আফগান সেনাঘাঁটিতে নামাজের সময় তালেবান হামলায় নিহত ১৫০
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে বলখ প্রদেশের এক সেনাঘাঁটিতে তালেবান জঙ্গিদের হামলায় ১৫০ সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন। ২০০৩ সাল থেকে চলা আফগান যুদ্ধে কোনো সেনাঘাঁটিতে চালানো এটি সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা। এক সেনা কর্মকর্তা জানান, নিহতদের বেশিরভাগই নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত। তারা প্রশিক্ষণের জন্য এসেছিলেন। খবর এএফপি, বিবিসি ও আলজাজিরার। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, মাজার-ই-শরিফ এলাকার কাছে একটি মসজিদে থাকা সেনাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। শুক্রবার হামলার সময় বেশিরভাগ সেনা নামাজ আদায় করছিলেন। এরপর উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েক ঘণ্টা ধরে লড়াই চলে। এ সময় দুই হামলাকারী আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত হয়। এছাড়া গুলিতে মারা যায় আরও সাত হামলাকারী। আফগান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ১০ জনের মতো তালেবান যোদ্ধার একটি দল আফগান সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে সামরিক যান চালিয়ে ঘাঁটিতে প্রবেশ করে। তারা দুপুরের আহার গ্রহণরত ও জুমার নামাজ শেষে একটি মসজিদ থেকে বের হওয়া সৈন্যদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। এ সময় হামলাকারীরা রকেটচালিত গ্রেনেড ও রাইফেল ব্যবহার করে বলে জানান তারা। শনিবার এক বিবৃতিতে তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেন, সম্প্রতি উত্তর আফগানিস্তানে তালেবানের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে। ন্যাটো নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট মাজার-ই-শরিফের এ ঘাঁটিটিতে আফগান বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করার জন্য বেশ কিছু সামরিক উপদেষ্টা মোতায়েন করেছে।
তাদের কেউ এ হামলায় হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ওই সামরিক জোটটির কর্মকর্তারা। মাজার-ই-শরিফের এ ঘাঁটিটি আফগান ন্যাশনাল আর্মির ২০৯তম কর্পসের ঠিকানা। উত্তর আফগানিস্তানের অধিকাংশ অঞ্চলের নিরাপত্তার বিধানের দায়িত্ব এ ঘাঁটিটির ওপর ন্যস্ত। এসব অঞ্চলের মধ্যে কুন্দুজ প্রদেশও আছে যেখানে সম্প্রতি তীব্র লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ঘাঁটিটিতে বেশ কিছু জার্মান ও অন্যান্য বিদেশি সৈন্য ছিল বলে জানা গেছে। গত মাসে দেশটির রাজধানী কাবুলের একটি সামরিক হাসপাতালে ইসলামিক জঙ্গিদের (আইএস) হামলায় প্রায় ৫০ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছিলেন। ওই একই মাসে তারা বছরব্যাপী এক লড়াইয়ের পর দক্ষিণাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ আফগান জেলা সানগিন দখল করে নেয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সেনারা আফগানিস্তানে অভিযান শেষ করে। যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষক সংস্থা সিগার বলছে, গত বছর আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীতে হতাহত হওয়ার পরিমাণ ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬ সালে দেশটির ৬ হাজার ৭০০ সেনা ও পুলিশ সদস্য নিহত হন।
No comments