এনসিটিবি তুমি কার
টেন্ডার ও চুক্তির শর্তমতো মানসম্পন্ন বই সরবরাহ না করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শাস্তির আওতায় না এনে ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে নতুন পাঠ্যপুস্তক সরবরাহে দরপত্র আহ্বান করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আগামী ২৫ এপ্রিল প্রাথমিকের পাঠ্যবই সরবরাহ সম্পর্কিত দরপত্র খোলা হবে। ৩০ এপ্রিল খোলা হবে প্রি-প্রাইমারির জন্য বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণ কাজের দরপত্র। চলতি শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই যারা সময়মতো দিতে পারেনি এবং টেন্ডারের শর্তানুসারে মান বজায় রাখেনি বলে অভিযুক্ত এরূপ দেশী-বিদেশী বিশেষ করে ভারতীয় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো আবারো দরপত্রের প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। ফলে আগামী বছরও এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সময়মতো এবং মানসম্পন্ন বই পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। পাঠ্যবইয়ে ভুলের ঘটনা নিয়ে হৈ চৈর মধ্যে মানসম্পন্ন ও সময়মতো বই দিতে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ হারিয়ে ফেলেছে এনসিটিবি। অভিযোগ রয়েছে, এ বছর সময়মতো বই সরবরাহ না করা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা দেশী-বিদেশী বিশেষ করে ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে আগামী বছর আবারো কাজ পাইয়ে দিতে শাস্তি বা জরিমানা নিয়ে গড়িমসি করছে এনসিটিবি। শুধু তাই নয়, ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটিকে রক্ষায় এনসিটিবির ভেতরে একটি চক্র কাজ করছে। তারাই ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে শোকজ ও কালো তালিকাভুক্ত না করে তাদের স্থানীয় এজেন্টকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হলে তারা এবার কাজ নাও পেতে পারেÑ এমন শঙ্কা থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের এ দেশীয় এজেন্টকে শোকজ করে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। পাঠ্যবই মুদ্রণের সাথে জড়িতদের অনেকে এমনকি খোদ এনসিটিবির কেউ কেউ একে জালিয়াতি বলে অভিহিত করেছেন। জানা গেছে, ভারতীয় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান ‘শীর্ষাসাই-বোম্বে’ ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের পরে প্রাথমিকের বই সরবরাহ করেছে। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে সময়মতো বই পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। অথচ ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই তাদের সব বই সরবরাহ করার ব্যাপারে টেন্ডার ও চুক্তি হয়েছিল এনসিটিবির সাথে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এর ফলে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার যেমন ুণœ হয়েছে, তেমনি শিশুদের মনেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে। অথচ এ নিয়ে এনসিটিবির কোনো মাথাব্যথা নেই। সময়মতো বই সরবরাহ না করা নিয়ে তাদের কাছে (ভারতীয় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান শীর্ষাসাই বোম্বেকে) কোনো কৈফিয়ত চাওয়ারও তাগিদ নেই এনসিটিবির। অন্য দিকে একই অপরাধে দেশীয় তিনটি প্রতিষ্ঠানকে এরই মধ্যে শোকজ নোটিশ দিয়েছে এনসিটিবি। এ দিকে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় এজেন্টকে শোকজ নোটিশ ইস্যুর পর ওই এজেন্টও কড়া ভাষায় জবাব দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে নয়া দিগন্তকে। এসব ব্যাপারে এনসিটিবির সদস্য (উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক আবদুল মজিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়নি। কারো বিরুদ্ধে আমার কাছে কোনো অভিযোগও আসেনি। মাঠপর্যায় থেকে তদন্ত ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া যায় না। জানা গেছে, সময়মতো এবং মানসম্পন্ন বই সরবরাহ না করায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব হচ্ছে এনসিটিবির এই সদস্যের। আলাপকালে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেন। উল্টো তিনি জানতে চান কে এসব তথ্য দিয়েছে? কোথায় পেয়েছেন এসব খবর? অথচ এনসিটিবির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নয়া দিগন্তকে নিশ্চিত করেছে, ‘শীর্ষাসাই বোম্বে’ এবং তাদের স্থানীয় এজেন্ট প্রিতাম্বারার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে এনসিটিবির চেয়ারম্যান এবং সদস্য উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণের কাছে। তারই স্বাক্ষরে শোকজ নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কোন কোন প্রতিষ্ঠান সময়মতো বিনামূল্যের পাঠ্যবই সরবরাহ করেনি সে ব্যাপারে প্রতিবেদন চেয়েছে এনসিটিবির কাছে। এ ছাড়া বিদেশী প্রতিষ্ঠানের কেউ এ ব্যর্থতার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে কি না তারও তালিকা আলাদাভাবে চাওয়া হয়েছে তাতে। এনসিটিবি প্রতিবেদন দিলেও সংসদীয় কমিটি থেকে এখনো এ ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে অধ্যাপক মজিদকে আরো দায়িত্ব দেয়ার আদেশ জারি হতে পারে মন্ত্রণালয় থেকে। এবার তাকে এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম-প্রাথমিক) করা হচ্ছে।
