হাওরে মাছের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী
হাওর অঞ্চলের পানি বৃদ্ধি ও ফসলহানির পর মাছ মরে যাচ্ছে, যা কিনা নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ কয়েকটি টেলিভিশনের সংবাদে দেখা গেল, ওই অঞ্চলের মানুষ বলছেন, আগেও এরকম পানি বেড়েছে কিন্তু কখনও মাছ মারা যায়নি। ফসল যদি পচে যায় তাহলে পানিতে গ্যাসের সৃষ্টি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। আমরাও গ্রামে দেখেছি, পানি যখন ফসলি জমিতে জমে থাকে তখন পচে যাওয়া ঘাস বা অন্যান্য সবুজ উদ্ভিদ থেকে এক ধরনের বুদবুদের সৃষ্টি হয় এবং পানি কিছুটা লালচে বর্ণ ধারণ করে। কিন্তু তাতে এত দ্রুত মাছ মরে যাওয়ার ঘটনাটি উদ্বেগের। সাধারণত বদ্ধ পানি বেশি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেহেতু হাওর অঞ্চল অনেক জায়গাজুড়ে বিস্তৃত, সেহেতু আসলেই কী কারণে মাছ মারা যাচ্ছে সেটা উদ্ঘাটনের জন্য পানি পরীক্ষা করা অর্থাৎ পানিতে কী কী রাসায়নিক যৌগ আছে তা শনাক্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করি। সাধারণত পিএইচ কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে পানিতে এসিডিও উপাদানের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। কিন্তু এর চেয়েও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় যদি পানিতে ডিও (ডিসলভ অক্সিজেন) কমে যায়। মৎস্য অধিদফতর চুন ছিটানোর উদ্যোগ নিয়েছে, এটি ভালো। তবে এত বড় জায়গায় চুন ছিটিয়ে কতটুকু সুফল পাওয়া সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। পানিতে ডিও’র পরিমাণ বাড়ানোর জন্য এয়ারেশন (বাইরে থেকে ব্লোয়ারের মাধ্যমে বাতাস প্রয়োগ) করা যেতে পারে। যদি কোনো ব্লোয়ারের মাধ্যমে পানিতে বাতাস প্রয়োগ করা হয় তাহলে নিচে জমে থাকা গ্যাস বের হয়ে গিয়ে পানির ডিও বাড়তে পারে। এ পদ্ধতিতে খরচও কম হবে এবং যদি রোদ সঠিক পরিমাণে থাকে তাহলে পানি দ্রুত ভালো অবস্থায় ফিরে আসতে পারে। হাওর অঞ্চলের পানির নমুনা পরীক্ষার জন্য দ্রুত কাজ করা উচিত। যদি জানা যায় কী কী যৌগের আধিক্য পানিতে রয়েছে, তাহলে উল্লিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এ সমস্যা থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে।
সাঈদ চৌধুরী : সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি; রসায়নবিদ, শ্রীপুর, গাজীপুর
সাঈদ চৌধুরী : সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি; রসায়নবিদ, শ্রীপুর, গাজীপুর
No comments