সরকারি অর্থের নয়ছয় by রোকনুজ্জামান পিয়াস
সরঞ্জাম
আছে, কিন্তু প্রয়োজন নেই। আবার কিছু কিছুর প্রয়োজন থাকলেও ব্যবহার করার
মতো দক্ষ টেকনিশিয়ান নেই। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর। কোটি কোটি
টাকা মূল্যের এসব সরঞ্জাম এখন অনেকটাই অকেজো। কোনটি কেনার পর থেকেই
অব্যবহৃত, কোনটি একবার ব্যবহারের পরই অকেজো। আবার কোনটি ক্রয়ের পর থেকেই
নিয়মিত মেরামত করতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট অনেকের অভিযোগ, এসব সরঞ্জাম কিনে শুধু
তালিকা-ই দীর্ঘ করা হচ্ছে। কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলছে না। এমনকি ওয়ার্ডগুলোতে
লাগানো এসিগুলোও দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। সিলিং ফ্যানগুলো ঠিকমতো বাতাস দিচ্ছে
না। ফলে সেবা নিতে আসা রোগীদের অনেকেই টেবিল ফ্যান কিনে তাপদাহ থেকে বাঁচার
চেষ্টা করছেন। আর যাদের সে সামর্থ্য নেই তারা হাপিত্যেশ করছেন। এ চিত্র
রাজধানীর হৃদরোগ হাসপাতালের (জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল)। হৃদরোগ
চিকিৎসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি প্রতিষ্ঠান এটি। এক
শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী এবং হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে কোটি
টাকার এসব চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কেনা হয়েছে। তবে সেবা না বাড়লেও পকেট ভারি
হয়েছে তাদের। অনেকেই মনে করেন হাসপাতালটি যেন সরকারি অর্থ তছরুপের এজেন্ডা
হাতে নিয়েছে। এসব অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে মামলা হলেও হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা
রেহাই পেয়েছেন বারবার। সংসদীয় কমিটির তদন্তে একাধিক অভিযোগ প্রমাণিত হলেও
দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তাদের বিরুদ্ধে। অব্যবহৃত এ মেশিনগুলো সবই
সাবেক পরিচালকদের সময়ের উল্লেখ করে বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক ডা. এসটিএম
আবু আজম বলেন, এগুলো অনেক পুরাতন। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এগুলো চালু করা
হবে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আমি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি, আশা করি আমি
সফল হবো। ওই সব যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী কোম্পানির কাছ থেকে ভাল সার্ভিস না
পেলে তাদের বিল দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৪ সালের প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের ২টি অটোক্লেভ মেশিন নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। মেশিন দুটি দেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিএমএসডি। কিন্তু এগুলো চালু করার জন্য প্রতিষ্ঠানটি ওই সময় কোন কেবল (তার) দেয়নি। এ ব্যাপারে ঠিকাদারকে বলার পরও কোন লাভ হয়নি। কারণ, সরঞ্জাম নেয়ার সময় ইঞ্জিনিয়ার সবকিছু বুঝে পেয়েছেন মর্মে স্বাক্ষর দিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার ফলে এগুলো এখন নষ্টের পথে। হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক এগুলো সচলের জন্য অনেক চেষ্টা করছেন। তবে ঠিকাদার কেবল না দেয়ায় সম্ভব হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ মেশিনটি জীবাণুমুক্ত করার কাজে লাগে। অপারেশনের পর ব্যবহার করা যন্ত্রপাতিগুলো জীবাণুমুক্ত করা হয় এ মেশিনের সাহায্যে। অটোক্লেভ মেশিন দুই ধরনের হয়। এক ধরনের হলো- স্টিম বা তাপ সৃষ্টি করে জীবাণুমুক্ত করে। অন্যটি জীবাণুমুক্ত করে গ্যাসের মাধ্যমে। হাসপাতালে সম্পূর্ণ অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা মূল্যের গ্যাস প্লাজমা স্টাইলাইজিং মেশিন। বেঙ্গল নামে একটি কোম্পানির কাছ থেকে এটি কেনা হয়। ২০১৩ সালে ১ কোটি টাকার আরও একটি মেশিন ক্রয় করা হয়। এটি আনা হয় হাসান এন্টারপ্রাইজ থেকে। কিন্তু এ মেশিনের বাক্সটি খালি ছিল। ভেতরে কিছুই ছিল না। পরে প্রফেসর ডা. আমানউল্লাহর সভাপতিত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে প্রমাণিত হয় বাক্সে কিছুই ছিল না। এ নিয়ে একটি মামলাও হয়। কিন্তু এ মেশিন ক্রয়ের সঙ্গে হাসপাতালের যেসব কর্মকর্তা জড়িত তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়। আসামি করা হয় শুধু ঠিকাদারকে। নিয়ম অনুযায়ী মোট টাকার ১০ ভাগ হাসপাতালে জামানত রাখতে হয়। কিন্তু তারা ওই টাকাও জমা রাখেনি। সে হিসেবে তৎকালীন হাসপাতালের পরিচালক ও একাউন্টস অফিসার এর সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এ দুজনকে অদৃশ্য কারণে মামলার আসামি করা হয়নি। ১৯৮০ সালে জাইকার অনুদান দেয়া মেশিনটি দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণের এ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
ইসিপি-এক্সটারনাল কাউন্টার পালমেশন। যাদের হার্টে কম ব্লক থাকে তাদের ক্ষেত্রে এই মেশিন ব্যবহার করে এক ধরনের থেরাপি দেয়া হয়। ওই থেরাপির মাধ্যমে ব্লক ছুটানো হয়। ১ কোটি টাকা করে মোট দুই কোটি টাকা দিয়ে এ মেশিন দুটির একটি ক্রয় করা হয় ২০০৯ সালে এবং অপরটি ২০১১ সালে। কিন্তু আজ পর্যন্ত মেশিন দুটি চালু হয়নি। ইউএসএ-এর তৈরি মেশিন দুটি সরবরাহ করে বায়োজিন ফার্মা। আওয়ামী লীগের এক নেতা কোম্পানিটির মালিক। ২০০৯ সালে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় করা হয় দুটি রেনাল গার্ড। এ মেশিন দুটিরও কোন ব্যবহার নেই। সে সময় হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে কর্মরত অধ্যাপক একেএম মহিবুল্লাহ’র মাধ্যমে মেশিনটি কেনা হয়। তিনিই শুধু ১৩ জন রোগীর ক্ষেত্রে এ যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পেরেছেন। এরপর ওই যন্ত্রটির আর ব্যবহার হয়নি। কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এটি সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও এটি ক্রয়ের উদ্দেশ্য ছিল টাকা আত্মসাৎ বলে অনেকেই মনে করেন। এটিও বায়োজিন ফার্মা সরবরাহ করেছিল। অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহারের জন্য ২০০৮ সালে একই কোম্পানি থেকে কেনা হয় ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকায় টিএমএলআর নামে আরেকটি মেশিন। যাদের মেডিক্যাল থেরাপি, এনজিও প্লাস্টি, স্টেনটিং (রিং) অথবা বাইপাস অপারেশন করা সম্ভব নয়, সেসব রোগীর ক্ষেত্রে এই মেশিন ব্যবহার করে চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটিও চালু হয়নি। স্টিম সেল থেরাপি মেশিন। বায়োজিন ফার্মার কাছ থেকে ২০১০ সালে এটি কেনা হয়েছিল ৪ কোটি টাকা দিয়ে। কিন্তু আজ পর্যন্ত মেশিনটি বাক্সবন্দি। মেশিনটি তাপ দিয়ে ব্লক ছুটানোর কাজে ব্যবহার হওয়ার কথা। সিটি এনজিওগ্রাম- এক ধরনের স্ক্যানিং মেশিন। এটি উন্নত ধরনের ইসিজি রিপোর্ট দেয়। ২০০৯ সালে মেশিনটি প্রায় ৭ কোটি টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিল। দীর্ঘদিন মেশিনটি অকেজো ছিল। শর্ত অনুযায়ী ২জন ডাক্তার এবং ২জন টেকনিশিয়ানকে সরবরাহ কোম্পানির প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রথমদিকে তারা সে শর্ত পূরণ করেনি। পরবর্তী সময়ে শুধুমাত্র দুজন ডাক্তারকে প্রশিক্ষণ দেয়। কিন্তু টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ না দেয়ার কারণে মেশিনটি চালু করতে গিয়ে ভুল হয়। ফলে