বিশ্লেষণ- ওবামার পররাষ্ট্রনীতি: কিছু প্রশ্ন
ইতিহাস দিকনির্দেশক হয়ে থাকলে বারাক ওবামার পরবর্তী চার বছরের প্রধান এজেন্ডা হবে পররাষ্ট্রনীতি। প্রথম মেয়াদে তিনি অভ্যন্তরীণ যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই চার বছরে পররাষ্ট্রনীতিও নির্ধারণ করবেন। ইরান, রাশিয়া, চীন, মধ্যপ্রাচ্য—প্রতিটি ক্ষেত্রে অসংখ্য বাধা থাকলেও কাজ করারও অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে তাঁর জন্য।
বিশ্বমঞ্চে এমন কিছু ইস্যু রয়েছে, যেগুলোর সমাধান ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই ওবামার সামনে। নির্বাচনের কারণে বেশ কিছু পুরোনো ইস্যু ওবামা প্রশাসন বাক্সবন্দী করে রেখেছিল। কিন্তু এখন সেগুলো আবার সামনে নিয়ে আসবে তারা।
রিচার্ড এম নিক্সন যেমন চীনের সঙ্গে সম্পর্কের সূচনা করেন, রোনাল্ড রিগ্যান যেমন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে চিরবরণীয় হয়ে আছেন; ওবামাও চাইবেন তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে এমন স্থায়ী কিছু করার। ওবামা ও ওবামা প্রশাসন অন্তত একটা বিষয়ে একমত, ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারাটাই হবে বড় অর্জন। সেই লক্ষ্যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তেহরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে পারে ওয়াশিংটন। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সামরিক অভিযান না চালিয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে নিবৃত্ত করাটাই হবে ওবামার প্রধান লক্ষ্য।
নির্বাচনে ওবামার সাফল্যকে ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি অভিনন্দন জানিয়েছেন কি না, জানা যায়নি। কিন্তু ইরানের অব্যাহত পারমাণবিক কর্মসূচি ও ইসরায়েলের একাই ইরানের ওপর হামলা চালানোর হুমকি পরিস্থিতি নাজুক করে তুলেছে। এ অবস্থায় ইরানও চাইবে এখন থেকে আগামী জুনের মধ্যে একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে। জুনে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ত্রিতা পার্সি জানান, এই সময়ের মধ্যে ওবামা প্রশাসন কিছু একটা অর্জন করতে পারলে সেটাই হবে তাদের জন্য নতুন শক্তি এবং তাদের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় সুযোগের সৃষ্টি করবে।
নিক্সন চীন সফর করে বেইজিং-ওয়াশিংটন সম্পর্কের যে বীজ বপন করেছিলেন, সেই সুযোগ হয়তো ওবামার সামনে নেই; কিন্তু তিনি দুই দেশের সম্পর্ককে একটা নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন।
এশিয়ায় নিজেদের অবস্থান জানান দিতে পীতসাগর থেকে দক্ষিণ চীন সাগর পর্যন্ত মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে হবে। কিন্তু হোয়াইট হাউস ও কংগ্রেস সামরিক ব্যয় না বাড়ালে বড় বাজেট ঘাটতিতে পড়বে পেন্টাগন। ফলে এশিয়ায়ও সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র। এ ক্ষেত্রে বেইজিংয়ের সঙ্গে কোনো সংঘাতে না গিয়েই লক্ষ্য পূরণ করতে চাইবে যুক্তরাষ্ট্র।
পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি করে রাশিয়ার সঙ্গে নবযুগের সূচনার সুযোগ রয়েছে ওবামার সামনে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। গত মার্চে তখনকার রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার মধ্যকার আলোচনাও উল্লেখযোগ্য। ওবামা মেদভেদেভকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নির্বাচনের পর ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিষয়ে তিনি ‘নমনীয়তা’ গ্রহণ করবেন। এদিকে ওয়াশিংটনে একটি বিশেষজ্ঞ দল গোপনে কৌশলগত অস্ত্র হ্রাসকরণ চুক্তির খড়সা নিয়ে কাজ করছে। ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের আর্মস কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভের পরিচালক স্টিভেন পিফার জানান, এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ওবামার।
ওবামার পররাষ্ট্রনীতিতে মধ্যপ্রাচ্য অগ্রাধিকার হলেও সেখানকার পরিস্থিতির কারণে তিনি কোনো সাহসী পদক্ষেপ নিতে পারবেন না। একদিকে সিরিয়ায় চলছে দমন-পীড়ন, অন্যদিকে মিসরে ক্ষমতায় বসেছে মুসলিম ব্রাদারহুড। তাই প্রথম মেয়াদে মুসলিম বিশ্বের জন্য যে শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন ওবামা, তা নিয়েই তাঁকে এবারও এগোতে হতে পারে।
