সাম্প্রতিক-চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতার জাল...! by শাকিল ফারুক
দিকে দিকে মাকড়শার জালের মতো হাজারটা ঝামেলা। একটাতে পা জড়াচ্ছে, ছাড়াতে গিয়ে অন্যটাতে জড়িয়ে যাচ্ছে। জালমুক্ত তো হওয়া যাচ্ছেই না, বরং জালটা আরো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরছে। রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, জাতীয়, আন্তর্জাতিক, অর্থনৈতিক_সব ক্ষেত্রেই অস্থিরতা। মেয়াদের তিন বছর পার করতে করতেই সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে কথা তোলার হাজারটা পথ তৈরি করে দিয়েছে সরকার নিজেই। কিন্তু তার পরও কথা বললেই দোষ।
সমালোচনা সহ্য করার ভদ্রতাও দেখাতে পারছে না সরকার। কী হবে এখন? দেশ তো এগোচ্ছে বিপর্যয়ের দিকে। সরকারি দল, বিরোধী দল, আদিবাসী_পরিস্থিতি হয়ে উঠছে সংঘাতময়।
পাহাড় শান্ত রাখতেই হবে
সন্তু লারমাদের ১৪ বছর পেরিয়ে গেল তবু কেউ কথা রাখল না! সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় না হয় ৩৬ বছরেও কারো কথা না রাখার হতাশা কবিতায় প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু সন্তু লারমাদের প্রকাশটা তো হবে ধ্বংসাত্মক। আবার অশান্ত হবে পার্বত্যাঞ্চল। ইতিমধ্যে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে কঠোর আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে সেখানকার আদিবাসীরা। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল যাদের সঙ্গে, ১৪ বছর পরের সেই ২ ডিসেম্বরে ওই জনসংহতি সমিতির নেতারা সাফসাফ জানিয়ে দিলেন, শিগগিরই কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলবেন তাঁরা। পার্বত্য চট্টগ্রাম আর শান্ত থাকবে না।
জনসংহতি সমিতির এমন কড়া হুঁশিয়ারির পরও, এই লেখাটি লেখা পর্যন্ত, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। তাহলে সরকার কি পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না? ঘামালে তো আরো আগেই ফল পাওয়ার কথা। আগেরবার ক্ষমতায় এসে তো আওয়ামী লীগই এই চুক্তি করেছিল এবং সুযোগ পেলেই এই চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিকে নিজেদের একটি অন্যতম সাফল্য হিসেবে প্রচার করে দলটি। মাঝখানে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল না হয় বাদ দেওয়া হলো, এবার তো আবার ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু সরকারের গত তিন বছরে চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ দেখা গেল না। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সরকার যে দীপঙ্কর তালুকদারকে দায়িত্ব দিয়েছে, তিনিও খুব একটা তৎপরতা দেখাতে তো পারেনইনি, বরং তাঁর কর্মকাণ্ড এবং বক্তব্য নিয়ে স্পষ্ট অসন্তোষ পার্বত্য আদিবাসী নেতাদের বক্তব্যে। সরকারের তো ভুলে যাওয়ার কথা নয়, স্বায়ত্তশাসনের কামনায় এই নেতারা সশস্ত্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। আবারও যদি নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য তাঁরা সংঘাতের পথে পা বাড়ান, তাহলে সেই দায় কার?
