নেটিজেন-লীগ রাজত্বে আমরা সবাই অসহায় প্রজা!
ফেইসবুকে আমাদের ফ্যানপেজে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চলছে জমজমাট আলোচনা। নানা মতের মানুষ সেখানে তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। আমরা সব মতই ধারণ করতে চেষ্টা করছি এ পাতায়। আপনার মতামত জানাতে ক্লিক করুন facebook.com/rajkut.kk শায়ন নেওয়াজ সরকার জনগণকে উন্নত সেবা দেওয়ার কথা বলে ঢাকাকে দুই ভাগ করে দিল। কিন্তু সেই জনগণ কারা? কে সরকারের দ্বারে গিয়ে উন্নত জনসেবার জন্য ঢাকাকে দুই
ভাগ করার দাবি জানিয়েছিল? প্রশাসনিক অবকাঠামো উন্নত না করে ঢাকাকে দুই ভাগ করে জনগণের কি উন্নত সেবা দেওয়া যাবে? সেই আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কি কমবে? দালালি? তাহলে কিসের জন্য ঢাকাকে দুই ভাগ করা?
হ্যাঁ, প্রকৃত নিজেদের স্বার্থের কথা বলতে সরকারের লজ্জা হচ্ছে! হয়তো তারা নিজেদের ভাই-আত্মীয়স্বজনদের কিছু কর্মসংস্থান করে দিতে চায়। তাই ঢাকাকে ভাগ করে দ্বিগুণ জনবল নিয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছে সরকার।
সরকার যে জনগণের উন্নত সেবার দোহাই দিয়ে ঢাকাকে দুই ভাগ করল, সেই জনগণের প্রকৃত দাবি আসলে কী ছিল? জনগণ কখনো ঢাকাকে দুই ভাগে দেখতে চায়নি। তাই যে সরকার কথিত জনগণের উন্নত সেবার জন্য সত্যিকার জনগণের কথায় পাত্তা দেয় না, নিজেদের ইচ্ছামতো কাজ করে_এদের কী বলা যায়?
জালাল উদ্দিন
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যর্থ হবে জেনেই সরকার ঢাকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী তো আরো বাড়িয়ে বললেন, 'টাকা থাকলে চার ভাগে বিভক্ত করতাম।' ঢাকা সিটি করপোরেশনকে পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়ে সরকার যদি ঢাকা বিভক্ত করে ফেলে; তাহলে ভয় জাগে মনে, দেশ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়ে সরকার যদি দেশকেও দুই ভাগ করে ফেলে!
জায়েদ উজ জামান
আওয়ামী লীগ বলছে, ঢাকায় নাগরিকসুবিধা বাড়ানোর জন্যই সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করা হয়েছে। আসল কথা কিন্তু তারা বলেনি ঢাকাকে দুই ভাগ করায় এখন আওয়ামী লীগ দুজনকে নির্বাচনে প্রার্থী দেবে। প্রধানমন্ত্রী জনগণকে গাধা মনে করছেন, ভাবছেন কেউ কিছু বোঝে না।
নূর মোহাম্মদ সোহান
সরকার এত দিন কিছু করতে পারেনি। এখন মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন এনে দেশের জন্য একটা কিছু করবে। আর তারই প্রথম ফলপ্রসূ হয়তো ঢাকাকে দ্বিখণ্ডিতকরণ! এত দিন একটা প্রশাসন দুর্নীতি করেছে, এবার দুটি প্রশাসন দুর্নীতি করবে। সরকার যে নাগরিকসেবার কথা বলেছে, এটি আসলে করপোরেশনে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দুর্নীতিসুবিধার কথাই বলেছে!
আজিম মণি
প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, মিছিল-মিটিং, পত্রপত্রিকায় অজস্র লেখালেখি, কোনো কিছুতেই কোনো কিছু হচ্ছে না। জনগণ কোনো ন্যায্য প্রতিবাদ করলেও সরকার সেটাকে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড ছাড়া কিছুই দেখতে পায় না! এই হলো আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। যেন লীগ রাজত্বে আমরা সবাই অসহায় প্রজা! এটা বিজয়ের মাস। জয় হোক সংগ্রামী জনতার, জয় হোক মেহনতি মানুষের!
