যানজটে স্থবির রংপুর by আরিফুল হক
রংপুর নগরে সিটি বাজারের সামনে অটোরিকশার দীর্ঘ সারি। নগরজুড়ে এমন যানজট দিনভর লেগেই থাকে। ছবিটি গতকাল বেলা ১১টার দিকে তোলা l প্রথম আলো |
আর
কদিন পরই ঈদ। কেনাকাটায় ব্যস্ত লোকজন ঘুরছে এ দোকান থেকে ও দোকানে,
বিপণিবিতান থেকে বিপণিবিতানে। শহরজুড়ে লোকসমাগম বেড়েছে। বেড়েছে
যানবাহনের চলাচলও। ফলাফল জনজট, যানজট। আর এ জটে পড়ে রোজ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন
রংপুর নগরবাসী।
গতকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা নগরের সিটি পার্ক মার্কেটের সামনে থেকে জাহাজকোম্পানী মোড়, সুপার মার্কেটের সামনে থেকে পায়রা চত্বর এলাকাসহ বেতপট্টি, হাঁড়িপট্টি সড়ক ঘুরে লোকজনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে দেখা গেছে। যেন গোটা শহরই স্থবির হয়ে পড়েছে।
সিটি বাজারের সামনে: বেলা ১১টা, পশ্চিম দিক থেকে নগরের বিপণিবিতানগুলোয় ঢোকার পথ এটি। চার লেনবিশিষ্ট এই সড়কে রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন থেমে আছে। একটু এগোয়, আবার থেমে যায়। চার লেনের দক্ষিণ দিকে সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজারে হলো সিটি বাজার। বাজার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে লোকজন বাজারের বাইরে এসে পড়ছেন বিপাকে। কোনো যানবাহনে চড়তেও পারছেন না। আবার পায়ে হেঁটে রাস্তাও পার হতে পারছেন না। কারণ গোটা রাস্তাই যানবাহনে ঠাসা। এরই মধ্যে কয়েকজনকে খালি রিকশার ওপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে রাস্তার ওপারে যেতে দেখা গেল।
বাজার করতে আসা নগরের মুলাটোলের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘বাজার নিয়ে ২০ মিনিট হলো দাঁড়িয়ে আছি। কী করব ভেবে পাচ্ছি না!’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটোচালক বলেন, ‘চার লেন হইল। কিন্তু যানজট দূর হইল না। কেমন করিয়া অটো চালামো? যানজটোত আটকা পড়িয়া হামার আয়ও কমি গেইছে।’
পায়রা চত্বর: দুপুর ১২টা, নগরের পায়রা চত্বর থেকে জাহাজকোম্পানী মোড় পর্যন্ত প্রায় ১০০ গজ দূরত্বের সড়কেও যানজটের একই চিত্র দেখা গেল। পায়রা চত্বরের পাশে সড়কের মধ্যেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। নগরের সাহেবগঞ্জ ও শালবন যাওয়ার জন্য যাত্রীদের হাঁক দিয়ে ডাকাডাকি করতে দেখা যায় একাধিক অটোচালককে। অটোগুলো দাঁড়িয়ে থাকার কারণে এখানে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। একটি গাড়ি কোনো রকমে চলাচল করতে পারছে।
সেই সঙ্গে নগরের বেতপট্টি এলাকার সড়ক ও শালবন এলাকা থেকে দুটি সড়কের মিলন ঘটেছে পায়রা চত্বরের পাশে প্রধান সড়কে। এ কারণে যানজট লেগেই থাকছে। নগরের কয়েকটি এলাকার মানুষজনের এ পথে বিপণিবিতানে প্রবেশ করতে আরও একটি পথ হলো এটি। এ জন্য যানবাহন আর মানুষে ঠাসা থাকছে। সেই সঙ্গে ভোগান্তিরও শেষ নেই। পায়রা চত্বর থেকে জাহাজকোম্পানী মোড় হাঁটার দুই থেকে তিন মিনিটের পথ যানবাহনে সময় লেগেছে ২০-২৫ মিনিট।