পাহাড়ি নৃ-গোষ্ঠীর ইতিহাস নিয়ে কথা বলার যথেষ্ট সুযোগ থাকলেও তা নিয়ে কথা বলার উপায় এখন নেই। ১৯৭২ সালে সাংবিধানিকভাবে বাঙালি জাতীয়বাদ নির্ধারিত হওয়ার পরই পাহাড়িদের মধ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হয় বিভ্রান্তি। বোঝানো হয়, এই সংবিধানের মাধ্যমে নৃ-গোষ্ঠীগুলোকে জাতিগত এবং সাংস্কৃতিকভাবে বাঙালি বানানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। নানা সময়ে বঞ্চিত এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলো নিজেদের অস্তিত্ব সংকটের আশঙ্কায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। মধ্য ৭০ থেকে শুরু হওয়া সমতল ও পাহাড়িদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটে ১৯৯৭ সালের শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে। যখন পাহাড়ি আদিবাসীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছিল, তখন কোনো সরকারই তা কাটানোর উদ্যোগ নেয়নি। পরবর্তী সময়ে চুক্তির মাধ্যমে সাময়িক শান্তি আনলেও চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো লক্ষণ নেই সরকার পক্ষের। চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে পার্বত্য নেতারা বহু দেন-দরবারও করেছেন গত ১৪ বছরে, কারো কাছ থেকে পাত্তাই পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠার কথা স্বায়ত্তশাসনকামী মানুষগুলোর। তা-ই হয়েছে। জেএসএস সভাপতি জোতীরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা বলেছেন, 'চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আবেদন-নিবেদন, দাবি-দাওয়া অনেক হয়েছে। কোনো সরকারই গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টি বিবেচনা করেনি। বর্তমান সরকারও করছে না। কোনো সরকারেরই আন্তরিকতা দেখা যাচ্ছে না। আদিবাসীদের সামনে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই।' সার্বভৌম কোনো দেশের ভেতরে বিচ্ছিন্ন কোনো জনগোষ্ঠী যদি সশস্ত্র আন্দোলনের পথ বেছে নেয়, তার ফল মোটেও সুখকর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। দ্রুত এ বিষয়ে সরকারের সহানুভূতি এবং মনোযোগ বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।
দুই টুকরো ঢাকার দায়ভার সরকারের
সরকারের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কোনোটাই স্পষ্ট হচ্ছে না। হঠাৎ হঠাৎ বিভ্রম ঘটে। আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এসেছে, সে কথাটাও বিস্মৃত হতে হয় প্রায়ই। কারণ গণতান্ত্রিক কোনো সরকারের আচরণ তো এমন একগুঁয়ে হওয়ার কথা নয়, সরকারে ঠাঁটেবাটে স্বৈরাচারী নিশানা। তারা নিজেদের ইচ্ছামতো ক্ষমতার দাপটে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। জনগণ বা বিরোধী দলের কোনো আপত্তি নিয়েই মাথাব্যথা নেই তাদের। ঢাকাকে দ্বিখণ্ডিত করার উদাহরণ তো সামনেই। কেবল বিরোধী দল নয়, বিরাট বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে খুব সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবাই বিরোধিতা করেছেন ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। কিন্তু সরকার সেসব কানে তোলেনি। বিদায়ী মেয়র সাদেক হোসেন খোকা অনুরোধ করেছেন ঢাকাকে ভাগ না করার। কাউন্সিলররা আপত্তি জানিয়েছেন। সংসদ সদস্যদের মতামতও নেওয়া হয়নি। ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শহরটাকে মাত্র চার অথবা পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ভাগ করে ফেলল শেখ হাসিনার সরকার। আমজনতাকে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে বুঝিয়ে দিতে চাইল, এতে নাগরিক সুবিধা বাড়বে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের সুবিধা বাড়াতে যে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা ছিল সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়, সেগুলোর সঙ্গে অবশ্য সিটি করপোরেশনের সম্পর্ক বদলানোর কোনো উদ্যোগ সরকারের আছে বলে এখনো জানা যায়নি।
