যে খবর নাড়া দেয়- ব্যাঘ্র শব

রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামে কোনো বাঘ আসলে নেই। আমরা যাকে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বলি, প্রাণী বিশেষজ্ঞদের কাছে সেটি শুধুই ‘বেঙ্গল টাইগার’। বাঘের একটি উপপ্রজাতি। তবে সুন্দরবনের বাঘ কেন রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামে পরিচিত? ধারণা করি, সুন্দরবনের বাঘের সৌন্দর্য, রাজকীয় চলন, গতি আর ক্ষিপ্রতাই তাকে এনে দিয়েছে ‘রয়েল’ খেতাব।


প্রাণী বিশারদদের হিসাবে নেই। কিন্তু তাতে কি! সুন্দরবনের বাঘ তার নিজের শৌর্যবীর্যের জোরেই বাংলার মানুষের কাছ থেকে পেয়েছে রয়েল বা ‘রাজকীয়’ সম্মান।
সেই রাজকীয় বাঘের এ কী পরিণতি! ধানখেতে পড়ে আছে মুখ থুবড়ে। কাদায় মাখামাখি। দেহে প্রাণ নেই। সুন্দরবনের আশপাশের এলাকায় প্রায়ই বাঘ হত্যার খবর পত্রিকায় পাই। একটি বাঘ লোকালয়ে ঢুকে গেলে গ্রামে কেমন আতঙ্ক ছড়ায়, সেই অভিজ্ঞতাও হয়েছে বছর কয়েক আগে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে গিয়ে। তবু...কাদায় লুটিয়ে থাকা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মৃতদেহ বুকে কাঁপন ধরায়। খুব বেশি ব্যথিত করে খুলনার দাকোপ এলাকা থেকে তোলা এই ছবি। (সূত্র: প্রথম আলো, পৃষ্ঠা-৩, ৭ নভেম্বর, ২০১২)
সুন্দরবনের বাঘ রক্ষায় এককাট্টা হয়েছেন সারা বিশ্বের পশুপ্রেমীরা। কিন্তু যেইখানটাতে বাঘের বাস, সেই সব গ্রামীণ মানুষের সঙ্গে বাঘের ভাব জমেনি। বাঘ এখনো তাদের কাছে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম! লোকালয়ে ঢুকে গেলে সেই বাঘকে পিটিয়ে হত্য করাটাই তাদের কাছে একমাত্র সমাধান।
মানুষ কবে বুঝতে শিখবে, বাঘ লোকালয়ে আসেনি, মানুষই বাঘের এলাকা দখল করে, বন উজাড় করে চালাচ্ছে নৈরাজ্য!
—ইকবাল হোসাইন চৌধুরী

No comments

Powered by Blogger.