সরকারের ভূমিকাই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে-শেয়ারবাজারে আবারও অস্থিরতা
দেশের শেয়ারবাজারে আবারও বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। কয়েক দিন ধরেই ধারাবাহিক দরপতনের একপর্যায়ে বিনিয়োগকারী-লেনদেনকারীদের কিছু অংশ যথারীতি রাজপথে নেমেছে। এ দৃশ্য নতুন কিছু ছিল না। কেননা, একাধিক দিন দরপতন হলেই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে সৃষ্টি করা হয়েছে তিন বছর আগে।
এখন সেটাকে স্থায়ী রূপও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কয়েক দিন ধরে সরকারের দিক থেকে যা করা হলো, তাতে ঘুরেফিরে সেই পুরোনো প্রশ্নই চলে এসেছে যে সত্যিই শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল ও পরিণত বা পরিপক্ব করে তুলতে সরকার আগ্রহী কি না। তা না হলে কালোটাকা বিনিয়োগের বিষয়ে যে নির্দেশনাটি দেওয়া হলো, সেটি কোন সুবিবেচনা থেকে হলো, তা বোধগম্য নয়। আবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের আইনগত বিধিনিষেধের প্রসঙ্গটি হঠাৎ করে মন্ত্রিসভায় জোরেশোরে আলোচিত হয়ে একপ্রকার ঘোষণা আকারে গণমাধ্যমের সামনে আনা হলো। আর এসব মিলে বিভ্রান্তি-আতঙ্ক ছড়িয়ে লেনদেন এক দিন বন্ধ থাকল।
বস্তুত, গত কয়েক বছরে শেয়ারবাজারকেন্দ্রিক সরকারের বিভিন্ন নীতি-সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করলে সর্বশেষ ঘোষণা বা সিদ্ধান্তগুলোর কারণ সম্পর্কে একটি অভিন্ন ধারণা স্পষ্ট হয়, সেটি হলো বাজারকেন্দ্রিক সুপরিকল্পনার অভাব। যে যা-ই বলুন না কেন, এটা প্রমাণিত যে দেশের পুঁজিবাজার কৃত্রিমভাবে ফুলে-ফেঁপে যে স্ফীতি তৈরি হয়, তা ঘটেছিল বাজারে ভারসাম্যহীনতার কারণে। আর অর্থ মন্ত্রণালয়ই উসকে দিয়েছিল এই ভারসাম্যহীনতা। তাই পরবর্তী সময়ে বাজারের অনিবার্য ধস রোধ করা যায়নি। কিন্তু ধসের পর বাজারকে পর্যায়ক্রমে স্থিতিশীল হতে এবং বাজারের নিয়মে চলতে দেওয়ার জন্য যে ধরনের নীতিনির্দেশনা প্রয়োজন ছিল, সেগুলোও ঠিকমতো পাওয়া যায়নি। বরং একেক সময় একেকভাবে কিছু প্রণোদনা দিয়ে বাজারকে চাঙা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, একটি সর্বাত্মক পরিকল্পনার আলোকে পুঁজিবাজারের কোনো সংস্কারের চেষ্টা হয়নি। নেওয়া হয়নি আর্থিক বাজারের গভীরতা বাড়ানোর অর্থবহ পদক্ষেপ। ফলে কিছুদিন স্বাভাবিক আচরণ করেই বাজার আবার অস্থিরতার মধ্যে পড়েছে।
নৈতিক ও অর্থনৈতিক কোনো যুক্তিতেই কালোটাকাকে উৎসাহিত করা যায় না। তার পরও বাজারের প্রভাবশালী ও বড় বিনিয়োগকারী-লেনদেনকারীরা এটাকে ইস্যু বানিয়ে এই ধারণা সঞ্চারের চেষ্টা করে আসছেন যে কালোটাকা প্রশ্নহীনভাবে বিনিয়োগ করতে না দিলে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার বিষয়টি সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিধিনিষেধের ঘোষণাটি এখন কেন দিতে হবে? এটা যখন আইনেই আছে, তখন সেই উঠতি বাজারের সময়ই আইন প্রয়োগের দিকে যাওয়া উচিত ছিল। এত দিন না করে এখন হঠাৎ আইনানুগ পথে চলার প্রবল উৎসাহ চাগা দিয়ে ওঠায় এর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠা ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হওয়াই তো স্বাভাবিক।
