মহানগরের যানজট: চাই সামগ্রিক পরিকল্পনা ও সুষ্ঠু ট্রাফিকব্যবস্থা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা শহরে যানজট কমাতে সংসদে বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে একই গাড়িতে চড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। খুবই ভালো পরামর্শ। তাঁরা দুজন স্বামী-স্ত্রী বলে একই গাড়িতে চড়বেন কিংবা একই বাড়িতে থাকবেন, সেই প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রী করতেই পারেন।
প্রশ্ন হলো, প্রধানমন্ত্রীর এই পরামর্শ তাঁর বিশেষ দূত ও বিরোধী দলের নেতা মেনে চললেও ঢাকা শহরের অসহনীয় যানজট কতটা কমবে? রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা ভিভিআইপিদের চলাচলের সময় নগরবাসীকে যে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়, সেটি লাঘবের কথাও ভাবা প্রয়োজন। কোনো সড়কে যদি ১৫-২০ মিনিটের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে, তার বিরূপ প্রভাব গোটা শহরে পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী যানজটের কারণ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের গাড়ি কেনার ক্ষমতা বাড়ার কথা বলেছেন। এটি একটি কারণমাত্র। জনসংখ্যা ও যানবাহনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যে পরিমাণ সড়ক প্রয়োজন, তার এক–তৃতীয়াংশও ঢাকা মহানগরে নেই। গত দুই দশকে ঢাকায় বেশুমার যানবাহন বাড়লেও এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সড়কব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ অপ্রতুল। পৃথিবীর সব দেশেই জনবহুল শহরগুলোতে গণপরিবহনকে অগ্রাধিকার দিলেও বাংলাদেশে সেটি দেওয়া হচ্ছে না।
অন্যদিকে লাখ লাখ টাকা খরচ করে ঢাকায় স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল-ব্যবস্থা চালু করা হলেও শুরুর দিনই তা মুখ থুবড়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে ট্রাফিকিংয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের অসহযোগিতাই প্রধানত দায়ী। রহস্যজনক কারণেই একশ্রেণির ট্রাফিক কর্মকর্তা ডিজিটাল বাংলাদেশে অ্যানালগ ট্রাফিক-ব্যবস্থাই চালু রাখতে চাইছেন। অফিস সময় ও বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কৌশলও ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে না।
ঢাকা মহানগরের যানজটে জনগণের নিয়ত ভোগান্তি ছাড়াও দেশের যে অর্থনৈতিক ক্ষতি ও কর্মঘণ্টার অপচয় হচ্ছে, তা অপরিসীম। এ থেকে রেহাই পেতে অবিলম্বে আধুনিক ট্রাফিক-ব্যবস্থা চালু, গণপরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধি ও সড়ক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনার বিকল্প নেই।
প্রশ্ন হলো, প্রধানমন্ত্রীর এই পরামর্শ তাঁর বিশেষ দূত ও বিরোধী দলের নেতা মেনে চললেও ঢাকা শহরের অসহনীয় যানজট কতটা কমবে? রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা ভিভিআইপিদের চলাচলের সময় নগরবাসীকে যে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়, সেটি লাঘবের কথাও ভাবা প্রয়োজন। কোনো সড়কে যদি ১৫-২০ মিনিটের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে, তার বিরূপ প্রভাব গোটা শহরে পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী যানজটের কারণ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের গাড়ি কেনার ক্ষমতা বাড়ার কথা বলেছেন। এটি একটি কারণমাত্র। জনসংখ্যা ও যানবাহনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যে পরিমাণ সড়ক প্রয়োজন, তার এক–তৃতীয়াংশও ঢাকা মহানগরে নেই। গত দুই দশকে ঢাকায় বেশুমার যানবাহন বাড়লেও এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সড়কব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ অপ্রতুল। পৃথিবীর সব দেশেই জনবহুল শহরগুলোতে গণপরিবহনকে অগ্রাধিকার দিলেও বাংলাদেশে সেটি দেওয়া হচ্ছে না।
অন্যদিকে লাখ লাখ টাকা খরচ করে ঢাকায় স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল-ব্যবস্থা চালু করা হলেও শুরুর দিনই তা মুখ থুবড়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে ট্রাফিকিংয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের অসহযোগিতাই প্রধানত দায়ী। রহস্যজনক কারণেই একশ্রেণির ট্রাফিক কর্মকর্তা ডিজিটাল বাংলাদেশে অ্যানালগ ট্রাফিক-ব্যবস্থাই চালু রাখতে চাইছেন। অফিস সময় ও বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কৌশলও ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে না।
ঢাকা মহানগরের যানজটে জনগণের নিয়ত ভোগান্তি ছাড়াও দেশের যে অর্থনৈতিক ক্ষতি ও কর্মঘণ্টার অপচয় হচ্ছে, তা অপরিসীম। এ থেকে রেহাই পেতে অবিলম্বে আধুনিক ট্রাফিক-ব্যবস্থা চালু, গণপরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধি ও সড়ক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনার বিকল্প নেই।
