পবিত্র কোরআনের আলো-হজরত মুসা (আ.)-এর যুগোপযোগী দুটি মুজিজার প্রসঙ্গ
১০৫. হাক্বীক্বুন আ'লা আন লা আক্বূলা আ'লাল্লাহি ইল্লাল হাক্কি; ক্বাদ জি'তুকুম বিবায়্যিনাতিম্ মির্ রাবি্বকুম ফাআরছিল্ মায়ি'ইয়া বানী ইছরা-য়ীল।১০৬. ক্বা-লা ইন্ কুনতা জি'তা বিআয়াতিন ফা'তি বিহা ইন কুনতা মিনাস্ সা-দিক্বীন।১০৭. ফাআলক্বা আ'সা-হু ফাইযা হিয়া ছু'বা-নুম্ মুবীন।১০৮. ওয়া নাযাআ' ইয়াদাহূ ফাইযা হিয়া বাইদ্বা-উ লিন্না-যিরীন।
১০৯. ক্বা-লাল মালাউ মিন্ ক্বাওমি ফিরআ'ওনা ইন্না হা-যা লাছা-হিরুন আ'লীম।
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১০৫-১০৯]
অনুবাদ : ১০৫. এটা আমার জন্য অপরিহার্য কর্তব্য যে আমি আল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে সত্য ছাড়া অন্য কোনো কথা বলব না। আমি তোমাদের কাছে আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে এসেছি। অতএব, বনি ইসরাইলকে আমার সঙ্গে যেতে দাও।
১০৬. মিসরের সম্রাট বললেন (হে মুসা!) যদি আপনি কোনো নিদর্শন নিয়ে এসে থাকেন তাহলে তা আমাদের দেখান। আপনি যদি প্রকৃতই সত্যবাদী হয়ে থাকেন।
১০৭. অতঃপর মুসা তাঁর লাঠিখানা ছেড়ে দিলেন এবং তৎক্ষণাৎ তা একটি অজগরে পরিণত হয়ে গেল।
১০৮. আর নিজ হাত বগল থেকে বের করল এবং তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের সামনে চমকাতে লাগল।
১০৯. ফেরাউনের কওমের সর্দাররা পরস্পর বলতে লাগল, নিশ্চয়ই সে একজন দক্ষ জাদুকর।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে মুসা (আ.) ও মিসরের সম্রাটের মধ্যকার কথোপকথন ও দুটি মুজিজার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথম কথোপকথন তাঁর নবুয়তবিষয়ক। তিনি যে আল্লাহর কাছ থেকে নবুয়তপ্রাপ্ত হয়ে মিসরবাসীকে, বিশেষ করে মিসরের সম্রাটকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আনার জন্য এসেছেন, সে কথাটি ঘোষণা করলেন। সত্যের ওপর তাঁর দৃঢ় অবস্থানের কথা জানালেন এবং নবী হিসেবে তিনি আল্লাহর যে নির্দেশ ও নবুয়তের প্রমাণ নিয়ে এসেছেন তা প্রকাশ করলেন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, ১০৫ নম্বর আয়াতের শেষ অংশে বনি ইসরাইলকে তাঁর সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি প্রদানের দাবির কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে। বনি ইসরাইলরা তৎকালীন বিশ্বে সুসভ্য জাতি ছিল। কিন্তু মিসরের সম্রাট তাদের দাসে পরিণত করে রেখেছিল। বনি ইসরাইলদের প্রতি মিসরের সম্রাট ও মিসরীয় জাতির নেতাদের আচরণ যে ছিল অন্যায় ও অমানবিক, তা এখানে প্রতিভাত হয়েছে। বনি ইসরাইলদের প্রতি সম্রাট এ ছাড়া আরো বড় ধরনের অবিচার ও অত্যাচার করেছিল। তার পোষ্য জ্যোতিষীরা তাকে জানিয়েছিল যে বনি ইসরাইল বংশোদ্ভূত কোনো এক পুরুষের হাতে সম্রাটের পরাজয় ঘটবে। এসব কথা শুনে সম্রাট তার রাজকীয় ফরমান জারি করে দিয়েছিল_বনি ইসরাইলীয় ঘরে কোনো পুত্রসন্তানের জন্ম হলে তাকে তৎক্ষণাৎ মেরে ফেলতে হবে। তার ওই ফরমান কার্যকর করে বনি ইসরাইলদের ওপর চরম অত্যাচার করা হয়েছিল।
১০৭ ও ১০৮ নম্বর আয়াতে হজরত মুসা (আ.)-এর দুটি মুজিজার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসা (আ.)-কে এ দুটি মুজিজা দান করেছিলেন।
কথিত আছে, সে যুগে জাদুর ব্যাপক প্রচলন ছিল। জাদুটোনা দিয়ে মানুষকে বিমোহিত করা এবং জাদুর কূটকৌশল দেখানোর মধ্যে বীরত্ব ছিল। জাদুকর বা ওঝাদের দ্বারা সম্রাট ব্যাপকভাবে প্রভাবিত ছিল। এ কারণেই তাঁকে এ ধরনের মুজিজা দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হয়। মুসা (আ.) তাঁর এই মুজিজা দিয়ে জাদুকরদের হার মানিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে মিসরের সাধারণ মানুষ এবং রাজদরবারের বিশিষ্ট ব্যক্তি_সবার কাছেই আসলে তাঁর নবুয়তের সত্যতা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কারণ মুসা (আ.)-এর মুজিজা ছিল জাদুর চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ও অকৃত্রিম।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১০৫-১০৯]
