কারা হেফাজতে রুমানার স্বামী সাইদের মৃত্যু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক রুমানা মনজুরের স্বামী হাসান সাইদ গতকাল সোমবার ভোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রুমানাকে নির্যাতন ও চোখ উপড়ে ফেলার ঘটনায় গত ১৫ জুন রাজধানীর উত্তর মুগদার একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। লাশ গ্রহণকালে সাইদের বাবা ও স্বজনরা এ মৃত্যুকে 'রহস্যজনক' দাবি করেন এবং রুমানার চরিত্র ও মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে নানা কথা বলেন।
এ ব্যাপারে কারা উপ-মহাপরিদর্শক গোলাম হায়দার কালের কণ্ঠকে বলেন, হাসান সাইদের মৃত্যু কার্ডিয়াক ফেইলিওরের কারণে হয়েছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। সাইদকে বাথরুমে পড়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে কারাগারে মানসিক অস্থিরতায় ছিলেন সাইদ।
সাইদকে হত্যার বা তাঁর আত্মহত্যার গুঞ্জন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম হায়দার বলেন, ময়নাতদন্ত হওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান, সাইদের মৃত্যুর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন কারা সদর দপ্তরে পাঠানো হবে।
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক জামালউদ্দিন খলিফা জানান, কারাগার থেকে চোখের চিকিৎসার জন্য সাইদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শফিকুল ইসলামের অধীনে ভর্তি ছিলেন তিনি। তাঁর চিকিৎসার তত্ত্বাবধান করতেন ডা. পল্লব কুমার সেন। হাসপাতাল থেকে শুধু চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাঁর সব কিছুর দেখভাল করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
এটি আত্মহত্যা কি না জানতে চাইলে জামালউদ্দিন খলিফা বলেন, 'আত্মহত্যার মতো হতাশাগ্রস্ত তিনি ছিলেন না। এটি রহস্যজনক। তাঁর মুখে পলিথিন বাঁধা ছিল বলে কারারক্ষীরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান।'
সাইদের ছোট ভাই ফারুক সাইদ কালের কণ্ঠকে বলেন, চোখের সমস্যার কারণে গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। গতকাল সকালে জেল সুপার ফোনে তাঁকে সাইদের মৃত্যুর খবর দেন। লাশ উদ্ধারের সময় তাঁর শরীরে কম্বল মোড়ানো ছিল। তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য তাঁরা অপেক্ষা করবেন।
সাইদের বাবা সাইদ আহমেদ কবির সাংবাদিকদের বলেন, 'রুমানা মনজুর আত্মস্বীকৃত ব্যভিচারিণী। আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী মিডিয়া। রুমানা মনজুরের সব কিছু ঠিক আছে। এখনো সে সব দেখতে পায়। কিন্তু মিডিয়ার সামনে এলে সে চোখে কালো চশমা দিয়ে আসে।'
ময়নাতদন্ত ছাড়া ছেলের লাশ গ্রহণ করবেন কি না জানতে চাইলে সাইদ আহমেদ কবির বলেন, অবশ্যই ময়নাতদন্ত করা দরকার। ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
গতকাল সকালে প্রিজন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের কাছে সাইদের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বললেও পরে কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুল ইসলাম প্রিজন সেলের চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের জানান, হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে সাইদের মৃত্যু হয়েছে। তবে কী কারণে তাঁর হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়েছে তা জানাতে পারেননি তিনি।
কারারক্ষী তাহের উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, চারতলার প্রিজন সেল ভবনে একজন হাবিলদারের নেতৃত্বে ১১ জন কারারক্ষী ও চারজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করেন। হাসান সাইদ ও ইউসুফ নামের বিডিআরের এক সাজাপ্রাপ্ত আসামি দোতলার একটি কক্ষে একই সঙ্গে ছিলেন। গতকাল ভোরে হাসান সাইদকে তাঁর কক্ষে না পেয়ে ইউসুফের কাছে তাঁর খোঁজ করা হয়। ইউসুফ তাঁকে জানান, সাইদ অনেকক্ষণ আগে বাথরুমে ঢুকেছেন, কিন্তু বের হচ্ছেন না। পরে বাথরুমের দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখা যায়, তাঁর মৃতদেহ মেঝেতে পড়ে আছে। তাঁর হাত বাঁধা থাকার কথা অস্বীকার করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, হাসান সাইদকে গ্রেপ্তারের পর কয়েক দফায় রিমান্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। অসুস্থ অবস্থায় গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে কারা কর্তৃপক্ষ শাহবাগ থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন রাজধানীর ধানমণ্ডির বাসায় স্বামী হাসান সাইদের নির্যাতনের শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমানা মনজুর। পরে পরিবারের লোকজন তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসায় তাঁর দুটি চোখ নষ্ট হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাঁকে ভারতে এবং পরে কানাডায় নিয়ে যাওয়া হয়। কানাডার চিকিৎসকরাও বলেন, তাঁর দুটি চোখই নষ্ট হয়ে গেছে। এ ঘটনায় রুমানার বাবা মনজুর হোসেন রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় হাসান সাইদকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এতে তিনি রুমানাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন সাইদের বিরুদ্ধে।
