পবিত্র কোরআনের আলো-মক্কা বিজয়ের পর যারা মুসলমান হয়েছে তাদের সামনে আরো পরীক্ষা
১৩. আলা- তুক্বা-তিলূনা ক্বাওমান্ নাকাছূ আইমা-নাহুম ওয়াহাম্মূ বিইখ্রা-জির্ রাসূলি ওয়া হুম বাদাঊকুম্ আওয়্যালা মার্রাহ্; আতাখ্শাওনাহুম; ফাল্লা-হু আহাক্কু আন্ তাখ্শাওহু ইন কুনতুম্ মু'মিনীন। ১৪. ক্বা-তিলূহুম ইউআ'য্যিব্হুমুল্লা-হু বিআইদীকুম ওয়া ইউখ্যিহিম্ ওয়া ইয়ানসুর্কুম আ'লাইহিম ওয়া ইয়াশ্ফি সুদূরা ক্বাওমিম্ মু'মিনীন।
১৫. ওয়া ইউয্হিব্ গাইযা ক্বুলূবিহিম; ওয়া ইয়াতূবুল্লা-হু আ'লা- মান ইয়্যাশা-; ওয়াল্লা-হু আ'লীমুন হাকীম।
১৬. আম্ হাছিব্তুম্ আন তুতরাকূ ওয়া লাম্মা- ইয়া'লামিল্লা-হুল্লাযীনা জা-হাদূ মিনকুম ওয়া লাম্ ইয়াত্তাখিযূ মিন্ দূনিল্লা-হি ওয়া লা- রাসূলিহী ওয়া লাল্ মু'মিনীনা ওয়ালীজাতান ওয়াল্লা-হু খাবীরুম্ বিমা তা'মালুন। [সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ১৩-১৬]
অনুবাদ : ১৩. তোমরা কি সেই সব লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না, যারা নিজেদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে এবং রাসুলকে দেশ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করেছে। আর এরাই তো প্রথমে তোমাদের ওপর উৎপীড়ন করেছে। তোমরা কি এদের ভয় করো? তাহলে তো এ বিষয়ে আল্লাহই বেশি হকদার যে, তোমরা তাঁকে ভয় করবে, যদি তোমরা মুমিন হও।
১৪. এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, যাতে আল্লাহ তোমাদের হাত দিয়ে এদের শাস্তি প্রদান করেন, তাদের লাঞ্ছিত করেন, তাদের ওপর বিজয়ী হওয়ার জন্য তোমাদের সাহায্য করেন এবং মুমিনদের অন্তর জুড়িয়ে দেন।
১৫. আর এভাবে তাদের (মুমিনদের) মনের ক্ষোভ দূর করেন। যার প্রতি আল্লাহর ইচ্ছা হয় তার তাওবা কবুল করেন। আল্লাহ পরিপূর্ণ জ্ঞান ও কর্মকুশলের অধিকারী।
১৬. তোমরা কি মনে করেছ, তোমাদের এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে, অথচ আল্লাহ তায়ালা পরখ করে নেননি, তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করে এবং শুধু আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও মুমিনদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধু বানায় না। তোমরা যা কিছু করো না কেন আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলো ও বারাআত বা কাফিরদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ সংক্রান্ত। ১৩ নম্বর আয়াতে মক্কার কোরাইশ কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে প্রথম কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে চুক্তি বা অঙ্গীকার ভঙ্গ করার বিষয়টি। তবে ইসলামের আবির্ভাবের প্রাথমিক যুগে মক্কায় রাসুলের স্বগোত্রের কাফিররা আল্লাহর রাসুল ও তাঁর অনুসারী মুসলিমদের ওপর যে জুলুম-নির্যাতন করেছে, তা ছিল অমানবিক। প্রথমে তো তারাই অমানবিক নির্যাতন, নিপীড়নের মাধ্যমে মুসলিমদের উসকানি দিয়ে আসছে। সুতরাং এখন মুসলমানরাও যেহেতু শক্তি সঞ্চয় করতে পেরেছে, সেহেতু যুদ্ধের মাধ্যমে তাদের দর্প চূর্ণ করে দেওয়ার জন্য মুসলমানদের উৎসাহী হওয়ারই কথা। অন্যদিকে হুদায়বিয়ায় সম্পাদিত গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিটি ভঙ্গ করার কাজটিও করেছে মুশরিক কোরাইশরা। ১৩ নম্বর আয়াতটির শানেনুজুল এ রকম_ষষ্ঠ হিজরিতে হুদায়বিয়ায় মক্কার কাফিরদের সঙ্গে মুসলমানদের এই শর্তে সন্ধি হয় যে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। এই ১০ বছর বনু খুযাআ রাসুলের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। বনু বকর গোত্র খুযাআ গোত্রের ওপর আক্রমণ করলে কোরাইশরা সন্ধি চুক্তি ভঙ্গ করে বনু বকরের পক্ষে বনু খুযাআ গোত্রের ওপর আক্রমণে অংশ নেয়। এ বিষয়টাও এই আয়াতের পটভূমি।
১৬ নম্বর আয়াতে ইশারা করা হয়েছে, সেসব ব্যক্তির প্রতি, যারা মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম গ্রহণ করেছে। প্রথমত তারা স্রোতের অনুকূলে ইসলাম গ্রহণ করে নিজেদের জানমাল হেফাজত করেছে। অন্যদিকে কোনো জিহাদে অংশগ্রহণের সুযোগ বা পরিস্থিতি তাদের সামনে আসেনি। এই নওমুসলিমদের বলা হচ্ছে তোমাদেরও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বারাআত বা সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণার পর যদিও বড় কোনো যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি, তথাপি তাদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। কারণ তখনো তাদের তেমন কোনো পরীক্ষা হয়নি। এ জন্যই জিহাদের নির্দেশদানের পাশাপাশি তাদের বলা হচ্ছে, তারা যেন আল্লাহ, তাঁর রাসুল এবং মুমিনদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধু না বানায়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১৬. আম্ হাছিব্তুম্ আন তুতরাকূ ওয়া লাম্মা- ইয়া'লামিল্লা-হুল্লাযীনা জা-হাদূ মিনকুম ওয়া লাম্ ইয়াত্তাখিযূ মিন্ দূনিল্লা-হি ওয়া লা- রাসূলিহী ওয়া লাল্ মু'মিনীনা ওয়ালীজাতান ওয়াল্লা-হু খাবীরুম্ বিমা তা'মালুন। [সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ১৩-১৬]
