আজ জিততেই হবে by সাইদুজ্জামান
বাংলাদেশ ৪ আয়ারল্যান্ড ২। ওয়ানডের এ হিসাবটাই উল্টে দিচ্ছে বিশ্বকাপ; আয়ারল্যান্ড ২ বাংলাদেশ ০। প্রতিশোধের ব্যাপারটা তাই এসে যায়। তবে সাকিব আল হাসানের কাছে এ ম্যাচের গুরুত্ব আরো বেশি। আজ হারলেই যে ঘরের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল স্বপ্ন ফিকে হয়ে যাবে! আয়ারল্যান্ডে ক্রিকেট উন্মাদনা এখনো স্বাভাবিক তাপমাত্রাই পায়নি।
তবু উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের মনে আশঙ্কার টুকরো মেঘ ঠিকই আছে। জানেন যে ২০০৭ বিশ্বকাপ রূপকথার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে না পারলে আয়ারল্যান্ডে হামাগুড়ি দিয়ে এগোনো ক্রিকেট থমকে পড়বে আবারও। দুই রকম হলেও লক্ষ্য পূরণের দায় আছে দুদলেরই। সাকিবের চোখ কোয়ার্টার ফাইনালে। আর পোর্টারফিল্ডের চওড়া কাঁধে চেপে বসে আছে আয়ারল্যান্ডে ক্রিকেট 'বাঁচিয়ে' রাখার দায়িত্ব।
বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড_দুদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেই ২০০৭ বিশ্বকাপ বড় জায়গা নিয়ে আছে। সেবারই প্রথম গ্রুপের বাধা পেরোয় বাংলাদেশ। তবে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের পর সুপার এইটে বাংলাদেশকে হারিয়ে বিশ্বকাপ 'হিট' আয়ারল্যান্ডই। আর সুপারহিট আইরিশ ক্রিকেটারদের নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র 'ব্রেকিং বাউন্ডারিজ'। দল বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছে শুনে জার্মানির বাড়ি ছেড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে পাড়ি জমিয়েছিলেন পল ড্যাভে। সঙ্গে খুব বেশি টাকা-পয়সা নেই তো কি? শৌখিন এ ভিডিওগ্রাফারকে নিজেদের পকেট মানি দিয়ে চাঙ্গা রেখেছিলেন পোর্টারফিল্ডরা। স্বপ্নের সে বিশ্বকাপের টুকরো স্মৃতি পলের ক্যামেরায় জমে জমে তৈরি 'ব্রেকিং বাউন্ডারিজ'। আয়ারল্যান্ড দলের গত এক সপ্তাহের বাংলাদেশে অবস্থানকালে পল ড্যাভের মতো কাউকে দেখা যায়নি। তবে দলটির ক্রিকেটারদের কথাবার্তায় নিজ দেশে ক্রিকেট জনপ্রিয়তা বাড়ানোর তাগিদ। সাফল্যই খ্যাতির নিয়ন্তা। লাতিন আমেরিকায় ফুটবল আর উপমহাদেশে ক্রিকেটের বাড়বাড়ন্তের রহস্য তো এটাই।
পোর্টারফিল্ডের এ দায় অবশ্য সাকিবের নেই। বাংলাদেশে ক্রিকেট জনপ্রিয়তার পালে অনেক দিন ধরেই জোর হাওয়া। আজ শুধু হাল ঠিকঠাক ধরে রাখতে পারলেই হয়। আয়ারল্যান্ডকে হারানোর 'ব্লু প্রিন্ট' অনেক আগেই তৈরি করা আছে। ঔজ্জ্বল্য হারানোর আগেই নতুন বল স্পিনারদের হাতে তুলে দাও। ২০০৭ বিশ্বকাপে ৮৫ রান করে আয়ারল্যান্ডকে জয়ের পথ দেখানো পোর্টারফিল্ডও চোখে-মুখে অন্ধকার দেখবেন। আয়ারল্যান্ডকে রাজ্জাক-সাকিবরা পাচ্ছেনও শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের ছয় নম্বর উইকেট। কথিত আছে, এ উইকেটে ম্যাচের আগের রাতে নাকি স্পিনাররা নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে পড়েন! প্রতিপক্ষকে আরো হেনস্তা করতে একজন পেসার খেলিয়ে স্পিনার বাড়ানোর চিন্তা হয়েছিল বাংলাদেশ দলে। শফিউল ইসলামের চোট সে চিন্তায় রসদও জুগিয়েছে। কিন্তু সবশেষ খবর হলো, আজ ফিটনেস পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে এ পেসারের জায়গায় একাদশে ঢুকতে পারেন তাঁর সমগোত্রীয় নাজমুল হোসেন। সাত নম্বরে মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাটিং করতে নামাটা একরকম নিশ্চিত। তবে নাঈম ইসলাম নয়, আশরাফুলের জন্য মাহমুদ উল্লাহর একাদশের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাই জোরালো। বাড়তি স্পিনারের সাহায্য আপাতত দরকার মনে করছে না বাংলাদেশ।
