শুরু হলো সিজন অব দি অ্যাওয়ার্ডস by সৈয়দ মাহ্মুদ জামান

মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে হলিউডে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দু-দুটি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। ১২ জানুয়ারি ১৭তম ক্রিটিকস চয়েস মুভি অ্যাওয়ার্ড ও ১৫ জানুয়ারি ৬৯তম গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড। আর এর মধ্য দিয়ে শুরু হলো হলিউডের সিজন অব দি অ্যাওয়ার্ড। লিখেছেন সৈয়দ মাহ্মুদ জামান


১৭তম ক্রিটিকস মুভি চয়েজ অ্যাওয়ার্ড : সমালোচক প্রিয় আর্টিস্ট, হেল্প ও জর্জ ক্লুনি শুরু হয়ে গেল পুরস্কারের পালা। 'সিজন অব দ্য অ্যাওয়ার্ডস'। আর প্রতিবছরের মতো 'ক্রিটিকস চয়েজ অ্যাওয়ার্ড'-এর মধ্য দিয়ে যে পুরস্কারের পালা শুরু হয়, তার রেশ চলে বছরের মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার রাতে লস অ্যাঞ্জেলেসের হলিউড প্যালাডিয়াম থিয়েটারে তারকাখচিত সন্ধ্যায় দেওয়া হলো ১৭তম ক্রিটিকস মুভি চয়েজ অ্যাওয়ার্ড। হলিউডের ব্রডকাস্ট ফিল্ম ক্রিটিকস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এ পুরস্কার অনুষ্ঠানে কোনো একক বিজয়ী না থাকলে সমালোচকদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে স্থান করে নিয়েছে 'দ্য আর্টিস্ট'। সেরা ছবি ও সেরা পরিচালকসহ 'দ্য আর্টিস্ট' জিতে নিয়েছে চারটি পুরস্কার। বাকি দুটি পুরস্কার এসেছে সেরা পোশাক ও অরিজিনাল স্কোর ক্যাটাগরিতে। যদিও সেরা ছবির অন্যতম দাবিদার ছিল 'ডিসেনডেন্টস', 'মানি বল' ও গত বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবের সেরা 'ট্রি অব লাইফ'। এ ছাড়া খুব একটা পিছিয়ে ছিল না বছরের আলোচিত 'দ্য হেল্প' ও স্টিভেন স্পিলবার্গের 'ওয়ার হর্স'।
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ বা লড়াই বলতে যা বোঝায় তা ছিল সেরা অভিনেতা ও সেরা অভিনেত্রী-এই দুটি ক্যাটাগরিতে। মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে সেরা অভিনেতার দৌড়ে অনেকটাই সমানে ছিলেন জর্জ ক্লুনি ও ব্রাড পিট (মানি বল)। ডার্ক হর্স হিসেবে অনেকেই মাইকেল ফাজবেন্ডারকেও (শেম) এগিয়ে রেখেছেন। তা ছাড়া লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও (জে এডগার) তো ছিলেনই। শেষ পর্যন্ত অবশ্য 'ডিসেনডেন্ট' ছবির জন্য জর্জ ক্লুনিই পুরস্কারটি জিতে নেন এবং তাতে কারো চোখই কপালে ওঠেনি। বরং এ বছর যে তার ঘরে আরো অনেক পুরস্কারই যাবে, তা এখন অনেকটাই নিশ্চিত। তবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারেই ছিল রাতের সবচেয়ে বড় চমক। অনেকেরই ধারণা ছিল লড়াইটা হবে ত্রিমুখী। 'আয়রন লেডি'র জন্য মেরিল স্ট্রিপ, 'উই নিড টু টক অ্যাবাউট কেভিন'-এর জন্য টিলডা সোয়িনটন এবং 'ইয়ং অ্যাডাল্ট'-এর জন্য শার্লিজ থেরনের মধ্যে। এদের ঠিক পেছনেই, বলা যায় ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছিলেন মিশেল উইলিয়ামস তাঁর 'মাই উইক উইথ মেরিলিন' ছবির জন্য। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে পুরস্কার পেয়ে যান ভায়োলা ডেভিস। তিনি নিজেও যে এর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তা পরিষ্কার বোঝা গেল ভায়োলা মঞ্চে ওঠার পর। তখন তিনি কাঁদছেন। পুরস্কার হাতে ভায়োলা বললেন, 'আমি এখন অনেক ছোট। নতজানু হয়ে সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। ১৪ বছর বয়স থেকে পাঁচ ঘণ্টা বাসে করে অভিনয়ের ক্লাসে যেতাম। কারণ আমার স্বপ্ন ছিল একদিন বড় হওয়ার। যে স্বপ্নটা আমার মা বা নানি দেখার ধৃষ্টতা দেখাতে পারেননি কখনো। যে স্বপ্নটা আমার অভিনীত চরিত্র এইবিলিন কখনো ভাবেনি। এই পুরস্কার সেই স্বপ্নহীন নারীদের উদ্দেশে উৎসর্গ করলাম।'
একইভাবে সেরা পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কারেও বেশ চমক পাওয়া গেছে। কেনেথ ব্রানাগ (মাই উইক উইথ মেরিলিন) ও নিক নোল্টেকে (ওয়ারিয়র) পেছনে ফেলে 'বিগিনার্স' ছবির জন্য পুরস্কার জিতে নেন ক্রিস্টোফার প্লামার। অনেকেই ধারণা করেছিলেন সেরা অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে পুরস্কার ঘরে নিয়ে যাবেন ক্যারি মুলিগান (শেম) অথবা জেসিকা চ্যাস্টেইন (হেল্প)। পুরস্কার ঠিকই জিতেছে 'হেল্প', তবে জেসিকা নন, জিতেছেন আরেক কৃষ্ণাঙ্গ অক্টাভিয়া স্পেনসার। অভিনয়ের দুটি ক্যাটাগরি ছাড়াও 'হেল্প' জিতে নেয় সেরা অভিনয় শিল্পী সমন্বয় পুরস্কারটিও। ফলে অস্কার বা গোল্ডেন গ্লোবসহ আগামী সবগুলো পুরস্কারে এ ছবিটি এগিয়ে থাকবে।
'মিডনাইট ইন প্যারিস' ছবির জন্য সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কার পেয়েছেন উডি অ্যালেন এবং সেরা গৃহীত চিত্রনাট্যের পুরস্কার পান স্টিভেন জ্যালিয়ান ও অ্যারন সরকিন 'মানি বল' ছবির জন্য। এ ছাড়া ক্যামেরার পেছনের পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে সেরা শিল্প নির্দেশনা 'হুগো', সেরা সম্পাদনা 'গার্ল উইথ গোল্ডেন ট্যাটু', সেরা পোশাক 'দ্য আটিস্ট', সেরা মেক আপ 'হ্যারি পটার ডেথলি হলোজ-২', সেরা ভিজুয়াল অ্যাফেক্ট 'রাউজ অব দ্য প্লানেট অব দ্য এপস' এবং সেরা শব্দ বা শব্দ নিয়ন্ত্রণ 'হ্যারি পটার ডেথলি হলোজ-২'। অন্যতম পুরস্কার সেরা চিত্রগ্রহণে এ বছর টাই হয়েছে। যৌথভাবে পুরস্কারটি পেয়েছে 'ট্রি অব লাইফ' ও 'ওয়ার হর্স'।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে 'অ্যাডভেঞ্চার অব টিনটিন'কে পেছনে ফেলে বছরের সেরা অ্যানিমেশন ছবির ক্রিটিকস চয়েজ পুরস্কার জিতেছে 'র‌্যাঙ্গো'। বছরের সেরা অ্যাকশন ও কমেডি ছবির ক্রিকিটস চয়েজ জিতেছে যথাক্রমে 'ড্রাউভ' ও 'ব্রাইডসমেইডস'।
সেরা প্রামাণ্যচিত্র হয়েছে মার্টিন স্করসেজি পরিচালিত 'জর্জ হ্যারিসন লিভিং ইন দ্য ম্যাটেরিয়াল ওয়ার্ল্ড'। এ ছাড়া সেরা বিদেশি ভাষার ছবির পুরস্কার পেয়েছে ইরানের ছবি 'অ্যা সেপারেশন'। সেরা স্কোর বা সঙ্গীত সংযোহনের পুরস্কার লাভ করে 'দ্য আর্টিস্ট'। তবে সেরা গানের ক্রিটিকস চয়েজ জিতে নিয়েছে 'মাপেটস' ছবির লাইফ ইজ অ্যা হ্যাপি সং' গানটি। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন ছবির অভিনেতা জেসন সেগাল ও অ্যামি অ্যাডামস।