তবে শেখ হাসিনা অদ্ভুত এক কথা বলেছেন, টাকা থাকলে নাকি ঢাকাকে চার ভাগ করে ফেলতেন! একটি দেশের সরকারপ্রধানের মুখে এমন হাস্যকর কথা তো মানায় না, বিশেষ করে যে দেশের অর্থনীতির দিশেহারা হাল সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন বেহিসাবি-বিলাসী কথাবার্তা মোটেই বিচক্ষণতার পরিচয় দেয় না। সরকারের টাকা নেই, সরকারের ঋণের ধকল সামলাতে গিয়ে অস্থির দেশের অর্থনীতি। এর পরও কেন ঢাকাকে বিভক্ত প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন খাতে সরকারের বিরাট অঙ্কের টাকা খরচ করতেই হবে। টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় বহু কর্মকাণ্ডই যেখানে লটকে আছে অনিশ্চয়তায়, সেখানে কেন ঢাকাকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত? যথোপযোগী ও গ্রহণযোগ্য কোনো কারণ তো সরকার দেখাতেই পারছে না, উল্টো ঠাঁটবাট দেখিয়ে চলেছে অযথা। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তো শেখ হাসিনার চেয়েও কয়েক কাঠি এগিয়ে। তাঁর মতে, ঢাকাকে নাকি ৪০ ভাগ করা দরকার। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন, শ্রমিক লীগ গায়ের জোরে বিরোধিতা থামানোর চেষ্টা চালিয়েছে। বিএনপি ঢাকা ভাগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতাল পালন করেছে রবিবার। এসব নিয়ে আবারও রাজনৈতিক অস্থিরতা ছড়িয়ে তো পড়ছেই, দেশকে আরো ভীষণ বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার।
কী সেই বিপদ? কেমন বিপদ? বিশেষজ্ঞ মতামত বলছে, এমন মনগড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে সরকার অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা প্রদর্শন করছে। যে সরকারের অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা থাকে না, অযথা খরচের বাতিক হয়ে যায় তাদের। পরবর্তী সময়ে যাবতীয় বাড়তি ব্যয় জনস্বার্থে করা হচ্ছে বলে দাবি করে সরকার। কিন্তু তাতে তো আর টাকা ফিরে আসে না। আগের ঋণ শোধ করতে নতুন ঋণ নিতে হবে সরকারকে। মূল্যস্ফীতি, উৎপাদন ব্যয়, বিদ্যুৎ-গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে। সরকারকে ঋণ দিতে গিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়বে না। শুরু হবে অর্থনৈতিক মন্দা। তার ওপর ঘাটতি বাজেট হয়ে উঠবে গোদের ওপর বিষফোঁড়াসম। আর এসবের ভোগান্তি পোহাতে হবে সাধারণ মানুষকে। এই ভোগান্তির দায়ভারও তো সরকার কাঁধে নেবে না।
বিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নাগরিকদের কোন হাতিঘোড়া কল্যাণ বয়ে আনবে, তা বলা যাচ্ছে না। তবে খুব বেশি ভালো কিছু যে হবে না, তা নিশ্চিত। উল্টো জটিলতা বাড়বে, বিভ্রান্তি ছড়াবে এবং সিটি করপোরেশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘি্নত হবে। এর পরও কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অটল নিজ অবস্থানে? কেবলই কি বিরোধী দলের মেয়রকে হটানোর জন্য, নাকি বিরোধী দলের আপত্তি অগ্রাহ্য করার জন্য? অথবা অন্য কোনো বিশেষ কারণ? যাই হোক, এই সিদ্ধান্ত কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করলে তার দায়ভার সরকারকে নিতেই হবে।
শেখ হাসিনা বনাম সবাই!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষতা কিংবা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। আওয়ামী লীগের মতো বাংলাদেশের প্রধান একটি দলের প্রধান তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই বর্তমান সরকার। এর আগেও সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অন্য অনেকের চেয়ে তিনি অবশ্যই ভালো বোঝেন_এই কথা মানতেই হবে। সঙ্গে এটাও মানতে হবে, একজন একাই সব ঠিক বুঝতে বা জানতে পারেন না। মানুষমাত্রই ভুল করে। আলোচনা এবং সমালোচনা ভুল শোধরানোর লক্ষ্যেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার এই সহজ কথাটা মানতেই চাইছেন না। তিনি এবং তাঁর সরকার একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং প্রশ্নসাপেক্ষ কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে। যাঁরাই এসবের সমালোচনা করছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বিরোধী দলের কাতারে ফেলছেন। শত্রুজ্ঞান করে সমালোচকদের সমালোচনায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। কিন্তু তাঁর এই কর্মকাণ্ড যে তাঁর এবং তাঁর দলের জন্য খারাপ ফল ছাড়া আর কিছু বয়ে আনছে না, তা কি বুঝতে পারছেন না তিনি?
সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখালেখি বা কথা বলার কারণে প্রধানমন্ত্রী দেশের বুদ্ধিজীবী এবং সাংবাদিকদের সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, সুশীল সমাজভুক্তদেরও নাকি ক্ষমতার লোভ পেয়ে বসে। সেই লোভ থেকেই সরকারবিরোধিতা!
এই সরকারের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী সমালোচনা পছন্দ করেননি। তাঁর মন্ত্রীরা ব্যর্থতার পরিচয় দিতে দিতে তিন বছর কাটিয়ে দিলেন। এসব নিয়ে কথা উঠলেই প্রধানমন্ত্রী সব মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। বারবার দাবি করেছেন, তাঁর মন্ত্রীরা সফল। সাফল্যের যে নিদর্শন আজ দেশজুড়ে, সে তো দেখছে সবাই। প্রধানমন্ত্রী একলা অন্ধ হয়ে থাকলে তো প্রলয় বন্ধ থাকবে না। সরকার ভালো কাজ করেনি, তা নয়। সেসব ভালো কাজের জন্য সরকারের প্রশংসা করা হচ্ছে, লেখালেখি হচ্ছে। কিন্তু গুটিকয় শুভ উদ্যোগের আড়ালে তো ব্যর্থতাগুলো চাপা থাকছে না। আরো যেন ছাপিয়ে উঠছে। সে জন্যই তো সমালোচনা হচ্ছে।
সমালোচনা থেকে নিজেদের শুধরে নেওয়ার পথ খুঁজতে হবে সরকারকে। সমালোচকের সমালোচনা করে নিজেদের ব্যর্থতা ঢেকে রাখা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে শত্রু মনে করে যে যুদ্ধ শুরু করেছেন, তাও কোনো সুফল বয়ে আনবে না। বরং এসব সমালোচনায় সরকার, নিজেদের আরো একদল প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি করছে। এভাবে সবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সরকার কোনো গণতান্ত্রিক আচরণ করছে না। প্রকাশ হচ্ছে সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাব। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের নামের পাশে স্বৈরাচার শব্দটা অবশ্যই বেমানান_মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ কথাটা অন্তত বোঝা উচিত।
পাহাড় শান্ত রাখতেই হবে
সন্তু লারমাদের ১৪ বছর পেরিয়ে গেল তবু কেউ কথা রাখল না! সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় না হয় ৩৬ বছরেও কারো কথা না রাখার হতাশা কবিতায় প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু সন্তু লারমাদের প্রকাশটা তো হবে ধ্বংসাত্মক। আবার অশান্ত হবে পার্বত্যাঞ্চল। ইতিমধ্যে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে কঠোর আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে সেখানকার আদিবাসীরা। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল যাদের সঙ্গে, ১৪ বছর পরের সেই ২ ডিসেম্বরে ওই জনসংহতি সমিতির নেতারা সাফসাফ জানিয়ে দিলেন, শিগগিরই কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলবেন তাঁরা। পার্বত্য চট্টগ্রাম আর শান্ত থাকবে না।
জনসংহতি সমিতির এমন কড়া হুঁশিয়ারির পরও, এই লেখাটি লেখা পর্যন্ত, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। তাহলে সরকার কি পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না? ঘামালে তো আরো আগেই ফল পাওয়ার কথা। আগেরবার ক্ষমতায় এসে তো আওয়ামী লীগই এই চুক্তি করেছিল এবং সুযোগ পেলেই এই চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিকে নিজেদের একটি অন্যতম সাফল্য হিসেবে প্রচার করে দলটি। মাঝখানে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল না হয় বাদ দেওয়া হলো, এবার তো আবার ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু সরকারের গত তিন বছরে চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ দেখা গেল না। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সরকার যে দীপঙ্কর তালুকদারকে দায়িত্ব দিয়েছে, তিনিও খুব একটা তৎপরতা দেখাতে তো পারেনইনি, বরং তাঁর কর্মকাণ্ড এবং বক্তব্য নিয়ে স্পষ্ট অসন্তোষ পার্বত্য আদিবাসী নেতাদের বক্তব্যে। সরকারের তো ভুলে যাওয়ার কথা নয়, স্বায়ত্তশাসনের কামনায় এই নেতারা সশস্ত্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। আবারও যদি নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য তাঁরা সংঘাতের পথে পা বাড়ান, তাহলে সেই দায় কার?