তবে মাঠের বাইরে স্পিন আক্রমণে জর্জরিত আয়ারল্যান্ড! এ কদিনের অবস্থানকালে উপমহাদেশের কন্ডিশন না হয় কিছুটা চিনে নেওয়া গেল। কিন্তু স্পিন সামলাবেন কি করে? কাল সংবাদ সম্মেলনে আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড কিংবা কোচ ফিল সিমন্সের কাছে এ প্রশ্ন ছুটে গেল। উত্তর প্রায় অভিন্ন। মানেন যে দেশের মাটিতে বাংলাদেশের স্পিনাররা আরো ভয়ংকর। তবে জবাবটা মাঠেই দিতে চান পোর্টারফিল্ড, 'আমাদের টপ অর্ডারে ভালো ব্যাটসম্যান আছে।' বলেই যেন বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারটা ভেসে ওঠে আইরিশ অধিনায়কের চোখের সামনে, 'বাংলাদেশের টপ অর্ডারে তামিম আছে। মিডল অর্ডারের সাকিবও বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান।' পাশ থেকে সিমন্স মনে করিয়ে দিতে চাইলেন স্পিন শক্তিতে তাঁর দলও ভরপুর, 'আমরা চারজন স্পিনার নিয়ে এসেছি। তাদের অন্তত দুজন কাল (আজ) খেলবে।'
দুদলের পরিকল্পনাজুড়ে যেন স্পিন এবং টপ অর্ডারের ব্যাটিং। সেখানে শিশির নেই। এমনকি টসকেও গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না সাকিব কিংবা পোর্টারফিল্ড। তবু বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের পর সম্ভাব্য একাদশের মতো টসও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে জনমনে। সেটি দুদল অগ্রাহ্য করায় সবাই পড়লেন সম্ভাব্য নিরাপদ স্কোর নিয়ে। যে প্রশ্নের উত্তরে মনে হলো, আজকের ম্যাচে কত রান নিয়ে লড়াই করা যাবে, সে সম্পর্কে আপাত ধারণাও নেই কোনো দলের। যা বললেন দুই অধিনায়ক, তার সারমর্ম হলো, যেন জিততে পারি।
বাংলাদেশকে ফেভারিট মেনেই যে লক্ষ্যপাণে পাল্লা দিয়ে ছুটছে আয়ারল্যান্ডও।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, জুনায়েদ সিদ্দীক, রকিবুল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ আশরাফুল, নাঈম ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক, নাজমুল হোসেন ও রুবেল হোসেন।
স্পিনারদেরই ম্যাচ জেতানোর কথা, কিন্তু...
বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড_দুদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেই ২০০৭ বিশ্বকাপ বড় জায়গা নিয়ে আছে। সেবারই প্রথম গ্রুপের বাধা পেরোয় বাংলাদেশ। তবে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের পর সুপার এইটে বাংলাদেশকে হারিয়ে বিশ্বকাপ 'হিট' আয়ারল্যান্ডই। আর সুপারহিট আইরিশ ক্রিকেটারদের নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র 'ব্রেকিং বাউন্ডারিজ'। দল বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছে শুনে জার্মানির বাড়ি ছেড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে পাড়ি জমিয়েছিলেন পল ড্যাভে। সঙ্গে খুব বেশি টাকা-পয়সা নেই তো কি? শৌখিন এ ভিডিওগ্রাফারকে নিজেদের পকেট মানি দিয়ে চাঙ্গা রেখেছিলেন পোর্টারফিল্ডরা। স্বপ্নের সে বিশ্বকাপের টুকরো স্মৃতি পলের ক্যামেরায় জমে জমে তৈরি 'ব্রেকিং বাউন্ডারিজ'। আয়ারল্যান্ড দলের গত এক সপ্তাহের বাংলাদেশে অবস্থানকালে পল ড্যাভের মতো কাউকে দেখা যায়নি। তবে দলটির ক্রিকেটারদের কথাবার্তায় নিজ দেশে ক্রিকেট জনপ্রিয়তা বাড়ানোর তাগিদ। সাফল্যই খ্যাতির নিয়ন্তা। লাতিন আমেরিকায় ফুটবল আর উপমহাদেশে ক্রিকেটের বাড়বাড়ন্তের রহস্য তো এটাই।
