আনত্মর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শেষ, মধুমেলা শুরম্ন- সংস্কৃতি সংবাদ
শুক্রবার শেষ হয়েছে একাদশ ঢাকা আনত্মর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। গত নয় দিনে প্রায় ৫০টি দেশের ১শ' ৫০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয় উৎসবে। শেষ দিনে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের।
উৎসবে অস্ট্রেলেশিয়া বিভাগে সেরা ছবির পুরস্কার জিতে নেয় 'দি আদার ব্যাঙ্ক'। এছাড়া মোট ৬টি বিভাগে প্রদান করা হয় আরও ১২টি পুরস্কার। 'থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার' ছবির জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার পান মোসত্মফা সরওয়ার ফারম্নকী। সেরা অভিনেতা ও অভিনেত্রী হিসেবে ঘোষিত হয় টেডো (দি আদার ব্যাঙ্ক) এবং ফাতানেহ মালেক মোহাম্মদীর (সুপার স্টার) নাম। উৎসব কমিটির সভাপতি মাগুব মোর্শেদ ও পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামালসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।উৎসবের জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দেশ-বিদেশের ১৮ জন চলচ্চিত্র বোদ্ধা। তার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য বাদল রহমান, সাঈদ আকতার মির্জা, এনামুল করিম নির্ঝর, মফিদুল হক, পিটার মেলোন, তৌকির আহমেদ প্রমুখ।
মধুমেলা শুরম্ন
কবি মাইকেল মধুসূদনের প্রিয় সাগরদাঁড়িতে শুক্রবার থেকে শুরম্ন হয়েছে মধুমেলা। বিকালে ফিতে কেটে মেলার উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, মধুসূদন ছিলেন মহাকবি। বিদেশে থেকেও তিনি স্বদেশের কথা ভুলে যাননি। জেলা প্রশাসক মহিবুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন হুইপ আব্দুল ওহাব, সংসদ সদস্য মোসত্মফা ফারম্নক মোহাম্মদ, এ্যাডভোকেট খান টিপু সুলতান।
মেলায় প্রায় আড়াই শ' স্টল বসেছে। কেশবপুর শহর থেকে সাগরদাঁড়ি পর্যনত্ম ১৩ কিলোমিটার ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বাংলালিংক।
এর আগে কেশবপুর কলেজ মোড়ে মধুসূদন তোরণের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে যশোরের স্পন্দন, তীর্যক ও মাগুরার উত্তরণ সাংস্কৃতিক সংস্থার শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। পরে মাগুরার সারথী নাট্যগোষ্ঠীর নাটক ও মধুসূদন লোকনাট্য দল যাত্রা পরিবেশন করে।
এম নুরম্নল কাদের শিশু-সাহিত্য পুরস্কার প্রদান
শুক্রবার শিশু একাডেমী মিলনায়তনে প্রদান করা হয় নুরম্নল কাদের শিশু-সাহিত্য পুরস্কার ২০০৯। চিত্রাঙ্কন, গল্প লেখা, বই পড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রানত্ম থেকে আসা শিশু কিশোরদের পুরস্কৃত করার পাশাপাশি সাহিত্য ও ইতিহাস রচনায় অবদান রাখায় আরও চারজন লেখককে পুরস্কার দেয়া হয়। এ চারজন হলেন কবি আসাদ চৌধুরী, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন, কবি রশিদ রউফ ও সাংবাদিক, ঔপন্যাসিক আশরাফুল আলম পিনটু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট আবদুল গাফ্্ফার চৌধুরী। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল এম নুরম্নল কাদের ফাউন্ডেশন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত। সুতরাং তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোটা আমাদের কর্তব্য। তাঁরা বলেন, এই নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বড় হওয়ার সুযোগ করে দেয়া উচিত। এম নুরম্নল কাদের ফাউন্ডেশন কাজটি করতে পারায় তাদের কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত।
এবার মুক্তিযুদ্ধ পুরস্কারের জন্য মুনতাসীর মামুনের 'জয় বাংলা', সাধারণ গদ্য শাখায় আসাদ চৌধুরীর 'বই ছিলো যার পুতুল/মাদার কুরির শৈশব', ছড়া ও কবিতায় রাশেদ রউফের 'আনন্দ সাম্পান' ও গল্প উপন্যাসের জন্য আশরাফুল আলম পিনটু পুরস্কৃত হন।
ঘুড়ি উৎসব
শুক্রবার রাজধানীর শ্যামপুর থানাধীন ধনিয়া বাজারে অনুষ্ঠিত হয় ঘুড়ি উৎসব। ধনিয়া পঞ্চায়েত কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসব শুরম্নর আগে একটি বর্ণাঢ্য র্যালিও বের করা হয়। র্যালি শেষে ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধন করেন ধনিয়া পঞ্চায়েত কমিটির সর্দার ইসরাফিল।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পুরস্কার বিতরণী উৎসব শুরম্ন
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের দুই দিনব্যাপী পুরস্কার বিতরণী উৎসব শুক্রবার রমনা বটমূলে শুরম্ন হয়েছে। এদিন সকাল ও বিকেল দুই পর্বে চলে পুরস্কার বিতরণী। আজ শনিবার একই স্থানে বিকেলে শুরম্ন হবে পুরস্কার বিতরণী উৎসবের তৃতীয় পর্ব।
আলোকিত মানুষ গড়ার লৰে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প থেকে গত পঁচিশ বছর ধরে দেশজুড়ে এ বইপড়া কর্মসূচী চলে আসছে। প্রতি বছর সারা দেশের প্রায় দেড় লাখ ছাত্র-ছাত্রী এই কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছে। গত বছরও ঢাকার প্রায় পঁচিশ হাজার ছাত্র-ছাত্রী এই কর্মসূচীতে অংশ নিয়েছে।
মহাকালের 'অহম তমসায়' মঞ্চস্থ
শুক্রবার মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় মহাকাল নাট্যসমপ্রদায়ের নাটক 'অহম তমসায়'। বিমূর্ত ভাবনার এই নাটকটি রচনা করেছেন আনন জামান। নির্দেশনা দিয়েছেন আজাদ আবুল কালাম। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মীর জাহিদ হাসান, ফেরদৌস একরাম, জুনায়েদ পারভেজ, পলি বিশ্বাস, রাজন্য তসলিম, অনিমিখ অনিম, আদনান আহমেদ প্রমুখ।
প্রামাণ্যচিত্রের প্রদর্শন
সাম্প্রতিক সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তুমুল আলোচনা দেশে দেশে। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটরিয়ামে প্রদর্শিত হয় প্রামাণ্যচিত্র 'হোম'। বিখ্যাত ফ্রেঞ্চ আলোকচিত্রী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ইয়ান আর্থাস বারট্রেন্ড এর উপস্থিতিতে হলভর্তি দর্শক প্রামাণ্যচিত্রটি উপভোগ করেন। এটির আয়োজক ছিল অলিয়ঁস ফ্রঁসেজ।
নড়াইলে শেষ হলো সপ্তাহব্যাপী সুলতান মেলা
শুক্রবার সন্ধ্যায় নড়াইলের সুলতান মঞ্চে আলোচনা সভা, সুলতান পদক প্রদান, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সপ্তাহব্যাপী সুলতান মেলা শেষ হয়েছে। সুলতান মেলা উদযাপন পর্ষদের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোঃ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সুলতান মঞ্চে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কামাল লোহানী, সুলতান ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব প্রফেসর মুন্সি হাফিজুর রহমান, সুলতান পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী ড. সমরজিৎ রায় চৌধুরী, নড়াইল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শরীফ হুমায়ুন কবীর, পৌর মেয়র এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবাস বোস প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যায় সুলতান মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাতে অনুষ্ঠিত জারি গান উপভোগ করেন হাজারও দর্শক-শ্রোতা।
বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান স্মরণে গ্রামীণফোনের পৃষ্ঠপোষকতায় নড়াইল জেলা প্রশাসন ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ১৬ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পর্য়নত্ম নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চ চত্বরে সপ্তাহব্যাপী সুলতান মেলার আয়োজন করে। মেলা উপল েআয়োজন করা হয় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা, ষাঁড়ের লড়াই, কাবাডি, ঘোড়ার গাড়ি দৌড়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনাসভা, চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন। গভীর রাত পর্যনত্ম চলে জারিগান, কবিগান, বিজয়গীতি, লালনগীতির মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা। মেলার শুরম্ন থেকে শেষ দিন পর্যনত্ম প্রতিদিনই দর্শক-শ্রোতাদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। মেলায় শতাধিক স্টল স্থান পেয়েছিল। বিভিন্ন ধরনের পসরা কিনতে স্টলগুলোতেও ছিল জমজমাট ভিড়।
No comments