হয়। সে সময় আদালতে গিলানির কাছে সুইজারল্যান্ডকে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা পুনরায় চালু না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।
পাকিস্তানের আদালত জারদারির বিরুদ্ধে নব্বইয়ের দশকের একটি দুর্নীতির মামলা পুনরায় চালু করতে সুইস কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বলার জন্য দুই বছরেরও আগে সরকারকে নির্দেশ দেন। তখন সরকার মামলা চালু করতে অস্বীকৃতি জানায়। সরকার সে সময় বলেছিল, দায়িত্ব পালনের সময় প্রেসিডেন্টকে বিচারের আওতায় আনা যাবে না।
২০০৮ সালে জারদারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সুইজারল্যান্ড তাঁর দুর্নীতির মামলা স্থগিত করে।
গিলানির আইনজীবী আইতজাজ আহসান বলেন, ‘১৩ ফেব্রুয়ারি গিলানির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে। তাই ওই দিন তাঁকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই অভিযোগের বিষয়ে আপিলের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আপিল গ্রহণ করা হবে কি না, সেটা আদালতের বিষয়।’
গিলানির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর ছয় মাসের কারাদণ্ড হতে পারে এবং প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়বেন।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আতহার মিনাল্লাহ বলেন, ‘আদালত অবমাননার ঘটনা ঘটেছে এবং এটি প্রধানমন্ত্রী গিলানির দ্বারাই হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশ ও অর্থনীতির স্বার্থে জারদারির পদত্যাগ করা উচিত।’ এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.