পোর্টারফিল্ডের এ দায় অবশ্য সাকিবের নেই। বাংলাদেশে ক্রিকেট জনপ্রিয়তার পালে অনেক দিন ধরেই জোর হাওয়া। আজ শুধু হাল ঠিকঠাক ধরে রাখতে পারলেই হয়। আয়ারল্যান্ডকে হারানোর 'ব্লু প্রিন্ট' অনেক আগেই তৈরি করা আছে। ঔজ্জ্বল্য হারানোর আগেই নতুন বল স্পিনারদের হাতে তুলে দাও। ২০০৭ বিশ্বকাপে ৮৫ রান করে আয়ারল্যান্ডকে জয়ের পথ দেখানো পোর্টারফিল্ডও চোখে-মুখে অন্ধকার দেখবেন। আয়ারল্যান্ডকে রাজ্জাক-সাকিবরা পাচ্ছেনও শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের ছয় নম্বর উইকেট। কথিত আছে, এ উইকেটে ম্যাচের আগের রাতে নাকি স্পিনাররা নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে পড়েন! প্রতিপক্ষকে আরো হেনস্তা করতে একজন পেসার খেলিয়ে স্পিনার বাড়ানোর চিন্তা হয়েছিল বাংলাদেশ দলে। শফিউল ইসলামের চোট সে চিন্তায় রসদও জুগিয়েছে। কিন্তু সবশেষ খবর হলো, আজ ফিটনেস পরীক্ষায় ব্যর্থ হলে এ পেসারের জায়গায় একাদশে ঢুকতে পারেন তাঁর সমগোত্রীয় নাজমুল হোসেন। সাত নম্বরে মোহাম্মদ আশরাফুলের ব্যাটিং করতে নামাটা একরকম নিশ্চিত। তবে নাঈম ইসলাম নয়, আশরাফুলের জন্য মাহমুদ উল্লাহর একাদশের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাই জোরালো। বাড়তি স্পিনারের সাহায্য আপাতত দরকার মনে করছে না বাংলাদেশ।
তবে মাঠের বাইরে স্পিন আক্রমণে জর্জরিত আয়ারল্যান্ড! এ কদিনের অবস্থানকালে উপমহাদেশের কন্ডিশন না হয় কিছুটা চিনে নেওয়া গেল। কিন্তু স্পিন সামলাবেন কি করে? কাল সংবাদ সম্মেলনে আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড কিংবা কোচ ফিল সিমন্সের কাছে এ প্রশ্ন ছুটে গেল। উত্তর প্রায় অভিন্ন। মানেন যে দেশের মাটিতে বাংলাদেশের স্পিনাররা আরো ভয়ংকর। তবে জবাবটা মাঠেই দিতে চান পোর্টারফিল্ড, 'আমাদের টপ অর্ডারে ভালো ব্যাটসম্যান আছে।' বলেই যেন বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারটা ভেসে ওঠে আইরিশ অধিনায়কের চোখের সামনে, 'বাংলাদেশের টপ অর্ডারে তামিম আছে। মিডল অর্ডারের সাকিবও বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান।' পাশ থেকে সিমন্স মনে করিয়ে দিতে চাইলেন স্পিন শক্তিতে তাঁর দলও ভরপুর, 'আমরা চারজন স্পিনার নিয়ে এসেছি। তাদের অন্তত দুজন কাল (আজ) খেলবে।'
দুদলের পরিকল্পনাজুড়ে যেন স্পিন এবং টপ অর্ডারের ব্যাটিং। সেখানে শিশির নেই। এমনকি টসকেও গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না সাকিব কিংবা পোর্টারফিল্ড। তবু বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের পর সম্ভাব্য একাদশের মতো টসও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে জনমনে। সেটি দুদল অগ্রাহ্য করায় সবাই পড়লেন সম্ভাব্য নিরাপদ স্কোর নিয়ে। যে প্রশ্নের উত্তরে মনে হলো, আজকের ম্যাচে কত রান নিয়ে লড়াই করা যাবে, সে সম্পর্কে আপাত ধারণাও নেই কোনো দলের। যা বললেন দুই অধিনায়ক, তার সারমর্ম হলো, যেন জিততে পারি।
বাংলাদেশকে ফেভারিট মেনেই যে লক্ষ্যপাণে পাল্লা দিয়ে ছুটছে আয়ারল্যান্ডও।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, জুনায়েদ সিদ্দীক, রকিবুল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ আশরাফুল, নাঈম ইসলাম, আবদুর রাজ্জাক, নাজমুল হোসেন ও রুবেল হোসেন।
স্পিনারদেরই ম্যাচ জেতানোর কথা, কিন্তু...
No comments