শিনজো আবে এশিয়ার দিকে ঝুঁকছেন by বিল এমোট
বিল এমোট |
এক
বছর ধরে পূর্ব এশিয়ার তিনটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতির দেশ অর্থাৎ
জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের মধ্যকার সম্পর্ক ধীরে ও অবিরামভাবে ভালো
হচ্ছে। ব্যাপারটা এ কারণে উল্লেখযোগ্য যে তাদের মধ্যকার সম্পর্ক অতীতে
কখনোই ভালো ছিল না। ২০ শতকের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এ কথা বলাই যায়।
দেশগুলোর মধ্যকার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিপ্রেক্ষিতেও তা সত্য।
আগামী আগস্টে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৭০ বছর পূর্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেবেন। সেই ভাষণের মাধ্যমে তিনি এই সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের বিষয়টি ত্বরান্বিত করতে পারেন, আবার সেটা থামিয়েও দিতে পারেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রীরা বরাবরই ডানপন্থী, আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস-বিষয়ক আবের অবস্থান সংশোধনবাদী। ফলে তাঁর এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের কূটনীতি নতুন করে উত্তাল হতে পারে।
আবের এটা মনে রাখা উচিত, নিজের ক্ষমতার বলে তিনি ভিন্ন ফলাফল বয়ে আনতে পারেন। যদিও ভাষণ না দেওয়াটাও বিজ্ঞ কাজ হতে পারে, তবু তিনি এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জাপান যে এশিয়ার ইতিবাচক শক্তি, সেই ভাবমূর্তি মানুষের মনে আরও দৃঢ় করতে পারেন। জাপান একটি শক্তিশালী ভবিষ্যৎমুখী দেশ, পশ্চাৎমুখী নয়, যারা বিশ্বের ও বিশেষ করে এশিয়ার শান্তি, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চায়—মানুষের কাছে জাপানকে এভাবে উপস্থাপন করার জন্য তাঁকে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের অর্থনীতি ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে ঘুরে দাঁড়ায়। জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন তার ইতিহাস মোকাবিলা করতে চীনসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। আবের উচিত হবে, এই চেতনা ও কাজের উদারতাকে কেন্দ্র করেই আগস্টের বক্তৃতাটি সাজানো।
উদারতার শক্তি আছে, এর বলে নিরস্ত্রীকরণও ঘটতে পারে। ২০০৭ সালে আমি চীনের ‘মিউজিয়াম অব দ্য ওয়ার অব চায়নিজ পিপলস রেসিসট্যান্স অ্যাগেইনস্ট জাপানিজ অ্যাগ্রেশন’ নামের জাদুঘর পরিদর্শন করি। এ জাদুঘরের নাম দেখেই বোঝা যায়, সেখানে রক্ষিত অধিকাংশ নিদর্শনে কোন অনুভূতির প্রতিফলন ঘটেছে। ফলে জাদুঘরের শেষ প্রদর্শিত নিদর্শনটিতে যখন দেখলাম, বিগত কয়েক দশকে চীনকে প্রদত্ত জাপানের সহায়তার স্বীকৃতিস্বরূপ নানা বস্তু রাখা হয়েছে, তখন সেটা আমার কাছে সুখকর চমক হিসেবেই মনে হয়েছে।
গত মাসে আবে এশিয়ার অবকাঠামো উন্নয়নে আগামী পাঁচ বছরে ১১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। ফলে মনে হয়েছে, তিনি সম্পর্কোন্নয়নের কথা ভাবছেন। কিন্তু সমস্যা হয়েছে সময়ের কারণে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান উভয়েই চীনা নেতৃত্বে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)-এ যোগ না দিয়ে ভুল করেছে। এমনকি তারা যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সসহ যে ৫০টি দেশ এতে যোগ দিয়েছে, তাদের সমালোচনাও করেছে। এতে দুটি দেশই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, তাদের