জামায়াতবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে সরগরম ঢাকা

জামায়াত-শিবিরবিরোধী সভা-সমাবেশ ও মিছিলে গতকাল শুক্রবার রাজধানী ছিল উত্তাল। এ সময় স্লোগান তোলা হয়, যেখানে জামায়াত-শিবির, সেখানেই প্রতিরোধ। আহ্বান জানানো হয় পাড়ায়-মহল্লায় প্রতিরোধ গঠনেরও। গত ৪ নভেম্বর ৯ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করার পর জামায়াত-শিবির পরপর দুই দিন বেপরোয়াভাবে হামলা চালায় পুলিশের ওপর।


এর প্রতিবাদে নভেম্বরের ৭ তারিখ পাল্টা তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে নামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগ। গতকাল শুক্রবারও ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। আজ শনিবার আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ কর্মসূচি হওয়ার কথা রয়েছে। এ ছাড়া যুবলীগ আজ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ সোমবার সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যুদ্ধাপরাধের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, 'এদের সময় শেষ, এরা মরণকামড় দেবে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।'
'ঘুরে দাঁড়াও' : গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে শহীদ নূর হোসেন দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে 'জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাধা খালেদা জিয়ার দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, যেখানেই জামায়াত-শিবির সেখানেই প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এরা দেশ ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়, এদের বিরুদ্ধে সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধু একাডেমী এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবের আগে দেশের গোয়েন্দা সংস্থা কেন তথ্য দিতে পারেনি, সেই প্রশ্ন তুলে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম সভায় বলেন, সরকারের উচিত গোয়েন্দা সংস্থাকে পুনর্গঠন করা। সরকার তাদের কাছ থেকে যেভাবে তথ্য পাওয়ার কথা তা পাচ্ছে না। তিনি বলেন, চোরাগোপ্তা হামলা, নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন রাখা-না রাখার বিষয়টি নিয়েও ভাবা উচিত নির্বাচন কমিশনের। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐক্যবদ্ধ মোর্চা গড়ে তুলতে হবে দাবি করে তিনি বলেন, 'স্লোগান হতে হবে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াও।'
সিলেট-খুলনায় মিছিল : কালের কণ্ঠের সিলেট অফিস জানায়, গতকাল বিকেলে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সিলেট মহানগর শাখা। কোর্ট পয়েন্ট থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তারা জামায়াত-শিবিরকে সামাজিকভাবে বয়কটের জন্য সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান। মহানগর শাখা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ মকলু মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিটি মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুজ জহির চৌধুরী ছুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত পুরকায়স্থ প্রমুখ।
খুলনা অফিস জানায়, জামায়াত-শিবিরসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলোর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে গতকাল খুলনায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে মহানগর মহিলা লীগ। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী এই সংগঠনটি একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচার সম্পন্নেরও দাবি জানায়। সকাল ১১টার দিকে নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে এ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, নগর শাখা মহিলা লীগের সভাপতি অধ্যাপক হোসনে আরা রুনু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.