এলপি গ্যাসের লাইসেন্স-রাজনৈতিক বিবেচনা কাঙ্ক্ষিত নয়
দেশে গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। পাশাপাশি এই গ্যাস সরবরাহে পাইপলাইনের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার ব্যাপারেও আগ্রহী হয়ে উঠছে সরকার। সংগত কারণেই এলপি গ্যাসের ব্যবহারও ক্রমবর্ধমান। বাংলাদেশে যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান এখন এলপি গ্যাসের লাইসেন্স নিয়ে গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে, তারাও বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে। সেই অনুযায়ী আগামী বছরই এলপি গ্যাসের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম
হবে বাংলাদেশ। আর এটুকু করতে হলে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানগুলোই যথেষ্ট। ছয়টি পরীক্ষিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বসুন্ধরা একাই ৩০ হাজার টন বাল্ক এলপি গ্যাস আমদানি করে থাকে। বৃহৎ এই প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যে মংলায় আরো একটি ৩০ হাজার টন উৎপাদন ক্ষমতার বড় একটি ইউনিট প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। ফলে বৃহৎ এই প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে ৬০ হাজার টনে গিয়ে পেঁৗছবে। শুধু তাই নয়, একই প্রতিষ্ঠান আগামী বছরের শেষ নাগাদ মোট ৯০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস আমদানি করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি বাকি পাঁচটি প্রতিষ্ঠানও তাদের উৎপাদন অব্যাহত রাখবে। ফলে দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করতে হলে ছয়টি প্রতিষ্ঠানই যথেষ্ট বলে আমরা মনে করি। এই প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষতা প্রদর্শনের ক্ষেত্রেও সাফল্য অর্জন করেছে। যার প্রমাণ ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে তারা নিজেরাও উৎপাদন বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে এবং এ ক্ষেত্রে তারা সাফল্যের স্বাক্ষরও রেখেছে। এমন পরিস্থিতিতে কোন কারণে ২২টি নতুন প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়া হলো তা স্বাভাবিক কারণেই বোধগম্য নয়। সবচেয়ে বড় কথা, নতুন লাইসেন্সপ্রাপ্তদের প্রায় সবাই-ই রাজনৈতিক বিবেচনায় লাইসেন্স পেয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে জানা গেছে। ব্যবসা ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রবণতা দেশের অর্থনীতির জন্য শুভ নয়। এতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারেরও দূরত্ব বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হলে স্বাভাবিক বিনিয়োগ হ্রাস হয়, যা কাটিয়ে ওঠা অবশ্যই কঠিন হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক বিবেচনায় লাইসেন্স পাওয়ার পরিণতি যে কী হতে পারে, তার কিছু আলামতও ইতিমধ্যে দেখা গেছে। যাঁরা লাইসেন্স পেয়েছেন, তাঁদের অনেকেই লাইসেন্স বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তার মানে, তাঁরা উৎপাদনমুখী মানসিকতার পরিবর্তে এককালীন কিছু কামিয়ে নেওয়ার চিন্তায় লাইসেন্স নিয়েছেন। সংগত কারণেই প্রকৃত ব্যবসায়ীরা এই প্রক্রিয়ার কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন।
যে প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্স পেয়েছে তাদের উদ্দেশ্য নিয়েও নানা কথা শোনা যাচ্ছে। তারা লাইসেন্স পাওয়ার পর বিভিন্ন ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছে। মনে করা হচ্ছে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান সরে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আর্থিকপ্রতিষ্ঠানগুলোও বড় রকমের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। সুতরাং সরকারকে ব্যবসায়ী বিবেচনায়ই লাইসেন্স দিতে হবে, এর ব্যত্যয় হওয়া উচিত নয়।
যে প্রতিষ্ঠানগুলো লাইসেন্স পেয়েছে তাদের উদ্দেশ্য নিয়েও নানা কথা শোনা যাচ্ছে। তারা লাইসেন্স পাওয়ার পর বিভিন্ন ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছে। মনে করা হচ্ছে, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান সরে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আর্থিকপ্রতিষ্ঠানগুলোও বড় রকমের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। সুতরাং সরকারকে ব্যবসায়ী বিবেচনায়ই লাইসেন্স দিতে হবে, এর ব্যত্যয় হওয়া উচিত নয়।
No comments