সংসদ ভবনের সামনে পদচারী-সেতু! by জাহাঙ্গীর আলম
ন্যাম ফ্ল্যাট থেকে সংসদ ভবনে যাতায়াতের জন্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পদচারী-সেতু (ফুটওভার পাস) নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংসদ সচিবালয়ের অনুরোধে নেওয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত অধিদপ্তর ও স্থাপত্য অধিদপ্তরকে।
তবে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এ ধরনের নির্মাণকাজের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নগর পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সংসদ ভবন এলাকায় এ ধরনের স্থাপনা নির্মাণ লুই আই কানের নকশাবহির্ভূত এবং এতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর সৌন্দর্যহানি ঘটবে বলে মনে করেন তাঁরা।
যোগাযোগ করা হলে স্থপতি সামসুল ওয়ারেস প্রথম আলোকে বলেন, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ফুটওভার পাস করার প্রয়োজন নেই। এখানে এটা করা হলে খুবই অন্যায় হবে। এই প্রকল্প বাদ দেওয়া উচিত। এটা শুধু লুই কানের নকশাবহির্ভূতই হবে না, রাজধানীর সৌন্দর্যও নষ্ট হবে। পরিবেশ বিনষ্ট হবে।
সংসদ সচিবালয় ও সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, গত ১০ অক্টোবর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৫১তম বৈঠকে এই স্থাপনা নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে বলা হয়, ১০ দিনের মধ্যে স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা করে পদচারী-সেতু নির্মাণ করতে হবে। এর আগে ১৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের পর্যালোচনা সভায় জানানো হয়, পদচারী-সেতু, বেড়া (ফেন্সিং) ও হাঁটাপথ (ওয়াকওয়ে) প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য সংসদ সচিবালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। স্পিকার আবদুল হামিদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে এ-সংক্রান্ত চাহিদাপত্র (ডিও লেটার) পাঠিয়েছেন। পরে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব পাঠাতে হবে। পর্যালোচনা সভায় জানানো হয়, এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। গত ৮ আক্টোবর সংসদ সচিবালয়ের আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের সর্বশেষ পর্যালোচনা সভায়ও এ নিয়ে আলোচনা হয়।
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পদচারী-সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয় ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর এক বৈঠকে। স্পিকার ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ওই বছরের ১ মে সংসদের হাউস কমিটির বৈঠকেও একই সিদ্ধান্ত হয়। এরপর অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন প্রথমে পাতালপথ (আন্ডারপাস) নির্মাণে ১৭ কোটি টাকার প্রাক্কলন ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে। কিন্তু সাংসদদের নিরাপত্তা এবং সরকারের আর্থিক ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে সংসদ সচিবালয় এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পদচারী-সেতু করার সিদ্ধান্ত নেয়।
নথিপত্রে দেখা যায়, ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর্যালোচনা সভায় বয়স্ক সাংসদদের পারাপারের অসুবিধার কথা নিয়েও আলোচনা হয়। এ জন্য ওভারপাসে চলন্ত সিঁড়ি (এসকালেটর) সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়। এ সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, সংসদ ভবন এলাকায় আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন ওভারপাস নির্মাণ করা হলে তা এলাকার সৌন্দর্যবর্ধনে অধিকতর উপযোগী হবে। হুইপ শেখ আবদুল ওহাব ওভারপাস নির্মাণের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। অপর হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী সাংসদদের যাতায়াতের সুবিধার্থে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আসাদগেটে একটি করে ওভারপাস নির্মাণে মত দেন। বৈঠকে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ ও হুইপরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ন্যাম ফ্ল্যাটে বসবাসরত সাংসদদের নির্বিঘ্নে সংসদ ভবনে যাতায়াতের জন্য আমরা ওভারপাস করার প্রস্তাব দিয়েছি। রাস্তা পারাপারে দুর্ঘটনা এড়াতে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সেতু নির্মাণ নিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৫ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। স্থাপত্য অধিদপ্তর থেকে নকশা পাওয়ার পর প্রকল্প প্রণয়ন করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নকশা তৈরির জন্য স্থাপত্য অধিদপ্তরে চিঠিও দিয়েছে।
