ঈদের কেনাকাটা: শিশুদের বায়না, হাসি–কান্না by মাসুম আলী
মায়ের পছন্দের জামা মেয়ের পছন্দ হচ্ছে না। এ নিয়ে মেয়ের মন ভার। গতকাল ধানমন্ডির একটি বিপণিবিতান থেকে ছবিটি তোলা l ছবি: জাহিদুল করিম |
মা
চাইছেন সুতির পোশাক। গরমে মেয়ে জামা পরে আরাম পাবে। কিন্তু মেয়ের বায়না,
নানা আস্তরের মোটা কাপড়ের মাটিতে ঝোলে এমন লাল রঙের লম্বা জামা। অনেক
বুঝিয়েও মেয়েকে টলাতে না পেরে ওই জামাই কিনলেন মা। মেয়ের মুখে হাসি আর ধরে
না।
আবার বাবা কিনে দিতে চাইছেন আকাশি রঙের পাতলা পাঞ্জাবি। কিন্তু ছেলের চাই ভারী কারুকাজের কালো পাঞ্জাবি। শেষ পর্যন্ত বাবার পছন্দের জয় হলেও ছেলের মুখ ভার, চোখে কান্না।
বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানদের পছন্দ-অপছন্দের এই মিল-অমিল, হাসি-কান্নার দৃশ্য দেখা গেছে গতকাল রোববার রাজধানীর বিপণিবিতানগুলোতে। ঈদের পোশাক কিনতে হাসিমুখে আনন্দ নিয়ে বিপণিবিতানে আসা কোনো কোনো শিশুর মুখে বাড়ি ফেরার সময় ছিল মেঘের ঘনঘটা। অবশ্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জয় হয়েছে সোনামণিদের।
বৃষ্টি না থাকায় গতকাল অনেক বাবা-মা সন্তানদের জন্য কেনাকাটা করতে বিপণিবিতানে গেছেন। তবে দিনের বেলা সন্তানকে নিয়ে যাওয়া মায়েদের সংখ্যাই ছিল বেশি। সন্ধ্যায় বেশি গেছেন বাবারা। ফলে গতকাল বিপণিবিতানগুলোতে শিশুদের পোশাকের দোকানে ভিড় ছিল লক্ষণীয়। দোকানিদের মুখে হাসি ফুটিয়ে বিক্রিও হয়েছে বেশ।
শহরের ছোট-বড় সব ধরনের বিপণিবিতানেই মিলছে ছোটদের পোশাক। তবে কিছু বিপণিবিতানে রয়েছে ছোটদের পোশাকের প্রাধান্য। বসুন্ধরা সিটি, ধানমন্ডির রাপা প্লাজা, অর্কিড প্লাজা, মেট্রো শপিং মল, আড়ং, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, গাউছিয়া মার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা, মৌচাক মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, মাসকাট প্লাজা, বনানী, গুলশান ও উত্তরার অভিজাত ফ্যাশন হাউসগুলোর প্রতিটি দোকানে বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্য বাহারি রং ও ডিজাইনের পোশাক সাজানো রয়েছে। রাজধানী সুপার মার্কেট, সদরঘাট ও গুলিস্তানের দোকানে দোকানেও আছে শিশুদের পোশাক।
হাটখোলা থেকে গৃহবধূ রুবি আক্তার বসুন্ধরা সিটিতে এসেছিলেন ছেলে আহনাফ (৭) ও মেয়ে এষাকে (৩) নিয়ে। সকাল থেকে ছেলে ঘুরছে ‘বেনটেন’ জুতা কিনবে বলে। কিন্তু রুবি বেনটেন বিষয়ে জানেন না। পরে একটি জুতার দোকানে গিয়ে বলার সঙ্গে সঙ্গে দোকানি এগিয়ে দেন বেনটেন কার্টুনসমৃদ্ধ এক জোড়া জুতা। ছেলের আবদার রক্ষা হলো। এবার রুবিকে মেয়ের ভার হওয়া মুখে হাসি ফোটাতে হবে। মেয়ের চাই ‘কিরণমালা’। কিন্তু এত ছোট মেয়ের ‘কিরণমালা’ মিলছে না। দোকানে দোকানে ঘুরে হয়রান মা।
একই বিপণিবিতানে নবাবপুর উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মুসাহিদুল আদিব মায়ের হাত ধরে ঘুরছে পছন্দের পোশাক কিনতে। সে বায়না ধরেছে ‘পোকেমন’। কিন্তু ওর পছন্দের সঙ্গে মায়ের পছন্দ কিছুতেই মেলেনি। ঘুরে ঘুরে পায়ওনি। শেষ পর্যন্ত কিছু না কিনেই গাল ফুলিয়ে বাসার দিকে যাত্রা করল সে।