পয়েট ফখরুল ইসলাম
জনগণ বুঝতে পারছে না যে আওয়ামী লীগ সরকার কি খোকাকে ভয় পায়? হয়তো ভয়ই পায়! না হলে কেন ঢাকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হলো? যদি তা না হতো, তারা স্বজনপ্রীতি করার জন্যই ঢাকাকে দুই ভাগ করেছে। কেননা, এখন আরো বেশি জনবল প্রয়োজন হবে। আর নিয়োগ দেওয়া হবে মহামান্য আওয়ামী লীগের নিবেদিত নেতা-কর্মীদের। কী সুন্দর নির্ভেজাল ফর্মুলা!
ইমরান সাকিব
১৯৯৬-এ আওয়ামী লীগ যখন প্রথম ক্ষমতায় এসেছিল, বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, 'এ দেশের মানুষ আমার বাবাকে, মাকে, ভাইকে মেরেছে। আমি এর প্রতিশোধ নেব।' হ্যাঁ, এবার আমরা সে ফল পেলাম। বারবার প্রতিবাদ জানানোর পরও সরকার ঢাকাকে দুই ভাগ করে ফেলেছে। এ সরকার, জনগণের বাধা অতিক্রম করে টিপাইমুখ বাঁধসহ দেশবিরোধী সব চুক্তিই একে একে বাস্তবায়ন করে নিচ্ছে। এই হলো জাতির জনকের কন্যার দেশপ্রেম।
স্বপি্নল ধ্রুবতারা
প্রধানমন্ত্রী আসলে ঢাকাকে দুই ভাগ নয়, চার ভাগ করতে চেয়েছিলেন! শুধু রাজধানীকে কেন চার ভাগ করবেন? পুরো বাংলাদেশকেই টুকরো টুকরো করে ফেলুন_এতে আপনাদের ওপর থেকে চাপ কমে যাবে।
শরীফুল ইসলাম শরীফ
ঢাকাকে দুই ভাগ করে যদি ঢাকাবাসীর সমস্যার সমাধান হয়, তাহলে পুরো দেশ কি দোষ করল? সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই দুই ভাগ করা উচিত। এক ভাগের নাম 'বাংলাদেশ হাসিনা' এবং অন্য অংশের নাম 'বাংলাদেশ খালেদা' নাম রাখা হোক। মানুষ শান্তিতে থাকবে।
প্রচিত্য দা
ঢাকাকে দুই ভাগ করা নিয়ে দেশের কিছু মানুষ বুঝে অথবা না বুঝেই গণমাধ্যমে হা-হুঁতাশ শুরু করেছে। এ দেশের মানুষ কিছু বুঝুক আর না বুঝুক, একটা ব্যাপার ভালো করেই বোঝে যে দেশের সরকার যে-ই হোক না কেন, সরকার কিছু করলেই তা মানুষের উপকারে আসবে না; সরকার যেন সবই নিজেদের উদরপূর্তি কিংবা হাঁড়িভর্তি করার জন্যই করছে!