ক্রিটিকস চয়েজের বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার জোয়েল সেইগাল হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন দুই বছর ধরে একক প্রচেষ্টায় ভূমিকম্প বিধ্বস্ত হাইতিতে সাহায্য-সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়া হলিউড তারকা শন পেন।
৬৯তম গোল্ডেন গ্লোব : অস্কারের পথে মেরিল স্ট্রিপ-জর্জ ক্লুনি এবং 'আর্টিস্ট'
না এখানে কোনো অঘটন ঘটেনি। যেমনটি ধারণা করা হয়েছে, হলিউড হেভিওয়েট মেরিল স্টিপ্র, জর্জ ক্লুনিই জিতে নিয়েছেন এ বছরের ৬৯তম গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড। আর প্রত্যাশা মতোই ফরাসি পরিচালক মিশেল আঁজানাভিশ্যুসের 'দ্য আর্টিস্ট' জিতে নেয় কমেডি বা মিউজিক্যাল ক্যাটাগরির সেরা ছবিসহ তিনটি পুরস্কার জিতে নেয়।
ক্রিটিকস চয়েজ বা সমালোচকদের পছন্দের ছবি ও অভিনেতার পুরস্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে বছর শুরু হলেও গোল্ডেন গ্লোব হলো বছরের প্রথম বড় পুরস্কার অনুষ্ঠান, যাকে অনেকেই অস্কারের ছায়াও বলে থাকেন। রবিবার হলিউডের বেভারলি হিলসের বিখ্যাত বেভারলি হিলটন হোটেলে বরাবরের মতো বসে ৬৯তম গোল্ডেন গ্লোবের আসর। উপস্থাপক যথারীতি স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান রিকি জারভিস। শুধু চলচ্চিত্র নয়, গোল্ডেন গ্লোব মানেরই গত এক বছরের টেলিভিশনের সেরা কাজগুলোরও স্বীকৃতি। তাই অন্যান্য পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের চেয়ে এতে তারকার সমাগমও হয় বেশি।
ড্রামা ক্যাটাগরিতে জর্জ ক্লুনির সেরা অভিনেতা হওয়া এবং 'দ্য ডিসেনডেন্টস' যে সেরা ছবির গোল্ডেন গ্লোব পাবে সেটা অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছিল। অভিনয়ের ক্ষেত্রে তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারতেন 'মানিবল' ছবির জন্য ব্রাড পিট। কিন্তু স্ত্রী কোমায় চলে যাওয়ার পর অনেকটাই অবাধ্য দুই সন্তানকে নিয়ে সংসারকে আটকে রাখার প্রচণ্ড সংগ্রাম করা এক বাবার চরিত্রে জর্জ ক্লুনি যে অভিনয় করেছেন, তা তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম সেরা বলেই মানছেন অনেকে। 'আয়রন লেডি'র জন্য ড্রামা ক্যাটগরিতে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার মেরিল স্ট্রিপ পাচ্ছেন এটা নিশ্চিতই ছিল। ১৭তম অস্কার মনোনয়ন তো থাকবেই, হয়তো ৩০ বছর পর আবারও সেরা অভিনেত্রীর অস্কার ঘরে নিয়ে যাবেন তিনি। পুরস্কার নিতে এসে মেরিল স্ট্রিপ বলেন, 'সারা ইংল্যান্ডবাসীকে ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা আমাকে ওখানে যেতে দিয়েছে এবং তাদের ইতিহাস নিয়ে খেলার সুযোগ দিয়েছে।'
একে তো সাদা-কালো তার ওপরে নির্বাক। আর এই ছবি কি না এ বছর সব পুরস্কার ঘরে নিয়ে যাচ্ছে? বলা হচ্ছে, 'দ্য আর্টিস্ট' ছবিটার কথা। কমেডি ক্যাটাগরিতে সেরা অভিনেতা হন ছবির জ্য দুজার্দি। 'মাই উইক উইথ মেরিলিন' ছবিতে মেরিলিন মনরোর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার ঘরে তুলেছেন মিশেল উইলিয়ামস। তিনি বলেন, 'এখন আমার হাতে যে পুরস্কারটি, ৫০ বছর আগে ঠিক একই পুরস্কার হাতে ধরেছেন মেরিলিন।'