জাহাজকোম্পানী মোড়: বেলা একটা, এখানে চারদিক থেকে চারটি সড়ক এসে মিলেছে। এই মোড়ের চারদিকেই বিপণিবিতানগুলো অবস্থিত। এখানেও দেখা যায় অটোরিকশার স্ট্যান্ড। যেখানে-সেখানে রাখা হয়েছে অটোরিকশা। কে কার আগে যাত্রী তুলতে পারবে এবং কে কার আগে যেতে পারবে, এমন প্রতিযোগিতা সবার মধ্যে। ১৫ মিনিটের মতো সড়ক হালকা থাকলেও মুহূর্তের মধ্যে একসঙ্গে পাল্লা দিয়ে সড়কের অন্যদিক থেকে মোড়ের পশ্চিম দিকে কয়েকটি অটো এসে দাঁড়ায়। লেগে যায় যানজট।
কর্তৃপক্ষের ভাষ্য: ২০০৯ সালে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৩ হাজার ৩১৩টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার নিবন্ধন দেওয়ার পর আর কোনো নতুন নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।
জেলা পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, নগরের মধ্যে যেখানে বিপণিবিতানগুলো অবস্থিত, সেসব স্থানে অটো চলাচল বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু ব্যবসায়ী ও অটোমালিকেরা এ পদ্ধতি চায় না। তাদের নাকি ব্যবসা নষ্ট হয়। তাই সবার সঙ্গে বৈঠক করে এটি তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এই নগরে ১০ হাজারের বেশি অটোরিকশা রয়েছে। তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সেই সঙ্গে ফুটপাতগুলো দোকানদারদের নিয়ন্ত্রণে। এরপরও আমাদের পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
সিটি করপোরেশনের মেয়র সরফুদ্দীন আহমেদের ভাষ্য, যানজট থেকে মুক্তি পেতে মূল শহরে চার লেন সড়কের দুই পাশে রশি দিয়ে টানা দেওয়া হয়েছে (সড়ক বিভাজকের মতো কাজ করছে)। যাতে করে কেউ এলোপাতাড়ি গাড়ি চালাতে না পারে। এমনিতেই ঈদে মানুষের ভিড় বেড়েছে। সেই সঙ্গে অটোরিকশা যেখানে-সেখানে দাঁড়ায়। তবু পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় অব্যাহত চেষ্টা রয়েছে।
গতকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা নগরের সিটি পার্ক মার্কেটের সামনে থেকে জাহাজকোম্পানী মোড়, সুপার মার্কেটের সামনে থেকে পায়রা চত্বর এলাকাসহ বেতপট্টি, হাঁড়িপট্টি সড়ক ঘুরে লোকজনকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে দেখা গেছে। যেন গোটা শহরই স্থবির হয়ে পড়েছে।
সিটি বাজারের সামনে: বেলা ১১টা, পশ্চিম দিক থেকে নগরের বিপণিবিতানগুলোয় ঢোকার পথ এটি। চার লেনবিশিষ্ট এই সড়কে রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন থেমে আছে। একটু এগোয়, আবার থেমে যায়। চার লেনের দক্ষিণ দিকে সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজারে হলো সিটি বাজার। বাজার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে লোকজন বাজারের বাইরে এসে পড়ছেন বিপাকে। কোনো যানবাহনে চড়তেও পারছেন না। আবার পায়ে হেঁটে রাস্তাও পার হতে পারছেন না। কারণ গোটা রাস্তাই যানবাহনে ঠাসা। এরই মধ্যে কয়েকজনকে খালি রিকশার ওপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে রাস্তার ওপারে যেতে দেখা গেল।