ওবামার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি অমীমাংসিত বিষয় হচ্ছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তিচুক্তি করতে না পারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওবামা এই পথে পা বাড়ালে তাঁকে আরেক দফা হতাশায় পড়তে হবে। তা ছাড়া তাঁর সামনে আরও একটি বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আগামী মাসে জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভের জন্য আবেদন করবেন। জাতিসংঘে তা গৃহীত হলে কংগ্রেসকে শুধু ফিলিস্তিনকেই নয়, জাতিসংঘকেও সাহায্য প্রদান বন্ধ করে দিতে হবে। নিউইয়র্ক টাইমস।
রিচার্ড এম নিক্সন যেমন চীনের সঙ্গে সম্পর্কের সূচনা করেন, রোনাল্ড রিগ্যান যেমন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে চিরবরণীয় হয়ে আছেন; ওবামাও চাইবেন তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে এমন স্থায়ী কিছু করার। ওবামা ও ওবামা প্রশাসন অন্তত একটা বিষয়ে একমত, ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারাটাই হবে বড় অর্জন। সেই লক্ষ্যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তেহরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে পারে ওয়াশিংটন। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সামরিক অভিযান না চালিয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ইরানকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে নিবৃত্ত করাটাই হবে ওবামার প্রধান লক্ষ্য।
নির্বাচনে ওবামার সাফল্যকে ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি অভিনন্দন জানিয়েছেন কি না, জানা যায়নি। কিন্তু ইরানের অব্যাহত পারমাণবিক কর্মসূচি ও ইসরায়েলের একাই ইরানের ওপর হামলা চালানোর হুমকি পরিস্থিতি নাজুক করে তুলেছে। এ অবস্থায় ইরানও চাইবে এখন থেকে আগামী জুনের মধ্যে একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে। জুনে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট ত্রিতা পার্সি জানান, এই সময়ের মধ্যে ওবামা প্রশাসন কিছু একটা অর্জন করতে পারলে সেটাই হবে তাদের জন্য নতুন শক্তি এবং তাদের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় সুযোগের সৃষ্টি করবে।
নিক্সন চীন সফর করে বেইজিং-ওয়াশিংটন সম্পর্কের যে বীজ বপন করেছিলেন, সেই সুযোগ হয়তো ওবামার সামনে নেই; কিন্তু তিনি দুই দেশের সম্পর্ককে একটা নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন।
এশিয়ায় নিজেদের অবস্থান জানান দিতে পীতসাগর থেকে দক্ষিণ চীন সাগর পর্যন্ত মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে হবে। কিন্তু হোয়াইট হাউস ও কংগ্রেস সামরিক ব্যয় না বাড়ালে বড় বাজেট ঘাটতিতে পড়বে পেন্টাগন। ফলে এশিয়ায়ও সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে পারবে না যুক্তরাষ্ট্র। এ ক্ষেত্রে বেইজিংয়ের সঙ্গে কোনো সংঘাতে না গিয়েই লক্ষ্য পূরণ করতে চাইবে যুক্তরাষ্ট্র।
পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি করে রাশিয়ার সঙ্গে নবযুগের সূচনার সুযোগ রয়েছে ওবামার সামনে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। গত মার্চে তখনকার রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার মধ্যকার আলোচনাও উল্লেখযোগ্য। ওবামা মেদভেদেভকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নির্বাচনের পর ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিষয়ে তিনি ‘নমনীয়তা’ গ্রহণ করবেন। এদিকে ওয়াশিংটনে একটি বিশেষজ্ঞ দল গোপনে কৌশলগত অস্ত্র হ্রাসকরণ চুক্তির খড়সা নিয়ে কাজ করছে। ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের আর্মস কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভের পরিচালক স্টিভেন পিফার জানান, এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ওবামার।
ওবামার পররাষ্ট্রনীতিতে মধ্যপ্রাচ্য অগ্রাধিকার হলেও সেখানকার পরিস্থিতির কারণে তিনি কোনো সাহসী পদক্ষেপ নিতে পারবেন না। একদিকে সিরিয়ায় চলছে দমন-পীড়ন, অন্যদিকে মিসরে ক্ষমতায় বসেছে মুসলিম ব্রাদারহুড। তাই প্রথম মেয়াদে মুসলিম বিশ্বের জন্য যে শান্তির বার্তা দিয়েছিলেন ওবামা, তা নিয়েই তাঁকে এবারও এগোতে হতে পারে।
ওবামার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি অমীমাংসিত বিষয় হচ্ছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তিচুক্তি করতে না পারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওবামা এই পথে পা বাড়ালে তাঁকে আরেক দফা হতাশায় পড়তে হবে। তা ছাড়া তাঁর সামনে আরও একটি বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আগামী মাসে জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভের জন্য আবেদন করবেন। জাতিসংঘে তা গৃহীত হলে কংগ্রেসকে শুধু ফিলিস্তিনকেই নয়, জাতিসংঘকেও সাহায্য প্রদান বন্ধ করে দিতে হবে। নিউইয়র্ক টাইমস।
No comments