জিসান শাহরিয়ার
আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া, আপনি জিয়াউর রহমান হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ক্ষমা করবেন না। বঙ্গবন্ধু, যিনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের অনুপ্রেরণা, তাঁর হত্যাকারীদেরও বিচার হয়েছে। আপনিও আপনার স্বামীর হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনুন। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ জিয়ার খুনিদের শাস্তি চায়।
ক্ষমতা ও অর্থলোভের কারণে আজ চেনা যায় না, কে রাজনীতিকে জনসেবা হিসেবে নিয়েছিলেন আর কে ব্যবসা হিসেবে। মানুষের নীতিহীনতা আজ রাজনীতির সুস্থ পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এই অপরাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
সালেহীন কবির রিফাত
গণমাধ্যমে কয়েকজন মন্ত্রী অপসারণের কানাঘুষা চলছে। যদি মন্ত্রিসভায় এই রদবদল হয়ই, তো ভালো। বদলি হিসেবে যাঁরা আসবেন, তাঁরা যদি ঠিকমতো কাজ করেন তাহলে হয়তো আওয়ামী লীগ আগামী দিনগুলোর বিপর্যয় থেকে রেহাই পেতে পারে।
বিপ্লব ইএমসি
টিপাইমুখ বাঁধ এখন পুরো গণমাধ্যমগুলোর নিয়মিত ইস্যু। শুধু বাংলাদেশ কেন, খোদ ভারতের ত্রিপুরা-অসামের জনগণও চায় না এই বাঁধটি হোক। হয়তো শেষ পর্যন্ত এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় থেকে ভারত সরকার সরে দাঁড়াবে। যদি তা না করে বাঁধটা তারা দেয়ই, তবে বাংলাদেশের মতো ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোও মরুভূমি হয়ে যাবে।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে শুধু আওয়ামী লীগ কেন, এর আগে বিএনপির উচিত ছিল এ সমস্যার সমাধান করা। বিএনপি নিজেদের সময় ভারতবিরোধী মনোভাব পোষণ করে রাখবে, আর অন্যের সময় তীব্র সমালোচনায় মুখর হবে_এটা সত্যিই অপ্রত্যাশিত।
মো. লুৎফুর রহমান
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে ভারতকে দেওয়া খালেদা জিয়ার চিঠির জবাব ভারত পাঠিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে আমরা এখনো সে চিঠির কিছুই জানতে পারলাম না। তাই বুঝতে পারছি, ওই চিঠির জবাবে বিএনপির টিপাইমুখবিরোধী আন্দোলনে জ্বালানি জোগান দেওয়ার মতো কিছু নেই। তা না হলে, চিঠি দেওয়ার সময় বিএনপি যে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছিল, জবাবটা যদি পক্ষে থাকত নির্ঘাত ঢাক-ঢোলের সঙ্গে আতশবাজি পুড়িয়েই দেশবাসীকে জানাত। এই চিঠি চালাচালি না করে আন্তরিকভাবে টিপাইমুখ নিয়ে কিছু করুন। কারণ, আমরা বেশ বুঝতে পারছি, চিঠির ভেল্কিবাজি দিয়ে আপনারা নিজেদের লাভ খুঁজছেন।
ডালিম সৌরভ
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শামীম ওসমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ কিছুটা তালবাহানা করলেও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তারা কোনো রাখঢাক না করেই সমর্থন দিল আফজাল খানের মতো সন্ত্রাসীকে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে তাঁর নামের সঙ্গে লেগে আছে সন্ত্রাসের দুর্গন্ধ। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসেও একজন আফজাল খান দুর্ধর্ষ, ভয়ংকর। তাই আজ কথিত জনগণের রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে এসেছে ভাবার সময়_কেননা দেশটা তো আজ বিপন্নতার গ্যাঁড়াকলে!
ইয়থ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন বাংলাদেশ