সাইদকে হত্যার বা তাঁর আত্মহত্যার গুঞ্জন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম হায়দার বলেন, ময়নাতদন্ত হওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান, সাইদের মৃত্যুর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন কারা সদর দপ্তরে পাঠানো হবে।
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক জামালউদ্দিন খলিফা জানান, কারাগার থেকে চোখের চিকিৎসার জন্য সাইদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শফিকুল ইসলামের অধীনে ভর্তি ছিলেন তিনি। তাঁর চিকিৎসার তত্ত্বাবধান করতেন ডা. পল্লব কুমার সেন। হাসপাতাল থেকে শুধু চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়েছে। তাঁর সব কিছুর দেখভাল করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
এটি আত্মহত্যা কি না জানতে চাইলে জামালউদ্দিন খলিফা বলেন, 'আত্মহত্যার মতো হতাশাগ্রস্ত তিনি ছিলেন না। এটি রহস্যজনক। তাঁর মুখে পলিথিন বাঁধা ছিল বলে কারারক্ষীরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান।'
সাইদের ছোট ভাই ফারুক সাইদ কালের কণ্ঠকে বলেন, চোখের সমস্যার কারণে গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। গতকাল সকালে জেল সুপার ফোনে তাঁকে সাইদের মৃত্যুর খবর দেন। লাশ উদ্ধারের সময় তাঁর শরীরে কম্বল মোড়ানো ছিল। তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য তাঁরা অপেক্ষা করবেন।
সাইদের বাবা সাইদ আহমেদ কবির সাংবাদিকদের বলেন, 'রুমানা মনজুর আত্মস্বীকৃত ব্যভিচারিণী। আমার ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী মিডিয়া। রুমানা মনজুরের সব কিছু ঠিক আছে। এখনো সে সব দেখতে পায়। কিন্তু মিডিয়ার সামনে এলে সে চোখে কালো চশমা দিয়ে আসে।'
ময়নাতদন্ত ছাড়া ছেলের লাশ গ্রহণ করবেন কি না জানতে চাইলে সাইদ আহমেদ কবির বলেন, অবশ্যই ময়নাতদন্ত করা দরকার। ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
গতকাল সকালে প্রিজন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের কাছে সাইদের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বললেও পরে কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুল ইসলাম প্রিজন সেলের চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে সাংবাদিকদের জানান, হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে সাইদের মৃত্যু হয়েছে। তবে কী কারণে তাঁর হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়েছে তা জানাতে পারেননি তিনি।
কারারক্ষী তাহের উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, চারতলার প্রিজন সেল ভবনে একজন হাবিলদারের নেতৃত্বে ১১ জন কারারক্ষী ও চারজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করেন। হাসান সাইদ ও ইউসুফ নামের বিডিআরের এক সাজাপ্রাপ্ত আসামি দোতলার একটি কক্ষে একই সঙ্গে ছিলেন। গতকাল ভোরে হাসান সাইদকে তাঁর কক্ষে না পেয়ে ইউসুফের কাছে তাঁর খোঁজ করা হয়। ইউসুফ তাঁকে জানান, সাইদ অনেকক্ষণ আগে বাথরুমে ঢুকেছেন, কিন্তু বের হচ্ছেন না। পরে বাথরুমের দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখা যায়, তাঁর মৃতদেহ মেঝেতে পড়ে আছে। তাঁর হাত বাঁধা থাকার কথা অস্বীকার করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, হাসান সাইদকে গ্রেপ্তারের পর কয়েক দফায় রিমান্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। অসুস্থ অবস্থায় গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে কারা কর্তৃপক্ষ শাহবাগ থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন রাজধানীর ধানমণ্ডির বাসায় স্বামী হাসান সাইদের নির্যাতনের শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমানা মনজুর। পরে পরিবারের লোকজন তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসায় তাঁর দুটি চোখ নষ্ট হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাঁকে ভারতে এবং পরে কানাডায় নিয়ে যাওয়া হয়। কানাডার চিকিৎসকরাও বলেন, তাঁর দুটি চোখই নষ্ট হয়ে গেছে। এ ঘটনায় রুমানার বাবা মনজুর হোসেন রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় হাসান সাইদকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এতে তিনি রুমানাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন সাইদের বিরুদ্ধে।
No comments