ড. ফখরুদ্দীন আহমদের সরকার ও বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠান by প্রফেসর ড. মোঃ আবদুল হাই তালুকদার

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি মহামান্য প্রেসিডেন্ট ড. ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। উপদেষ্টা পরিষদ বিলুপ্ত করে নতুন উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফখরুদ্দীন আহমদ নতুন উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান হন।

বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এ পরিষদের কাজ। তাই উপদেষ্টামণ্ডলী শপথ নেয়ার পর সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে পাঁচ দফা কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। দফাগুলো হলো—১. কঠোর হস্তে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস দমন এবং দুর্নীতির বিচার ২. ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরিয়ে এনে দেশের অর্থনীতির চাকা সচলকরণ ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা ৩. দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার সাধন করে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি ৪. নাগরিকদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধার সমবন্টন এবং ৫. জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা।
তাদের কর্ম পরিকল্পনাগুলো চমত্কার, আকর্ষণীয়, লোভনীয় ও দেশের জন্য হিতকর বলে আমাদের প্রতীতি হয়েছিল। জরুরি অবস্থা জারি ও সেনা মোতায়েনের প্রেক্ষাপট ছিল অতীব ভয়াবহ, গোটা দেশের অবস্থা ছিল টালমাটাল। রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টি, গার্মেন্ট কারখানায় হামলা, ভাংচুর অগ্নিসংযোগ, প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা, অবরোধের নামে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা পর্যুদস্ত, বাস, ট্রেন, ট্রাক ও প্রাইভেট কারে অগ্নিসংযোগ করে দেশের সম্পদহানি, বাড়ি-ঘর, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও বিভিন্ন বন্দর বন্ধ করে দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে স্থবিরতা সৃষ্টি ও মালামাল ওঠানামা বন্ধ করে দিয়ে দেশের অর্থনীতি পঙ্গু করার ষড়যন্ত্র। এসব কর্মকাণ্ডে মানুষ সীমাহীন দুর্যোগে পড়ে ও দেশের ভবিষ্যত্ নিয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত্র ও শঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় দেশের সর্বব্যাপী অপূরণীয় ক্ষতি হয়, যার অভিশাপ শিক্ষাজীবন পর্যন্ত ব্যাপৃত হতে থাকে। ১৪ দলীয় জোটের আন্দোলনের সময় ৯১ জন নিহত হন, আহত হন প্রায় ১০ সহস্র, ১৩৬টি বাস, ৯৭টি ট্রাক, ৮২টি প্রাইভেট কার, ৩টি ট্রেন, ৭৬টি মিনিবাস, ১৮২টি রিকশা, ৭৮টি ট্যাক্সিতে এ সময় অগ্নিসংযোগ করা হয়। (দৈনিক সংগ্রাম, ১২ ডিসেম্বর, ২০০৬)। ‘সেনা মোতায়েন মানুষের অন্তর জয়ের পথ করে দিয়েছে’ দেশের সম্পদ বিধ্বংসী এসব
অবাঞ্ছিত কর্মকাণ্ড থেকে দেশ ও দেশের
মানুষকে রক্ষা করার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা। এতে গণমানুষের মান-সম্মান, জীবন ও
সম্পদ রক্ষা পায়। তাই এই ব্যবস্থাকে দেশের মানুষ জোরালো সমর্থন করে। আমি সে
সময়ে কয়েকটি লেখায় এ ব্যবস্থাকে সমর্থন করেছিলাম ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছিলাম।
কিন্তু অচিরেই আমাদের মোহভঙ্গ হয়। অতীব দুঃখের সঙ্গে অবলোকন করা গেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ৫ দফার কোনোটিই সঠিকভাবে ও সঠিক পদ্ধতিতে বস্তবায়ন হচ্ছে না। ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ করা যায়নি, বরং ব্যাপ্তি কমলেও তীব্রতা বেড়েছিল। ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের শনাক্তকরণের বদলে ব্যক্তিগত আক্রোশ বেশি কাজ করেছে। প্রকৃত দোষী ব্যক্তির জায়গায় নির্দোষ, নিরপরাধ ব্যক্তিরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল। দুর্নীতি দমনের বদলে রাজনীতি দমন করা হয়েছে। যেনতেনভাবে, রাজনীতিকদের আটকিয়ে বিচারকের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। রাজনীতিকদের চরিত্র হনন প্রতিদিনের রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছিল। দুর্নীতির সঠিক তদন্ত ও প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। তাই বিচারকার্যও প্রহসনে পরিণত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কর্মকাণ্ডে মানুষ হতাশ ও সংশয়াপন্ন হয়ে পড়ে। এভাবে পরিকল্পনার প্রথমটি মাঠে মারা যায়। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনয়নের কাজটিও ড. ফখরুদ্দীনের সরকার সঠিকভাবে করতে পারেনি। ব্যবসায়ীদের ধরে এনে বাজার নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়াটি ছিল মারাত্মক ভুল পদক্ষেপ। অসত্ ব্যবসায়ী দমনের বদলে ব্যক্তিগত আক্রোশ মিটাতে থাকে। বাজার নিয়ন্ত্রণের সূত্র প্রয়োগ না করে বাঁকা পথে চলায় বাজার ব্যবস্থা লাগামহীন হয়ে পড়ে ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ হয়ে পড়ে দিশাহারা। চাল, ডাল, তেল, নুন, শাক-সবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সীমিত আয়ের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের লোকজনের জীবন-জীবিকা হয়ে পড়ে দুর্বিষহ ও অসহনীয়। দ্বিগুণ, তিনগুণ দাম বৃদ্ধি ছিল অকল্পনীয় ও নজিরবিহীন। মানুষ হতভম্ব ও বিহ্বল হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে অভিশাপ দিতে থাকে এবং তাদের ত্বরিত বিদায় কামনা করে। অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের অবসান হোক—এই ছিল তখনকার দিনে সকলের প্রত্যাশা। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির মূল কাজের বদলে যেসব কাজ করছে তা ছিল জাতীয় অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের অন্তরায়। মনে হচ্ছিল জোট সরকারকে হেয়প্রতিপন্ন করা যেন তাদের এজেন্ডা। দেশকে তারা অন্তত বিশ বছর পিছিয়ে দিয়েছিল। ফখরুদ্দীনের সরকার দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিল তা ছিল দেশ পরিচালনায় অনভিজ্ঞতার পরিণতি। ২০০৫ সালে মোটা চাল ছিল ১৮ টাকা, ২০০৭ সালে ২৬ টাকা, যা বাড়তে বাড়তে ৩৫ টাকায় ওঠে। সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ হয়। সব দোষ চাপানো হয় জোট সরকার তথা বিএনপির ওপর। প্রচারণা এমনভাবে চলে যে, যত মন্দ কাজ ও মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে জোট সরকারের আমলে। এভাবে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার বদলে ঐক্য আরও বিনষ্ট হয়। বিএনপি হয়ে পড়ে কোণঠাসা, অবরুদ্ধ। নেতাকর্মীরা হয়ে পড়েন দিশাহারা। মামলা-হামলার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করে। বিএনপির অনেক নেতাকর্মীই সংস্কারপন্থী বনে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। অবশ্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলেই সংস্কারপন্থীদের আবির্ভাব ঘটেছিল। উভয় দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা-হামলা হয়েছিল। তবে সবাই স্বীকার করবেন যে, বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর মামলার সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। অবশ্য আওয়ামী লীগ নেত্রী নির্বাচনের সময় সবাইকে টেনে নিয়েছেন, যা বিএনপির ক্ষেত্রে ঘটেনি। অনেক নেতাকর্মী দলের বাইরে থেকে গেছেন। অবশ্য বিএনপির ভাঙন ১/১১-এর আগেই শুরু হয়েছিল। জরুরি অবস্থার পর এ ভাঙন আরও বৃদ্ধি পায়। ফলে বিএনপিতে নানা দল, উপদল সৃষ্টি হয়। অবিশ্বাস, সংশয়, মতবিরোধ, মতদ্বৈধতা, দ্বন্দ্ব, কলহ দলে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। বিএনপি হয়ে পড়ে বিশৃঙ্খল, এলোমেলো ও অসংগঠিত রাজনৈতিক দল। দেশের অন্যতম বৃহত্ দলের এরুপ পরিণতি দেখে দুঃখ হয়।
বলাই বাহুল্য, বেগম জিয়ার পরিবারের প্রতি নেমে আসে অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ও নির্যাতন। চাপ বা লোভ কোনো কিছুতেই নতি স্বীকার না করে বেগম জিয়া অবিচল, শক্ত ও দৃঢ় অবস্থান ধরে রাখেন। দেশকে ভালোবেসে দেশে অবস্থান করেন। বেগম জিয়া সেনাশাসনের বিকল্প গণতান্ত্রিক শাসনের প্রতি দুর্বলতা হেতু নির্বাচনে অংশ নেন। সরকার, সরকারি যন্ত্র ও দেশি-বিদেশি চক্রান্ত তখন প্রকাশ্যেই অনুভূত হচ্ছিল। নির্বাচনের ফলাফল বেগম জিয়া নিশ্চয়ই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। এত কিছুর পরও তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিন জায়গা থেকেই বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। তবে দল পরাজিত হওয়ায় তিনি নানা প্রতিকূলতার মধ্যে পড়েছেন। বর্তমানে দেশের যে অবস্থা তাতে মানুষের সুখ-শান্তি বিনষ্ট হতে চলেছে। দলবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি ইত্যাদি চলছে অবলীলাক্রমে। ভর্তি বাণিজ্য নামক এক নজীরবিহীন ঘটনাও শুরু হয়েছে। দলীয় বিবেচনায় চাকরি দেয়া হচ্ছে দেদার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বলা যায়, বিজ্ঞপ্তি যা দেয়া হচ্ছে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে দ্বিগুণ এবং অনেক বিভাগে তার চেয়েও বেশি। কোনোরকম প্রতিবাদ প্রশাসন গ্রাহ্য করছে না। বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বিভাগীয় সভাপতি মহোদয়ের ওজর-আপত্তিও গ্রাহ্য করা হচ্ছে না। এরূপ অবস্থা চলছে প্রায় সারাদেশের শিক্ষাঙ্গনগুলোতে। এমতাবস্থায় প্রধান বিরোধী দল তথা দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির দায়দায়িত্ব অনেক। মানুষ দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। আমি ২৪ ডিসেম্বর ০৯-এর নয়া দিগন্ত থেকে নেয়া ২০০৫, ২০০৭ ও ২০০৯-এর কিছু মূল্য তালিকা পাঠকের জ্ঞাতার্থে এখানে উল্লেখ
করছি।
মানুষ যখন এরূপ অসহনীয় ও কষ্টকর অবস্থায় পড়ে আছে সে সময় বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হলো। কাউন্সিলটি হয়েছে সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ। সর্বস্তরের নেতাকর্মী বিপুল উত্সাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি সার্থকভাবে সম্পন্ন করেছেন। ঐকমত্যের ভিত্তিতে বেগম জিয়াকে দলের সভাপতি ও তারেক জিয়াকে সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে। ১৯ জন স্থায়ী কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। এক বিশাল যজ্ঞ এত সুশৃঙ্খল ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে সম্পন্ন হতে দেখে জাতীয়তাবাদী সব মানুষ আনন্দিত ও উত্ফুল্ল। তাদের প্রত্যাশা বিএনপি আবার গোছালো এক শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হবে। নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা যাবে ইস্পাতকঠিন ঐকমত্য। কেউ কাউকে শত্রু বা প্রতিপক্ষ না ভেবে উত্সাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দেশগড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করবে। এ দলের যিনিই নেতা নির্বাচিত হোন না কেন কর্মীদের ভাবতে হবে সবাই নেতা। ব্যক্তির নেতৃত্ব ও মর্যাদা নির্ভর করে সহযোগিতা ও সমর্থনের পরিমাণের ওপর। সমর্থক ছাড়া নেতার মূল্য শূন্য। তাই নির্বাচিত নেতার কর্তব্য হলো কর্মীদের মূল্যায়ন ও স্মরণ করা। নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর বা ক্ষমতা লাভের পর নেতাকে তার বিশাল কর্মীবাহিনীর কথা স্মরণ করে কাজ করা উচিত। যিনি নেতৃত্ব পাবেন না তাকে মনে রাখতে হবে নেতা তারই আদর্শে বিশ্বাসী ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী। সবাই ত আর এক সঙ্গে নেতা হতে পারেন না বা তা সম্ভবও নয়। তাই নেতাকে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর অবসরে যেতে হবে। অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নেতা নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার হওয়া উচিত। নেতা ও কর্মীর মধ্যে কোনো মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব থাকা কাম্য নয়। সবাইকে ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করে দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতির ভিতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানাচ্ছি।
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মর্যাদা রক্ষার্থে বিএনপির সব নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে, কর্তব্যের প্রতি অবিচল আস্থা রেখে কাজ করতে হবে। দলের মধ্যে একে অপরকে শত্রু বা প্রতিপক্ষ না ভেবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে কর্তব্যকর্মে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। সম্ভব হলে (অসম্ভব মনে করি না) বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা হোক। আমরা খুশি হবো। নানা মতের ও নানা পথের মানুষ বিএনপি নামক সংগঠনের সক্রিয় নেতাকর্মী ও সমর্থক। কাউন্সিলে দেখা গেছে, এদের মধ্যে ইস্পাতকঠিন ঐক্য। ১৫ কোটি দুখী মানুষের কথা স্মরণ করে তাদের রাজনীতি করার আহ্বান জানাচ্ছি। বিএনপি কোনো ভুঁইফোড় রাজনৈতিক দল নয়। এ দলের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক মহান মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজ সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য ও চাওয়া-পাওয়াকে বিসর্জন দিয়েছেন। নির্লোভ খাঁটি দেশপ্রেমিক মানুষটি কখনোই সম্পদের পেছনে ছোটেননি। তিনি চেয়েছেন ১৫ কোটি মানুষের সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য ও সমৃদ্ধি। এই মহান নির্লোভ ব্যক্তির হাতে গড়া সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীর সম্পদের প্রতি অত্যন্ত মোহ দেখে মনে হয়, ধরিত্রী দ্বিধা হও। বিএনপির নেতাকর্মীদের হতে হবে নির্লোভ, খাঁটি দেশপ্রেমিক, মানবপ্রেমিক, সত্ ও দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। তারা তাদের সততা, যোগ্যতা, দক্ষতা ও বিচক্ষণতা দিয়ে কাজ করে দেশের সমৃদ্ধি আনয়নে অবদান রাখুক—এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে শেষ করছি।
লেখক : অধ্যাপক দর্শন বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.