বাংলাদেশে দিন বদলেছে। এখন স্বপ্ন দেখাও মানা। বিশ্বাসের বাগানের দিকে ধেয়ে আসছে নাগিনীর নিঃশ্বাস। সাপের উদরের স্থূলতা যেন নেমে এসেছে প্রত্যাশার উঠানে। চারদিকে বৈরীশক্তি স্বপ্নের টুঁটি চেপে ধরছে। বাতাসে বাতাসে বিষের জ্বলজ্বলে আরক। চোখের সামনে মার্চপাস্ট করছে ঘাতকের বল্লম। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ভীতি ছড়াচ্ছে ফ্যাসিবাদের পক্ষে উঁচিয়ে ধরা হাজার হাজার রাইফেলের নল। সর্বত্র ভাঙন ও বিপর্যয়ের প্রলয়বাদ্য। সর্বত্র হতাশার জরাজীর্ণতা। দ্রব্যমূল্যের পাথরচাপায় মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। দুমুঠো খাবারের আশায় মানুষ শহরের দিকে ছুটছে, যা সুস্পষ্টভাবে দুর্ভিক্ষপূর্ব দুরবস্থারই জানান দিচ্ছে। শহর আর সামলাতে পারছে না মানুষের চাপ। দিতে পারছে না খাদ্যের জোগান। অতএব শেষ পর্যন্ত মানুষ ডাস্টবিনের দিকে হাত বাড়িয়েছে। একটি জাতীয় দৈনিকে সেই কলঙ্কদৃশ্য প্রকাশিত হয়েছিল। ডাস্টবিনে ক্ষুধার্ত মানুষ কুকুর ও কাকের পাশে আবর্জনা খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করছে। অথচ এমন তো হওয়ার কথা ছিল না।
রোজেন রাজীব
সরকারের প্রতিটি কাজই বিরোধী দলের অপছন্দ হয়। তাই বিরোধী দলগুলো ইস্যু পেলেই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে। আবার সরকার নিজেও কখনো বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নয়। যেন সরকার যে সিদ্ধান্তই নিচ্ছে, সেটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত_কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারবে না।
তা ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে কোনোকালেই মিল ছিল না। এই যেমন নারায়ণগঞ্জে শামীম-আইভী বিরোধ; কুমিল্লায় সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে চলছে তিন নেতার রেষারেষি; নরসিংদীর জনপ্রিয় মেয়র লোকমানকে হত্যা করেছে সেই আওয়ামী লীগের নিজস্ব লোকজনই।
শেখ মো. মাইজুদুল ইসলাম
দেশের ব্যাংকে ডলার স্বল্পতা চলছে। বিশ্ববাজারে ডলার-তেলের দাম কমে, আর বাংলাদেশে বাড়ে! এক সিটি করপোরেশনের দুর্নীতিতে পোষায় না, এ জন্যই কি চার মিনিটে ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকাকে দুই ভাগ করে ফেলা হলো? টিপাইমুখ নিয়ে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া তো দূরের কথা, উল্টো মন্ত্রী-আমলারা এটি নিয়ে ভারতকে তোষামোদ করছেন। ঢাকা সিটি করপোরেশনকে আলোচনায় এনে সরকার টিপাইমুখ ইস্যুটি আড়ালে নিয়ে যায়নি?
অনেক বিশেষজ্ঞ, বুদ্ধিজীবীসহ সাধারণ মানুষ, ছাত্র-জনতা টিপাইমুখ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আর সরকার ভাবছে, এসব যুদ্ধাপরাধীর বিচার বানচালের চেষ্টা? স্বাধীনতার ৪০ বছরে দাঁড়িয়ে সরকারের কাছে আবেদন_আগে যুদ্ধাপরাধীর পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করুন। এ ছাড়া আমরা কি ভুলে গেলাম তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা? ফারাক্কা বাঁধের ক্ষেত্রেও ভারত সরাসরি বেইমানি করেছে। তবে কী করে ওদের আমরা বিশ্বাস করি?
সরকার সব সময় জনগণের সামনে এত ইস্যু তুলে দেয় যে আমজনতা কোনটা ছেড়ে কোনটার প্রতিবাদ করবে তা নিয়েই হাঁপিয়ে পড়ে। আর জনগণ যতই প্রতিবাদ করুক, সরকার পাত্তাই দিচ্ছে না। গণতন্ত্রের দেশে এ কেমন চিত্র?
মিনহাজ শিমুল
আমরা এ কোন রাষ্ট্রে বাস করি! পরাধীন রাষ্ট্রে শান্তির জন্য মানুষ জীবন দিল, এখন সেই শান্তির জন্য স্বাধীন রাষ্ট্রে চুক্তি করতে হয়! কারণ একটাই, বিগত ৪০ বছরে আমাদের শাসকগোষ্ঠী এমন কোনো দেশদ্রোহী এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কাজ বাকি রাখেনি, যা তারা করেনি।
শামস ইমরান
আমি ঠিক বুঝতে পারছি না, কিন্তু আঁচ করতে পারছি! বারুদের গন্ধ যেমন হঠাৎ নাকে এসে লাগে, ঠিক সে ধরনের কোনো আভাস আমার মগজে জানান দিচ্ছে। সবার মধ্যে কেমন যেন খোলস থেকে বেরিয়ে আসার ভাব। ঠিক সবার না, সবার বললে ভুল হবে। গোখরা সাপের খোলস ছড়ানো আমি দেখেছি, খোলস ছাড়ার পর গোখরা আরো ক্ষিপ্ত আর বিষধর হয়! আমি জানি না, ঠিক কী হতে যাচ্ছে_শুধু আঁচ পাচ্ছি, খোলস ছাড়ানোর আঁচ!