শিশুদের নজর কাড়তে পোশাকের বাহারি নামও দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এবার ঈদে বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও এসেছে ডোরেমন, মটুপাতলু, মাসাক্কালি, দিল্লি-সিক্স, ঝিলিক, হাসি, খুশি, পুতুল, পরী, চাক্কি, পার্টি ফ্রক, আনারকলি, চিকনি চামেলী নামের সব জামা। এসব বাহারি নাম তাদের আকৃষ্টও করছে।
ধানমন্ডির আনাম র্যাংগস প্লাজা ও অর্কিড প্লাজার নন্দন নামের দোকানে কেবল বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি হয়। এ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা ইরশাদ আরা প্রথম আলোকে বলেন, নন্দনে ১ থেকে ১৩ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের জন্য ৫০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে জামাকাপড় পাওয়া যায়। দেশি পোশাকের পাশাপাশি চীন, থাইল্যান্ড ও ভারতে তৈরি পোশাকের বেশ চাহিদা আছে বলে জানান কারুশৈলীর উদ্যোক্তা জাহিদুর রহমান। অর্কিড প্লাজা ও লালমাটিয়ার সানরাইজ প্লাজায় তাঁর দুটি প্রতিষ্ঠানে মূলত বাচ্চাদের পোশাকই বিক্রি হয়। তিনি জানান, এবার বাচ্চাদের লম্বা জামাগুলো বেশি জনপ্রিয়। মেয়েদের ‘ফ্লোর টাচ’ নামের জামাটির খুব চাহিদা। বাচ্চাদের বিদেশি জামা ৩০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। বিদেশি পোশাকে ছাপার কাজই বেশি। দেশি পোশাকে হাতের কাজ, কারচুপি, অ্যাপ্লিক, রিবনের প্রভাব রয়েছে কম-বেশি। প্রজাপতির ডানা, কাপড়ের ফুল, টুনটুনি পাখি—সবই দেখা গেছে মোটিফ হিসেবে। শিশুর যা কিছু ভালো লাগে তাই প্রাধান্য পাচ্ছে।
আবার বাবা কিনে দিতে চাইছেন আকাশি রঙের পাতলা পাঞ্জাবি। কিন্তু ছেলের চাই ভারী কারুকাজের কালো পাঞ্জাবি। শেষ পর্যন্ত বাবার পছন্দের জয় হলেও ছেলের মুখ ভার, চোখে কান্না।
বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানদের পছন্দ-অপছন্দের এই মিল-অমিল, হাসি-কান্নার দৃশ্য দেখা গেছে গতকাল রোববার রাজধানীর বিপণিবিতানগুলোতে। ঈদের পোশাক কিনতে হাসিমুখে আনন্দ নিয়ে বিপণিবিতানে আসা কোনো কোনো শিশুর মুখে বাড়ি ফেরার সময় ছিল মেঘের ঘনঘটা। অবশ্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জয় হয়েছে সোনামণিদের।
বৃষ্টি না থাকায় গতকাল অনেক বাবা-মা সন্তানদের জন্য কেনাকাটা করতে বিপণিবিতানে গেছেন। তবে দিনের বেলা সন্তানকে নিয়ে যাওয়া মায়েদের সংখ্যাই ছিল বেশি। সন্ধ্যায় বেশি গেছেন বাবারা। ফলে গতকাল বিপণিবিতানগুলোতে শিশুদের পোশাকের দোকানে ভিড় ছিল লক্ষণীয়। দোকানিদের মুখে হাসি ফুটিয়ে বিক্রিও হয়েছে বেশ।