এই যোগ না দেওয়া অনেকটা অভদ্রোচিতও মনে হয়েছে। আর জাপানের বেলায় মনে হয়েছে, তারা এই বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে এআইআইবির ইটের জবাবে পাটকেল মেরেছে। বিনিয়োগের অঙ্কটা দেখেও তা-ই মনে হয়েছে। এআইআইবি যেখানে প্রাথমিকভাবে ১০০ বিলিয়ন ডলার পুঁজি সংগ্রহ করেছে, সেখানে জাপান ১১০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আবে যদি তাঁর বক্তৃতায় ডানপন্থীদের প্রশমিত করার চেষ্টা করেন, তাহলে এই অঞ্চলের জাপান-বিষয়ক ধারণা আরও খারাপ হবে। তিনি যদি বক্তৃতায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের ভূমিকার জন্য প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ না করেন বা সে সময় জাপানের ভূমিকার সমালোচনাকে প্রশ্ন করেন, তাহলে চীন ও কোরিয়া খেপে যাবে। এর মধ্যে রয়েছে জাপানের সাম্রাজ্যবাদী সেনাবাহিনীর দ্বারা কোরীয় নারীদের যৌন দাসী হিসেবে ব্যবহার করা, যাদের তারা বলত ‘কমফোর্ট উইমেন’।
এর বদলে গত এপ্রিলে আবে মার্কিন কংগ্রেসে যে বক্তৃতা করেছেন, সেখান থেকে কয়েক পাতা তিনি ধার নিতে পারেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত মার্কিন সেনাদের স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের সময় তিনি হৃদয়ে ‘গভীর অনুশোচনা বোধ করেছেন’। তাঁদের জন্য তিনি ‘চিরন্তন শোক’ প্রকাশ করেছেন।
এশিয়ায় জাপানের ভূমিকা প্রসঙ্গে আবে অঙ্গীকার করেছেন, তিনি ‘জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন’, তাঁদের দুঃখ প্রকাশের ব্যাপারটি ছাড়া। আগস্টের বক্তৃতায় আবেকে তাঁর পূর্বসূরিদের কথা পুনর্ব্যক্ত তো করতেই হবে, এমনকি সে ক্ষেত্রে তাঁদের ছাড়িয়েও যেতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত মার্কিনদের প্রতি সহানুভূতি জানাতে তিনি যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, আগস্টের বক্তব্যে সেই শব্দ ব্যবহার করলে বোঝা যাবে, জাপান ইতিহাস পুনর্লিখন করতে চায় না। আর আবে শুধু নিহত মার্কিন সেনাদের জন্যই অনুশোচনা বোধ করেন না, তাঁর এশীয় প্রতিবেশীদের প্রতিও তিনি একই রকম সহানুভূতি বোধ করেন।
সেটা হলে আবে ঘোষণা করতে পারবেন, জাপান উদার ও গঠনমূলক হতে চায়। আর সেই সুযোগে তিনি বলতে পারেন, জাপান অতীত থেকে ভবিষ্যতের দিকে যেতে চায়। তিনি এশিয়াকে যে রূপে গড়তে চান, সে বিষয়ে কথা বলতে পারেন। আর সে ক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানগুলো দরকার হবে, সেগুলো সম্পর্কেও কথা বলতে পারেন।
এই সুযোগ নেওয়ার একটা নাটকীয় পন্থা হতে পারে এ রকম: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালে জাপান যে শান্তি স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, সেটার ওপর ভর করেই এশিয়ার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে জাপান প্রস্তাব দিতে পারে। এই পরিকল্পনার মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া থাকতে পারে। আর শুধু দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ চীন ও ভারতের সঙ্গেও তথ্য বিনিময়ের আয়োজন করতে পারে জাপান।
এমন প্রস্তাব একটু বেশিই সাহসী, ফলে সেটা বাস্তবায়ন করা কঠিন। সর্বোপরি এশিয়ায় তো বাস্তবে বিভাজন আছেই, এই প্রস্তাব তার বিরুদ্ধেই যাবে। কিন্তু এটা করলে জাপানের লাভ হবে। মানুষ মনে করবে, জাপান সবার জন্য শান্তি ও উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চায়। ফলে জাপানের নৈতিক জায়গাটা আরও উঁচু হবে। আর সেটাই তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