গ্রন্থনা : সাইফুল আমিন
হ্যাঁ, প্রকৃত নিজেদের স্বার্থের কথা বলতে সরকারের লজ্জা হচ্ছে! হয়তো তারা নিজেদের ভাই-আত্মীয়স্বজনদের কিছু কর্মসংস্থান করে দিতে চায়। তাই ঢাকাকে ভাগ করে দ্বিগুণ জনবল নিয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছে সরকার।
সরকার যে জনগণের উন্নত সেবার দোহাই দিয়ে ঢাকাকে দুই ভাগ করল, সেই জনগণের প্রকৃত দাবি আসলে কী ছিল? জনগণ কখনো ঢাকাকে দুই ভাগে দেখতে চায়নি। তাই যে সরকার কথিত জনগণের উন্নত সেবার জন্য সত্যিকার জনগণের কথায় পাত্তা দেয় না, নিজেদের ইচ্ছামতো কাজ করে_এদের কী বলা যায়?
জালাল উদ্দিন
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যর্থ হবে জেনেই সরকার ঢাকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। প্রধানমন্ত্রী তো আরো বাড়িয়ে বললেন, 'টাকা থাকলে চার ভাগে বিভক্ত করতাম।' ঢাকা সিটি করপোরেশনকে পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়ে সরকার যদি ঢাকা বিভক্ত করে ফেলে; তাহলে ভয় জাগে মনে, দেশ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়ে সরকার যদি দেশকেও দুই ভাগ করে ফেলে!
জায়েদ উজ জামান
আওয়ামী লীগ বলছে, ঢাকায় নাগরিকসুবিধা বাড়ানোর জন্যই সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করা হয়েছে। আসল কথা কিন্তু তারা বলেনি ঢাকাকে দুই ভাগ করায় এখন আওয়ামী লীগ দুজনকে নির্বাচনে প্রার্থী দেবে। প্রধানমন্ত্রী জনগণকে গাধা মনে করছেন, ভাবছেন কেউ কিছু বোঝে না।
নূর মোহাম্মদ সোহান
সরকার এত দিন কিছু করতে পারেনি। এখন মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন এনে দেশের জন্য একটা কিছু করবে। আর তারই প্রথম ফলপ্রসূ হয়তো ঢাকাকে দ্বিখণ্ডিতকরণ! এত দিন একটা প্রশাসন দুর্নীতি করেছে, এবার দুটি প্রশাসন দুর্নীতি করবে। সরকার যে নাগরিকসেবার কথা বলেছে, এটি আসলে করপোরেশনে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দুর্নীতিসুবিধার কথাই বলেছে!
আজিম মণি
প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, মিছিল-মিটিং, পত্রপত্রিকায় অজস্র লেখালেখি, কোনো কিছুতেই কোনো কিছু হচ্ছে না। জনগণ কোনো ন্যায্য প্রতিবাদ করলেও সরকার সেটাকে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড ছাড়া কিছুই দেখতে পায় না! এই হলো আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। যেন লীগ রাজত্বে আমরা সবাই অসহায় প্রজা! এটা বিজয়ের মাস। জয় হোক সংগ্রামী জনতার, জয় হোক মেহনতি মানুষের!
পয়েট ফখরুল ইসলাম
জনগণ বুঝতে পারছে না যে আওয়ামী লীগ সরকার কি খোকাকে ভয় পায়? হয়তো ভয়ই পায়! না হলে কেন ঢাকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হলো? যদি তা না হতো, তারা স্বজনপ্রীতি করার জন্যই ঢাকাকে দুই ভাগ করেছে। কেননা, এখন আরো বেশি জনবল প্রয়োজন হবে। আর নিয়োগ দেওয়া হবে মহামান্য আওয়ামী লীগের নিবেদিত নেতা-কর্মীদের। কী সুন্দর নির্ভেজাল ফর্মুলা!