এরশাদ ও রওশনকে এক গাড়ি ব্যবহারের পরামর্শ -সংসদে প্রধানমন্ত্রী
আপডেট: জুলাই ০৯, ২০১৫
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও তাঁর স্বামী এইচ এম এরশাদকে একই গাড়ি ব্যবহার করার পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে যানজট কিছুটা হলেও কমত বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। গতকাল বুধবার সংসদের সমাপনী বক্তব্যে রওশন এরশাদের বক্তব্যের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার বক্তব্যের আগে রওশন এরশাদ যানজটের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘যানজটের কারণে আপনার ইফতার অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। যে যানজট ছিল, তাতে ইফতার অনুষ্ঠানে পৌঁছতে পৌঁছতে তারাবির নামাজের সময় হয়ে যেত।’
রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীকে আরও বলেন, ‘মানুষের কষ্টের শেষ নেই, তারা কীভাবে বেঁচে আছে সে বিষয়ে ধারণা নিতে রাতের বেলায় বের হয়ে দেখেন। প্রয়োজনে বোরকা পরে ছদ্মবেশে বের হন। বের হলে সঠিক চিত্র পাবেন। আপনার পাশে যাঁরা আছেন তাঁরা সঠিক কথা বলেন না। নিজের চোখে দেখা এক জিনিস, অন্যের কাছ থেকে শুনে ধারণা নেওয়া অন্য জিনিস।’
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বসে নেই। বসে থাকলে দেশ এত উন্নত হতো না। বস্তিবাসীদের সার্ভে করেছি। মাদক চোরাকারবারি ধরেছি। বিচার করছি। বস্তি পুনর্বাসন করছি। তাদেরও অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।’
যানজট নিরসন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতার উদ্দেশে বলেন, ‘মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি যত ঘটছে, মানুষের গাড়ি কেনার ক্ষমতা তত বাড়ছে। যেমন এরশাদ সাহেব সেদিন আমার ইফতার পার্টিতে আসলেন। আপনি আসতে পারলেন না। কিন্তু দুজন যদি একটা গাড়িতে আসতেন, তাহলে আসতে পারতেন।’
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে সংসদে হাসির রোল পড়ে। এ সময় রওশন এরশাদ ও এইচ এম এরশাদও হাসতে থাকেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘দুখানা গাড়ি যানজট বাড়ায়। একখানা গাড়ি হলে যানজট কিছুটা হলেও কমত। এভাবে সবাই যদি একটু বিবেচনা করে চলেন, তবে যানজট অনেকাংশে কমে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১ কোটি ১৮ লাখ মানুষের চাকরি হয়েছে। এরশাদ সাহেব ব্যাংকের মালিক হয়েছেন। আমিই অনুমতি দিয়েছি। তিনি নিশ্চয়ই বেকার মানুষকে চাকরি দিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার বক্তব্যের আগে রওশন এরশাদ যানজটের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘যানজটের কারণে আপনার ইফতার অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। যে যানজট ছিল, তাতে ইফতার অনুষ্ঠানে পৌঁছতে পৌঁছতে তারাবির নামাজের সময় হয়ে যেত।’
রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীকে আরও বলেন, ‘মানুষের কষ্টের শেষ নেই, তারা কীভাবে বেঁচে আছে সে বিষয়ে ধারণা নিতে রাতের বেলায় বের হয়ে দেখেন। প্রয়োজনে বোরকা পরে ছদ্মবেশে বের হন। বের হলে সঠিক চিত্র পাবেন। আপনার পাশে যাঁরা আছেন তাঁরা সঠিক কথা বলেন না। নিজের চোখে দেখা এক জিনিস, অন্যের কাছ থেকে শুনে ধারণা নেওয়া অন্য জিনিস।’
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বসে নেই। বসে থাকলে দেশ এত উন্নত হতো না। বস্তিবাসীদের সার্ভে করেছি। মাদক চোরাকারবারি ধরেছি। বিচার করছি। বস্তি পুনর্বাসন করছি। তাদেরও অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।’
যানজট নিরসন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতার উদ্দেশে বলেন, ‘মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি যত ঘটছে, মানুষের গাড়ি কেনার ক্ষমতা তত বাড়ছে। যেমন এরশাদ সাহেব সেদিন আমার ইফতার পার্টিতে আসলেন। আপনি আসতে পারলেন না। কিন্তু দুজন যদি একটা গাড়িতে আসতেন, তাহলে আসতে পারতেন।’
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে সংসদে হাসির রোল পড়ে। এ সময় রওশন এরশাদ ও এইচ এম এরশাদও হাসতে থাকেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘দুখানা গাড়ি যানজট বাড়ায়। একখানা গাড়ি হলে যানজট কিছুটা হলেও কমত। এভাবে সবাই যদি একটু বিবেচনা করে চলেন, তবে যানজট অনেকাংশে কমে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১ কোটি ১৮ লাখ মানুষের চাকরি হয়েছে। এরশাদ সাহেব ব্যাংকের মালিক হয়েছেন। আমিই অনুমতি দিয়েছি। তিনি নিশ্চয়ই বেকার মানুষকে চাকরি দিয়েছেন।’
No comments