জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়-আন্দোলনরত শিক্ষকদের ক্লাস বর্জন অব্যাহত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাত দফা দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষক সমাজের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা ক্লাস বর্জন, কালো পতাকা মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
এ ছাড়া প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা ও স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে সমাবর্তন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।


তবে ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করে আন্দোলনরত শিক্ষকদের কর্মসূচি পালন ও কয়েকজন শিক্ষকের অসহযোগিতার কারণেই সমাবর্তন স্থগিত করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানিয়েছে।
শিক্ষক সমাজের ব্যানারে জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাঁদের সাত দফা দাবি আদায়ে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। এ ছাড়া বেলা ১১টার দিকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বর থেকে কালো পতাকা মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে তাঁরা প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের একপাশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ এ মামুন, সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফ উদ্দিন, আন্দোলন পরিচালনা পর্ষদের আহ্বায়ক নাসিম আখতার হোসাইন, এম এ মতিন, এ টি এম আতিকুর রহমান, মানস কুমার চৌধুরী, রায়হান রাইন, স্বাধীন সেনসহ শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। এরপর সেখান থেকে পুনরায় কালো পতাকা মিছিল করে শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে গতকালের কর্মসূচি সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
ছয় দিনের কর্মসূচির তৃতীয় দিনে কাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সমাবর্তন বর্জন, বাতিল কিংবা সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কোনোরূপ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঘোষণা বা কর্মসূচি আন্দোলনরত শিক্ষকদের ছিল না। গত কয়েক বছরে গণনিয়োগ ও নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসীদের মদদদান করে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা শিক্ষার যে বৈরী পরিবেশ তৈরি করেছেন, শিক্ষক সমাজ সমাবর্তনে আসা মহামান্য আচার্যকে তা জানানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। এ উদ্যোগ সফল হলে প্রশাসনের স্বরূপ মহামান্য আচার্যের কাছে উন্মোচিত হয়ে যাওয়ার ভয় ও আশঙ্কা থেকেই সমাবর্তন স্থগিত করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সমাবর্তন যথাসময়ে করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই গ্রহণ করা হয়েছিল। সমাবর্তন ব্যবস্থাপনা কমিটি সমাবর্তন ও শিক্ষকদের আন্দোলন-সম্পর্কিত বিষয়গুলো সিন্ডিকেটে উত্থাপন করে। পরে আন্দোলনরত শিক্ষকদের গৃহীত কর্মসূচির কারণে সমাবর্তন অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে না হওয়ার আশঙ্কায় তা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়।

No comments

Powered by Blogger.