ইমরান সাকিব
১৯৯৬-এ আওয়ামী লীগ যখন প্রথম ক্ষমতায় এসেছিল, বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, 'এ দেশের মানুষ আমার বাবাকে, মাকে, ভাইকে মেরেছে। আমি এর প্রতিশোধ নেব।' হ্যাঁ, এবার আমরা সে ফল পেলাম। বারবার প্রতিবাদ জানানোর পরও সরকার ঢাকাকে দুই ভাগ করে ফেলেছে। এ সরকার, জনগণের বাধা অতিক্রম করে টিপাইমুখ বাঁধসহ দেশবিরোধী সব চুক্তিই একে একে বাস্তবায়ন করে নিচ্ছে। এই হলো জাতির জনকের কন্যার দেশপ্রেম।
স্বপি্নল ধ্রুবতারা
প্রধানমন্ত্রী আসলে ঢাকাকে দুই ভাগ নয়, চার ভাগ করতে চেয়েছিলেন! শুধু রাজধানীকে কেন চার ভাগ করবেন? পুরো বাংলাদেশকেই টুকরো টুকরো করে ফেলুন_এতে আপনাদের ওপর থেকে চাপ কমে যাবে।
শরীফুল ইসলাম শরীফ
ঢাকাকে দুই ভাগ করে যদি ঢাকাবাসীর সমস্যার সমাধান হয়, তাহলে পুরো দেশ কি দোষ করল? সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই দুই ভাগ করা উচিত। এক ভাগের নাম 'বাংলাদেশ হাসিনা' এবং অন্য অংশের নাম 'বাংলাদেশ খালেদা' নাম রাখা হোক। মানুষ শান্তিতে থাকবে।
প্রচিত্য দা
ঢাকাকে দুই ভাগ করা নিয়ে দেশের কিছু মানুষ বুঝে অথবা না বুঝেই গণমাধ্যমে হা-হুঁতাশ শুরু করেছে। এ দেশের মানুষ কিছু বুঝুক আর না বুঝুক, একটা ব্যাপার ভালো করেই বোঝে যে দেশের সরকার যে-ই হোক না কেন, সরকার কিছু করলেই তা মানুষের উপকারে আসবে না; সরকার যেন সবই নিজেদের উদরপূর্তি কিংবা হাঁড়িভর্তি করার জন্যই করছে!
জিসান শাহরিয়ার
আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়া, আপনি জিয়াউর রহমান হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ক্ষমা করবেন না। বঙ্গবন্ধু, যিনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের অনুপ্রেরণা, তাঁর হত্যাকারীদেরও বিচার হয়েছে। আপনিও আপনার স্বামীর হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনুন। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ জিয়ার খুনিদের শাস্তি চায়।
ক্ষমতা ও অর্থলোভের কারণে আজ চেনা যায় না, কে রাজনীতিকে জনসেবা হিসেবে নিয়েছিলেন আর কে ব্যবসা হিসেবে। মানুষের নীতিহীনতা আজ রাজনীতির সুস্থ পরিবেশ নষ্ট করে দিয়েছে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এই অপরাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
সালেহীন কবির রিফাত
গণমাধ্যমে কয়েকজন মন্ত্রী অপসারণের কানাঘুষা চলছে। যদি মন্ত্রিসভায় এই রদবদল হয়ই, তো ভালো। বদলি হিসেবে যাঁরা আসবেন, তাঁরা যদি ঠিকমতো কাজ করেন তাহলে হয়তো আওয়ামী লীগ আগামী দিনগুলোর বিপর্যয় থেকে রেহাই পেতে পারে।
বিপ্লব ইএমসি
টিপাইমুখ বাঁধ এখন পুরো গণমাধ্যমগুলোর নিয়মিত ইস্যু। শুধু বাংলাদেশ কেন, খোদ ভারতের ত্রিপুরা-অসামের জনগণও চায় না এই বাঁধটি হোক। হয়তো শেষ পর্যন্ত এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় থেকে ভারত সরকার সরে দাঁড়াবে। যদি তা না করে বাঁধটা তারা দেয়ই, তবে বাংলাদেশের মতো ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোও মরুভূমি হয়ে যাবে।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে শুধু আওয়ামী লীগ কেন, এর আগে বিএনপির উচিত ছিল এ সমস্যার সমাধান করা। বিএনপি নিজেদের সময় ভারতবিরোধী মনোভাব পোষণ করে রাখবে, আর অন্যের সময় তীব্র সমালোচনায় মুখর হবে_এটা সত্যিই অপ্রত্যাশিত।
মো. লুৎফুর রহমান
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে ভারতকে দেওয়া খালেদা জিয়ার চিঠির জবাব ভারত পাঠিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে আমরা এখনো সে চিঠির কিছুই জানতে পারলাম না। তাই বুঝতে পারছি, ওই চিঠির জবাবে বিএনপির টিপাইমুখবিরোধী আন্দোলনে জ্বালানি জোগান দেওয়ার মতো কিছু নেই। তা না হলে, চিঠি দেওয়ার সময় বিএনপি যে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছিল, জবাবটা যদি পক্ষে থাকত নির্ঘাত ঢাক-ঢোলের সঙ্গে আতশবাজি পুড়িয়েই দেশবাসীকে জানাত। এই চিঠি চালাচালি না করে আন্তরিকভাবে টিপাইমুখ নিয়ে কিছু করুন। কারণ, আমরা বেশ বুঝতে পারছি, চিঠির ভেল্কিবাজি দিয়ে আপনারা নিজেদের লাভ খুঁজছেন।
ডালিম সৌরভ
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শামীম ওসমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ কিছুটা তালবাহানা করলেও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তারা কোনো রাখঢাক না করেই সমর্থন দিল আফজাল খানের মতো সন্ত্রাসীকে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে তাঁর নামের সঙ্গে লেগে আছে সন্ত্রাসের দুর্গন্ধ। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসেও একজন আফজাল খান দুর্ধর্ষ, ভয়ংকর। তাই আজ কথিত জনগণের রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে এসেছে ভাবার সময়_কেননা দেশটা তো আজ বিপন্নতার গ্যাঁড়াকলে!
ইয়থ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন বাংলাদেশ
বাংলাদেশে দিন বদলেছে। এখন স্বপ্ন দেখাও মানা। বিশ্বাসের বাগানের দিকে ধেয়ে আসছে নাগিনীর নিঃশ্বাস। সাপের উদরের স্থূলতা যেন নেমে এসেছে প্রত্যাশার উঠানে। চারদিকে বৈরীশক্তি স্বপ্নের টুঁটি চেপে ধরছে। বাতাসে বাতাসে বিষের জ্বলজ্বলে আরক। চোখের সামনে মার্চপাস্ট করছে ঘাতকের বল্লম। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ভীতি ছড়াচ্ছে ফ্যাসিবাদের পক্ষে উঁচিয়ে ধরা হাজার হাজার রাইফেলের নল। সর্বত্র ভাঙন ও বিপর্যয়ের প্রলয়বাদ্য। সর্বত্র হতাশার জরাজীর্ণতা। দ্রব্যমূল্যের পাথরচাপায় মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। দুমুঠো খাবারের আশায় মানুষ শহরের দিকে ছুটছে, যা সুস্পষ্টভাবে দুর্ভিক্ষপূর্ব দুরবস্থারই জানান দিচ্ছে। শহর আর সামলাতে পারছে না মানুষের চাপ। দিতে পারছে না খাদ্যের জোগান। অতএব শেষ পর্যন্ত মানুষ ডাস্টবিনের দিকে হাত বাড়িয়েছে। একটি জাতীয় দৈনিকে সেই কলঙ্কদৃশ্য প্রকাশিত হয়েছিল। ডাস্টবিনে ক্ষুধার্ত মানুষ কুকুর ও কাকের পাশে আবর্জনা খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করছে। অথচ এমন তো হওয়ার কথা ছিল না।
