কৃষকদের সকল চেষ্টা ব্যর্থ : শনির হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসল প্লাবিত
২০ দিন ধরে কৃষকদের অক্লান্ত চেষ্টার পরও রক্ষা করা গেল না শনির হাওর। সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে আজ ভোরে সুনামগঞ্জের শনির হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসল প্লাবিত হয়েছে। রোববার ভোর থেকেই তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওরের তিনটি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করছে বলে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি জানান, টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় ঝুকিঁর মধ্যে ছিল বাঁধটি। এটা টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় কৃষকরা প্রায় ২০ দিন ধরে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে যাচ্ছিল। আজ ভোর রাত থেকেই হাওরের আহম্মকখালি, লালুরগোয়ালা ও সাহেবনগর পয়েন্টের বাঁধ ভেঙে ও উপচে পানি প্রবেশ করছে; তলিয়ে যাচ্ছে হাওরের আধা পাকা বোরো ধান। শনির হাওরে এবার ৮ হাজার ৩০০ হেক্টর এলাকায় বোরো ধান চাষ করা হয়েছে বলে সুনামগঞ্জর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জাহেদুল হক জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অর্ধেকের চেয়ে কিছুটা কম বোরো ফলন পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমান বাড়বে।
এ মাসের শুরুতেই পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো ধান তলিয়ে যায়। হাওরের বাঁধগুলো মেরামত ও নতুন করে নির্মাণে দুর্নীতির কারণেই এ ফসলহানি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। গত দুই বছরে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে হাওরের ২৮টি বাঁধ নির্মাণের জন্য ১১৬টি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী ও অন্যান্যরা ঠিকাদাররা যোগসাজশ করে কোনো কাজ না করেই দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। ‘হাওর অ্যাডভোকেসি’ নামে একটি সংগঠন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক পরিসংখ্যান উল্লেখ করে জানায়, এবার সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে এক লাখ ৭১ হাজার ১১৫ হেক্টর জমির ধান পানিতে ডুবে গেছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জেরই এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
No comments