মেধাবীর লাশ- আধিপত্যের লড়াই থেকে প্রাণসংহার ।।- * বর্তমান ছাত্রলীগের হাল : অনেকে এসেছে শিবির থেকে- * যোগ হয়েছে ছাত্রদলের দুই গ্রুপ- * কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ নেতার ইঙ্গিত- * প্রায় ১০০ কোটি টাকার টেন্ডারও রয়েছে by মামুন-অর-রশিদ
আধিপত্যের লড়াইয়ে ছাত্রলীগের অভ্যনত্মরীণ বিরোধ শেষ পর্যনত্ম প্রাণহানিকর সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে। আওয়ামী লীগ ৰমতায় আসার পর থেকে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, ভর্তিবাণিজ্য, তদ্বিরবাজি আর কমিশন কন্ট্রাক্টে আধিপত্য প্রতিষ্ঠাকেন্দ্রিক অভ্যনত্মরীণ বিরোধ অব্যাহত রয়েছে।
এই বিরোধের সর্বশেষ শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মেধাবী ছাত্র। এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের দু'গ্রম্নপের সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র আবুবকর সিদ্দিক। ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির শীর্ষ নেতার আধিপত্যকেন্দ্রিক সংঘর্ষের শিকার হয়ে ঝরে যায় এক তাজা তরম্নণের প্রাণ। কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতার অর্থলোলুপ দৃষ্টি এখন ছাত্রলীগকেই শনিরদশাকবলিত করেছে। ক্রমাগত নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন। ৰমতাসীন মহল কোনভাবেই লাগাম টেনে ধরতে পারছে না ছাত্রলীগের। ছাত্রদলের বিবদমান দু'টি গ্রম্নপের মধ্যে কমিটি গ্রম্নপের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন দিয়ে ছাত্রলীগের এই শীর্ষ নেতাই ক্যাম্পাস উত্তপ্ত করার সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ পারিতোষিকের বিনিময়ে কয়েকদিন আগে তিনি এমন ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতা বিশেষ মহলের অদৃশ্য ইশারায় এসব করাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অশানত্ম করে তুলতে ছাত্রলীগকে ব্যবহার করাসহ চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে। লাখ লাখ টাকার লেনদেনে ছাত্রলীগকে দিয়েই লাশ ফেলার সমীকরণ মিলিয়ে নিল কি না সরকারবিরোধীরা_ এমন প্রশ্নও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন টানা এক বছর ক্যাম্পাস স্থিতিশীল রেখেছে। এতে সরকারবিরোধী মহলসহ অনেকেরই গা-জ্বালা বাড়ছিল। ক্যাম্পাস অশানত্ম করতে মহলবিশেষের ষড়যন্ত্রে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে কি না_ তেমন প্রশ্নও রয়েছে সংশিস্নষ্ট বিভিন্ন মহলে।বাংলাদেশের পথেঘাটে কিছু ঘটনা ঘটে_ যার সমীকরণ মেলানো যায় না। অথচ এ সব ঘটমান বর্তমান। ছিনতাইকারী ধরা পড়লে তাকে মারধরের পর পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে মারার কাহিনী নতুন নয়। প্রশ্ন হচ্ছে, এই পেট্রোল চটজলদি কে এনেছে, নাকি আগে থেকেই কেউ এনে রেখেছিল_ যা হোক, একটা কিছু ঘটেছে। ঠিক এমনই কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির দু' শীর্ষ নেতার বিরোধের সূত্র ধরে ছাত্রলীগ এফ রহমান হল শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে সংঘর্ষে মূল টার্গেট ছিল সাধারণ সম্পাদককে আঘাত করা। সাধারণ সম্পাদককে আহত করার পরও হামলা তাৎৰণিক আরও ব্যাপক ও বিসত্মৃত পরিধিতে ছড়িয়ে সাধারণ ছাত্রদের কৰে পর্যনত্ম আঘাত করেছে। ঠিক হামলার মুহূর্তে সংঘর্ষ পুরো হলে ছড়িয়ে দিতে কারা এমন অনুঘটকের কাজ করেছে_ সেই প্রশ্নের উত্তরই অদৃশ্য সমীকরণের নির্দেশক হতে পারে। সে যাই হোক, আধিপত্যের লড়াইয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অভ্যনত্মরীণ বিরোধেই আবু বকর সিদ্দিক নিহত হয়েছে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, কয়েক মাস আগে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নানা অপকর্মে ৰুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। সাংগঠনিক নেত্রীর পদত্যাগের পরও ছাত্রলীগ বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কোন বোধোদয় হয়নি। বরং তারা একের পর এক অঘটনের জন্ম দিয়ে চলেছে, যা সরকারকে নাজুক পরিস্থিতির সম্মুখীন করছে। ৰমতাবদলের পর থেকে টেন্ডার, দলীয় সংঘর্ষ আর ভর্তিবাণিজ্যের কারণে প্রায় সবসময় আলোচনায় ছিল ছাত্রলীগ। ইতোমধ্যে ভর্তিবাণিজ্যে ছাত্রলীগ কয়েকটি নামকরা কলেজে ভর্তি বন্ধ করে রেখেছে। শেষ পর্যনত্ম ছাত্রলীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে 'উপহার' দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মেধাবী ছাত্রের লাশ। ভাল কিছু করার রেকর্ড বর্তমান কমিটির নেই। মেয়াদোত্তীর্ণ বর্তমান কমিটি একের পর এক 'নেগেটিভ গেমে' ছাত্রলীগকে ঐতিহ্যের কঙ্কালে রূপ দিচ্ছে। এমনকি গত সাত বছরে বিরোধী দলে থাকাকালীনও রাজপথে তাদের মুখ্য কোন ভূমিকা ছিল না। ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির হাতেগোনা ক'জন নেতা ছাড়া অনেককেই গত সাত বছর দেখা যায়নি। এমনকি ১৫ আগস্টের শোক দিবসের কর্মসূচী পালন করতেও তারা ক্যাম্পাসে আসেনি। অথচ ৰমতায় আসার পর অর্থলিপ্সা ছাত্রলীগকে পেয়ে বসেছে। সারাদেশে সংগঠনের ওপর কোন নিয়ন্ত্রণ নেই বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতাদের। কেন্দ্রীয় নেতারা নিজেরাই নানা অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে সংগঠনের কোন ইউনিটে তাদের নির্দেশ কার্যকর হয় না। কথিত আছে, ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাসহ অনেকেই ইতোমধ্যে টেন্ডার কমিশন আর ভর্তিবাণিজ্যে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। ছাত্রলীগই এখন সরকারের জন্য একমাত্র বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের গত এক বছরের বিভিন্ন সাফল্য ছাত্রলীগের অপকর্মে মস্নান হয়েছে। ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কমবেশি সকল মুদ্রণ মাধ্যম একাধিক সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে। কিন্তু কোন কিছুই ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না।
বর্তমান সরকার ৰমতায় আসার পর ছাত্রলীগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয় কেন্দ্রীয় কমিটি। মেয়াদোত্তীর্ণ বর্তমান কমিটি বিশেষ মেকানিজমে নির্বাচিত হলেও শীর্ষ পর্যায়ের দু'এক নেতার অতীত রাজনৈতিক কর্মকা- নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে মাঠ পর্যায়ে গুঞ্জন রয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণেই কেন্দ্র থেকে শুরম্ন করে প্রানত্ম পর্যনত্ম নেতাকর্মীরা জড়িয়ে পড়ে নানা অপকর্মে। সারাদেশে ছাত্রলীগের ওপর বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির যে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই শুধু তা নয়, বরং বিভিন্ন ইউনিটে কেন্দ্রীয় নেতারাই কোন্দল বাড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ৰমতায় আসার পর থেকে নিয়ন্ত্রণহীন ছাত্রলীগের লাগাম ধরে রাখতে কার্যকর তেমন কোন ব্যবস্থাও এতদিনে চোখে পড়েনি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ছাত্রলীগকে দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করতেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের। সর্বশেষ ছাত্রলীগের কাউন্সিলও তাঁর তত্ত্বাবধানেই হয়েছে। কিন্তু সেই কাউন্সিলের পর থেকে ছাত্রলীগের ওপর কারও কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। ছাত্রলীগ এখন খোলা মাঠ পেয়েছে। এরা নির্লজ্জ হয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হুঁশিয়ারিও তারা কানে তুলছে না।