বাজার করতে আসা নগরের মুলাটোলের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘বাজার নিয়ে ২০ মিনিট হলো দাঁড়িয়ে আছি। কী করব ভেবে পাচ্ছি না!’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটোচালক বলেন, ‘চার লেন হইল। কিন্তু যানজট দূর হইল না। কেমন করিয়া অটো চালামো? যানজটোত আটকা পড়িয়া হামার আয়ও কমি গেইছে।’
পায়রা চত্বর: দুপুর ১২টা, নগরের পায়রা চত্বর থেকে জাহাজকোম্পানী মোড় পর্যন্ত প্রায় ১০০ গজ দূরত্বের সড়কেও যানজটের একই চিত্র দেখা গেল। পায়রা চত্বরের পাশে সড়কের মধ্যেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। নগরের সাহেবগঞ্জ ও শালবন যাওয়ার জন্য যাত্রীদের হাঁক দিয়ে ডাকাডাকি করতে দেখা যায় একাধিক অটোচালককে। অটোগুলো দাঁড়িয়ে থাকার কারণে এখানে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। একটি গাড়ি কোনো রকমে চলাচল করতে পারছে।
সেই সঙ্গে নগরের বেতপট্টি এলাকার সড়ক ও শালবন এলাকা থেকে দুটি সড়কের মিলন ঘটেছে পায়রা চত্বরের পাশে প্রধান সড়কে। এ কারণে যানজট লেগেই থাকছে। নগরের কয়েকটি এলাকার মানুষজনের এ পথে বিপণিবিতানে প্রবেশ করতে আরও একটি পথ হলো এটি। এ জন্য যানবাহন আর মানুষে ঠাসা থাকছে। সেই সঙ্গে ভোগান্তিরও শেষ নেই। পায়রা চত্বর থেকে জাহাজকোম্পানী মোড় হাঁটার দুই থেকে তিন মিনিটের পথ যানবাহনে সময় লেগেছে ২০-২৫ মিনিট।
জাহাজকোম্পানী মোড়: বেলা একটা, এখানে চারদিক থেকে চারটি সড়ক এসে মিলেছে। এই মোড়ের চারদিকেই বিপণিবিতানগুলো অবস্থিত। এখানেও দেখা যায় অটোরিকশার স্ট্যান্ড। যেখানে-সেখানে রাখা হয়েছে অটোরিকশা। কে কার আগে যাত্রী তুলতে পারবে এবং কে কার আগে যেতে পারবে, এমন প্রতিযোগিতা সবার মধ্যে। ১৫ মিনিটের মতো সড়ক হালকা থাকলেও মুহূর্তের মধ্যে একসঙ্গে পাল্লা দিয়ে সড়কের অন্যদিক থেকে মোড়ের পশ্চিম দিকে কয়েকটি অটো এসে দাঁড়ায়। লেগে যায় যানজট।
কর্তৃপক্ষের ভাষ্য: ২০০৯ সালে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৩ হাজার ৩১৩টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার নিবন্ধন দেওয়ার পর আর কোনো নতুন নিবন্ধন দেওয়া হয়নি।
জেলা পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, নগরের মধ্যে যেখানে বিপণিবিতানগুলো অবস্থিত, সেসব স্থানে অটো চলাচল বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু ব্যবসায়ী ও অটোমালিকেরা এ পদ্ধতি চায় না। তাদের নাকি ব্যবসা নষ্ট হয়। তাই সবার সঙ্গে বৈঠক করে এটি তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘এই নগরে ১০ হাজারের বেশি অটোরিকশা রয়েছে। তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সেই সঙ্গে ফুটপাতগুলো দোকানদারদের নিয়ন্ত্রণে। এরপরও আমাদের পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
সিটি করপোরেশনের মেয়র সরফুদ্দীন আহমেদের ভাষ্য, যানজট থেকে মুক্তি পেতে মূল শহরে চার লেন সড়কের দুই পাশে রশি দিয়ে টানা দেওয়া হয়েছে (সড়ক বিভাজকের মতো কাজ করছে)। যাতে করে কেউ এলোপাতাড়ি গাড়ি চালাতে না পারে। এমনিতেই ঈদে মানুষের ভিড় বেড়েছে। সেই সঙ্গে অটোরিকশা যেখানে-সেখানে দাঁড়ায়। তবু পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় অব্যাহত চেষ্টা রয়েছে।
No comments