পাহাড়ি নৃ-গোষ্ঠীর ইতিহাস নিয়ে কথা বলার যথেষ্ট সুযোগ থাকলেও তা নিয়ে কথা বলার উপায় এখন নেই। ১৯৭২ সালে সাংবিধানিকভাবে বাঙালি জাতীয়বাদ নির্ধারিত হওয়ার পরই পাহাড়িদের মধ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হয় বিভ্রান্তি। বোঝানো হয়, এই সংবিধানের মাধ্যমে নৃ-গোষ্ঠীগুলোকে জাতিগত এবং সাংস্কৃতিকভাবে বাঙালি বানানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। নানা সময়ে বঞ্চিত এই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলো নিজেদের অস্তিত্ব সংকটের আশঙ্কায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। মধ্য ৭০ থেকে শুরু হওয়া সমতল ও পাহাড়িদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটে ১৯৯৭ সালের শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে। যখন পাহাড়ি আদিবাসীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছিল, তখন কোনো সরকারই তা কাটানোর উদ্যোগ নেয়নি। পরবর্তী সময়ে চুক্তির মাধ্যমে সাময়িক শান্তি আনলেও চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো লক্ষণ নেই সরকার পক্ষের। চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে পার্বত্য নেতারা বহু দেন-দরবারও করেছেন গত ১৪ বছরে, কারো কাছ থেকে পাত্তাই পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠার কথা স্বায়ত্তশাসনকামী মানুষগুলোর। তা-ই হয়েছে। জেএসএস সভাপতি জোতীরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা বলেছেন, 'চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আবেদন-নিবেদন, দাবি-দাওয়া অনেক হয়েছে। কোনো সরকারই গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়টি বিবেচনা করেনি। বর্তমান সরকারও করছে না। কোনো সরকারেরই আন্তরিকতা দেখা যাচ্ছে না। আদিবাসীদের সামনে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই।' সার্বভৌম কোনো দেশের ভেতরে বিচ্ছিন্ন কোনো জনগোষ্ঠী যদি সশস্ত্র আন্দোলনের পথ বেছে নেয়, তার ফল মোটেও সুখকর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। দ্রুত এ বিষয়ে সরকারের সহানুভূতি এবং মনোযোগ বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।
দুই টুকরো ঢাকার দায়ভার সরকারের
সরকারের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কোনোটাই স্পষ্ট হচ্ছে না। হঠাৎ হঠাৎ বিভ্রম ঘটে। আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় এসেছে, সে কথাটাও বিস্মৃত হতে হয় প্রায়ই। কারণ গণতান্ত্রিক কোনো সরকারের আচরণ তো এমন একগুঁয়ে হওয়ার কথা নয়, সরকারে ঠাঁটেবাটে স্বৈরাচারী নিশানা। তারা নিজেদের ইচ্ছামতো ক্ষমতার দাপটে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। জনগণ বা বিরোধী দলের কোনো আপত্তি নিয়েই মাথাব্যথা নেই তাদের। ঢাকাকে দ্বিখণ্ডিত করার উদাহরণ তো সামনেই। কেবল বিরোধী দল নয়, বিরাট বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে খুব সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবাই বিরোধিতা করেছেন ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। কিন্তু সরকার সেসব কানে তোলেনি। বিদায়ী মেয়র সাদেক হোসেন খোকা অনুরোধ করেছেন ঢাকাকে ভাগ না করার। কাউন্সিলররা আপত্তি জানিয়েছেন। সংসদ সদস্যদের মতামতও নেওয়া হয়নি। ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শহরটাকে মাত্র চার অথবা পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ভাগ করে ফেলল শেখ হাসিনার সরকার। আমজনতাকে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে বুঝিয়ে দিতে চাইল, এতে নাগরিক সুবিধা বাড়বে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের সুবিধা বাড়াতে যে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা ছিল সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়, সেগুলোর সঙ্গে অবশ্য সিটি করপোরেশনের সম্পর্ক বদলানোর কোনো উদ্যোগ সরকারের আছে বলে এখনো জানা যায়নি।
তবে শেখ হাসিনা অদ্ভুত এক কথা বলেছেন, টাকা থাকলে নাকি ঢাকাকে চার ভাগ করে ফেলতেন! একটি দেশের সরকারপ্রধানের মুখে এমন হাস্যকর কথা তো মানায় না, বিশেষ করে যে দেশের অর্থনীতির দিশেহারা হাল সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখে এমন বেহিসাবি-বিলাসী কথাবার্তা মোটেই বিচক্ষণতার পরিচয় দেয় না। সরকারের টাকা নেই, সরকারের ঋণের ধকল সামলাতে গিয়ে অস্থির দেশের অর্থনীতি। এর পরও কেন ঢাকাকে বিভক্ত প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন খাতে সরকারের বিরাট অঙ্কের টাকা খরচ করতেই হবে। টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় বহু কর্মকাণ্ডই যেখানে লটকে আছে অনিশ্চয়তায়, সেখানে কেন ঢাকাকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত? যথোপযোগী ও গ্রহণযোগ্য কোনো কারণ তো সরকার দেখাতেই পারছে না, উল্টো ঠাঁটবাট দেখিয়ে চলেছে অযথা। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তো শেখ হাসিনার চেয়েও কয়েক কাঠি এগিয়ে। তাঁর মতে, ঢাকাকে নাকি ৪০ ভাগ করা দরকার। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন, শ্রমিক লীগ গায়ের জোরে বিরোধিতা থামানোর চেষ্টা চালিয়েছে। বিএনপি ঢাকা ভাগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতাল পালন করেছে রবিবার। এসব নিয়ে আবারও রাজনৈতিক অস্থিরতা ছড়িয়ে তো পড়ছেই, দেশকে আরো ভীষণ বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার।
কী সেই বিপদ? কেমন বিপদ? বিশেষজ্ঞ মতামত বলছে, এমন মনগড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে সরকার অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা প্রদর্শন করছে। যে সরকারের অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা থাকে না, অযথা খরচের বাতিক হয়ে যায় তাদের। পরবর্তী সময়ে যাবতীয় বাড়তি ব্যয় জনস্বার্থে করা হচ্ছে বলে দাবি করে সরকার। কিন্তু তাতে তো আর টাকা ফিরে আসে না। আগের ঋণ শোধ করতে নতুন ঋণ নিতে হবে সরকারকে। মূল্যস্ফীতি, উৎপাদন ব্যয়, বিদ্যুৎ-গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়বে। সরকারকে ঋণ দিতে গিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাদের ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়বে না। শুরু হবে অর্থনৈতিক মন্দা। তার ওপর ঘাটতি বাজেট হয়ে উঠবে গোদের ওপর বিষফোঁড়াসম। আর এসবের ভোগান্তি পোহাতে হবে সাধারণ মানুষকে। এই ভোগান্তির দায়ভারও তো সরকার কাঁধে নেবে না।
বিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নাগরিকদের কোন হাতিঘোড়া কল্যাণ বয়ে আনবে, তা বলা যাচ্ছে না। তবে খুব বেশি ভালো কিছু যে হবে না, তা নিশ্চিত। উল্টো জটিলতা বাড়বে, বিভ্রান্তি ছড়াবে এবং সিটি করপোরেশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘি্নত হবে। এর পরও কেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অটল নিজ অবস্থানে? কেবলই কি বিরোধী দলের মেয়রকে হটানোর জন্য, নাকি বিরোধী দলের আপত্তি অগ্রাহ্য করার জন্য? অথবা অন্য কোনো বিশেষ কারণ? যাই হোক, এই সিদ্ধান্ত কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করলে তার দায়ভার সরকারকে নিতেই হবে।
শেখ হাসিনা বনাম সবাই!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষতা কিংবা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। আওয়ামী লীগের মতো বাংলাদেশের প্রধান একটি দলের প্রধান তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই বর্তমান সরকার। এর আগেও সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অন্য অনেকের চেয়ে তিনি অবশ্যই ভালো বোঝেন_এই কথা মানতেই হবে। সঙ্গে এটাও মানতে হবে, একজন একাই সব ঠিক বুঝতে বা জানতে পারেন না। মানুষমাত্রই ভুল করে। আলোচনা এবং সমালোচনা ভুল শোধরানোর লক্ষ্যেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার এই সহজ কথাটা মানতেই চাইছেন না। তিনি এবং তাঁর সরকার একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং প্রশ্নসাপেক্ষ কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে। যাঁরাই এসবের সমালোচনা করছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বিরোধী দলের কাতারে ফেলছেন। শত্রুজ্ঞান করে সমালোচকদের সমালোচনায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। কিন্তু তাঁর এই কর্মকাণ্ড যে তাঁর এবং তাঁর দলের জন্য খারাপ ফল ছাড়া আর কিছু বয়ে আনছে না, তা কি বুঝতে পারছেন না তিনি?
সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখালেখি বা কথা বলার কারণে প্রধানমন্ত্রী দেশের বুদ্ধিজীবী এবং সাংবাদিকদের সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, সুশীল সমাজভুক্তদেরও নাকি ক্ষমতার লোভ পেয়ে বসে। সেই লোভ থেকেই সরকারবিরোধিতা!
এই সরকারের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী সমালোচনা পছন্দ করেননি। তাঁর মন্ত্রীরা ব্যর্থতার পরিচয় দিতে দিতে তিন বছর কাটিয়ে দিলেন। এসব নিয়ে কথা উঠলেই প্রধানমন্ত্রী সব মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। বারবার দাবি করেছেন, তাঁর মন্ত্রীরা সফল। সাফল্যের যে নিদর্শন আজ দেশজুড়ে, সে তো দেখছে সবাই। প্রধানমন্ত্রী একলা অন্ধ হয়ে থাকলে তো প্রলয় বন্ধ থাকবে না। সরকার ভালো কাজ করেনি, তা নয়। সেসব ভালো কাজের জন্য সরকারের প্রশংসা করা হচ্ছে, লেখালেখি হচ্ছে। কিন্তু গুটিকয় শুভ উদ্যোগের আড়ালে তো ব্যর্থতাগুলো চাপা থাকছে না। আরো যেন ছাপিয়ে উঠছে। সে জন্যই তো সমালোচনা হচ্ছে।
সমালোচনা থেকে নিজেদের শুধরে নেওয়ার পথ খুঁজতে হবে সরকারকে। সমালোচকের সমালোচনা করে নিজেদের ব্যর্থতা ঢেকে রাখা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে শত্রু মনে করে যে যুদ্ধ শুরু করেছেন, তাও কোনো সুফল বয়ে আনবে না। বরং এসব সমালোচনায় সরকার, নিজেদের আরো একদল প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি করছে। এভাবে সবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সরকার কোনো গণতান্ত্রিক আচরণ করছে না। প্রকাশ হচ্ছে সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাব। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের নামের পাশে স্বৈরাচার শব্দটা অবশ্যই বেমানান_মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ কথাটা অন্তত বোঝা উচিত।
No comments