এফ রহমান হলের সংঘর্ষে জয়ী হয়েছে কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন গ্রম্নপ। অন্যদিকে পরাজিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সোহেল রানা টিপুর গ্রম্নপ। দু'জনই একই গুরম্নর শিষ্য হলেও হালে তাদের মধ্যে আধিপত্যের লড়াই চরমে পেঁৗছেছে। আসলে ক্যাম্পাসে নিয়ন্ত্রণ থাকলে টেন্ডার নিয়োগসহ নানা কাজের কমিশনের ভাগ বেশি পাওয়া যায় বলেই এই বিরোধ চলছে। সর্বশেষ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি পূর্ণাঙ্গকরণ নিয়েই এই বিরোধ তৈরি হয়। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে কোনরকম কিছু না জিজ্ঞাসা করেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি চূড়ানত্ম করে বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির দু' শীর্ষ নেতা। এতে ৰুব্ধ হন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'নেতাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি বিষয়টিতে ৰোভের বাসত্মবায়ন ঘটাতেই নিজের অনুগত এফ রহমান হলের সভাপতি সাইদুজ্জামান ফারম্নককে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি টিপুর ঘনিষ্ঠ এফ রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মোলস্নাকে আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনায় টিপু গ্রম্নপের মেহেদী হাসান মোলস্নার রম্নম দখলে নেয়া এবং হল থেকে তাকে বের করে দিয়ে চূড়ানত্ম আধিপত্য প্রতিষ্ঠাই ছিল মূল লৰ্য। লাশ ফেলা তাদের টার্গেট ছিল না। কিন্তু মেহেদী হাসানকে মাথায় আঘাত করার পর হামলাকারীরা অনেকটা অতর্কিতে মেহেদীর ঘনিষ্ঠ ছাত্রদের রম্নমে হামলা চালাতে থাকে। আর এতেই হামলার শিকার হন টাঙ্গাইলের কৃষক পিতার সনত্মান মেধাবী ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক।
মূলত টেন্ডারের কমিশন কব্জা করতে অনেক দিন থেকেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দু' শীর্ষ নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির দু' শীর্ষ নেতার মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল। চার নেতা চারটি গ্রম্নপের নেতৃত্ব দেন। আবার প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দু'জন কেন্দ্রীয় কমিটির দু' শীর্ষ নেতার বিরম্নদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান। আবার কখনও কখনও স্বার্থকেন্দ্রিক সমীকরণে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি কেন্দ্রীয় সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ভিড়ে যান। একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সুবিধামতো কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ভিড়ে যান। চিরাচরিত গ্রম্নপিংয়ের মতো এই মুহূর্তে স্থায়ী কোন সমীকরণ নেই। যত ঘটনা, তত বিবেচনা। লাভ-লোকসান হিসেবে করেই তাৎৰণিক সমীকরণে একজন আরেকজনের সঙ্গে গাঁট বাঁধে। যে কারণে গ্রম্নপিংয়ের সমীকরণ মেলানোও খুব দুষ্কর। তবে স্বার্থই গ্রম্নপিং নিয়ন্ত্রণ এবং অবস্থানের নিয়ামক। এখন আঞ্চলিকতারভিত্তিতে আগের মতো গ্রম্নপিং নেই। তবে প্রচ্ছন্নভাবে আঞ্চলিকতার হিসেব এখনও রয়েছে। বরিশাল ভার্সেস এন্টি বরিশাল গ্রম্নপিং মাঝেমধ্যে কাজ করে। তবে ক্যাম্পাসে গ্রম্নপিংয়ের ৰেত্রে মূল বিবেচ্য আর্থিক হিসেব।