রোজেন রাজীব
সরকারের প্রতিটি কাজই বিরোধী দলের অপছন্দ হয়। তাই বিরোধী দলগুলো ইস্যু পেলেই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে। আবার সরকার নিজেও কখনো বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নয়। যেন সরকার যে সিদ্ধান্তই নিচ্ছে, সেটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত_কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারবে না।
তা ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে কোনোকালেই মিল ছিল না। এই যেমন নারায়ণগঞ্জে শামীম-আইভী বিরোধ; কুমিল্লায় সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে চলছে তিন নেতার রেষারেষি; নরসিংদীর জনপ্রিয় মেয়র লোকমানকে হত্যা করেছে সেই আওয়ামী লীগের নিজস্ব লোকজনই।
শেখ মো. মাইজুদুল ইসলাম
দেশের ব্যাংকে ডলার স্বল্পতা চলছে। বিশ্ববাজারে ডলার-তেলের দাম কমে, আর বাংলাদেশে বাড়ে! এক সিটি করপোরেশনের দুর্নীতিতে পোষায় না, এ জন্যই কি চার মিনিটে ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকাকে দুই ভাগ করে ফেলা হলো? টিপাইমুখ নিয়ে সরকারের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া তো দূরের কথা, উল্টো মন্ত্রী-আমলারা এটি নিয়ে ভারতকে তোষামোদ করছেন। ঢাকা সিটি করপোরেশনকে আলোচনায় এনে সরকার টিপাইমুখ ইস্যুটি আড়ালে নিয়ে যায়নি?
অনেক বিশেষজ্ঞ, বুদ্ধিজীবীসহ সাধারণ মানুষ, ছাত্র-জনতা টিপাইমুখ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আর সরকার ভাবছে, এসব যুদ্ধাপরাধীর বিচার বানচালের চেষ্টা? স্বাধীনতার ৪০ বছরে দাঁড়িয়ে সরকারের কাছে আবেদন_আগে যুদ্ধাপরাধীর পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করুন। এ ছাড়া আমরা কি ভুলে গেলাম তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা? ফারাক্কা বাঁধের ক্ষেত্রেও ভারত সরাসরি বেইমানি করেছে। তবে কী করে ওদের আমরা বিশ্বাস করি?
সরকার সব সময় জনগণের সামনে এত ইস্যু তুলে দেয় যে আমজনতা কোনটা ছেড়ে কোনটার প্রতিবাদ করবে তা নিয়েই হাঁপিয়ে পড়ে। আর জনগণ যতই প্রতিবাদ করুক, সরকার পাত্তাই দিচ্ছে না। গণতন্ত্রের দেশে এ কেমন চিত্র?
মিনহাজ শিমুল
আমরা এ কোন রাষ্ট্রে বাস করি! পরাধীন রাষ্ট্রে শান্তির জন্য মানুষ জীবন দিল, এখন সেই শান্তির জন্য স্বাধীন রাষ্ট্রে চুক্তি করতে হয়! কারণ একটাই, বিগত ৪০ বছরে আমাদের শাসকগোষ্ঠী এমন কোনো দেশদ্রোহী এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কাজ বাকি রাখেনি, যা তারা করেনি।
শামস ইমরান
আমি ঠিক বুঝতে পারছি না, কিন্তু আঁচ করতে পারছি! বারুদের গন্ধ যেমন হঠাৎ নাকে এসে লাগে, ঠিক সে ধরনের কোনো আভাস আমার মগজে জানান দিচ্ছে। সবার মধ্যে কেমন যেন খোলস থেকে বেরিয়ে আসার ভাব। ঠিক সবার না, সবার বললে ভুল হবে। গোখরা সাপের খোলস ছড়ানো আমি দেখেছি, খোলস ছাড়ার পর গোখরা আরো ক্ষিপ্ত আর বিষধর হয়! আমি জানি না, ঠিক কী হতে যাচ্ছে_শুধু আঁচ পাচ্ছি, খোলস ছাড়ানোর আঁচ!
গ্রন্থনা : সাইফুল আমিন
No comments