এজলাস প্রস্তুত- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু মার্চেই- গো আযম নিজামীসহ ১৫ জামায়াত নেতার বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা by বিকাশ দত্
মার্চে শুরম্ন হবে বহুল প্রত্যাশিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। সে লৰ্যে ইতোমধ্যে পুরানা হাইকোর্ট ভবনে আদালত বসানো হচ্ছে। বিশেষ ট্রাইবু্যনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে।
পুরান হাইকোর্ট ভবনের যেখানে আইন কমিশন কার্যালয় অবস্থিত সেখানেই বিশেষ ট্রাইবু্যনাল বসানোর কাজ চলছে। চলতি মাসেই বিচারের স্থান, বিচারকের বসার স্থান, আইনজীবী, সাংবাদিক, বিদেশী পর্যবেৰক, বিদেশী আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী, সিকিউরিটি আসামিদের বসার স্থানসহ যাবতীয় বিষয় ঠিক করা হবে। আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ বলেছেন, চলতি মাসে আদালতসহ যাবতীয় বিষয়াদি ঠিক করে মার্চে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরম্ন হবে। এদিকে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, বিষয়টি স্পর্শকাতর। এই প্রথম দেশ নিজস্ব আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতে যাচ্ছে। সৎ দৰ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আইনজীবী তদনত্মকারী কর্মকর্তা ও বিচারক হতে হবে, তা না হলে বিচার প্রহসন হবে। অন্যদিকে গোলাম আযম, নিজামী, সাঈদীসহ ১৫ জামায়াত নেতার বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানা গেছে।এর আগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ১৪ আব্দুল গনি রোডের একটি বাড়ি ঠিক করা হয়েছিল। বাড়িটি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য পর্যাপ্ত না হওয়ায় সরকারের সিদ্ধানত্ম পাল্টানো হয়। পুরনো হাইকোর্ট ভবনে বিচার হলে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি উলেস্নখ ছিল। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠন থেকেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি ওঠে। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, মেজবাহুর রহমান চৌধুরীর ইসলামী ঐক্যজোট প্রাথমিকভাবে যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা প্রকাশ করে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সেক্টরস ফোরাম ৫০ যুদ্ধাপরাধীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করে। ঐ তালিকায় বেশিরভাগই জামায়াত ও দু'একজন বিএনপির নেতা রয়েছেন। জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম ও বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ অনেকেই আছেন। এই তালিকার মধ্যে অনেকে মারা গেছেন। তালিকা প্রসঙ্গে শাহরিয়ার কবির বলেছেন, ঐ তালিকা দিয়ে কোন কাজ হবে না। ট্রাইবু্যনাল স্বাধীন। যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে যারা জীবিত আগে তাদের বিচার চাই। বাংলাদেশী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর পাকিসত্মানী যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার চাই। তার আগে দেখতে চাই বিচারে আইনজীবী কারা হচ্ছেন। কারা বিচারপতি হচ্ছেন। আর কারা তদনত্মকারী কর্মকর্তা হচ্ছেন।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সরকারের কাছে যে সমসত্ম তথ্য আছে তার সঙ্গে অন্যদের কাছে যে সমসত্ম তথ্য আছে তা নিয়েই একটি চূড়ানত্ম তালিকা তৈরি করা। মুক্তিযুদ্ধের সময় ৫০ হাজার রাজাকার ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় যখন বিচার করা হয় তখন ছিল ১১ হাজার রাজাকার। তবে তদনত্ম সংস্থাকেই বিষয়টি পুরোপুরি উদ্ধার করতে হবে। তদনত্ম সংস্থার কাছে আছে কারা যুদ্ধাপরাধী। প্রথমে ১৫ থেকে ২০ যুদ্ধাপরাধীকে নিয়ে বিচারকাজ শুরম্ন করা। একবারে ১০০ বা ১৫০ জনের বিচার কাজ শুরম্ন করলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। নুয়েমবার্গ বিচারে ৫ বছরে মাত্র ৯১ জনের বিচার হয়েছে। এটা একটা আনত্মর্জাতিক মানের বিচার হবে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যবেৰক আসবেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর এক শ' আইনজীবী লন্ডনে বসে আছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় তাদের বাংলাদেশে আনা হবে। জামায়াত বিষয়টি ছোট করে দেখছে না।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে ৰেত্রে আনত্মরিকতার কোন অভাব নেই। ইতোমধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। খুনীদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ বলে হাইকোর্টে রায় স্থগিতের আবেদন আপীল বিভাগ খারিজ করে দিয়েছে। ফলে হাইকোর্টের রায়ই বহাল থাকল। এক বছরের মাথায় সরকার অনেক কাজ সমাধা করেছে। এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার লৰ্যে আইন মন্ত্রণালয় যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। চলতি মাসে এ সমসত্ম বিষয় সমাধান করে মার্চ মাসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরম্ন করা। বর্তমান সরকার ৰমতায় আসার পর পরই দেশের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধাপরাধীদের নামে মামলা হয়েছে। তদনত্মকারী সংস্থা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র দেখলেই বোঝা যাবে কারা যুদ্ধাপরাধী। ১৯৭১ সালে মুক্তযুদ্ধ চলাকালে পাকিসত্মানের সেনাবাহিনীর ও তার দোসররা বাংলাদেশের নিরীহ নারী পুরম্নষ শিশুদের ওপর নির্বিচারে গণহত্যা ধর্ষণ অগি্নসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞের যত মানবতারিরোধী কাজে যারা লিপ্ত ছিল তারাই যুদ্ধপরাধী পাকিসত্মানী বাহিনীর সহযোগী জামায়াতে ইসলামী মুসলিম লীগের নেতাকর্মী রাজাকার আলবদর আলশামসের মতো সংগঠন গড়ে তোলে।
No comments