সেরা পরিচালকের ক্ষেত্রে কে হবে সেরা সেটা অনেককেই দ্বিধায় ফেলে। কারণ যেমন ছিলেন মার্টিন স্করসেজি (হুগো), তেমনি ছিলেন উডি অ্যালেন (মিডনাইট ইন প্যারিস)। তা ছাড়া ডিসেনডেন্টস ছবির জন্য আলেঙ্ান্ডার পেইনও পিছিয়ে ছিলেন না। আর মিশেল আঁজানাভিশ্যুস তো একঝাক পুরস্কার জিতে বসেই আছেন এরই মধ্যে। তবে মার্টিন স্করসেজির নামটা যখন ঘোষিত হলো, কারো মনে হয় না কোনো আফসোস হয়েছে।
সেরা পার্শ্ব অভিনেতা ও পার্শ্ব অভিনেত্রী হয়েছেন যথাক্রমে 'বিগিনার্স' ছবির জন্য ক্রিস্টোফার প্লামার এবং 'দ্য হেল্প' ছবিতে এক গৃহপরিচারিকার চরিত্রে অভিনয়কারী অক্টাভিয়া স্পেনসার। আর্টিস্টের জন্য রাতের তৃতীয় পুরস্কারটি ছিল সেরা সংগীতায়নের। যদি সেরা গানের পরিস্কারটি চলে যায় ম্যাডোনার হাতে। তাঁর পরিচালনায় নির্মিত ছবি 'ডবি্লউ ই' ছবির 'মাস্টারপিস' গানটির জন্য। ম্যাডোনার নাম ঘোষণার পর রিকি জারভিস স্বভাবসুলভ কৌতুক করে বলেন, 'কুমারি পরিচারিকার হাতে পুরস্কার'। ম্যাডোনাও পাল্টা কৌতুক করে বলেন, 'যদি আমাকে কুমারি বলে মনে হয়, তবে এস, আমি এখানেই আছি, কিছু একটা করে যাও।' চলচ্চিত্রের জন্য রাতের বাকি পুরস্কারগুলো পেয়েছে সেরা চিত্রনাট্যে 'মিডনাইট ইন প্যারিস', সেরা অ্যানিমেশনে 'অ্যাডভেঞ্চার অব টিনটিন এবং সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র হয়েছে ইরানের 'আ সেপারেশন'।
টেলিভিশনের ক্ষেত্রেও এবারের গোল্ডেন গ্লোব ছিল হলিউড হেভিওয়েটদের দখলেই। ড্রামা ক্যাটাগরিতে সেরা সিরিজ হয়েছে 'হোমল্যান্ড'। জনপ্রিয় এই সিরিজে অভিনয়ের সুবাদে এই ক্যাটাগরির সেরা অভিনেত্রী হন ক্লেয়ার ডেইন্স। 'বস' সিরিজের জন্য এ ক্যাটাগরিতে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন কেলসি গ্র্যামার। কমেডি বা মিউজিক্যাল ক্যাটাগরির সেরা সিরিজের পুরস্কার পায় 'মডার্ন ফ্যামিলি'। এর শাখার সেরা অভিনেতা ও অভিনেত্রী হয়েছেন যথাক্রমে ম্যাট লেব্লাঙ্ক (এপিসোডস) এবং লরা ডার্ন (এনলাইটেন্ড)। তবে এরই মধ্যে সেরা মিনি সিরিজ বা মোশন পিকচার ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায় ব্রিটিশ সিরিজ 'ডাউনটন অ্যাবি'। ব্রিটেনের আরেক অভিনেতা ইদ্রিস এলবা ক্রাইম ড্রামা সিরিজ 'লুথার'-এর জন্য এই ক্যাটাগরির সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান। আর 'মিলড্রেড পিয়ার্স' ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রী হয়েছেন কেট উইন্সলেট। টেলিভশনের সেরা পার্শ্ব অভিনেতা ও অভিনেত্রীর গোল্ডেন গ্লোব পেয়েছেন বামন অভিনেতা পিটার ডিঙ্কলেজ (গেম অব থর্নস) এবং জেসিকা ল্যাং (আমেরিকান হরর স্টোরি)। এ ছাড়া বিশেষ সম্মাননা সিসিল বি ডেমিল পুরস্কার মরগান ফ্রিম্যানের হাতে তুলে দেন হেলেন মিরেন ও সিডনি পয়টিয়ের।

No comments

Powered by Blogger.