ঘাটাইল উপনির্বাচন ও রংপুর সিটি নির্বাচন- বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ভোট যাচাইয়ের কৌশল জাপার by সেলিম জাহিদ
টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের উপনির্বাচন ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির অনুপস্থিতিতে ভোটের হিসাব যাচাই করে দেখতে চাইছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। এ দুই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনস্থির করেছে ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক এই দল।
দলের একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপির অনুপস্থিতিতে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপনির্বাচনেও ভোট যাচাই করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমির বিপক্ষে জুতসই প্রার্থী না পেয়ে মত পাল্টায় জাপা নেতৃত্ব। এবার ঘাটাইলের উপনির্বাচন ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের ‘ভালো’ প্রার্থী আছে বলে মনে করছে জাপা।
তফসিল অনুযায়ী, ১৮ নভেম্বর ঘাটাইলের উপনির্বাচন ও ২০ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে। জাপা টাঙ্গাইল-৩ আসনে সংসদ সদস্য পদে সৈয়দ আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ ওরফে তুহিনকে, আর রংপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে মশিউর রহমান ওরফে রাঙ্গাকে প্রার্থী ঘোষণা করে।
তবে গত সেপ্টেম্বরে এরশাদ বলেছিলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেবেন না তিনি। যিনি বিজয়ী হয়ে আসবেন, তাঁকেই অভিনন্দন জানাবেন। আর যিনি হারবেন, তাঁকে দোয়া করবেন।
এখন বিএনপিবিহীন নির্বাচনে জাপার অবস্থান যাচাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে জাপা। দলটির একাধিক নেতা বলেন, বিএনপিবিহীন মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জয় পেতে মশিউর রহমানকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এ কৌশলের কথা স্বীকার করেন জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও। তবে গত বুধবার তিনি বলেন, ‘তখন বলেছিলাম, কাউকে সমর্থন দেব না। চেয়েছিলাম, তাদের মধ্যে সমঝোতা হবে। কিন্তু কেউ বসেনি। এতে করে ভোট তিন ভাগ হবে, দলে বিভক্তি বাড়বে। এ জন্য একজনকে সমর্থন দিয়েছি।’
দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে ইতিমধ্যে এরশাদ ঘাটাইলে গণসংযোগ করেছেন। দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে এলাকায় থেকে নির্বাচনী প্রচারণা জোরদার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে রংপুর যাওয়ার কথা রয়েছে এরশাদের।
জাপা মনে করছে, গত চার বছরে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতার পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি দুর্নীতি ও আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় আওয়ামী লীগের ওপর মানুষ বিরক্ত হয়ে উঠেছে। তাই সরকারের মেয়াদের শেষ ভাগের এ দুটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
৪ ও ৫ নভেম্বর ঘাটাইলে জাপার প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ করে এসে এরশাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষ আমাদের ব্যাপারে খুবই পজিটিভ। নির্বাচনে যদি কোনো কারচুপি না হয়, তা হলে আমাদের প্রার্থী জয়ী হবে।’
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ ওই ঘারানার দলগুলো ঘাটাইল ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়নি। একে সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করছেন জাপার নেতারা। আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির অনুপস্থিতিতে দুটি ভিন্ন এলাকায় ভোটের অঙ্ক কী দাঁড়ায়, তা যাচাই করে দেখতে চাইছেন জাপার শীর্ষ নেতৃত্ব।
জানতে চাইলে জাপার চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে দেশের যে অবস্থা, তাতে মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছে। আশা করছি, বিএনপির অনুপস্থিতিতে আমরা দুটি নির্বাচনেই ইতিবাচক সাড়া পাব।’
ঘাটাইলে জাপার প্রার্থী সৈয়দ আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ একজন পরিচিত ব্যবসায়ী। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই আওয়ামী লীগের সাংসদ শেখ হেলালের ভায়রা। ইউসুফ আবদুল্লাহর বাবাও ওই এলাকায় জাপার প্রার্থী হিসেবে একাধিকবার নির্বাচন করেন।
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম। তাঁর বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আতাউর রহমান খানের ছেলে আমানুর রহমান খান।
রংপুর সিটি নির্বাচনে মশিউর: রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাপার তিন নেতা—সাবেক সাংসদ মশিউর রহমান, রংপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান ও রংপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র এ কে এম আবদুর রউফ প্রার্থী। নিজেদের দলীয় প্রার্থী দাবি করে তাঁরা সবাই প্রচারণা চালিয়ে এলেও মঙ্গলবার এরশাদ মশিউর রহমানকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন। এ নিয়ে দলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এরশাদ মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত সবাই মশিউরকেই সমর্থন দেবেন।
এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন চারজন। তাঁরা হলেন: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, সাবেক সাংসদ শরফুদ্দিন আহমেদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ কবির চৌধুরী।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোও দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। এই অবস্থায় আগামী নির্বাচন নিয়ে নানা মহল থেকে অনিশ্চয়তার কথা বলা হচ্ছে। জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দলে বসানোর ‘নকশা’ও রাজনীতির আলোচ্য বিষয়। জাপা সম্প্রতি আগামী নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইও করেছে। একে নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতির ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে কে আসবে, কে আসবে না; সময়ই বলে দেবে। তবে দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আমরা অবশ্যই নির্বাচনে থাকব।’ ঘাটাইল উপনির্বাচন ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আশা করি, জাতীয় পার্টি সেই শূন্যতা পূরণ করতে পারবে।’