শহরের ছোট-বড় সব ধরনের বিপণিবিতানেই মিলছে ছোটদের পোশাক। তবে কিছু বিপণিবিতানে রয়েছে ছোটদের পোশাকের প্রাধান্য। বসুন্ধরা সিটি, ধানমন্ডির রাপা প্লাজা, অর্কিড প্লাজা, মেট্রো শপিং মল, আড়ং, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট, চাঁদনী চক, গাউছিয়া মার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা, মৌচাক মার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, মাসকাট প্লাজা, বনানী, গুলশান ও উত্তরার অভিজাত ফ্যাশন হাউসগুলোর প্রতিটি দোকানে বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্য বাহারি রং ও ডিজাইনের পোশাক সাজানো রয়েছে। রাজধানী সুপার মার্কেট, সদরঘাট ও গুলিস্তানের দোকানে দোকানেও আছে শিশুদের পোশাক।
হাটখোলা থেকে গৃহবধূ রুবি আক্তার বসুন্ধরা সিটিতে এসেছিলেন ছেলে আহনাফ (৭) ও মেয়ে এষাকে (৩) নিয়ে। সকাল থেকে ছেলে ঘুরছে ‘বেনটেন’ জুতা কিনবে বলে। কিন্তু রুবি বেনটেন বিষয়ে জানেন না। পরে একটি জুতার দোকানে গিয়ে বলার সঙ্গে সঙ্গে দোকানি এগিয়ে দেন বেনটেন কার্টুনসমৃদ্ধ এক জোড়া জুতা। ছেলের আবদার রক্ষা হলো। এবার রুবিকে মেয়ের ভার হওয়া মুখে হাসি ফোটাতে হবে। মেয়ের চাই ‘কিরণমালা’। কিন্তু এত ছোট মেয়ের ‘কিরণমালা’ মিলছে না। দোকানে দোকানে ঘুরে হয়রান মা।
একই বিপণিবিতানে নবাবপুর উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মুসাহিদুল আদিব মায়ের হাত ধরে ঘুরছে পছন্দের পোশাক কিনতে। সে বায়না ধরেছে ‘পোকেমন’। কিন্তু ওর পছন্দের সঙ্গে মায়ের পছন্দ কিছুতেই মেলেনি। ঘুরে ঘুরে পায়ওনি। শেষ পর্যন্ত কিছু না কিনেই গাল ফুলিয়ে বাসার দিকে যাত্রা করল সে।
শিশুদের নজর কাড়তে পোশাকের বাহারি নামও দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এবার ঈদে বড়দের পাশাপাশি ছোটদের জন্যও এসেছে ডোরেমন, মটুপাতলু, মাসাক্কালি, দিল্লি-সিক্স, ঝিলিক, হাসি, খুশি, পুতুল, পরী, চাক্কি, পার্টি ফ্রক, আনারকলি, চিকনি চামেলী নামের সব জামা। এসব বাহারি নাম তাদের আকৃষ্টও করছে।
ধানমন্ডির আনাম র্যাংগস প্লাজা ও অর্কিড প্লাজার নন্দন নামের দোকানে কেবল বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি হয়। এ প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা ইরশাদ আরা প্রথম আলোকে বলেন, নন্দনে ১ থেকে ১৩ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের জন্য ৫০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে জামাকাপড় পাওয়া যায়। দেশি পোশাকের পাশাপাশি চীন, থাইল্যান্ড ও ভারতে তৈরি পোশাকের বেশ চাহিদা আছে বলে জানান কারুশৈলীর উদ্যোক্তা জাহিদুর রহমান। অর্কিড প্লাজা ও লালমাটিয়ার সানরাইজ প্লাজায় তাঁর দুটি প্রতিষ্ঠানে মূলত বাচ্চাদের পোশাকই বিক্রি হয়। তিনি জানান, এবার বাচ্চাদের লম্বা জামাগুলো বেশি জনপ্রিয়। মেয়েদের ‘ফ্লোর টাচ’ নামের জামাটির খুব চাহিদা। বাচ্চাদের বিদেশি জামা ৩০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। বিদেশি পোশাকে ছাপার কাজই বেশি। দেশি পোশাকে হাতের কাজ, কারচুপি, অ্যাপ্লিক, রিবনের প্রভাব রয়েছে কম-বেশি। প্রজাপতির ডানা, কাপড়ের ফুল, টুনটুনি পাখি—সবই দেখা গেছে মোটিফ হিসেবে। শিশুর যা কিছু ভালো লাগে তাই প্রাধান্য পাচ্ছে।
No comments