ইংরেজি থেকে অনূদিত; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
বিল এমোট: দ্য ইকোনমিস্ট-এর সাবেক সম্পাদক।
আগামী আগস্টে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৭০ বছর পূর্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেবেন। সেই ভাষণের মাধ্যমে তিনি এই সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের বিষয়টি ত্বরান্বিত করতে পারেন, আবার সেটা থামিয়েও দিতে পারেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রীরা বরাবরই ডানপন্থী, আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস-বিষয়ক আবের অবস্থান সংশোধনবাদী। ফলে তাঁর এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের কূটনীতি নতুন করে উত্তাল হতে পারে।
আবের এটা মনে রাখা উচিত, নিজের ক্ষমতার বলে তিনি ভিন্ন ফলাফল বয়ে আনতে পারেন। যদিও ভাষণ না দেওয়াটাও বিজ্ঞ কাজ হতে পারে, তবু তিনি এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জাপান যে এশিয়ার ইতিবাচক শক্তি, সেই ভাবমূর্তি মানুষের মনে আরও দৃঢ় করতে পারেন। জাপান একটি শক্তিশালী ভবিষ্যৎমুখী দেশ, পশ্চাৎমুখী নয়, যারা বিশ্বের ও বিশেষ করে এশিয়ার শান্তি, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চায়—মানুষের কাছে জাপানকে এভাবে উপস্থাপন করার জন্য তাঁকে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের অর্থনীতি ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে ঘুরে দাঁড়ায়। জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন তার ইতিহাস মোকাবিলা করতে চীনসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। আবের উচিত হবে, এই চেতনা ও কাজের উদারতাকে কেন্দ্র করেই আগস্টের বক্তৃতাটি সাজানো।
উদারতার শক্তি আছে, এর বলে নিরস্ত্রীকরণও ঘটতে পারে। ২০০৭ সালে আমি চীনের ‘মিউজিয়াম অব দ্য ওয়ার অব চায়নিজ পিপলস রেসিসট্যান্স অ্যাগেইনস্ট জাপানিজ অ্যাগ্রেশন’ নামের জাদুঘর পরিদর্শন করি। এ জাদুঘরের নাম দেখেই বোঝা যায়, সেখানে রক্ষিত অধিকাংশ নিদর্শনে কোন অনুভূতির প্রতিফলন ঘটেছে। ফলে জাদুঘরের শেষ প্রদর্শিত নিদর্শনটিতে যখন দেখলাম, বিগত কয়েক দশকে চীনকে প্রদত্ত জাপানের সহায়তার স্বীকৃতিস্বরূপ নানা বস্তু রাখা হয়েছে, তখন সেটা আমার কাছে সুখকর চমক হিসেবেই মনে হয়েছে।
গত মাসে আবে এশিয়ার অবকাঠামো উন্নয়নে আগামী পাঁচ বছরে ১১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। ফলে মনে হয়েছে, তিনি সম্পর্কোন্নয়নের কথা ভাবছেন। কিন্তু সমস্যা হয়েছে সময়ের কারণে। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান উভয়েই চীনা নেতৃত্বে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)-এ যোগ না দিয়ে ভুল করেছে। এমনকি তারা যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সসহ যে ৫০টি দেশ এতে যোগ দিয়েছে, তাদের সমালোচনাও করেছে। এতে দুটি দেশই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, তাদের এই যোগ না দেওয়া অনেকটা অভদ্রোচিতও মনে হয়েছে। আর জাপানের বেলায় মনে হয়েছে, তারা এই বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে এআইআইবির ইটের জবাবে পাটকেল মেরেছে। বিনিয়োগের অঙ্কটা দেখেও তা-ই মনে হয়েছে। এআইআইবি