বারবার নষ্ট হয়ে যায়। ২০১২ সালে একবার নষ্ট হওয়ার পর ৯২ লাখ টাকা লাগে। পুনরায় নষ্ট হয়ে গেলে চলতি বছরের জুনে মেরামত করতে আরও ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়। তা ছাড়া এটি রোগীর তেমন উপকারও করে না। কারণ, এরপরও এনজিওগ্রাম করতে হয়। সিমেন্স কোম্পানি মেশিনটি সরবরাহ করে। এ ছাড়া ক্যাথল্যাব টু মেরামতের নামে সিমেন্স কোম্পানি ২ বারে মোট ৯২ লাখ টাকা নিলেও আজ পর্যন্ত তা করেনি। লন্ড্রি প্লান মেশিনটি সরবরাহ করে সিএমএসডি। এটি চালু করার নামে সাড়ে ৭ লাখ টাকা খরচ করা হলেও তা করা হয়নি। ফলে এখন টেন্ডার দিয়ে কাপড় ধোলাই করে আনা হয়। হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি আজ দেড় বছর ধরে বিকল রয়েছে। ফলে রোগীকে বেশি মূল্যে বাইরে থেকে এ পরীক্ষা করাতে হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অপ্রয়োজনীয় এসব যন্ত্রপাতি ক্রয়ের সঙ্গে হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীরা পর্যন্ত জড়িত। অনেক প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার চেয়ে তাদের বসার কক্ষটি বেশ পরিপাটি। এতে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা ক্ষুব্ধও বটে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৪ সালের প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের ২টি অটোক্লেভ মেশিন নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে। মেশিন দুটি দেয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিএমএসডি। কিন্তু এগুলো চালু করার জন্য প্রতিষ্ঠানটি ওই সময় কোন কেবল (তার) দেয়নি। এ ব্যাপারে ঠিকাদারকে বলার পরও কোন লাভ হয়নি। কারণ, সরঞ্জাম নেয়ার সময় ইঞ্জিনিয়ার সবকিছু বুঝে পেয়েছেন মর্মে স্বাক্ষর দিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার ফলে এগুলো এখন নষ্টের পথে। হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক এগুলো সচলের জন্য অনেক চেষ্টা করছেন। তবে ঠিকাদার কেবল না দেয়ায় সম্ভব হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ মেশিনটি জীবাণুমুক্ত করার কাজে লাগে। অপারেশনের পর ব্যবহার করা যন্ত্রপাতিগুলো জীবাণুমুক্ত করা হয় এ মেশিনের সাহায্যে। অটোক্লেভ মেশিন দুই ধরনের হয়। এক ধরনের হলো- স্টিম বা তাপ সৃষ্টি করে জীবাণুমুক্ত করে। অন্যটি জীবাণুমুক্ত করে গ্যাসের মাধ্যমে। হাসপাতালে সম্পূর্ণ অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা মূল্যের গ্যাস প্লাজমা স্টাইলাইজিং মেশিন। বেঙ্গল নামে একটি কোম্পানির কাছ থেকে এটি কেনা হয়। ২০১৩ সালে ১ কোটি টাকার আরও একটি মেশিন ক্রয় করা হয়। এটি আনা হয় হাসান এন্টারপ্রাইজ থেকে। কিন্তু এ মেশিনের বাক্সটি খালি ছিল। ভেতরে কিছুই ছিল না। পরে প্রফেসর ডা. আমানউল্লাহর সভাপতিত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে প্রমাণিত হয় বাক্সে কিছুই ছিল না। এ নিয়ে একটি মামলাও হয়। কিন্তু এ মেশিন ক্রয়ের সঙ্গে হাসপাতালের যেসব কর্মকর্তা জড়িত তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়। আসামি করা হয় শুধু ঠিকাদারকে। নিয়ম অনুযায়ী মোট টাকার ১০ ভাগ হাসপাতালে জামানত রাখতে হয়। কিন্তু তারা ওই টাকাও জমা রাখেনি। সে হিসেবে তৎকালীন হাসপাতালের পরিচালক ও একাউন্টস অফিসার এর সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এ দুজনকে অদৃশ্য কারণে মামলার আসামি করা হয়নি। ১৯৮০ সালে জাইকার অনুদান দেয়া মেশিনটি দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণের এ গুরুত্বপূর্ণ কাজটি চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