অনুবাদ : ১৩. তোমরা কি সেই সব লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না, যারা নিজেদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে এবং রাসুলকে দেশ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করেছে। আর এরাই তো প্রথমে তোমাদের ওপর উৎপীড়ন করেছে। তোমরা কি এদের ভয় করো? তাহলে তো এ বিষয়ে আল্লাহই বেশি হকদার যে, তোমরা তাঁকে ভয় করবে, যদি তোমরা মুমিন হও।
১৪. এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, যাতে আল্লাহ তোমাদের হাত দিয়ে এদের শাস্তি প্রদান করেন, তাদের লাঞ্ছিত করেন, তাদের ওপর বিজয়ী হওয়ার জন্য তোমাদের সাহায্য করেন এবং মুমিনদের অন্তর জুড়িয়ে দেন।
১৫. আর এভাবে তাদের (মুমিনদের) মনের ক্ষোভ দূর করেন। যার প্রতি আল্লাহর ইচ্ছা হয় তার তাওবা কবুল করেন। আল্লাহ পরিপূর্ণ জ্ঞান ও কর্মকুশলের অধিকারী।
১৬. তোমরা কি মনে করেছ, তোমাদের এমনি ছেড়ে দেওয়া হবে, অথচ আল্লাহ তায়ালা পরখ করে নেননি, তোমাদের মধ্যে কারা জিহাদ করে এবং শুধু আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও মুমিনদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধু বানায় না। তোমরা যা কিছু করো না কেন আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলো ও বারাআত বা কাফিরদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ সংক্রান্ত। ১৩ নম্বর আয়াতে মক্কার কোরাইশ কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। এখানে প্রথম কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে চুক্তি বা অঙ্গীকার ভঙ্গ করার বিষয়টি। তবে ইসলামের আবির্ভাবের প্রাথমিক যুগে মক্কায় রাসুলের স্বগোত্রের কাফিররা আল্লাহর রাসুল ও তাঁর অনুসারী মুসলিমদের ওপর যে জুলুম-নির্যাতন করেছে, তা ছিল অমানবিক। প্রথমে তো তারাই অমানবিক নির্যাতন, নিপীড়নের মাধ্যমে মুসলিমদের উসকানি দিয়ে আসছে। সুতরাং এখন মুসলমানরাও যেহেতু শক্তি সঞ্চয় করতে পেরেছে, সেহেতু যুদ্ধের মাধ্যমে তাদের দর্প চূর্ণ করে দেওয়ার জন্য মুসলমানদের উৎসাহী হওয়ারই কথা। অন্যদিকে হুদায়বিয়ায় সম্পাদিত গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিটি ভঙ্গ করার কাজটিও করেছে মুশরিক কোরাইশরা। ১৩ নম্বর আয়াতটির শানেনুজুল এ রকম_ষষ্ঠ হিজরিতে হুদায়বিয়ায় মক্কার কাফিরদের সঙ্গে মুসলমানদের এই শর্তে সন্ধি হয় যে ১০ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। এই ১০ বছর বনু খুযাআ রাসুলের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তিতে আবদ্ধ ছিল। বনু বকর গোত্র খুযাআ গোত্রের ওপর আক্রমণ করলে কোরাইশরা সন্ধি চুক্তি ভঙ্গ করে বনু বকরের পক্ষে বনু খুযাআ গোত্রের ওপর আক্রমণে অংশ নেয়। এ বিষয়টাও এই আয়াতের পটভূমি।
১৬ নম্বর আয়াতে ইশারা করা হয়েছে, সেসব ব্যক্তির প্রতি, যারা মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম গ্রহণ করেছে। প্রথমত তারা স্রোতের অনুকূলে ইসলাম গ্রহণ করে নিজেদের জানমাল হেফাজত করেছে। অন্যদিকে কোনো জিহাদে অংশগ্রহণের সুযোগ বা পরিস্থিতি তাদের সামনে আসেনি। এই নওমুসলিমদের বলা হচ্ছে তোমাদেরও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বারাআত বা সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণার পর যদিও বড় কোনো যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি, তথাপি তাদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। কারণ তখনো তাদের তেমন কোনো পরীক্ষা হয়নি। এ জন্যই জিহাদের নির্দেশদানের পাশাপাশি তাদের বলা হচ্ছে, তারা যেন আল্লাহ, তাঁর রাসুল এবং মুমিনদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধু না বানায়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments