ট্রেনের টিকিট কিনতে ‘ডিজিটাল ভোগান্তি’ by ইমরান আহম্মেদ
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কিনতে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। |
টিকিট
থাকলে ওয়েবসাইটে ঢোকা যায় না, আর ঢোকা গেলে টিকিট পাওয়া যায় না। ক্রেডিট
কার্ড থেকে টাকা কেটে নিলেও টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। সমস্যা হলে
তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগের নম্বর নেই। অনলাইনে রেলওয়ের টিকিট কাটতে গিয়ে এমন
ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
গত ৬ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে টিকিট কাটতে যান বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সালাহ্ উদ্দিন খোকন। সেখানকার বিড়ম্বনা তাঁর ভাষ্যে, রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী, সকাল ৯টা ৫ মিনিট থেকে অনলাইনে টিকিট দেওয়া শুরু হওয়ার কথা। সে জন্য ঢাকা-দিনাজপুর রুটের একতা এক্সপ্রেসের ১০ জুলাইয়ের টিকিট কাটতে তিনি ওই দিন সকাল নয়টায় বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকতে চেষ্টা করেন। তিন দফা চেষ্টার পর তাঁর রেলওয়ের ওয়েবসাইটে করা অ্যাকাউন্ট দিয়ে সাইন ইন করেন। সেখান রাখা ফরমের সব তথ্য যথাযথভাবে পূরণ করেন। এরপর ইবিএল ক্রেডিট কার্ড থেকে টিকিট বাবদ ৬৩০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। সবকিছু শেষ হওয়ার পর ই-মেইলে টিকিট দেওয়া হয়েছে কি না পরখ করতে গেলে দেখা যায়, ই-মেইলে টিকিট দেওয়া হয়নি। এরপর আরও কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর, ওয়েবসাইটে দেওয়া ঠিকানায় ই-মেইলে সিএনএসকে বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু এরপর থেকে তাঁর সঙ্গে কেউ যোগাযোগও করেনি, তিনি টাকাও ফেরত পাননি।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কিনতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন এমন আরেক দাবিকারী ইসমাইল হোসেন। রাজধানীর একটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করেন, ঈদে ছুটিতে বাড়ি জামালপুর যাবেন। আগামী ১৫ জুলাইয়ের টিকিট কাটতে ১১ জুলাই সকাল নয়টার আগ থেকেই রেলওয়ের ওই ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি। এরপর সকাল ১০টার দিকে আবার চেষ্টা করেছেন। সেবারও পারেননি। এরপর বেলা ১১টার দিকে আবার চেষ্টা করার পর সাইটে ঢোকেন। কিন্তু সেখানকার নির্ধারিত ফরমের একটি অংশের তথ্য ইনপুট দেওয়ার পর আরেকটি পেজ আসতে কয়েক মিনিট সময় লাগে। আবার মাঝপথেই ক্রাশ হয়ে যায়। এভাবে দফায় দফায় চেষ্টার পর বেলা ১১টার পর ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখেন ওই পথে চলাচলকারী তিস্তা এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ও যমুনা এক্সপ্রেসের টিকিট শেষ। শুধু ব্রহ্মপত্র এক্সপ্রেসের টিকিট রয়েছে।
ইসমাইল হোসেন বলেন, এরপর তিনি স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দুটি টিকিট কাটতে চান। কিন্তু তাঁরও টাকা কেটে নেওয়ার পর আর ই-মেইলে টিকিট দেওয়া হয়নি। এরপর সেখানে সরাসরি যোগাযোগের কোনো নম্বর না থাকায় তিনি ব্যাংকের হটলাইনে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে জানানো হয়, তিনি ট্রেনের টিকিট কেটেছেন বলে দেখানো হচ্ছে। যদি তিনি টিকিট না পেয়ে থাকেন তাহলে অন্তত ১০ দিন পর সে টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে যোগ হবে। কিন্তু অনলাইনের আবেদনের চার্জ ঠিকই কেটে রাখা হবে।
এখন রেলওয়ে তাঁকে টিকিট দেবে কি না, বা ঈদে ট্রেনে করে আদৌ বাড়ি যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে তিনি রয়েছেন বলে জানান ইসমাইল হোসেন।
গতকাল রোববার সকাল নয়টার দিকে রেলওয়ের টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইটে কয়েকবার চেষ্টা করেও ঢোকা যায়নি। এ ব্যাপারে কথা বলতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, শতকরা ২৫ ভাগ টিকিট অনলাইনে দেওয়া হয়। কিন্তু অনলাইনের কে টিকিট কিনেছেন, সে বিষয়টি দেখার কেউ থাকে না। এ সুযোগে কেউ কেউ অনলাইনে আবেদন করে টিকিট কিনে, তা আবার কালোবাজারি করছে।
অনলাইনে টিকিট কেনার বিড়ম্বনার নিয়ে ওই কর্মকর্তার ভাষ্য, টাকা কেটে নেওয়ার পর আর টিকিট না দেওয়ার এমন বেশ কয়েকটি অভিযোগ তারাও পেয়েছেন। অনলাইনের টিকিট বিক্রয় সঙ্গে যুক্ত সিএনএসে লোকজন কারসাজি করে টিকিট শেষ দেখান। এরপর সেগুলো তাঁদের ঠিক করা লোকজনের কাছে অনলাইনে বিক্রি করেন। পরে ওই লোকজন টিকিটগুলো নিয়ে কালোবাজারি করেন বলে ভুক্তভোগীরা তাঁদের কাছে অভিযোগ করেছেন।
রেললাইনের টিকিট বিক্রির বিষয়টি প্রযুক্তিগত সহায়তা করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) লিমিডেট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কমলাপুর রেলওয়ের ভবনের দ্বিতীয় তলার সিএনএসের অফিসে এসব অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে কথা বলতে গেলে দেখা যায়, সেখানের প্রবেশ ফটক তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের মাধ্যমে ভেতরের কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাতে বললে, ভেতর থেকে এক পিয়নকে পাঠানো হয়। তিনি এসে বলেন, ভেতরের কেউ কথা বলবেন না, কিছু বলার থাকলে স্টেশন ম্যানেজার ও মাস্টারের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।
স্টেশন মাস্টার মো. সাখাওয়াত হোসেন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, ‘এখানকার প্রশাসনিক বিষয়গুলো আমরা দেখভাল করি, কিন্তু কারিগরি বিষয়টি তো সিএনএস দেখে। এ ব্যাপারে আমরা কী বলব? ’
সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ সফিকুর রহমানের সঙ্গে গতকাল রোববার কথা বলতে গেলে, তাঁর কক্ষে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তিনি স্টেশনে আছেন বলে তাঁর কর্মচারীরা জানান। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কয়েক দফায় খোঁজ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধান কক্ষ থেকে তাঁর মুঠোফোন নম্বর সাতবার ফোন দিলেও কখনো বন্ধ, কখনো ব্যস্ত আবার কখনো রিং হয়েছে, তিনি ধরেননি।
গত ৬ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে টিকিট কাটতে যান বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সালাহ্ উদ্দিন খোকন। সেখানকার বিড়ম্বনা তাঁর ভাষ্যে, রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী, সকাল ৯টা ৫ মিনিট থেকে অনলাইনে টিকিট দেওয়া শুরু হওয়ার কথা। সে জন্য ঢাকা-দিনাজপুর রুটের একতা এক্সপ্রেসের ১০ জুলাইয়ের টিকিট কাটতে তিনি ওই দিন সকাল নয়টায় বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকতে চেষ্টা করেন। তিন দফা চেষ্টার পর তাঁর রেলওয়ের ওয়েবসাইটে করা অ্যাকাউন্ট দিয়ে সাইন ইন করেন। সেখান রাখা ফরমের সব তথ্য যথাযথভাবে পূরণ করেন। এরপর ইবিএল ক্রেডিট কার্ড থেকে টিকিট বাবদ ৬৩০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। সবকিছু শেষ হওয়ার পর ই-মেইলে টিকিট দেওয়া হয়েছে কি না পরখ করতে গেলে দেখা যায়, ই-মেইলে টিকিট দেওয়া হয়নি। এরপর আরও কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর, ওয়েবসাইটে দেওয়া ঠিকানায় ই-মেইলে সিএনএসকে বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু এরপর থেকে তাঁর সঙ্গে কেউ যোগাযোগও করেনি, তিনি টাকাও ফেরত পাননি।
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কিনতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন এমন আরেক দাবিকারী ইসমাইল হোসেন। রাজধানীর একটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করেন, ঈদে ছুটিতে বাড়ি জামালপুর যাবেন। আগামী ১৫ জুলাইয়ের টিকিট কাটতে ১১ জুলাই সকাল নয়টার আগ থেকেই রেলওয়ের ওই ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি। এরপর সকাল ১০টার দিকে আবার চেষ্টা করেছেন। সেবারও পারেননি। এরপর বেলা ১১টার দিকে আবার চেষ্টা করার পর সাইটে ঢোকেন। কিন্তু সেখানকার নির্ধারিত ফরমের একটি অংশের তথ্য ইনপুট দেওয়ার পর আরেকটি পেজ আসতে কয়েক মিনিট সময় লাগে। আবার মাঝপথেই ক্রাশ হয়ে যায়। এভাবে দফায় দফায় চেষ্টার পর বেলা ১১টার পর ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখেন ওই পথে চলাচলকারী তিস্তা এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ও যমুনা এক্সপ্রেসের টিকিট শেষ। শুধু ব্রহ্মপত্র এক্সপ্রেসের টিকিট রয়েছে।
ইসমাইল হোসেন বলেন, এরপর তিনি স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দুটি টিকিট কাটতে চান। কিন্তু তাঁরও টাকা কেটে নেওয়ার পর আর ই-মেইলে টিকিট দেওয়া হয়নি। এরপর সেখানে সরাসরি যোগাযোগের কোনো নম্বর না থাকায় তিনি ব্যাংকের হটলাইনে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে জানানো হয়, তিনি ট্রেনের টিকিট কেটেছেন বলে দেখানো হচ্ছে। যদি তিনি টিকিট না পেয়ে থাকেন তাহলে অন্তত ১০ দিন পর সে টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে যোগ হবে। কিন্তু অনলাইনের আবেদনের চার্জ ঠিকই কেটে রাখা হবে।
এখন রেলওয়ে তাঁকে টিকিট দেবে কি না, বা ঈদে ট্রেনে করে আদৌ বাড়ি যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে তিনি রয়েছেন বলে জানান ইসমাইল হোসেন।
গতকাল রোববার সকাল নয়টার দিকে রেলওয়ের টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইটে কয়েকবার চেষ্টা করেও ঢোকা যায়নি। এ ব্যাপারে কথা বলতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, শতকরা ২৫ ভাগ টিকিট অনলাইনে দেওয়া হয়। কিন্তু অনলাইনের কে টিকিট কিনেছেন, সে বিষয়টি দেখার কেউ থাকে না। এ সুযোগে কেউ কেউ অনলাইনে আবেদন করে টিকিট কিনে, তা আবার কালোবাজারি করছে।
অনলাইনে টিকিট কেনার বিড়ম্বনার নিয়ে ওই কর্মকর্তার ভাষ্য, টাকা কেটে নেওয়ার পর আর টিকিট না দেওয়ার এমন বেশ কয়েকটি অভিযোগ তারাও পেয়েছেন। অনলাইনের টিকিট বিক্রয় সঙ্গে যুক্ত সিএনএসে লোকজন কারসাজি করে টিকিট শেষ দেখান। এরপর সেগুলো তাঁদের ঠিক করা লোকজনের কাছে অনলাইনে বিক্রি করেন। পরে ওই লোকজন টিকিটগুলো নিয়ে কালোবাজারি করেন বলে ভুক্তভোগীরা তাঁদের কাছে অভিযোগ করেছেন।
রেললাইনের টিকিট বিক্রির বিষয়টি প্রযুক্তিগত সহায়তা করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস) লিমিডেট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কমলাপুর রেলওয়ের ভবনের দ্বিতীয় তলার সিএনএসের অফিসে এসব অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে কথা বলতে গেলে দেখা যায়, সেখানের প্রবেশ ফটক তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের মাধ্যমে ভেতরের কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাতে বললে, ভেতর থেকে এক পিয়নকে পাঠানো হয়। তিনি এসে বলেন, ভেতরের কেউ কথা বলবেন না, কিছু বলার থাকলে স্টেশন ম্যানেজার ও মাস্টারের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।
স্টেশন মাস্টার মো. সাখাওয়াত হোসেন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, ‘এখানকার প্রশাসনিক বিষয়গুলো আমরা দেখভাল করি, কিন্তু কারিগরি বিষয়টি তো সিএনএস দেখে। এ ব্যাপারে আমরা কী বলব? ’
সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ সফিকুর রহমানের সঙ্গে গতকাল রোববার কথা বলতে গেলে, তাঁর কক্ষে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তিনি স্টেশনে আছেন বলে তাঁর কর্মচারীরা জানান। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে কয়েক দফায় খোঁজ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধান কক্ষ থেকে তাঁর মুঠোফোন নম্বর সাতবার ফোন দিলেও কখনো বন্ধ, কখনো ব্যস্ত আবার কখনো রিং হয়েছে, তিনি ধরেননি।
No comments