তফসিল অনুযায়ী, ১৮ নভেম্বর ঘাটাইলের উপনির্বাচন ও ২০ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে। জাপা টাঙ্গাইল-৩ আসনে সংসদ সদস্য পদে সৈয়দ আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ ওরফে তুহিনকে, আর রংপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে মশিউর রহমান ওরফে রাঙ্গাকে প্রার্থী ঘোষণা করে।
তবে গত সেপ্টেম্বরে এরশাদ বলেছিলেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেবেন না তিনি। যিনি বিজয়ী হয়ে আসবেন, তাঁকেই অভিনন্দন জানাবেন। আর যিনি হারবেন, তাঁকে দোয়া করবেন।
এখন বিএনপিবিহীন নির্বাচনে জাপার অবস্থান যাচাই করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে জাপা। দলটির একাধিক নেতা বলেন, বিএনপিবিহীন মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জয় পেতে মশিউর রহমানকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এ কৌশলের কথা স্বীকার করেন জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও। তবে গত বুধবার তিনি বলেন, ‘তখন বলেছিলাম, কাউকে সমর্থন দেব না। চেয়েছিলাম, তাদের মধ্যে সমঝোতা হবে। কিন্তু কেউ বসেনি। এতে করে ভোট তিন ভাগ হবে, দলে বিভক্তি বাড়বে। এ জন্য একজনকে সমর্থন দিয়েছি।’
দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে ইতিমধ্যে এরশাদ ঘাটাইলে গণসংযোগ করেছেন। দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে এলাকায় থেকে নির্বাচনী প্রচারণা জোরদার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে রংপুর যাওয়ার কথা রয়েছে এরশাদের।
জাপা মনে করছে, গত চার বছরে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতার পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি দুর্নীতি ও আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় আওয়ামী লীগের ওপর মানুষ বিরক্ত হয়ে উঠেছে। তাই সরকারের মেয়াদের শেষ ভাগের এ দুটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
৪ ও ৫ নভেম্বর ঘাটাইলে জাপার প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ করে এসে এরশাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষ আমাদের ব্যাপারে খুবই পজিটিভ। নির্বাচনে যদি কোনো কারচুপি না হয়, তা হলে আমাদের প্রার্থী জয়ী হবে।’
প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ ওই ঘারানার দলগুলো ঘাটাইল ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়নি। একে সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করছেন জাপার নেতারা। আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির অনুপস্থিতিতে দুটি ভিন্ন এলাকায় ভোটের অঙ্ক কী দাঁড়ায়, তা যাচাই করে দেখতে চাইছেন জাপার শীর্ষ নেতৃত্ব।
জানতে চাইলে জাপার চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে দেশের যে অবস্থা, তাতে মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছে। আশা করছি, বিএনপির অনুপস্থিতিতে আমরা দুটি নির্বাচনেই ইতিবাচক সাড়া পাব।’
ঘাটাইলে জাপার প্রার্থী সৈয়দ আবু ইউসুফ আবদুল্লাহ একজন পরিচিত ব্যবসায়ী। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই আওয়ামী লীগের সাংসদ শেখ হেলালের ভায়রা। ইউসুফ আবদুল্লাহর বাবাও ওই এলাকায় জাপার প্রার্থী হিসেবে একাধিকবার নির্বাচন করেন।
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম। তাঁর বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আতাউর রহমান খানের ছেলে আমানুর রহমান খান।
রংপুর সিটি নির্বাচনে মশিউর: রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাপার তিন নেতা—সাবেক সাংসদ মশিউর রহমান, রংপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান ও রংপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র এ কে এম আবদুর রউফ প্রার্থী। নিজেদের দলীয় প্রার্থী দাবি করে তাঁরা সবাই প্রচারণা চালিয়ে এলেও মঙ্গলবার এরশাদ মশিউর রহমানকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন। এ নিয়ে দলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এরশাদ মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত সবাই মশিউরকেই সমর্থন দেবেন।
এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন চারজন। তাঁরা হলেন: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান, সাবেক সাংসদ শরফুদ্দিন আহমেদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ কবির চৌধুরী।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোও দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। এই অবস্থায় আগামী নির্বাচন নিয়ে নানা মহল থেকে অনিশ্চয়তার কথা বলা হচ্ছে। জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দলে বসানোর ‘নকশা’ও রাজনীতির আলোচ্য বিষয়। জাপা সম্প্রতি আগামী নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাইও করেছে। একে নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতির ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে কে আসবে, কে আসবে না; সময়ই বলে দেবে। তবে দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আমরা অবশ্যই নির্বাচনে থাকব।’ ঘাটাইল উপনির্বাচন ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আশা করি, জাতীয় পার্টি সেই শূন্যতা পূরণ করতে পারবে।’
No comments