'শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই'-সত্য মেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। সারা বিশ্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। উন্নত দেশগুলোতেও লাখ লাখ শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান তো পৃথিবী নামক গ্রহটির বাইরে নয়। তাই এখানেও সেই মন্দার প্রভাব কিছুটা হলেও পড়েছে। ভোজ্য তেল, ডাল, চিনিসহ যেসব খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়, সেগুলোর দাম যথেষ্ট পরিমাণে বেড়েছে। সরকার জ্বালানি তেলের দাম তিন দফা বাড়িয়েছে।
এর সঙ্গে সংগতি রেখে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহনের ভাড়া বেড়েছে, দ্রব্যমূল্য আরেক দফা বেড়েছে। অন্যদিকে ডলারের বিপরীতে দফায় দফায় টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমেছে। বিদেশে শ্রমিক রপ্তানির পরিমাণ কমেছে। আবার বিদেশ থেকে বহু শ্রমিক চাকরি হারিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরেছে। সারা বিশ্বেই পুঁজিবাজারে মন্দার প্রভাব পড়েছে। মন্দার পাশাপাশি কারসাজির কারণে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গকারী ধস নেমেছে। কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে মধ্যবিত্ত, বিশেষ করে স্থির আয়ের মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এর পরও যদি কেউ বলেন, দেশে কোনো অর্থনৈতিক সংকট নেই, তাহলে তা হবে সত্যের অপলাপ। তবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের পরিমাণ অন্য অনেক দেশের তুলনায় এখনো যথেষ্ট কম। সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী আমাদের সে কথাটিই বোঝাতে চেয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রশ্ন হলো, শঙ্কা তো কারো মনে বলেকয়ে আসে না। দেশের কোনো কোনো শিল্প খাতে রীতিমতো ধস নামতে শুরু করেছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের অভাবে আবাসন শিল্প খাত বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন। রিরোলিং কারখানাগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। বিদ্যুতের অভাবে গার্মেন্ট শিল্পেও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এমন অবস্থা আরো অনেক খাতেই। এসব খাত থেকে যদি হাজার হাজার শ্রমিক ছাঁটাই করা শুরু হয়, তাহলে আমরা কি ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের বলতে পারব_শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই? আমরা কি শেয়ারবাজারের কয়েক লাখ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে বলতে পারব_শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই? যাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যাঁরা ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়ায় পড়েছেন কিংবা পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছেন, শঙ্কা তাঁদের ঘিরে ধরবেই। স্থির আয়ের মধ্যবিত্ত পরিবারটি যখন অতি প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করার জন্য ব্যাংক থেকে বা অন্য কোনো উৎস থেকে ব্যক্তিগত ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছে, তখন শঙ্কা তাকে পেয়ে বসবেই। ব্যাংক থেকে ইতিমধ্যেই সরকার বিশাল অঙ্কের ঋণ নিয়ে বসে আছে। ফলে ব্যক্তি-উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় ঋণ পেতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে তাঁরাও শঙ্কিত হচ্ছেন।
গণমাধ্যমে নানা রকম অর্থনৈতিক সংকটের চিত্র তুলে ধরা হয়। বিদ্যুতের দাম আবার বাড়ানো হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানা রকম সমালোচনা করা হচ্ছে। গণমাধ্যমে সেসব সমালোচনা তুলে ধরা হচ্ছে। এটাই গণমাধ্যমের কাজ। সরকারের নীতিনির্ধারক মহল এতে অসন্তুষ্ট হলে তা হবে গণমাধ্যমের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। প্রধানমন্ত্রী কিছুটা রসিকতা করেই বলেছেন, দুই দিন গণমাধ্যমে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখলেই তাঁরা জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারবেন; এবং কেন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে, তাও বুঝতে পারবেন। ছোট ছোট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে বিদ্যুতের বিশাল ঘাটতির কিছুটা হলেও সাময়িক সমাধান করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ যে অনেক বেশি, তা গণমাধ্যমের অজানা নয়।
আমাদের কথা হচ্ছে, সত্যকে সত্য বলে স্বীকার করার মধ্যে কোনো দোষ নেই। শঙ্কিত হওয়ার কারণগুলো আগে দূর করুন। ভুল, ব্যর্থতা এবং নিজের দোষ স্বীকার করা তো মানুষের মহৎ গুণগুলোর মধ্যেই পড়ে। অবাধ তথ্যপ্রবাহের এই যুগে কোনো কিছুই মানুষের কাছে অপ্রকাশ্য থাকে না। সেই ধরনের কোনো চেষ্টা না করাই ভালো।
প্রশ্ন হলো, শঙ্কা তো কারো মনে বলেকয়ে আসে না। দেশের কোনো কোনো শিল্প খাতে রীতিমতো ধস নামতে শুরু করেছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের অভাবে আবাসন শিল্প খাত বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন। রিরোলিং কারখানাগুলোর অবস্থাও ভালো নয়। বিদ্যুতের অভাবে গার্মেন্ট শিল্পেও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এমন অবস্থা আরো অনেক খাতেই। এসব খাত থেকে যদি হাজার হাজার শ্রমিক ছাঁটাই করা শুরু হয়, তাহলে আমরা কি ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের বলতে পারব_শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই? আমরা কি শেয়ারবাজারের কয়েক লাখ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে বলতে পারব_শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই? যাঁদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যাঁরা ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়ায় পড়েছেন কিংবা পড়ার মতো অবস্থায় রয়েছেন, শঙ্কা তাঁদের ঘিরে ধরবেই। স্থির আয়ের মধ্যবিত্ত পরিবারটি যখন অতি প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করার জন্য ব্যাংক থেকে বা অন্য কোনো উৎস থেকে ব্যক্তিগত ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছে, তখন শঙ্কা তাকে পেয়ে বসবেই। ব্যাংক থেকে ইতিমধ্যেই সরকার বিশাল অঙ্কের ঋণ নিয়ে বসে আছে। ফলে ব্যক্তি-উদ্যোক্তারা প্রয়োজনীয় ঋণ পেতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন। ফলে তাঁরাও শঙ্কিত হচ্ছেন।
গণমাধ্যমে নানা রকম অর্থনৈতিক সংকটের চিত্র তুলে ধরা হয়। বিদ্যুতের দাম আবার বাড়ানো হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানা রকম সমালোচনা করা হচ্ছে। গণমাধ্যমে সেসব সমালোচনা তুলে ধরা হচ্ছে। এটাই গণমাধ্যমের কাজ। সরকারের নীতিনির্ধারক মহল এতে অসন্তুষ্ট হলে তা হবে গণমাধ্যমের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। প্রধানমন্ত্রী কিছুটা রসিকতা করেই বলেছেন, দুই দিন গণমাধ্যমে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখলেই তাঁরা জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারবেন; এবং কেন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে, তাও বুঝতে পারবেন। ছোট ছোট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে বিদ্যুতের বিশাল ঘাটতির কিছুটা হলেও সাময়িক সমাধান করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ যে অনেক বেশি, তা গণমাধ্যমের অজানা নয়।
আমাদের কথা হচ্ছে, সত্যকে সত্য বলে স্বীকার করার মধ্যে কোনো দোষ নেই। শঙ্কিত হওয়ার কারণগুলো আগে দূর করুন। ভুল, ব্যর্থতা এবং নিজের দোষ স্বীকার করা তো মানুষের মহৎ গুণগুলোর মধ্যেই পড়ে। অবাধ তথ্যপ্রবাহের এই যুগে কোনো কিছুই মানুষের কাছে অপ্রকাশ্য থাকে না। সেই ধরনের কোনো চেষ্টা না করাই ভালো।
No comments