ঢাকায় ঈভ এন্সলার- নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান
পাঁচ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে মায়ের সঙ্গে মামার বাড়ি আশ্রয় নিতে হয়েছিল মিনা আখতারকে (আসল নাম নয়)। এই বয়সেই অতি আপনজন এক পুরুষ আত্মীয়ের যৌন নিপীড়নের শিকার হয় মিনা। অনেক কষ্টে মুখ ফুটে মাকে এই অপমানের কথা বললেও মেলে চুপ করে থাকার পরামর্শ। এখন একটি সেফ হোমে আশ্রিতা মিনা অতীতের কষ্টের কথা স্মরণ করে সব সময়।
খ্যাতনামা মার্কিন নারীবাদী লেখক ও নাট্যকার ঈভ এন্সলারের শৈশবেও ঘটেছিল নিপীড়ন এবং তা নিজের ঘরে। কিন্তু মিনার মতো চুপ থাকেননি দ্য ভ্যাজাইনা মনোলগ নামের বিশ্বখ্যাত বইয়ের রচয়িতা। প্রতিবাদ করেছিলেন প্রকাশ্যে। এবার প্রতিবাদ করতে চান বিশ্বব্যাপী। তাই তাঁর বিখ্যাত ‘ওয়ান বিলিয়ন, রাইজিং গ্লোবাল ক্যাম্পেইন’ নিয়ে এবার বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলায় এর নাম হয়েছে ‘উদ্যমে, উত্তরণে শতকোটি’।গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করছিলেন নিজ জীবনের অভিজ্ঞতা এবং তাঁর প্রচারণা নিয়ে। আর আহ্বান জানাচ্ছিলেন পৃথিবীব্যাপী চলমান নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে। সেখানেই মিনার মতো অনেকে বললেন নিগ্রহের কথা, যে কথা যায় না বলা।
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, পৃথিবীতে প্রতি তিনজনের একজন নারী তাঁর জীবদ্দশায় ধর্ষণ বা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। এ সংখ্যা পৃথিবীতে বাস করা শতকোটি নারীর চেয়ে বেশি। এক বড় গৃহযুদ্ধ চলছে সবার ঘরে-বাইরে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর ১০০ কোটি নারী-পুরুষ একযোগে ঘরের বাইরে এসে দাঁড়াবেন। এসব নারী-পুরুষের প্রতি ঈভের আবেদন, রুখো-নাচো-ওঠো। কেন নাচ? এ প্রশ্নের জবাবে ঈভ বলেন, নাচ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততার বহিঃপ্রকাশ। নাচের মাধ্যমে ঘটে মিলন। এ উদ্যমভরা প্রতিবাদের সঙ্গে শামিল হচ্ছে ১৮২টি দেশ।
গতকাল সকালের অনুষ্ঠান শেষে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ঈভ ১৪ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানে সব স্তরের মানুষকে অংশ নিতে আহ্বান জানান।
আয়োজকদের একজন নারীনেত্রী খুশী কবির জানান, গ্রাম থেকে শুরু করে মফস্বল শহরে, রাজধানীতে প্রচারণা চলছে। বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকেও এই আন্দোলনে সমর্থন এসেছে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ফৌজিয়া খন্দকার।
No comments