জানতে চাইলে স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি আহসানুল হক খান বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে গত ২৬ নভেম্বর চিঠি পেয়েছি। তারা নকশা প্রণয়নের জন্য অনুরোধ করেছে।’
যোগাযোগ করা হলে স্থপতি সামসুল ওয়ারেস প্রথম আলোকে বলেন, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ফুটওভার পাস করার প্রয়োজন নেই। এখানে এটা করা হলে খুবই অন্যায় হবে। এই প্রকল্প বাদ দেওয়া উচিত। এটা শুধু লুই কানের নকশাবহির্ভূতই হবে না, রাজধানীর সৌন্দর্যও নষ্ট হবে। পরিবেশ বিনষ্ট হবে।
সংসদ সচিবালয় ও সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, গত ১০ অক্টোবর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৫১তম বৈঠকে এই স্থাপনা নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে বলা হয়, ১০ দিনের মধ্যে স্পিকারের সঙ্গে আলোচনা করে পদচারী-সেতু নির্মাণ করতে হবে। এর আগে ১৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের পর্যালোচনা সভায় জানানো হয়, পদচারী-সেতু, বেড়া (ফেন্সিং) ও হাঁটাপথ (ওয়াকওয়ে) প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য সংসদ সচিবালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। স্পিকার আবদুল হামিদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে এ-সংক্রান্ত চাহিদাপত্র (ডিও লেটার) পাঠিয়েছেন। পরে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব পাঠাতে হবে। পর্যালোচনা সভায় জানানো হয়, এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। গত ৮ আক্টোবর সংসদ সচিবালয়ের আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের সর্বশেষ পর্যালোচনা সভায়ও এ নিয়ে আলোচনা হয়।
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পদচারী-সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয় ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর এক বৈঠকে। স্পিকার ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ওই বছরের ১ মে সংসদের হাউস কমিটির বৈঠকেও একই সিদ্ধান্ত হয়। এরপর অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন প্রথমে পাতালপথ (আন্ডারপাস) নির্মাণে ১৭ কোটি টাকার প্রাক্কলন ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে। কিন্তু সাংসদদের নিরাপত্তা এবং সরকারের আর্থিক ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে সংসদ সচিবালয় এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে পদচারী-সেতু করার সিদ্ধান্ত নেয়।
নথিপত্রে দেখা যায়, ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর্যালোচনা সভায় বয়স্ক সাংসদদের পারাপারের অসুবিধার কথা নিয়েও আলোচনা হয়। এ জন্য ওভারপাসে চলন্ত সিঁড়ি (এসকালেটর) সংযোজনের প্রস্তাব করা হয়। এ সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, সংসদ ভবন এলাকায় আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন ওভারপাস নির্মাণ করা হলে তা এলাকার সৌন্দর্যবর্ধনে অধিকতর উপযোগী হবে। হুইপ শেখ আবদুল ওহাব ওভারপাস নির্মাণের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। অপর হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী সাংসদদের যাতায়াতের সুবিধার্থে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আসাদগেটে একটি করে ওভারপাস নির্মাণে মত দেন। বৈঠকে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ ও হুইপরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ন্যাম ফ্ল্যাটে বসবাসরত সাংসদদের নির্বিঘ্নে সংসদ ভবনে যাতায়াতের জন্য আমরা ওভারপাস করার প্রস্তাব দিয়েছি। রাস্তা পারাপারে দুর্ঘটনা এড়াতে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে সেতু নির্মাণ নিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৫ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। স্থাপত্য অধিদপ্তর থেকে নকশা পাওয়ার পর প্রকল্প প্রণয়ন করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নকশা তৈরির জন্য স্থাপত্য অধিদপ্তরে চিঠিও দিয়েছে।
জানতে চাইলে স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি আহসানুল হক খান বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে গত ২৬ নভেম্বর চিঠি পেয়েছি। তারা নকশা প্রণয়নের জন্য অনুরোধ করেছে।’
No comments