অহিংসা পরম ধর্ম by মো. মামুনুর রশীদ
স্বাধীন বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা মূলত রাষ্ট্রীয়ভাবে শুরু হয় '৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, '৭০-এর নির্বাচন এবং নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা সোনার বাংলাদেশ পেয়েছি। যেটি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের।
তবে বিভিন্ন সময় এখানে সাম্প্রদায়িকতার ছায়া বৃদ্ধি করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। যতবারই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের পাঁয়তারা চালানো হয়েছে ততবারই আমরা তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এটাই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং এখানে ধর্মীয় বিরোধী হামলার ঘটনা খুব বেশি যে ঘটেছে, তা নয়। তবে কিছু ঘটেছে সেটা অস্বীকার করার জো নেই। গত এক বছরের পরিসংখ্যানে লক্ষ্য করা যায়_ চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরাসহ কিছু জায়গায় একদল উগ্রপন্থি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটিয়ে চলেছে। আর সাম্প্রতিক রামুর ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক ঘটনা! এ ঘটনায় আমাদের রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতা দেশের চাপে যে রয়েছে সেটা সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়। এ ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের অভিযোগের আঙুল উঠেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, উঠবেই।
সম্প্রতি রামু, উখিয়া, কক্সবাজারের ঘটনাটি প্রমাণ করে, সাম্প্রদায়িক আক্রমণের ধারা বাংলাদেশে একটি শক্ত অবস্থানে পেঁৗছে যাচ্ছে। উদ্বেগের খবর আসলে এখানেই। ধ্বংসযজ্ঞ স্থান পরিদর্শন করে বোঝা যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন সম্প্রীতি রক্ষার্থে সম্পূর্ণ নীরব ছিল। সংবাদ মাধ্যমেও সেই বিষয়টি এসেছে। এই নীরবতা কি প্রমাণ করে না যে, সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ? ২৫০ বছর আগের মৈত্রী বিহারসহ ১২টি বৌদ্ধবিহার ও ৩০টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এসব ঘটনা যে পূর্বপরিকল্পিত সেটা দিবালোকের মতো সত্য। কেননা এতসব তাণ্ডবলীলা ঘটে গেল, কিন্তু সরকারি গোয়েন্দা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন কী করল আর তাদের ভূমিকাই কী ছিল? এই পরিকল্পিত ঘটনায় বাংলার সংখ্যালঘু ধর্মীয় বৌদ্ধদের মনে যে নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, সেটি হয়তোবা সহজেই দূর করা সম্ভব নয়। তবে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হতে হলে সংখ্যালঘুদের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। মানবসভ্যতার এই পর্যায়ে এসে একবিংশ শতাব্দীতে একটি দেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মীয় কারণে উত্তেজনার সৃষ্টি হবে_ এমনটি কারও কাম্য নয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেমন ৪১ বছর আগে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, সেখানে আজ সাম্প্রদায়িকতার ট্রাম্পকার্ড চলবে, সেটি হতে দেওয়া যায় না।
দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যেতে হবে। চাই সম্প্রীতি আর ধ্বংস হোক সব অপশক্তি। হিংসা-ভেদাভেদহীন সমাজ চাই। কারণ অহিংসাই পরম ধর্ম।
য় মো. মামুনুর রশীদ : শিক্ষার্থী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
সম্প্রতি রামু, উখিয়া, কক্সবাজারের ঘটনাটি প্রমাণ করে, সাম্প্রদায়িক আক্রমণের ধারা বাংলাদেশে একটি শক্ত অবস্থানে পেঁৗছে যাচ্ছে। উদ্বেগের খবর আসলে এখানেই। ধ্বংসযজ্ঞ স্থান পরিদর্শন করে বোঝা যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন সম্প্রীতি রক্ষার্থে সম্পূর্ণ নীরব ছিল। সংবাদ মাধ্যমেও সেই বিষয়টি এসেছে। এই নীরবতা কি প্রমাণ করে না যে, সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ? ২৫০ বছর আগের মৈত্রী বিহারসহ ১২টি বৌদ্ধবিহার ও ৩০টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এসব ঘটনা যে পূর্বপরিকল্পিত সেটা দিবালোকের মতো সত্য। কেননা এতসব তাণ্ডবলীলা ঘটে গেল, কিন্তু সরকারি গোয়েন্দা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন কী করল আর তাদের ভূমিকাই কী ছিল? এই পরিকল্পিত ঘটনায় বাংলার সংখ্যালঘু ধর্মীয় বৌদ্ধদের মনে যে নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, সেটি হয়তোবা সহজেই দূর করা সম্ভব নয়। তবে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হতে হলে সংখ্যালঘুদের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই। মানবসভ্যতার এই পর্যায়ে এসে একবিংশ শতাব্দীতে একটি দেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মীয় কারণে উত্তেজনার সৃষ্টি হবে_ এমনটি কারও কাম্য নয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেমন ৪১ বছর আগে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, সেখানে আজ সাম্প্রদায়িকতার ট্রাম্পকার্ড চলবে, সেটি হতে দেওয়া যায় না।
দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যেতে হবে। চাই সম্প্রীতি আর ধ্বংস হোক সব অপশক্তি। হিংসা-ভেদাভেদহীন সমাজ চাই। কারণ অহিংসাই পরম ধর্ম।
য় মো. মামুনুর রশীদ : শিক্ষার্থী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
No comments