আমিই ঢাকা জেলা বিএনপির বৈধ সভাপতি : হুদা
নিজেকে ঢাকা জেলা বিএনপির বৈধ সভাপতি বলে দাবি করেছেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তিনি বলেছেন, 'আমিই ঢাকা জেলা বিএনপির বৈধ সভাপতি। আবদুল মান্নান লবিং করে এই পদে আছেন।'গতকাল রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হুদা এ কথা বলেন।সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদা আরো বলেন, 'আমাকে যখন ঢাকা জেলা বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়, তখন প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও বহিষ্কার করা
হয়। পরে সেটা আবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে আমার নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ও নির্বাচিত জেলা সভাপতির পদ স্বাভাবিকভাবেই পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। যেহেতু দলের যেকোনো পদপ্রাপ্তির শর্ত হলো দলের প্রাথমিক সদস্য থাকা, তাই প্রাথমিক সদস্য পদ ফিরে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি এ দুটি পদও ফিরে পেয়েছি। সেই হিসেবে আমি ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপিতে লবিং নেই, তা বলা যাবে না। লবিং আছে। আবদুল মান্নান সেই কাজটি করেছেন।
নাজমুল হুদা বলেন, 'বর্তমানে যিনি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি কিভাবে করছেন, তা প্রশ্নবিদ্ধ। এ ব্যাপারে দলের দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবীর রিজভীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন আছে।' বিএনপির এই নেতা বলেন, 'দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে আমি এ ব্যাপারে কথা বলেছি। আশা করি, বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে। আমার ওই পদে বহাল থাকা নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে কোনো প্রকার বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুযোগ নেই।'
হুদা বলেন, 'মঙ্গলবার ২২ তারিখে ধামরাইয়ে ম্যাডামের (বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) জনসভা হবে। সেখানে আমি ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে অংশ নেব। নবাবগঞ্জ-দোহারের বিএনপির নেতা-কর্মীরাও আমার সঙ্গে যাবেন। এ নিয়ে দলের মধ্যে যাতে কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয়, সেটা জানাতেই সংবাদ সম্মেলন করেছি। যদি কেউ ওই অনুষ্ঠানে আমাকে অসম্মান করতে চায়, তাহলে ভুল করবে।'
নাজমুল হুদা বলেন, 'আমি বিএনপির জন্মলগ্ন থেকেই ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠনের পর থেকেই আমি ঢাকা জেলাকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করি। ঢাকা জেলাকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার জন্যই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তিরানব্বই সালে আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ জেলার দায়িত্ব দেন। আমি নিষ্ঠার সঙ্গে আমার দায়িত্ব পালন করায় বিএনপি চেয়ারপারসনও আমার ওপর খুশি।'
দলে ভাঙন ধরানোর চেষ্টার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আমি বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আছি এবং আজীবন এখানেই থাকব। বিএনপি আমাকে অনেক দিয়েছে। বিএনপির কাছ থেকে অনেক পেয়েছি। আমি কেন বিএনপিকে ভাঙব? যারা এসব কথা বলছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে। এ ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। কারণ কারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে ম্যাডাম সব কিছুই জানেন ও বোঝেন।' তিনি বলেন, 'আমি কখনো কখনো দলের সিদ্ধান্ত ছাড়া কথা বলে থাকি, যা দল আমার কাছে আশা করে না। যেমন_আমি দুই নেত্রীকে দেশের স্বার্থে এক টেবিলে বসার আহ্বান জানিয়েছি, যা দলের সিদ্ধান্ত নয়। আর এসব কারণে আমাকে ভুল বুঝতে পারে। ওই ভুল যাতে আর না বোঝে, সে জন্য চেষ্টা করছি। তবে আমি যা বলি তা দেশ ও জনগণের জন্য বলি।' তিনি আরো বলেন, 'জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট আমাদের প্রয়াত নেতা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি। এই সংগঠনের মাধ্যমে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে তিনি দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। দল-জিয়ার আদর্শকে সমুন্নত রাখতে ৭ নভেম্বর একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলাম। ওই অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার হাতকে আরো শক্তিশালী করার জন্য সংগঠনটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।'
No comments