দিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

বৃষ্টি হলেই শ্রেণীকক্ষের ভেতরে পানি জমে যায়। দেয়ালজুড়ে ছোট-বড় অসংখ্য ফাটল। ঝড় শুরু হলে চালের টিন খুলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পড়ে—এ রকম পরিস্থিতিতেও ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হয় তাঁদের। এই করুণ অবস্থা দিগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এটি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায়। এখানে ৩০০ ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করে। শিক্ষক আছেন মাত্র পাঁচজন।


প্রধান শিক্ষক মাজেদা খাতুন বলেন, পাকা ছাদের জায়গায় টিনের চাল দেওয়া হয়েছে। ছাদ ভেঙে যাওয়ায় ১৯৯৭ সালে এই চাল দেওয়া হয়। এখন ওই টিনেও অসংখ্য ছিদ্র সৃষ্টি হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। বেশি বৃষ্টি হলে পানিতে ভেসে যায় শ্রেণীকক্ষের মেঝে। ছাদ থেকে মাঝেমধ্যেই খসে পড়ে টিন। ছাদের ওপর ফুটো টিনের চাল থাকায় মানুষজন ঠাট্টা-মশকরা করে। দেয়ালেও অসংখ্য ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। বিকল্প না থাকায় এ জীর্ণশীর্ণ ভবনেই পাঠদান করা হচ্ছে।
ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইফতেখার হোসেন জানান, ১৯৪৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৮ সালে বিদ্যালয়ের জন্য চার কক্ষের পাকা ভবন করা হয়। অল্প ব্যয়ে নির্মাণ করায় এর ছাদ বহু আগেই নষ্ট হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালে ছাদের ওপরেই টিনের চাল দিতে হয়।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে একাধিকবার বিদ্যালয় ভবন সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাজশাহী কার্যালয় থেকে লোকজন এসে মাপজোখ করে গেছে কয়েকবার। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়েও বিদ্যালয়ের ভবন সংস্কারের আবেদন করা হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সেলিমা বলেন, ‘এ বিদ্যালয়ে আমার মেয়েও সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছে। প্রায় মাস দুয়েক আগে ছাদ থেকে চালটা ছুটে আমার মেয়ের মাথার ওপর পড়ে। এতে আহত হয় সে।’
সোহাগ আলী, মামুনুর রশিদ, বিলকিস খাতুন ও আয়েশা খাতুনসহ কয়েকজন শিক্ষক জানান, ক্লাস করার সময় তাঁরা ভয়ে থাকেন। কারণ যেকোনো সময় চালের টিন তাঁদের মাথার ওপর পড়তে পারে। বৃষ্টি হলে শ্রেণীকক্ষের মেঝেতে পানি জমে যাওয়ায় তাঁরা পাঠদানে মনোযোগ দিতে পারেন না।
গোদাগাড়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বলেন, ভবন সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বহুবার লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

No comments

Powered by Blogger.