ইসিপি-এক্সটারনাল কাউন্টার পালমেশন। যাদের হার্টে কম ব্লক থাকে তাদের ক্ষেত্রে এই মেশিন ব্যবহার করে এক ধরনের থেরাপি দেয়া হয়। ওই থেরাপির মাধ্যমে ব্লক ছুটানো হয়। ১ কোটি টাকা করে মোট দুই কোটি টাকা দিয়ে এ মেশিন দুটির একটি ক্রয় করা হয় ২০০৯ সালে এবং অপরটি ২০১১ সালে। কিন্তু আজ পর্যন্ত মেশিন দুটি চালু হয়নি। ইউএসএ-এর তৈরি মেশিন দুটি সরবরাহ করে বায়োজিন ফার্মা। আওয়ামী লীগের এক নেতা কোম্পানিটির মালিক। ২০০৯ সালে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় করা হয় দুটি রেনাল গার্ড। এ মেশিন দুটিরও কোন ব্যবহার নেই। সে সময় হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে কর্মরত অধ্যাপক একেএম মহিবুল্লাহ’র মাধ্যমে মেশিনটি কেনা হয়। তিনিই শুধু ১৩ জন রোগীর ক্ষেত্রে এ যন্ত্রটি ব্যবহার করতে পেরেছেন। এরপর ওই যন্ত্রটির আর ব্যবহার হয়নি। কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে এটি সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও এটি ক্রয়ের উদ্দেশ্য ছিল টাকা আত্মসাৎ বলে অনেকেই মনে করেন। এটিও বায়োজিন ফার্মা সরবরাহ করেছিল। অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহারের জন্য ২০০৮ সালে একই কোম্পানি থেকে কেনা হয় ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকায় টিএমএলআর নামে আরেকটি মেশিন। যাদের মেডিক্যাল থেরাপি, এনজিও প্লাস্টি, স্টেনটিং (রিং) অথবা বাইপাস অপারেশন করা সম্ভব নয়, সেসব রোগীর ক্ষেত্রে এই মেশিন ব্যবহার করে চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটিও চালু হয়নি। স্টিম সেল থেরাপি মেশিন। বায়োজিন ফার্মার কাছ থেকে ২০১০ সালে এটি কেনা হয়েছিল ৪ কোটি টাকা দিয়ে। কিন্তু আজ পর্যন্ত মেশিনটি বাক্সবন্দি। মেশিনটি তাপ দিয়ে ব্লক ছুটানোর কাজে ব্যবহার হওয়ার কথা। সিটি এনজিওগ্রাম- এক ধরনের স্ক্যানিং মেশিন। এটি উন্নত ধরনের ইসিজি রিপোর্ট দেয়। ২০০৯ সালে মেশিনটি প্রায় ৭ কোটি টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিল। দীর্ঘদিন মেশিনটি অকেজো ছিল। শর্ত অনুযায়ী ২জন ডাক্তার এবং ২জন টেকনিশিয়ানকে সরবরাহ কোম্পানির প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রথমদিকে তারা সে শর্ত পূরণ করেনি। পরবর্তী সময়ে শুধুমাত্র দুজন ডাক্তারকে প্রশিক্ষণ দেয়। কিন্তু টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ না দেয়ার কারণে মেশিনটি চালু করতে গিয়ে ভুল হয়। ফলে বারবার নষ্ট হয়ে যায়। ২০১২ সালে একবার নষ্ট হওয়ার পর ৯২ লাখ টাকা লাগে। পুনরায় নষ্ট হয়ে গেলে চলতি বছরের জুনে মেরামত করতে আরও ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়। তা ছাড়া এটি রোগীর তেমন উপকারও করে না। কারণ, এরপরও এনজিওগ্রাম করতে হয়। সিমেন্স কোম্পানি মেশিনটি সরবরাহ করে। এ ছাড়া ক্যাথল্যাব টু মেরামতের নামে সিমেন্স কোম্পানি ২ বারে মোট ৯২ লাখ টাকা নিলেও আজ পর্যন্ত তা করেনি। লন্ড্রি প্লান মেশিনটি সরবরাহ করে সিএমএসডি। এটি চালু করার নামে সাড়ে ৭ লাখ টাকা খরচ করা হলেও তা করা হয়নি। ফলে এখন টেন্ডার দিয়ে কাপড় ধোলাই করে আনা হয়। হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি আজ দেড় বছর ধরে বিকল রয়েছে। ফলে রোগীকে বেশি মূল্যে বাইরে থেকে এ পরীক্ষা করাতে হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অপ্রয়োজনীয় এসব যন্ত্রপাতি ক্রয়ের সঙ্গে হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীরা পর্যন্ত জড়িত। অনেক প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার চেয়ে তাদের বসার কক্ষটি বেশ পরিপাটি। এতে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা ক্ষুব্ধও বটে।
No comments