চলতি শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে ভুলের সব ঘটনা ঘটেছে প্রাথমিকেই। খোদ এনসিটিবিতেই প্রশ্ন উঠেছে, একজন কর্মকর্তা আর কত দায়িত্ব পালন করবেন? এনসিটিবির (কারিকুলাম-প্রাথমিক) দায়িত্ব একজন কলেজ শিক্ষককে দেয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। তারা চেয়েছে এ পদে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাকে যিনি প্রাথমিক ও শিশুদের সিলেবাস বিষয়ে অভিজ্ঞ। এ দিকে আগামী শিক্ষাবর্ষে (২০১৮) পাঠ্যবই ছাপার জন্য এরই মধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ২০১৮ সালে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৩৪ কোটি ৮৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৬৭টি বই ছাপার চাহিদাপত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল এবং বিভিন্ন ুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীর জন্য বইয়ের চাহিদা এখনো এনসিটিবি হাতে পায়নি। গত শিক্ষাবর্ষে (২০১৭) বিনামূল্যে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার কপি বই বিতরণ করা হয়েছিল। জানা গেছে, গত ২০ এপ্রিল খোলা হয়েছে মাধ্যমিক স্তরের বইয়ের দরপত্র। এখানে ২২০ লটের ১৫ কোটি ৭৫ লাখ বই ছাপার কাজের জন্য পৃথক টেন্ডারে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্র ফেলেছে। এনসিটিবি এখন এসব দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করবে। এ টেন্ডারের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে আরো মাসখানেক সময় লাগতে পারে। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপার জন্য আহ্বানকৃত টেন্ডারগুলোর মধ্যে প্রি-প্রাইমারি এবং প্রাইমারির পাঠ্যবই ছাপার টেন্ডার খোলা হবে আগামী ২৫ ও ৩০ এপ্রিল। ২৫ এপ্রিল ৯৬ লটের কাজের টেন্ডার খোলার তারিখ। প্রাথমিকের ১১ কোটি তিন লাখ ৫১ হাজার ৯৮৮টি বই ছাপার টেন্ডার খোলা হবে। এ টেন্ডারে দেশী-বিদেশী বিশেষ করে ভারতীয় একাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে যাচ্ছে। জানা গেছে, এবার ভারতীয়দের পাশাপাশি চীন, দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানও দরপত্রে অংশ নিচ্ছে। এনসিটিবির দায়িত্বশীল সূত্র নয়া দিগন্তকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিশ্বব্যাংকের সামান্য কিছু অর্থায়নে রয়েছে প্রি-প্রাইমারি এবং প্রাইমারির বই ছাপার কাজ। এই সুযোগে তারা এখানে অযাচিত হস্তক্ষেপ করে থাকে। টেন্ডারে মানসম্মত মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান অংশ নিলো কি নিলো না তা বিশ্বব্যাংক বিবেচনায় আনে না। তারা সব সময় চায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কাজ পেল কি না? এটি নিশ্চিত হলেই সব ঠিক। তা না হলে নানা ইস্যু ও ছুতা তুলে পুরো প্রক্রিয়াকেই বিতর্কিত করতে উঠেপড়ে লেগে যায়।
চলতি শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ে ভুলের সব ঘটনা ঘটেছে প্রাথমিকেই। খোদ এনসিটিবিতেই প্রশ্ন উঠেছে, একজন কর্মকর্তা আর কত দায়িত্ব পালন করবেন? এনসিটিবির (কারিকুলাম-প্রাথমিক) দায়িত্ব একজন কলেজ শিক্ষককে দেয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। তারা চেয়েছে এ পদে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাকে যিনি প্রাথমিক ও শিশুদের সিলেবাস বিষয়ে অভিজ্ঞ। এ দিকে আগামী শিক্ষাবর্ষে (২০১৮) পাঠ্যবই ছাপার জন্য এরই মধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ২০১৮ সালে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৩৪ কোটি ৮৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৬৭টি বই ছাপার চাহিদাপত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল এবং বিভিন্ন ুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীর জন্য বইয়ের চাহিদা এখনো এনসিটিবি হাতে পায়নি। গত শিক্ষাবর্ষে (২০১৭) বিনামূল্যে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার কপি বই বিতরণ করা হয়েছিল। জানা গেছে, গত ২০ এপ্রিল খোলা হয়েছে মাধ্যমিক স্তরের বইয়ের দরপত্র। এখানে ২২০ লটের ১৫ কোটি ৭৫ লাখ বই ছাপার কাজের জন্য পৃথক টেন্ডারে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্র ফেলেছে। এনসিটিবি এখন এসব দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করবে। এ টেন্ডারের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে আরো মাসখানেক সময় লাগতে পারে। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবই ছাপার জন্য আহ্বানকৃত টেন্ডারগুলোর মধ্যে প্রি-প্রাইমারি এবং প্রাইমারির পাঠ্যবই ছাপার টেন্ডার খোলা হবে আগামী ২৫ ও ৩০ এপ্রিল। ২৫ এপ্রিল ৯৬ লটের কাজের টেন্ডার খোলার তারিখ। প্রাথমিকের ১১ কোটি তিন লাখ ৫১ হাজার ৯৮৮টি বই ছাপার টেন্ডার খোলা হবে। এ টেন্ডারে দেশী-বিদেশী বিশেষ করে ভারতীয় একাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে যাচ্ছে। জানা গেছে, এবার ভারতীয়দের পাশাপাশি চীন, দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানও দরপত্রে অংশ নিচ্ছে। এনসিটিবির দায়িত্বশীল সূত্র নয়া দিগন্তকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিশ্বব্যাংকের সামান্য কিছু অর্থায়নে রয়েছে প্রি-প্রাইমারি এবং প্রাইমারির বই ছাপার কাজ। এই সুযোগে তারা এখানে অযাচিত হস্তক্ষেপ করে থাকে। টেন্ডারে মানসম্মত মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান অংশ নিলো কি নিলো না তা বিশ্বব্যাংক বিবেচনায় আনে না। তারা সব সময় চায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান কাজ পেল কি না? এটি নিশ্চিত হলেই সব ঠিক। তা না হলে নানা ইস্যু ও ছুতা তুলে পুরো প্রক্রিয়াকেই বিতর্কিত করতে উঠেপড়ে লেগে যায়।
No comments