অন্যদিকে এটাও ঠিক যে দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারী-লেনদেনকারীদের বড় অংশই সঠিকভাবে জেনেবুঝে যুক্ত হয়নি, হয়েছে মূলত প্রলোভনের কারণে। কাজেই বাজারের গতি-প্রকৃতিতে তাদের আচরণ ও প্রতিক্রিয়া অনেক সময়ই যুক্তি-বুদ্ধির সীমা ছাড়িয়েছে। কিন্তু তাদের এই অভ্যাস বদলাতে হবে। মনে রাখতে হবে, জোর করে কৃত্রিমভাবে বাজার চাঙা রাখা যায় না। মুনাফার মিষ্টি স্বাদের পাশাপাশি লোকসানের তিক্ততাও বাস্তবতা। হুজুগে-গুজবে চালিত হয়ে এবং রাজপথে নেমে আর যা-ই হোক, শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল করা যায় না।
বস্তুত, গত কয়েক বছরে শেয়ারবাজারকেন্দ্রিক সরকারের বিভিন্ন নীতি-সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করলে সর্বশেষ ঘোষণা বা সিদ্ধান্তগুলোর কারণ সম্পর্কে একটি অভিন্ন ধারণা স্পষ্ট হয়, সেটি হলো বাজারকেন্দ্রিক সুপরিকল্পনার অভাব। যে যা-ই বলুন না কেন, এটা প্রমাণিত যে দেশের পুঁজিবাজার কৃত্রিমভাবে ফুলে-ফেঁপে যে স্ফীতি তৈরি হয়, তা ঘটেছিল বাজারে ভারসাম্যহীনতার কারণে। আর অর্থ মন্ত্রণালয়ই উসকে দিয়েছিল এই ভারসাম্যহীনতা। তাই পরবর্তী সময়ে বাজারের অনিবার্য ধস রোধ করা যায়নি। কিন্তু ধসের পর বাজারকে পর্যায়ক্রমে স্থিতিশীল হতে এবং বাজারের নিয়মে চলতে দেওয়ার জন্য যে ধরনের নীতিনির্দেশনা প্রয়োজন ছিল, সেগুলোও ঠিকমতো পাওয়া যায়নি। বরং একেক সময় একেকভাবে কিছু প্রণোদনা দিয়ে বাজারকে চাঙা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, একটি সর্বাত্মক পরিকল্পনার আলোকে পুঁজিবাজারের কোনো সংস্কারের চেষ্টা হয়নি। নেওয়া হয়নি আর্থিক বাজারের গভীরতা বাড়ানোর অর্থবহ পদক্ষেপ। ফলে কিছুদিন স্বাভাবিক আচরণ করেই বাজার আবার অস্থিরতার মধ্যে পড়েছে।
নৈতিক ও অর্থনৈতিক কোনো যুক্তিতেই কালোটাকাকে উৎসাহিত করা যায় না। তার পরও বাজারের প্রভাবশালী ও বড় বিনিয়োগকারী-লেনদেনকারীরা এটাকে ইস্যু বানিয়ে এই ধারণা সঞ্চারের চেষ্টা করে আসছেন যে কালোটাকা প্রশ্নহীনভাবে বিনিয়োগ করতে না দিলে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার বিষয়টি সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিধিনিষেধের ঘোষণাটি এখন কেন দিতে হবে? এটা যখন আইনেই আছে, তখন সেই উঠতি বাজারের সময়ই আইন প্রয়োগের দিকে যাওয়া উচিত ছিল। এত দিন না করে এখন হঠাৎ আইনানুগ পথে চলার প্রবল উৎসাহ চাগা দিয়ে ওঠায় এর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠা ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হওয়াই তো স্বাভাবিক।
অন্যদিকে এটাও ঠিক যে দেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারী-লেনদেনকারীদের বড় অংশই সঠিকভাবে জেনেবুঝে যুক্ত হয়নি, হয়েছে মূলত প্রলোভনের কারণে। কাজেই বাজারের গতি-প্রকৃতিতে তাদের আচরণ ও প্রতিক্রিয়া অনেক সময়ই যুক্তি-বুদ্ধির সীমা ছাড়িয়েছে। কিন্তু তাদের এই অভ্যাস বদলাতে হবে। মনে রাখতে হবে, জোর করে কৃত্রিমভাবে বাজার চাঙা রাখা যায় না। মুনাফার মিষ্টি স্বাদের পাশাপাশি লোকসানের তিক্ততাও বাস্তবতা। হুজুগে-গুজবে চালিত হয়ে এবং রাজপথে নেমে আর যা-ই হোক, শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীল করা যায় না।
No comments