অনুবাদ : ১০৫. এটা আমার জন্য অপরিহার্য কর্তব্য যে আমি আল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত করে সত্য ছাড়া অন্য কোনো কথা বলব না। আমি তোমাদের কাছে আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে এসেছি। অতএব, বনি ইসরাইলকে আমার সঙ্গে যেতে দাও।
১০৬. মিসরের সম্রাট বললেন (হে মুসা!) যদি আপনি কোনো নিদর্শন নিয়ে এসে থাকেন তাহলে তা আমাদের দেখান। আপনি যদি প্রকৃতই সত্যবাদী হয়ে থাকেন।
১০৭. অতঃপর মুসা তাঁর লাঠিখানা ছেড়ে দিলেন এবং তৎক্ষণাৎ তা একটি অজগরে পরিণত হয়ে গেল।
১০৮. আর নিজ হাত বগল থেকে বের করল এবং তৎক্ষণাৎ তা দর্শকদের সামনে চমকাতে লাগল।
১০৯. ফেরাউনের কওমের সর্দাররা পরস্পর বলতে লাগল, নিশ্চয়ই সে একজন দক্ষ জাদুকর।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে মুসা (আ.) ও মিসরের সম্রাটের মধ্যকার কথোপকথন ও দুটি মুজিজার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথম কথোপকথন তাঁর নবুয়তবিষয়ক। তিনি যে আল্লাহর কাছ থেকে নবুয়তপ্রাপ্ত হয়ে মিসরবাসীকে, বিশেষ করে মিসরের সম্রাটকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আনার জন্য এসেছেন, সে কথাটি ঘোষণা করলেন। সত্যের ওপর তাঁর দৃঢ় অবস্থানের কথা জানালেন এবং নবী হিসেবে তিনি আল্লাহর যে নির্দেশ ও নবুয়তের প্রমাণ নিয়ে এসেছেন তা প্রকাশ করলেন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, ১০৫ নম্বর আয়াতের শেষ অংশে বনি ইসরাইলকে তাঁর সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি প্রদানের দাবির কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে। বনি ইসরাইলরা তৎকালীন বিশ্বে সুসভ্য জাতি ছিল। কিন্তু মিসরের সম্রাট তাদের দাসে পরিণত করে রেখেছিল। বনি ইসরাইলদের প্রতি মিসরের সম্রাট ও মিসরীয় জাতির নেতাদের আচরণ যে ছিল অন্যায় ও অমানবিক, তা এখানে প্রতিভাত হয়েছে। বনি ইসরাইলদের প্রতি সম্রাট এ ছাড়া আরো বড় ধরনের অবিচার ও অত্যাচার করেছিল। তার পোষ্য জ্যোতিষীরা তাকে জানিয়েছিল যে বনি ইসরাইল বংশোদ্ভূত কোনো এক পুরুষের হাতে সম্রাটের পরাজয় ঘটবে। এসব কথা শুনে সম্রাট তার রাজকীয় ফরমান জারি করে দিয়েছিল_বনি ইসরাইলীয় ঘরে কোনো পুত্রসন্তানের জন্ম হলে তাকে তৎক্ষণাৎ মেরে ফেলতে হবে। তার ওই ফরমান কার্যকর করে বনি ইসরাইলদের ওপর চরম অত্যাচার করা হয়েছিল।
১০৭ ও ১০৮ নম্বর আয়াতে হজরত মুসা (আ.)-এর দুটি মুজিজার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসা (আ.)-কে এ দুটি মুজিজা দান করেছিলেন।
কথিত আছে, সে যুগে জাদুর ব্যাপক প্রচলন ছিল। জাদুটোনা দিয়ে মানুষকে বিমোহিত করা এবং জাদুর কূটকৌশল দেখানোর মধ্যে বীরত্ব ছিল। জাদুকর বা ওঝাদের দ্বারা সম্রাট ব্যাপকভাবে প্রভাবিত ছিল। এ কারণেই তাঁকে এ ধরনের মুজিজা দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হয়। মুসা (আ.) তাঁর এই মুজিজা দিয়ে জাদুকরদের হার মানিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে মিসরের সাধারণ মানুষ এবং রাজদরবারের বিশিষ্ট ব্যক্তি_সবার কাছেই আসলে তাঁর নবুয়তের সত্যতা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কারণ মুসা (আ.)-এর মুজিজা ছিল জাদুর চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ও অকৃত্রিম।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments