অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ বিষয়ে প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান- বছরে সাড়ে ছয় লাখ নারী গর্ভপাত করান
দেশে বছরে ছয় লাখ ৪৭ হাজার নারী স্বেচ্ছায় গর্ভপাত করান। এঁদের এক-তৃতীয়াংশের গর্ভপাত-পরবর্তী জটিলতার জন্য চিকিৎসা নিতে হয়। আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাসিক নিয়মিতকরণ (এমআর) সেবা নেন ছয় লাখ ৫৩ হাজার নারী।
জটিলতার কারণে এঁদের প্রতি ১০ জনের একজনকে চিকিৎসা নিতে হয়। রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল বৃহস্পতিবার ‘অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ ও অনিরাপদ মাসিক নিয়মিতকরণ থেকে নারীকে রক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই তথ্য দেওয়া হয়। সরকারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রিভেনশন অব সেপটিক অ্যাবরশন, বাংলাদেশ (বাপসা), সুশীলন, মেরি স্টোপস ও ফুলকি যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।মূল উপস্থাপনায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক সাবিনা ফয়েজ রশীদ বলেন, দেশে গর্ভপাতের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া দুষ্কর। বেসরকারিভাবে, বিশেষ করে ক্লিনিক, ওষুধের দোকান বা দালালের মাধ্যমে কত নারী গর্ভপাত বা এমআর সেবা নিচ্ছেন, তা জানা যায় না। সেবায় আগ্রহীদের একটি বড় অংশ জানেন না কোনটা আইনসম্মত নয়, কোনটা অনিরাপদ। তিনি বলেন, ওষুধের দোকান বা ছদ্মবেশী সেবাদাতাদের কাছ থেকে সেবা নিতে গিয়ে অনেকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েন। গর্ভপাত-পরবর্তী শারীরিক ও মানসিক জটিলতা অনেক বেশি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক বলেন, গর্ভধারণ বা প্রসব-জটিলতার কারণে প্রতিদিন ২৫ জন মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। সঠিক তথ্য জানা থাকলে এই মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঝুঁকির মধ্যে থাকা মায়েদের তথ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা সরকারকে জানাতে পারেন। কাজের সমন্বয় ও সহযোগিতার মাধ্যমে পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব।
বাপসা ২০১০ সালে গর্ভপাত ও মাসিক নিয়মিতকরণ নিয়ে জরিপ করেছিল। জরিপে দেশের ৬৭০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তথ্য নেওয়া হয়েছিল। গতকাল সেই জরিপের তথ্য জানানো হয়। তাতে দেখা গেছে, ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের এক হাজারে ১৮ জন গর্ভপাত করিয়েছেন। একই বয়সী নারীদের এক হাজারে ১৮ জন এমআর সেবা নিয়েছেন। এমআর সেবা ৬৩ শতাংশ দেওয়া হয় সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত গার্বেন ইয়াং বলেন, অনিরাপদ গর্ভপাতের কারণে মাতৃমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, এটা কাম্য নয়।
No comments