মহেশখালীতে বন্দুকযুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

ক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় গতকাল বুধবার সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত ও এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন। মহেশখালী থানার পুলিশের ভাষ্যমতে, হত্যা মামলার আসামি ধরতে গেলে সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর গুলি চালালে ওই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।


নিহত পরেশ কারবারী (৫০) মহেশখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায়। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসী দুপুরে হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য জোনাব আলী পক্ষের ছয়জনের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে।
পুলিশ সূত্র জানায়, হোয়ানক ইউনিয়নের কালাগাজিরপাড়ার কাঁঠালতলী পাহাড়ি এলাকায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত জোনাব আলী ও জালাল আহমদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ইতিমধ্যে এ দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর জোনাবের লোকজন প্রতিপক্ষ জালাল ও তাঁর আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে হামলা চালায়। গুলিতে নিহত হন কালা খাতুন নামের এক নারী। আহত হন চারজন নারী।
ওই ঘটনায় নিহত কালা খাতুনের দেবর মৌলভী জালাল উদ্দিন ২৯ ডিসেম্বর জোনাব আলীকে প্রধান আসামি করে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান থানার এসআই পরেশ কুমার কারবারী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গতকাল সকাল আটটার দিকে হত্যা মামলার বাদী জালালকে সঙ্গে নিয়ে মামলার তদন্ত ও আসামি ধরতে কাঁঠালতলী পাহাড়ি এলাকায় যান এসআই পরেশ। সঙ্গে ছিলেন চার কনস্টেবল ও আনসারের দুজন সদস্য। টের পেয়ে জোনাবের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিৎ কুমার বড়ুয়া প্রথম আলোকে জানান, সন্ত্রাসীরা পুলিশের ওপর এলোপাতাড়ি শতাধিক গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৩১টি গুলি চালায়। বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঘটনাস্থলে নিহত হন এসআই পরেশ। পায়ে গুলি লেগে আহত হন কনস্টেবল নুরুল ইসলাম (৫০)।
এ ঘটনার পর পুলিশ সুপার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওসি রণজিৎ জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গতকাল দুপুরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরেশের মরদেহ খাগড়াছড়িতে তাঁর গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.