কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন by মাসউদুল কাদির
কৃতজ্ঞতা আদায়ের মাস মহররম। ইতিহাসে এই মাস নিয়ে সারা পৃথিবীতে নানামুখী কর্মসূচি পালিত হয়। লেখালেখিও হয় ব্যাপক। কেউ ইয়াজিদের বিরুদ্ধে রণমূর্তি ধারণ করে; আবার কেউ কারবালার ঘটনার তাত্তি্বক বিশ্লেষণ করে থাকে। মূলত ইয়াজিদই হজরত হোসাইনের (রা.) হত্যার জন্য দায়ী_ এ কথা স্পষ্ট করে বলা মুশকিল। একটা বিক্ষুব্ধ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সে সময়টা অতিক্রান্ত হচ্ছিল। তাই অতি সাবধানে সে সময়ের ইতিহাস নিয়ে
\পর্যালোচনা করতে হয়। এটা অবশ্য অন্য প্রসঙ্গ।মহররম একটি পবিত্র মাস। এর তাৎপর্য উপলব্ধি করে জীবন রাঙানোই হলো মুমিন মুসলমানের কাজ। মহররমের ১০ তারিখকে ইতিহাসে অনেক গুরুত্বের চোখে দেখা হয়েছে। নবীজির (সা.) হাদিসেও উঠে এসেছে এ দিনটির গুরুত্বের কথা। সত্যিকার অর্থে পৃথিবীময় কারবালার প্রচারই এখন বেশি। নবীজির (সা.) দৌহিত্র হজরত হোসাইনের (রা.) শাহাদতই আমাদের হৃদয়কে বিগলিত করেছে। ফলে পৃথিবীবাসী মৌলিক আশুরার প্রাণোচ্ছল হৃদ্যতা ও সওয়াবের উপাদেয় পুরস্কার থেকে দূরে সরে গেছে।
আমরা মনুষ্য জাতি কৃতজ্ঞতাপ্রবণ নই। তবে সবাই অকৃতজ্ঞ নয়। কৃতজ্ঞজনও আমাদের এই সমাজেই বিদ্যমান। এবার মহানবীর (সা.) কৃতজ্ঞতার কথা বলি। এটা শুধুই মহররমকেন্দ্রিক।
মহানবী (সা.) জানতে পারলেন, বনি ইসরাইল তথা ইহুদিরা হজরত মুসার (আ.) অনুসরণে আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে তাদের ওপর যে নিয়ামত লাভ হয়েছিল_ এ জন্য আশুরার দিনে রোজা রেখে কৃতজ্ঞতা আদায় করছে।
বনি ইসরাইলকে আল্লাহতায়ালা যে সমুদ্রে পথ করে বাঁচিয়েছেন এবং তাদের শত্রু অত্যাচারী শাসক ফেরাউনকে পানিতে ডুবিয়ে মেরেছেন_ এই কৃতজ্ঞতাই আদায় করছিল ইহুদিরা।
অথচ তৎকালে ইহুদিরা হজরত মুসার (আ.) অন্য সব আদর্শ ও কর্মকাণ্ডকে জলাঞ্জলি দিচ্ছিল। তখন সারওয়ারে কায়েনাত হজরত মুহাম্মদ (সা.) বললেন, 'নাহনু আহাক্কু বিমুসা মিনকুম' অর্থাৎ আমরা মুসার (আ.) অনুসরণে তোমাদের চেয়ে বেশি হকদার। ইবনে মাজা।
এরপর নবীজি (সা.) রোজা রাখা শুরু করলেন। তাঁর সাহাবিদেরও রোজা রাখার জন্য বললেন। এই হলো প্রিয় নবীর (সা.) কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উপলক্ষ। এর মূলে রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রচেষ্টা। তাই আমাদের প্রত্যাশা, প্রতিটি মুমিন বান্দার জীবন কৃতজ্ঞতার ফুলেল আবহে হোক সুন্দর।
mkadir1983@gmil.com
No comments