যেখানে প্রাথমিকভাবে ১০০ বিলিয়ন ডলার পুঁজি সংগ্রহ করেছে, সেখানে জাপান ১১০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আবে যদি তাঁর বক্তৃতায় ডানপন্থীদের প্রশমিত করার চেষ্টা করেন, তাহলে এই অঞ্চলের জাপান-বিষয়ক ধারণা আরও খারাপ হবে। তিনি যদি বক্তৃতায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের ভূমিকার জন্য প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ না করেন বা সে সময় জাপানের ভূমিকার সমালোচনাকে প্রশ্ন করেন, তাহলে চীন ও কোরিয়া খেপে যাবে। এর মধ্যে রয়েছে জাপানের সাম্রাজ্যবাদী সেনাবাহিনীর দ্বারা কোরীয় নারীদের যৌন দাসী হিসেবে ব্যবহার করা, যাদের তারা বলত ‘কমফোর্ট উইমেন’।
এর বদলে গত এপ্রিলে আবে মার্কিন কংগ্রেসে যে বক্তৃতা করেছেন, সেখান থেকে কয়েক পাতা তিনি ধার নিতে পারেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত মার্কিন সেনাদের স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের সময় তিনি হৃদয়ে ‘গভীর অনুশোচনা বোধ করেছেন’। তাঁদের জন্য তিনি ‘চিরন্তন শোক’ প্রকাশ করেছেন।
এশিয়ায় জাপানের ভূমিকা প্রসঙ্গে আবে অঙ্গীকার করেছেন, তিনি ‘জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন’, তাঁদের দুঃখ প্রকাশের ব্যাপারটি ছাড়া। আগস্টের বক্তৃতায় আবেকে তাঁর পূর্বসূরিদের কথা পুনর্ব্যক্ত তো করতেই হবে, এমনকি সে ক্ষেত্রে তাঁদের ছাড়িয়েও যেতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত মার্কিনদের প্রতি সহানুভূতি জানাতে তিনি যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, আগস্টের বক্তব্যে সেই শব্দ ব্যবহার করলে বোঝা যাবে, জাপান ইতিহাস পুনর্লিখন করতে চায় না। আর আবে শুধু নিহত মার্কিন সেনাদের জন্যই অনুশোচনা বোধ করেন না, তাঁর এশীয় প্রতিবেশীদের প্রতিও তিনি একই রকম সহানুভূতি বোধ করেন।
সেটা হলে আবে ঘোষণা করতে পারবেন, জাপান উদার ও গঠনমূলক হতে চায়। আর সেই সুযোগে তিনি বলতে পারেন, জাপান অতীত থেকে ভবিষ্যতের দিকে যেতে চায়। তিনি এশিয়াকে যে রূপে গড়তে চান, সে বিষয়ে কথা বলতে পারেন। আর সে ক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানগুলো দরকার হবে, সেগুলো সম্পর্কেও কথা বলতে পারেন।
এই সুযোগ নেওয়ার একটা নাটকীয় পন্থা হতে পারে এ রকম: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালে জাপান যে শান্তি স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, সেটার ওপর ভর করেই এশিয়ার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে জাপান প্রস্তাব দিতে পারে। এই পরিকল্পনার মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া থাকতে পারে। আর শুধু দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ চীন ও ভারতের সঙ্গেও তথ্য বিনিময়ের আয়োজন করতে পারে জাপান।
এমন প্রস্তাব একটু বেশিই সাহসী, ফলে সেটা বাস্তবায়ন করা কঠিন। সর্বোপরি এশিয়ায় তো বাস্তবে বিভাজন আছেই, এই প্রস্তাব তার বিরুদ্ধেই যাবে। কিন্তু এটা করলে জাপানের লাভ হবে। মানুষ মনে করবে, জাপান সবার জন্য শান্তি ও উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চায়। ফলে জাপানের নৈতিক জায়গাটা আরও উঁচু হবে। আর সেটাই তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
ইংরেজি থেকে অনূদিত; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
বিল এমোট: দ্য ইকোনমিস্ট-এর সাবেক সম্পাদক।
No comments