লাভ-লোকসানের হিসেব কষেই মাসখানেক আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল বিভাগের জনৈক প্রকৌশলীকে অফিসকৰে গিয়ে মারধর করেছে ছাত্রলীগের একটি গ্রম্নপ। ঠিকাদাররাও ছাত্রলীগকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে প্রায় শত কোটি টাকার কাজ চলছে। এ সব কাজ বণ্টনের সময় যেমন বখরা নেয়া হয়, তেমনি প্রতিটি বিলের সময় তাদের কমবেশি হাতখরচ দিতে হয়। এই বখরা অর্থের ভাগাভাগি নিয়েই মূল বিরোধ। কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতা ব্যতীত বাকি তিন নেতা মোটামুটি আপোসরফায় এবং ভাগাভাগিতে সমঝোতায় পেঁৗছতে পারে। কিন্তু শীর্ষ নেতার একারই দরকার হয়ে পড়ে সব অর্থ। সেখানেই বিরোধ ক্রমাগত প্রকট আকার ধারণ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে 'টুইন টাওয়ার' নামে একটি ছাত্রী হলের ২৪ কোটি টাকার কাজ চলছে। অন্যদিকে তরম্নণ শিৰকদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণে আরও ২৪ কোটি টাকার কাজ চলছে। এ ছাড়া সূর্য সেন হল এবং জিয়া হলের মাঝখানে কাঁটাবন মসজিদের দেয়াল ঘেঁষে প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক হাজার সিটের হল নির্মাণের টেন্ডার হতে যাচ্ছে। এ সব টেন্ডার থেকে অতীতে ছাত্রদলের মতো বর্তমানে ছাত্রলীগ নেতারাও কমিশন পাচ্ছে। ক্যাম্পাসে আধিপত্য থাকলে কমিশনের পরিমাণ বেশি হবে বলেই আধিপত্যের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছে ছাত্রলীগের দু'টি গ্রম্নপ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিৰক সমিতির নির্বাচনে নীল দলের মধ্যে অভ্যনত্মরীণ বিরোধের যে মেরম্নকরণ স্পষ্ট হয়েছে, সেখান থেকেও ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার কোন নির্দেশনা ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রম্নপের কাছে আসতে পারে বলে বিভিন্ন মহলে কথা উঠেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের মতো ছাত্রলীগ এখন এক প্রবীণ নেতার প্রভাব এবং কাঁঠালবাগান ঢালের নিয়ন্ত্রণমুক্ত। তবে ছাত্রলীগের গত কমিটির বিদায়ী নেতাদের শীর্ষ পর্যায়ের দু'একজন নানা ছকে ক্যাম্পাস নিয়ে গেম করছে। মূলত ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে সাবেক নেতাদের আধিপত্য ধরে রাখছে। সাবেক নেতাদের অদৃশ্য ইশারায় ছাত্রলীগের একটি গ্রম্নপ ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে নিয়মিত ছিনতাইয়ের কাজে নামে। ছিনতাইকারী এই গ্রম্নপের নেতৃত্ব দেন বরিশাল গ্রম্নপের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক নেতা। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের ভূমিকায় ৰুব্ধ-ত্যক্তবিরক্ত। সবারই শঙ্কা, ছাত্রলীগের কারণেই আওয়ামী লীগকে খেসারত দিতে হবে। ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি এবং বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির চার শীর্ষ নেতা নিজেদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখেই একের পর এক 'নেগেটিভ গেম' পরিচালনা করছে। তারা কাকের মতোই চালাকি করছে আর ভাবছে, তাদের গতিপথ কেউ কোনভাবে জানতে পারবে না। ছাত্রলীগের কর্মকা-, বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যত পরিণতি নিয়ে কথা বলার জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মোবাইলে ফোন করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
No comments